২৪ সূরাঃ আন-নূর | An-Nur | سورة النور - আয়াতঃ ৫২
২৪:৫২ وَ مَنۡ یُّطِعِ اللّٰهَ وَ رَسُوۡلَهٗ وَ یَخۡشَ اللّٰهَ وَ یَتَّقۡهِ فَاُولٰٓئِکَ هُمُ الۡفَآئِزُوۡنَ ﴿۵۲﴾
و من یطع الله و رسولهٗ و یخش الله و یتقه فاولىک هم الفاىزون ۵۲

আর যে কেউ আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করে, আল্লাহকে ভয় করে এবং তাঁর তাকওয়া অবলম্বন করে, তারাই কৃতকার্য। আল-বায়ান

যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আনুগত্য করে, আল্লাহকে ভয় করে ও তাঁর অবাধ্যতা পরিহার করে চলে তারাই কৃতকার্য। তাইসিরুল

যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করে, আল্লাহকে ভয় করে ও তাঁর অবাধ্যতা হতে সাবধান থাকে তারাই সফলকাম। মুজিবুর রহমান

And whoever obeys Allah and His Messenger and fears Allah and is conscious of Him - it is those who are the attainers. Sahih International

৫২. আর যে কেউ আল্লাহ ও তার রাসূলের আনুগত্য করে, আল্লাহকে ভয় করে ও তাঁর তাকওয়া অবলম্বন করে, তাহলে তারাই কৃতকার্য।(১)

(১) এই আয়াতে চারটি বিষয় বর্ণনা করার পর বলা হয়েছে, যে ব্যক্তি এই চারটি বিষয় যথাযথ পালন করে, সে-ই দুনিয়া ও আখেরাতে সফলকাম। [দেখুন-তাবারী, ইবন কাসীর, ফাতহুল কাদীর] কোন কোন তাফসীর গ্রন্থে এ প্রসঙ্গে উমার রাদিয়াল্লাহু আনহুর একটি ঘটনা বর্ণনা করা হয়েছে। এতে এই চারটি বিষয়ের ব্যাখ্যা ও পারস্পরিক পার্থক্য ফুটে উঠে। ফারূকে আযম একদিন মসজিদুন নববীতে দণ্ডায়মান ছিলেন। হঠাৎ, জনৈক রূমী গ্রাম্য ব্যক্তি তার কাছে এসে বলতে লাগলোঃ أَشْهَدُ أَنّ لَّا إِلَٰهَ إِلَّإ الله وأَشْهَدُ ان محمداً رسول الله উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু জিজ্ঞেস করলেনঃ ব্যাপার কি? সে বললোঃ আমি আল্লাহর ওয়াস্তে মুসলিম হয়ে গেছি। উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু জিজ্ঞেস করলেনঃ এর কোন কারণ আছে কি? সে বললোঃ হ্যাঁ, আমি তাওরাত, ইঞ্জীল, যাবুর ও পূর্ববর্তী নবীগণের অনেক গ্রন্থ পাঠ করেছি। কিন্তু সম্পপ্রতি জনৈক মুসলিম কয়েদীর মুখে একটি আয়াত শুনে জানতে পারলাম যে, এই ছোট্ট আয়াতটির মধ্যে সমস্ত প্রাচীন গ্রন্থের বিষয়বস্তু সন্নিবেশিত রয়েছে।

এতে আমার মনের দৃঢ় বিশ্বাস জন্মেছে যে, এটা আল্লাহর পক্ষ থেকেই আগত। উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু জিজ্ঞেস করলেনঃ আয়াতটি কি? রূমী ব্যক্তি উল্লেখিত আয়াতটিই তিলাওয়াত করলো এবং সাথে সাথে তার অভিনব তাফসীরও বর্ণনা করলো যে, (وَمَنْ يُطِعِ اللَّهَ) আল্লাহর ফরয কার্যাদির সাথে, (وَرَسُولَهُ) রাসূলের সুন্নাতের সাথে, (وَيَخْشَ اللَّهَ) অতীত জীবনের সাথে এবং (وَيَتَّقْهِ) ভবিষ্যত জীবনের সাথে সম্পর্ক রাখে। মানুষ যখন এই চারটি বিষয় পালন করবে, তখন তাকে (فَأُولَٰئِكَ هُمُ الْفَائِزُونَ) এর সুসংবাদ দেয়া হবে। فائز তথা সফলকাম সে ব্যক্তি, যে জাহান্নাম থেকে মুক্তি ও জান্নাতে স্থান পায়। উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু একথা শুনে বললেনঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কথায় এর সমর্থন পাওয়া যায়। তিনি বলেছেনঃ “আল্লাহ্ তা'আলা আমাকে সুদূরপ্রসারী স্বল্পবাক্যসম্পন্ন। অথচ ব্যাপক অৰ্থবোধক বাক্যাবলী দান করেছেন।” [বুখারীঃ ২৮১৫, মুসলিমঃ ৫২৩]

তাফসীরে জাকারিয়া

(৫২) যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আনুগত্য করে, আল্লাহকে ভয় করে ও তাঁর শাস্তি হতে সাবধান থাকে, তারাই হল কৃতকার্য।[1]

[1] অর্থাৎ, কৃতকার্যতা ও সফলতার যোগ্য একমাত্র সেই সমস্ত লোক, যারা নিজেদের সকল ব্যাপারে আল্লাহ ও রসূলের ফায়সালাকে আনন্দচিত্তে মেনে নেয়, আল্লাহ ও রসূলের অনুসরণ করে এবং তারা সংযম ও আল্লাহ-ভীতির সকল গুণে গুণান্বিত। তারা সফলতার উপযুক্ত নয়, যারা উক্ত গুণের অধিকারী নয়।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান