সূরাঃ আল-বাকারা | Al-Baqara | سورة البقرة - আয়াতঃ ২৭০
২:২৭০ وَ مَاۤ اَنۡفَقۡتُمۡ مِّنۡ نَّفَقَۃٍ اَوۡ نَذَرۡتُمۡ مِّنۡ نَّذۡرٍ فَاِنَّ اللّٰهَ یَعۡلَمُهٗ ؕ وَ مَا لِلظّٰلِمِیۡنَ مِنۡ اَنۡصَارٍ ﴿۲۷۰﴾
و ما انفقتم من نفقۃ او نذرتم من نذر فان الله یعلمهٗ و ما للظلمین من انصار ۲۷۰

তোমরা যা কিছু ব্যয় কর অথবা যে কোন মান্নত কর তা অবশ্যই আল্লাহ জানেন। আর যালিমদের জন্য কোন সাহায্যকারী নেই। আল-বায়ান

তোমরা যে ব্যয়ই কর কিংবা যে কোন মানৎ কর, আল্লাহ নিশ্চয়ই তা জানেন কিন্তু যালিমদের জন্য কোন সাহায্যকারী নেই। তাইসিরুল

এবং যে কোন বস্তু তোমরা ব্যয় করনা কেন, অথবা যে কোন প্রতিজ্ঞা (নযর) তোমরা গ্রহণ করনা কেন, আল্লাহ নিশ্চয়ই তা অবগত হন; আর অত্যাচারীদের কোনই সাহায্যকারী নেই। মুজিবুর রহমান

And whatever you spend of expenditures or make of vows - indeed, Allah knows of it. And for the wrongdoers there are no helpers. Sahih International

২৭০. আর যা কিছু তোমরা ব্যয় কর(১) অথবা যা কিছু তোমরা মানত(২) কর নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তা জানেন। আর যালিমদের জন্য কোন সাহায্যকারী নেই।

(১) ‘যা কিছু তোমরা ব্যয় কর’ বলতে সর্বপ্রকার ব্যয়ই অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেছে; যে ব্যয়ে সব শর্তের প্রতি লক্ষ্য রাখা হয়েছে এবং যে ব্যয়ে সবগুলোর কিংবা কতকগুলোর প্রতি লক্ষ্য রাখা হয়নি। উদাহরণতঃ আল্লাহর পথে ব্যয় করা হয়নি বরং গোনাহর কাজে ব্যয় করা হয়েছে, কিংবা লোক দেখানোর জন্য ব্যয় করা হয়েছে, অথবা ব্যয় করে অনুগ্রহ প্রকাশ করা হয়েছে কিংবা হালাল ও উৎকৃষ্ট বস্তু ব্যয় করা হয়নি ইত্যাদি, সর্বপ্রকার ব্যয়ই এ আয়াতের অন্তর্ভুক্ত।

(২) ‘মানত’ শব্দের ব্যাপকতায় সর্বপ্রকার মানতই এসে গেছে। মানত বলতে বুঝায় কোন উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য কোন কাজ করার শর্ত করা। যেমন, যদি আমার সন্তান হয় তাহলে আমি হজ করব বা যদি আমার ব্যবসায় সাফল্য আসে তবে আমি এত টাকা দান করব ইত্যাদি। মূলতঃ মানত পূরণ করা ইবাদাত। কিন্তু মানত করা ইবাদাত নয়। মানত করার ব্যাপারে শরীআত কাউকে উৎসাহ দেয়নি। বরং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মানত কারো জন্য ভাল কিছু নিয়ে আসে না বরং মানত কৃপণের সম্পদ থেকে কিছু বের করে। [বুখারীঃ ৬৬০৮, ৬৬৯২ ৬৬৯৩]

তাই মানত করার চেয়ে যে ইবাদাতের মানত করার ইচ্ছা করেছে, মানত না করে সে ইবাদাত পালন করে তার অসীলায় দোআ করাই শরীআত নির্দেশিত সঠিক পন্থা। এজন্য শরীআতে মানত করা থেকে নিষেধ এসেছে। কিন্তু যদি কেউ মানত করে, তারপর যদি কাজটা সৎকাজ হয় তবে তা পূরণ করা ওয়াজিব। আর যদি অসৎকাজ হয় তাহলে তা পূরণ করা যাবে না। যেমন, কেউ উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য হজ করার মানত করলে তাকে হজ করে মানত পূরণ করতে হবে। কিন্তু যদি কেউ উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য মাযারে বা পীরকে কিছু দেয়ার মানত করলে তা পূরণ করা জায়েয হবে না। কেননা, তা শির্ক।

তাফসীরে জাকারিয়া

(২৭০) যা তোমরা দান কর অথবা যা কিছু তোমরা নযর-মানত কর,[1] আল্লাহ তা অবশ্যই জানেন এবং অত্যাচারীদের কোন সাহায্যকারী নেই।

[1] نَذر ‘নযর’ তথা মানত করা বলতে এই নিয়ত করা যে, আমার অমুক কাজটা যদি হয়ে যায় অথবা অমুক বিপদ থেকে যদি আমি মুক্তি পাই, তাহলে আল্লাহর রাস্তায় এতটা পরিমাণ আমি সাদাকা করব। এই মানত পূরণ করা জরুরী। তবে কোন অবাধ্যতা অথবা অবৈধ কাজের মানত করে থাকলে তা পূরণ করা বৈধ নয়। মানত করাও নামায-রোযার মত একটি ইবাদত। কাজেই আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো নামে মানত করলে সেটা তারই ইবাদত বলে গণ্য হবে, আর তা হবে শিরক। যেমন বর্তমানে অনেক প্রসিদ্ধ কবরসমূহে গিয়ে মানত করে সেখানে ব্যাপকহারে নযরানা পেশ করা হয়। মহান আল্লাহ এই ধরনের শিরক থেকে আমাদেরকে রক্ষা করুন। আমীন!

তাফসীরে আহসানুল বায়ান