১৭:৩১ وَ لَا تَقۡتُلُوۡۤا اَوۡلَادَکُمۡ خَشۡیَۃَ اِمۡلَاقٍ ؕ نَحۡنُ نَرۡزُقُهُمۡ وَ اِیَّاکُمۡ ؕ اِنَّ قَتۡلَهُمۡ کَانَ خِطۡاً کَبِیۡرًا ﴿۳۱﴾
و لا تقتلوا اولادکم خشیۃ املاق نحن نرزقهم و ایاکم ان قتلهم کان خطا کبیرا ۳۱

অভাব-অনটনের ভয়ে তোমরা তোমাদের সন্তানদেরকে হত্যা করো না। আমিই তাদেরকে রিয্ক দেই এবং তোমাদেরকেও। নিশ্চয় তাদেরকে হত্যা করা মহাপাপ। আল-বায়ান

দরিদ্রতার ভয়ে তোমরা তোমাদের সন্তানদেরকে হত্যা করো না। আমিই তাদেরকে রিযক দেই আর তোমাদেরকেও, তাদের হত্যা মহাপাপ। তাইসিরুল

তোমাদের সন্তানদেরকে তোমরা দারিদ্রতার ভয়ে হত্যা করনা, তাদেরকে এবং তোমাদেরকে আমিই জীবনোপকরণ দিই; তাদেরকে হত্যা করা মহাপাপ। মুজিবুর রহমান

And do not kill your children for fear of poverty. We provide for them and for you. Indeed, their killing is ever a great sin. Sahih International

৩১. আর তোমরা তোমাদের সন্তানদেরকে দারিদ্ৰ-ভয়ে হত্যা করো না। তাদেরকেও আমিই রিযক দেই এবং তোমাদেরকেও। নিশ্চয় তাদেরকে হত্যা করা মহাপাপ।(১)

১. আলোচ্য আয়াতে এই নির্দেশটি জাহেলিয়াত যুগের একটি নিপীড়নমূলক অভ্যাস সংশোধনের নিমিত্ত উল্লেখিত হয়েছে। জাহেলিয়াত যুগে কেউ কেউ জন্মের পরপরই সন্তানদেরকে বিশেষ করে কন্যা সন্তানদেরকে হত্যা করত, যাতে তাদের ভরণ-পোষণের বোঝা বহন করতে না হয়। এক হাদীসে এসেছে, আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করলাম, সবচেয়ে বড় গুনাহ কোনটি? তিনি বললেন, আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করা অথচ তিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন। আমি বললাম, এটা অবশ্যই বড় কিন্তু তারপর কি? তিনি বললেন, এবং তোমার সাথে খাবে এ ভয়ে তোমার সন্তানকে হত্যা করা”। [বুখারীঃ ৪৪৭৭]

আলোচ্য আয়াতে আল্লাহ্ তাআলা তাদের এই কর্মপন্থাটি যে অত্যন্ত জঘন্য ও ভ্রান্ত তাই সুস্পষ্ট করে তুলে ধরেছেন। অনুধাবন করতে বলেছেন যে, রিযিকদানের তোমরা কে? এটা তো একান্তভাবে আল্লাহ্ তাআলার কাজ। তোমাদেরকেও তো তিনিই রিযিক দিয়ে থাকেন। যিনি তোমাদেরকে দেন, তিনিই তাদেরকেও দেবেন। তোমরা এ চিন্তায় কেন সন্তান হত্যার অপরাধে অপরাধী হচ্ছে?

তাফসীরে জাকারিয়া

(৩১) তোমাদের সন্তানদেরকে তোমরা দারিদ্র্য-ভয়ে হত্যা করো না, আমিই তাদেরকে জীবনোপকরণ দিয়ে থাকি এবং তোমাদেরকেও। নিশ্চয় তাদেরকে হত্যা করা মহাপাপ। [1]

[1] এই নির্দেশ সূরা আনআম ১৫১ নং আয়াতেও উল্লেখ হয়েছে। হাদীসে বর্ণিত হয়েছে যে, নবী (সাঃ) শিরকের পর যে গুনাহকে সবচেয়ে বড় গণ্য করেছেন, তা হল এই ((أَنْ تَقْتُلَ وَلَدَكَ خَشْيَةَ أَنْ يَطْعَمَ مَعَكَ)) ‘‘তোমার নিজ সন্তানকে এই ভয়ে হত্যা করা যে, সে তোমার সাথে খাবে।’’ (বুখারীঃ তাফসীর সূরা বাকারা, আদব অধ্যায়, মুসলিমঃ তাওহীদ অধ্যায়) ইদানীং সন্তান হত্যার এই মহাপাপ অতীব সুশৃঙ্খল নিয়মে ‘জন্মনিয়ন্ত্রণ’-এর সুন্দর নামে সারা পৃথিবীতে চলছে। পুরুষরা ‘উত্তম শিক্ষা ও তরবিয়ত’ (বা ‘ছোট পরিবার, সুখী সংসার’) এর নামে এবং মহিলারা তাদের দেহের ‘সুষমা’ অক্ষয় রাখার জন্য ব্যাপকহারে (‘আমরা দুই আমাদের দুই’ শ্লোগান দিয়ে) এই অপরাধ করে চলেছে। أَعَاذَنَا اللهُ مِنْهُ।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান