যেমন, আপনি হয়ত ২ নং সূরার ২০ নং আয়াত এবং ১০ নং সূরার ৫ নং আয়াত এভাবে একসাথে আরো অন্য সূরার অন্য আয়াত সার্চ করতে চাইছেন, সেক্ষেত্রে আপনাকে উপরের সার্চ বক্সে
২:২০, ১০:৫ এভাবে অথবা ২/২০, ১০/৫ এভাবে লিখে সার্চ করতে হবে।
আপনি সূরা ও আয়াত নং বাংলা অথবা ইংরেজিতে লিখতে পারেন।
বল, ‘নিশ্চয় আমার সালাত, আমার কুরবানী, আমার জীবন ও আমার মৃত্যু আল্লাহর জন্য, যিনি সকল সৃষ্টির রব’। আল-বায়ান
বল, আমার নামায, আমার যাবতীয় ‘ইবাদাত, আমার জীবন, আমার মরণ (সব কিছুই) বিশ্বজগতের প্রতিপালক আল্লাহর জন্যই (নিবেদিত)। তাইসিরুল
তুমি বলে দাওঃ আমার সালাত, আমার কুরবানী, আমার জীবন ও আমার মরণ সব কিছু সারা জাহানের রাব্ব আল্লাহর জন্য। মুজিবুর রহমান
Say, "Indeed, my prayer, my rites of sacrifice, my living and my dying are for Allah, Lord of the worlds. Sahih International
১৬২. বলুন, আমার সালাত, আমার কুরবানী, আমার জীবন ও আমার মরণ সৃষ্টিকুলের রব আল্লাহরই জন্য।(১)
(১) এখানে نسك শব্দের অর্থ কুরবানী। হজের ক্রিয়াকর্মকেও نسك বলা হয়। মুজাহিদ বলেন, نسك বলতে সে প্রাণীকে বুঝায় যা হজ বা উমরাতে যবেহ করা হয়। [তাবারী] তবে এ শব্দটি সাধারণ ইবাদাত-উপাসনার অর্থেও ব্যবহৃত হয়। তাই ناسك শব্দটি عابد বা ইবাদাতকারী অর্থেও বলা হয়। [কুরতুবী] আয়াতে এ সবকটি অর্থই নেয়া যেতে পারে। মুফাসসিরীন সাহাবা ও তাবেয়ীগণের কাছ থেকেও এসব তাফসীর বর্ণিত রয়েছে। তবে এখানে সাধারণ ইবাদাত অর্থ নেয়াই অধিক সঙ্গত মনে হয়। আয়াতের অর্থ এই যে, আমার সালাত, আমার সমগ্র ইবাদাত, আমার জীবন, আমার মরণ- সবই বিশ্ব-প্রতিপালক আল্লাহর জন্য নিবেদিত। এখানে দ্বীনের শাখাগত কাজকর্মের মধ্যে প্রথমে সালাতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। কেননা, এটি যাবতীয় সৎকর্মের প্রাণ ও দ্বীনের স্তম্ভ। এরপর অন্যান্য সব কাজ ও ইবাদাত সংক্ষেপে উল্লেখ করা হয়েছে। অতঃপর সমগ্র জীবনের কাজকর্ম ও অবস্থা এবং সবশেষে মরণের কথা উল্লেখ করে বলা হয়েছে যে, আমার এ সবকিছুই একমাত্র বিশ্ব-প্রতিপালক আল্লাহর জন্য নিবেদিত- যার কোন শরীক নেই। এটিই হচ্ছে পূর্ণ বিশ্বাস ও পূর্ণ আন্তরিকতার ফল। মানুষ জীবনের প্রতিটি কাজে ও প্রতিটি অবস্থায় এ কথা মনে রাখবে যে, আমার এবং সমগ্র বিশ্বের একজন পালনকর্তা আছেন, আমি তার দাস এবং সর্বদা তার দৃষ্টিতে রয়েছি।
তাফসীরে জাকারিয়া(১৬২) বল, ‘নিশ্চয়ই আমার নামায, আমার উপাসনা (কুরবানী), আমার জীবন ও আমার মরণ, বিশ্ব-জগতের প্রতিপালক আল্লাহরই জন্য।
-
তাফসীরে আহসানুল বায়ান‘তাঁর কোন শরীক নেই এবং আমাকে এরই নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। আর আমি মুসলমানদের মধ্যে প্রথম’। আল-বায়ান
তাঁর কোন শরীক নেই, আমাকে এরই নির্দেশ দেয়া হয়েছে আর আমিই সর্বপ্রথম আত্মসমর্পণকারী। তাইসিরুল
তাঁর কোন শরীক নেই, আমি এর জন্য আদিষ্ট হয়েছি, আর মুসলিমদের মধ্যে আমিই হলাম প্রথম। মুজিবুর রহমান
No partner has He. And this I have been commanded, and I am the first [among you] of the Muslims." Sahih International
১৬৩. তার কোন শরীক নেই। আর আমাকে এরই নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে(১) এবং আমি মুসলিমদের মধ্যে প্রথম।
(১) অর্থাৎ আমাকে আল্লাহ তা'আলার পক্ষ থেকে এরূপ ঘোষণা করার এবং আন্তরিকতা অবলম্বন করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আর আমি সর্বপ্রথম অনুগত মুসলিম। উদ্দেশ্য এই যে, এ উম্মতের মধ্যে সর্বপ্রথম মুসলিম আমি। [আত-তাফসীরুস সহীহ] কেননা, প্রত্যেক উম্মতের সর্বপ্রথম মুসলিম স্বয়ং ঐ নবীই হন, যার প্রতি ওহী নাযিল করা হয়। আর প্রত্যেক নবীর দ্বীনই ছিল ইসলাম। [ইবন কাসীর]
তাফসীরে জাকারিয়া(১৬৩) তাঁর কোন অংশী নেই এবং আমি এ সম্বন্ধেই আদিষ্ট হয়েছি। আর আত্মসমর্পণকারী (মুসলিম)দের মধ্যে আমিই প্রথম।’ [1]
[1] তাওহীদে উলূহিয়্যাত তথা আল্লাহর একত্বতার দাওয়াত সকল নবীরা দিয়েছেন। এখানেও শেষ নবীর পবিত্র জবান দ্বারা ঘোষণা করানো হচ্ছে যে, ‘‘আমাকে এরই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং আমি আত্মসমর্পণকারী মুসলিমদের প্রথম।’’ অন্যত্র মহান আল্লাহ বলেন, ‘‘তোমার পূর্বে যে রসূলই আমি প্রেরণ করেছি, তাঁকে এই আদেশই করেছি যে, আমি ব্যতীত কোন সত্য উপাস্য নেই। অতএব, তোমরা আমারই ইবাদত কর।’’ (সূরা আম্বিয়াঃ ২৫) নূহ (আঃ)ও এই ঘোষণা দিয়েছেন, {وَأُمِرْتُ أَنْ أَكُونَ مِنَ الْمُسْلِمِينَ} অর্থাৎ, আমাকে হুকুম করা হয়েছে যে, আমি যেন আত্মসমর্পণকারী (মুসলিম)-দের অন্তর্ভুক্ত থাকি. (সূরা ইউনুস ৭২) ইবরাহীম (আঃ) সম্পর্কে এসেছে যে, যখন আল্লাহ তাআলা তাঁকে বললেন, أَسْلِمْ (আত্মসমর্পণ কর।), তখন তিনি বললেন, {أَسْلَمْتُ لِرَبِّ الْعَالَمِيْنَ} বিশ্ব-জগতের প্রতিপালকের কাছে আমি আত্মসমর্পণ করলাম।’’ (সূরা বাক্বারাহ ১৩১) ইবরাহীম এবং ইয়াকূব عليهما السلام তাঁদের সন্তানদের অসিয়ত করেছিলেন, {فَلاَ تَمُوْتُنَّ إِلاَّ وَأَنْتُمْ مُّسْلِمُوْنَ} অর্থাৎ, আত্মসমর্পণকারী (মুসলিম) না হয়ে তোমরা অবশ্যই মৃত্যুবরণ করো না। (সূরা বাক্বারাহ ১৩২) ইউসুফ (আঃ) দু’আ করেছিলেন, {تَوَفَّنِيْ مُسْلِمًا} অর্থাৎ, তুমি আমাকে আত্মসমর্পণকারী (মুসলিম) হিসাবে মৃত্যু দান করো। (সূরা ইউসুফ ১০১) মূসা (আঃ) তাঁর জাতিকে বলেছিলেন, {فَعَلَيْهِ تَوَكَّلُوْا إِنْ كُنْتُمْ مُّسْلِمِيْنَ} অর্থাৎ, তাঁরই উপর ভরসা কর; যদি তোমরা মুসলিম হও। (সূরা ইউনুস ৮৪) ঈসা (আঃ)-এর সহচররা বলেছিলেন, {وَاشْهَدْ بِأَنَّنَا مُسْلِمُوْنَ} অর্থাৎ, তুমি সাক্ষী থাক যে, আমরা আত্মসমর্পণকারী (মুসলিম)। (সূরা মাইদাহ ১১১) এইভাবে সকল নবী ও তাঁদের নিষ্ঠাবান অনুসারীরা এই ইসলামকেই গ্রহণ করেছিল, যাতে তাওহীদে উলূহিয়্যাতই ছিল মৌলিক বিষয়, যদিও কোন কোন বিধি-বিধান একে অপর থেকে ভিন্ন ছিল।
তাফসীরে আহসানুল বায়ানবল, ‘আমি কি আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন রব অনুসন্ধান করব’ অথচ তিনি সব কিছুর রব’? আর প্রতিটি ব্যক্তি যা অর্জন করে, তা শুধু তারই উপর বর্তায় আর কোন ভারবহনকারী অন্যের ভার বহন করবে না। অতঃপর তোমাদের রবের নিকটই তোমাদের প্রত্যাবর্তনস্থল। সুতরাং তিনি তোমাদেরকে সেই সংবাদ দেবেন, যাতে তোমরা মতবিরোধ করতে। আল-বায়ান
আমি কি আল্লাহকে ছেড়ে অন্য প্রতিপালক তালাশ করব? (অথচ প্রকৃতপক্ষে) তিনিই সব কিছুর প্রতিপালক। প্রত্যেক ব্যক্তি যা অর্জন করে তার জন্য সে নিজেই দায়ী হবে। কোন ভারবহনকারীই অন্যের গুনাহের ভার বহন করবে না। অবশেষে তোমাদের প্রত্যাবর্তন স্থল তোমাদের প্রতিপালকের নিকটেই, তখন তিনি তোমাদেরকে জানিয়ে দেবেন যে সকল বিষয়ে তোমরা মতভেদে লিপ্ত ছিলে (সে সব বিষয়ে প্রকৃত সত্য কোনটি)। তাইসিরুল
তুমি জিজ্ঞেস করঃ আমি কি আল্লাহকে বাদ দিয়ে অন্য রবের সন্ধান করব? অথচ তিনিই হচ্ছেন প্রতিটি বস্তুর রাব্ব! প্রত্যেক ব্যক্তিই স্বীয় কৃতকর্মের জন্য দায়ী হবে, কেহ কারও কোন বোঝা বহন করবেনা, পরিশেষে তোমাদের রবের নিকট তোমাদের প্রত্যাবর্তন করতে হবে, অতঃপর তিনি তোমরা যে বিষয়ে মতবিরোধ করেছিলে সে বিষয়ের মূল তত্ত্ব তোমাদেরকে অবহিত করবেন। মুজিবুর রহমান
Say, "Is it other than Allah I should desire as a lord while He is the Lord of all things? And every soul earns not [blame] except against itself, and no bearer of burdens will bear the burden of another. Then to your Lord is your return, and He will inform you concerning that over which you used to differ." Sahih International
১৬৪. বলুন, আমি কি আল্লাহকে ছেড়ে অন্যকে রব খুজব? অথচ তিনিই সবকিছুর রব। প্রত্যেকে নিজ নিজ কৃতকর্মের জন্য দায়ী এবং কেউ অন্য কারো ভার গ্রহণ করবে না। তারপর তোমাদের প্রত্যাবর্তন তোমাদের রব-এর দিকেই, অতঃপর যে বিষয়ে তোমরা মতভেদ করতে, তা তিনি তোমাদেরকে অবহিত করবেন।
-
তাফসীরে জাকারিয়া(১৬৪) বল, ‘আমি কি আল্লাহকে ছেড়ে অন্য প্রতিপালককে অন্বেষণ করব? অথচ তিনিই সব কিছুর প্রতিপালক।[1] প্রত্যেকেই স্বীয় কৃতকর্মের জন্য দায়ী হবে এবং কেউ অন্য কারো ভার বহন করবে না।[2] অতঃপর তোমাদের প্রতিপালকের নিকটেই তোমাদের প্রত্যাবর্তন হবে, তারপর যে বিষয়ে তোমরা মতান্তর ঘটিয়েছিলে তা তিনি তোমাদেরকে অবহিত করবেন।’[3]
[1] এখানে রব্ব বা প্রতিপালক বলতে সেই উলূহিয়্যাতের কথা স্বীকার করা, যা মুশরিকরা অস্বীকার করত এবং যা তাঁর রুবূবিয়্যাত দাবী করে। মুশরিকরা তাঁর রুবূবিয়্যাতকে তো মানত, এতে কাউকে শরীকও করত না, কিন্তু তাঁর উলূহিয়্যাতে শরীক করত। (অর্থাৎ, তারা মহান আল্লাহকে শরীকবিহীন প্রতিপালক বলে মানত, কিন্তু শরীকবিহীন অদ্বিতীয় উপাস্য বলে মানত না।)
[2] অর্থাৎ, মহান আল্লাহ পরিপূর্ণরূপে ন্যায় ও সুবিচার প্রতিষ্ঠা করবেন। ভাল ও মন্দ যে যা-ই করবে, সে সেই অনুযায়ী প্রতিদান ও শাস্তি পাবে। সৎকাজের উত্তম প্রতিদান এবং অন্যায়ের জন্য শাস্তি দেবেন। আর একের বোঝা অন্যের উপর চাপাবেন না।
[3] কাজেই তোমরা যদি তাওহীদের এই দাওয়াতকে না মানো, যে দাওয়াতে সকল নবীরা শরীক ছিলেন, তবে তোমরা তোমাদের কাজ করে যাও, আর আমরাও আমাদের কাজ করে যাই, কিয়ামতের দিন আল্লাহর সমীপে আমাদের ও তোমাদের মাঝে ফায়সালা হবে।
তাফসীরে আহসানুল বায়ানআর তিনি সে সত্তা, যিনি তোমাদেরকে যমীনের খলীফা বানিয়েছেন এবং তোমাদের কতককে কতকের উপর মর্যাদা দিয়েছেন, যাতে তিনি তোমাদেরকে যা প্রদান করেছেন, তাতে তোমাদেরকে পরীক্ষা করেন। নিশ্চয় তোমার রব দ্রুত শাস্তিদানকারী এবং নিশ্চয় তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। আল-বায়ান
তিনিই তোমাদেরকে পৃথিবীতে পরস্পরের স্থলাভিষিক্ত বানিয়েছেন, মর্যাদায় তোমাদের কতককে কতকের উপরে স্থান দিয়েছেন, আমি তোমাদেরকে যা দিয়েছি ওগুলোর মাধ্যমে তোমাদেরকে পরীক্ষা করার জন্য, তোমার রবব তো শাস্তি দানে দ্রুত (ব্যবস্থা গ্রহণ করেন) আর তিনি অবশ্যই বড়ই ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। তাইসিরুল
আর তিনি এমন, যিনি তোমাদেরকে দুনিয়ার প্রতিনিধি করেছেন এবং তোমাদের কতককে কতকের উপর মর্যাদায় উন্নীত করেছেন, উদ্দেশ্য হল তোমাদেরকে তিনি যা কিছু দিয়েছেন তাতে তোমাদেরকে পরীক্ষা করা। নিঃসন্দেহে তোমার রাব্ব ত্বরিত শাস্তিদাতা, আর নিঃসন্দেহে তিনি ক্ষমাশীল ও কৃপানিধান। মুজিবুর রহমান
And it is He who has made you successors upon the earth and has raised some of you above others in degrees [of rank] that He may try you through what He has given you. Indeed, your Lord is swift in penalty; but indeed, He is Forgiving and Merciful. Sahih International
১৬৫. তিনিই তোমাদেরকে যমীনের খলীফা বানিয়েছেন(১) এবং যা তিনি তোমাদেরকে দিয়েছেন সে সম্বন্ধে পরীক্ষার উদ্দেশ্যে তোমাদের কিছু সংখ্যককে কিছু সংখ্যকের উপর মর্যাদায় উন্নীত করেছেন। নিশ্চয় আপনার রব দ্রুত শাস্তি প্রদানকারী এবং নিশ্চয় তিনি ক্ষমাশীল, দয়াময়।(২)
(১) এখানে খলীফা অর্থ স্থলাভিষিক্ত করা। অর্থাৎ এক প্রজন্মের উপর অপর প্রজন্মকে তাদের জায়গায় স্থান দিয়েছেন। কখনও কখনও এক জাতিকে ধ্বংস করে অপর জাতিকে তাদের স্থলাভিষিক্ত করেছেন। [আত-তাফসীরুস সহীহ]
(২) হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “মুমিন যদি জানত, আল্লাহ্র কাছে শাস্তির পরিমাণ কতখানি, তাহলে কেউই তাঁর জান্নাতের লোভ করত না। আর কাফের যদি জানত, আল্লাহর কাছে ক্ষমা কতখানি, তাহলে কেউই তার রহমত থেকে নিরাশ হতো না।” [মুসলিম: ২৭৫৫]
তাফসীরে জাকারিয়া(১৬৫) তিনিই তোমাদেরকে পৃথিবীর প্রতিনিধি করেছেন[1] এবং যা তিনি তোমাদেরকে দিয়েছেন, সে সম্বন্ধে পরীক্ষার উদ্দেশ্য তোমাদের কিছুকে অপরের উপর মর্যাদায় উন্নত করেছেন।[2] নিশ্চয় তোমার প্রতিপালক সত্বর শাস্তিদাতা এবং তিনি চরম ক্ষমাশীল, পরম দয়াময়।
[1] অর্থাৎ, শাসক বানিয়ে কর্তৃত্ব দানে ধন্য করেছেন। অথবা একের পর অন্যকে তার উত্তরাধিকারী, স্থলাভিষিক্ত (খলীফা) বানিয়েছেন।
[2] অর্থাৎ, দরিদ্রতা-ধনাঢ্যতা, জ্ঞান-অজ্ঞতা এবং সুস্থতা-অসুস্থতা যাকে যা কিছু দিয়েছেন, তাতেই তার জন্য রয়েছে পরীক্ষা।
তাফসীরে আহসানুল বায়ানআলিফ-লাম-মীম-সাদ। আল-বায়ান
আলিফ, লাম, মীম, সাদ। তাইসিরুল
আলিফ লাম-মিম-সাদ। মুজিবুর রহমান
Alif, Lam, Meem, Sad. Sahih International
১. আলিফ, লাম, মীম, সাদ।(১)
(১) এ হরফগুলোকে ‘হুরুফে মুকাত্তা'আত’ বলে। এ সম্পর্কে সূরা আল-বাকারার প্রথমে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
তাফসীরে জাকারিয়া(১) আলিফ লা-ম মী-ম স্বা-দ।
-
তাফসীরে আহসানুল বায়ানএটি কিতাব, যা তোমার প্রতি নাযিল করা হয়েছে। সুতরাং তার সম্পর্কে তোমার মনে যেন কোন সংকীর্ণতা না থাকে। যাতে তুমি তার মাধ্যমে সতর্ক করতে পার এবং তা মুমিনদের জন্য উপদেশ। আল-বায়ান
এটি একটি কিতাব যা তোমার উপর নাযিল করা হয়েছে, এ ব্যাপারে তোমার অন্তরে যেন কোন প্রকার কুণ্ঠাবোধ না হয়, (এটা নাযিল করা হয়েছে অমান্যকারীদেরকে) এর দ্বারা ভয় প্রদর্শনের জন্য এবং মু’মিনদেরকে উপদেশ প্রদানের জন্য। তাইসিরুল
এ একটি কিতাব যা তোমার উপর অবতীর্ণ করা হয়েছে, সুতরাং তোমার অন্তরে যেন মোটেই সংকীর্ণতা না আসে। আর মু’মিনদের জন্য এটা উপদেশ। মুজিবুর রহমান
[This is] a Book revealed to you, [O Muhammad] - so let there not be in your breast distress therefrom - that you may warn thereby and as a reminder to the believers. Sahih International
২. এ কিতাব(১) আপনার প্রতি নাযিল করা হয়েছে, সুতরাং আপনার মনে যেন এ সম্পর্কে কোন সন্দেহ(২) না থাকে। যাতে আপনি এর দ্বারা সতর্ক করতে পারেন।(৩) আর তা মুমিনদের জন্য উপদেশ।
(১) কিতাব বলতে এখানে কি বোঝানো হয়েছে এ ব্যাপারে সবচেয়ে স্বচ্ছমত হল- পবিত্র কুরআনকেই বুঝানো হয়েছে। [বাগভী] কারো কারো মতে এখানে শুধু এ সূরার প্রতিই ইঙ্গিত করা হয়েছে। [আত-তাহরীর ওয়াত তানওয়ীর]
(২) হারাজ হবার মানে হচ্ছে এই যে, বিরোধিতা ও বাধা-বিপত্তির মধ্য দিয়ে নিজের পথ পরিষ্কার না দেখে মানুষের মন সামনে এগিয়ে চলতে পারে না; থেমে যায়। তাই মুজাহিদ রাহিমাহুল্লাহ বলেন, এখানে ‘হারাজ’ বলে ‘সন্দেহ' বুঝানো হয়েছে। [আত-তাফসীরুস সহীহ] কুরআন মাজীদের বিভিন্ন স্থানে এ বিষয়বস্তুকে ‘দাইকে সদর’ শব্দের মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়েছে। যেমন, সূরা আল-হিজরঃ ৯৭, সূরা আন-নাহলঃ ১২৭, সূরা আন-নামলঃ ৭০, সূরা হুদঃ ১২।
(৩) এ আয়াতে কাদেরকে সতর্ক করতে হবে তা বলা হয়নি। অন্য আয়াতে তা বর্ণিত হয়েছে, আল্লাহ বলেন, “এবং বিতণ্ডাপ্রিয় সম্প্রদায়কে তা দ্বারা সতর্ক করতে পারেন।” [মারইয়াম: ৯৭] আরও বলেন, “বস্তুত এটা আপনার রব-এর কাছ থেকে দয়াস্বরূপ, যাতে আপনি এমন এক কওমকে সতর্ক করতে পারেন, যাদের কাছে আপনার আগে কোন সতর্ককারী আসেনি, যেন তারা উপদেশ গ্রহণ করে। [আল-কাসাস: ৪৬] আরও বলেন, “বরং তা আপনার রব হতে আগত সত্য, যাতে আপনি এমন এক সম্প্রদায়কে সতর্ক করতে পারেন, যাদের কাছে আপনার আগে কোন সতর্ককারী আসেনি, হয়তো তারা হিদায়াত লাভ করবে। [সূরা আস-সাজদাহ: ৩] অনুরূপভাবে এ আয়াতে কিসের থেকে সতর্ক করতে হবে তাও বলা হয়নি। অন্যত্র তা বলে দেয়া হয়েছে, যেমন, “তার কঠিন শাস্তি সম্পর্কে সতর্ক করার জন্য।” [সূরা আল-কাহাফ: ২] “অতঃপর আমি তোমাদেরকে লেলিহান আগুন সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়েছি [সূরা আল-লাইল: ১৪] এ আয়াতে ভীতিপ্রদর্শন এবং সুসংবাদ প্রদান একসাথে বর্ণনা করা হয়েছে। এখানে ভীতিপ্রদর্শন কাফেরদের জন্য আর সুসংবাদ মুমিনদের জন্য। [আদওয়াউল বায়ান]
তাফসীরে জাকারিয়া(২) তোমার নিকট কিতাব অবতীর্ণ করা হয়েছে; সুতরাং তোমার মনে যেন এর সম্পর্কে কোন প্রকার সংকীর্ণতা না থাকে।[1] যাতে তুমি এর দ্বারা সতর্ক কর এবং বিশ্বাসীদের জন্য এটি উপদেশ।
[1] অর্থাৎ, এর প্রচারের ব্যাপারে তোমার অন্তরে এই মনে করে যেন সংকীর্ণতা সৃষ্টি না হয় যে, হয়তো কাফেররা আমাকে মিথ্যাবাদী ভাববে, আমাকে কষ্ট দেবে। কারণ, মহান আল্লাহই হলেন তোমার রক্ষাকর্তা ও সাহায্যকারী। অথবা حَرَج অর্থ, সন্দেহ। অর্থাৎ, এটা যে আল্লাহ কর্তৃক অবতীর্ণ করা হয়েছে -এ ব্যাপারে যেন তুমি তোমার অন্তরে সন্দেহ অনুভব না কর। এখানে নিষেধ-সূচক বাক্য দিয়ে নবীকে সম্বোধন করা হলেও প্রকৃতার্থে সম্বোধন করা হয়েছে উম্মতকে। অর্থাৎ, তারা যেন সন্দেহ না করে।
তাফসীরে আহসানুল বায়ানতোমাদের প্রতি তোমাদের রবের পক্ষ থেকে যা নাযিল করা হয়েছে, তা অনুসরণ কর এবং তাকে ছাড়া অন্য অভিভাবকের অনুসরণ করো না। তোমরা সামান্যই উপদেশ গ্রহণ কর। আল-বায়ান
তোমাদের প্রতিপালকের নিকট হতে তোমাদের প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে তোমরা তা মান্য করে চল, তাঁকে ছাড়া (অন্যদের) অভিভাবক মান্য করো না, তোমরা খুব সামান্য উপদেশই গ্রহণ কর। তাইসিরুল
তোমার রবের পক্ষ থেকে যা তোমার প্রতি নাযিল করা হয়েছে তুমি তা অনুসরণ কর এবং আল্লাহকে বাদ দিয়ে অন্যদেরকে অভিভাবক অথবা সাহায্যকারী হিসাবে গ্রহণ করনা। তোমরা খুব অল্পই উপদেশ গ্রহণ করে থাকো। মুজিবুর রহমান
Follow, [O mankind], what has been revealed to you from your Lord and do not follow other than Him any allies. Little do you remember. Sahih International
৩. তোমাদের রবের পক্ষ থেকে তোমাদের কাছে যা নাযিল করা হয়েছে, তোমরা তার অনুসরণ কর এবং তাকে ছাড়া অন্য কাউকে অভিভাবকরূপে অনুসরণ করো না। তোমরা খুব অল্পই উপদেশ গ্রহণ কর।(১)
(১) অর্থাৎ একমাত্র আল্লাহ রাব্বুল আলামীনকেই নিজের পথ প্রদর্শক হিসেবে মেনে নিতে হবে এবং আল্লাহ তার রাসূলদের মাধ্যমে যে হিদায়াত ও পথ-নির্দেশনা দিয়েছেন একমাত্র তারই অনুসরণ করতে হবে। যারাই আল্লাহকে বাদ দিয়ে এবং আল্লাহর পাঠানো নবীর আদর্শ অনুসরণ না করে অন্যের কাছ থেকে কিছু নিতে চেষ্টা করবে, তারাই আল্লাহর হুকুমকে বাদ দিয়ে অন্যের হুকুম গ্রহণ করল। [ইবন কাসীর]
তাফসীরে জাকারিয়া(৩) তোমাদের প্রতিপালকের নিকট থেকে যা অবতীর্ণ করা হয়েছে, তোমরা তার অনুসরণ কর[1] এবং তাঁকে ছাড়া অন্যদেরকে অভিভাবকরূপে অনুসরণ করো না। তোমরা খুব অল্পই উপদেশ গ্রহণ করে থাক।
[1] যা আল্লাহ কর্তৃক অবতীর্ণ করা হয়েছে অর্থাৎ, কুরআন এবং যা রসূল (সাঃ) বলেছেন অর্থাৎ, হাদীস। কেননা, তিনি (সাঃ) বলেছেন, ‘‘আমাকে কুরআন এবং তারই মত তার সাথে (আরো একটি জিনিস) দেওয়া হয়েছে।’’ এই উভয়েরই অনুসরণ করা অত্যাবশ্যক। এ ছাড়া আর কারো অনুসরণ করা চলবে না, বরং তা অস্বীকার করা জরুরী। যেমন, পরবর্তী অংশে বলেন, ‘‘আর তাঁকে বাদ দিয়ে (মনগড়া) অভিভাবকদের অনুসরণ করো না।’’ যেমন, জাহেলী যুগে সর্দার, জ্যোতিষী ও গণকদের কথার বড়ই গুরুত্ব দেওয়া হত, এমন কি হালাল ও হারাম করার ব্যাপারেও তাদেরকেই দলীল মানা হত।
তাফসীরে আহসানুল বায়ানআর এমন বহু জনবসতি রয়েছে, যা আমি ধ্বংস করে দিয়েছি। বস্তুত সেখানে আমার আযাব এসেছে রাতে, কিংবা যখন তারা দ্বিপ্রহরে বিশ্রামরত ছিল। আল-বায়ান
আমি কত জনপদকে ধ্বংস করে দিয়েছি। আমার শাস্তি তাদের নিকট এসেছিল হঠাৎ রাত্রিবেলা কিংবা দুপুর বেলা তারা যখন বিশ্রাম নিচ্ছিল। তাইসিরুল
কত জনপদকেই না আমি ধ্বংস করেছি! আমার শাস্তি তাদের উপর রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় অথবা দ্বিপ্রহরে যখন তারা বিশ্রামরত ছিল তখনই আপতিত হয়েছে। মুজিবুর রহমান
And how many cities have We destroyed, and Our punishment came to them at night or while they were sleeping at noon. Sahih International
৪. আর এমন বহু জনপদ রয়েছে, যা আমরা ধ্বংস করে দিয়েছি। তখনই আমাদের শাস্তি তাদের উপর আপতিত হয়েছিল রাতে অথবা দুপুরে যখন তারা বিশ্রাম করছিল।(১)
(১) পূর্ববর্তী লোকদের উপর রাতে বা দুপুরে যে শাস্তি এসেছিল তার বর্ণনা দিয়ে আল্লাহ তা'আলা মানুষদেরকে সতর্ক করছেন। অন্য আয়াতেও বলা হয়েছে, “তবে কি জনপদের অধিবাসীরা নিরাপদ হয়ে গেছে যে, আমাদের শাস্তি তাদের উপর রাতে আসবে, যখন তারা থাকবে গভীর ঘুমে? নাকি জনপদের অধিবাসীরা নিরাপদ হয়ে গেছে যে, আমাদের শাস্তি তাদের উপর আসবে দিনের বেলা, যখন তারা খেলাধুলায় মেতে থাকবে?” [সূরা আল-আরাফ: ৯৭–৯৮] আরও বলেন, “বলুন, তোমরা আমাকে জানাও, যদি তার শাস্তি তোমাদের উপর রাতে অথবা দিনে এসে পড়ে, তবে অপরাধীরা তার কোনটিকে তাড়াতাড়ি পেতে চায়। [সূরা ইউনুস: ৫০]
বিশেষ করে যারাই খারাপ কুটকৌশল ও ষড়যন্ত্র করেছে তাদের পরিণতি যে কি ভয়াবহ হতে পারে সে ব্যাপারেও অন্যত্র আল্লাহ সাবধান করেছেন, “যারা কুকর্মের ষড়যন্ত্র করে তারা কি এ বিষয়ে নির্ভয় হয়েছে যে, আল্লাহ তাদেরকে ভূগর্ভে বিলীন করবেন না অথবা তাদের উপর আসবে না শাস্তি এমনভাবে যে, তারা উপলব্ধিও করবে না? অথবা চলাফেরা করতে থাকাকালে তিনি তাদেরকে পাকড়াও করবেন না? অতঃপর তারা তা ব্যর্থ করতে পারবে না। অথবা তাদেরকে তিনি ভীত-সন্ত্রস্ত অবস্থায় পাকড়াও করবেন না? নিশ্চয় তোমাদের রব অতি দয়ার্দ্র, পরম দয়ালু।” [আন-নাহ্ল: ৪৫–৪৬]
তাফসীরে জাকারিয়া(৪) কত জনপদকে আমি ধ্বংস করেছি! আমার শাস্তি তাদের উপর আপতিত হয়েছিল রাত্রিতে অথবা দ্বিপ্রহরে যখন তারা বিশ্রামরত ছিল। [1]
[1] قَائِلُوْنَ শব্দটি قَيْلُوْلَةٌ থেকে গঠিত। দুপুরের সময় বিশ্রাম করাকে বলা হয়। অর্থ হল, আমার আযাব হঠাৎ করে এমন সময় এল, যখন তারা বিশ্রামের জন্য বিছানায় বেখবর অবস্থায় তৃপ্তিকর নিদ্রায় বিভোর ছিল।
তাফসীরে আহসানুল বায়ানসুতরাং যখন তাদের নিকট আমার আযাব এসেছে, তখন তাদের দাবী কেবল এই ছিল যে, তারা বলল, ‘নিশ্চয় আমরা যালিম ছিলাম’। আল-বায়ান
আমার শাস্তি যখন তাদের উপর এসেছিল তখন এ কথা বলা ছাড়া তারা আর কোন ধ্বনি উচ্চারণ করতে পারেনি যে, ‘‘অবশ্যই আমরা যালিম ছিলাম’’। তাইসিরুল
আমার শাস্তি যখন তাদের কাছে এসে পড়েছিল তখন তাদের মুখে ‘‘বাস্তবিকই আমরা অত্যাচারী ছিলাম’’ এ কথা ছাড়া আর কিছুই ছিলনা। মুজিবুর রহমান
And their declaration when Our punishment came to them was only that they said, "Indeed, we were wrongdoers!" Sahih International
৫. অতঃপর যখন আমাদের শাস্তি তাদের উপর আপতিত হয়েছিল, তখন তাদের দাবী শুধু এই ছিল যে, তারা বলল, নিশ্চয় আমরা যালিম ছিলাম।(১)
(১) অন্য আয়াতেও আল্লাহ তা’আলা তাদের এ অবস্থার কথা বর্ণনা করেছেন। আল্লাহ বলেন, “আর আমরা ধ্বংস করেছি বহু জনপদ, যার অধিবাসীরা ছিল যালেম এবং তাদের পরে সৃষ্টি করেছি অন্য জাতি। তারপর যখন তারা আমাদের শাস্তি টের পেল তখনই তারা সেখান থেকে পালাতে লাগল। ‘পালিয়ে যেও না এবং ফিরে এসো যেখানে তোমরা বিলাসিতায় মত্ত ছিলে ও তোমাদের আবাসগৃহে, যাতে এ বিষয়ে তোমাদেরকে জিজ্ঞেস করা হয়।” [সূরা আল-আম্বিয়া ১১-১৩]
তাফসীরে জাকারিয়া(৫) যখন আমার শাস্তি তাদের উপর আপতিত হয়েছিল, তখন তাদের কথা শুধু এটিই ছিল যে, নিশ্চয় আমরা সীমালংঘন করেছি। [1]
[1] কিন্তু আযাব এসে যাওয়ার পর এই ধরনের স্বীকারোক্তির কোনই লাভ নেই। যেমন, পূর্বেও এ কথা উল্লিখিত হয়েছে।{فَلَمْ يَكُ يَنْفَعُهُمْ إِيمَانُهُمْ لَمَّا رَأَوْا بَأْسَنَا} অর্থাৎ, যখন তারা আমার শাস্তি প্রত্যক্ষ করল, তখন তাদের ঈমান কোন উপকারে আসল না। (সূরা মু’মিনঃ ৮৫)
তাফসীরে আহসানুল বায়ানসুতরাং আমি অবশ্যই তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করব যাদের নিকট রাসূল প্রেরিত হয়েছিল এবং অবশ্যই আমি প্রেরিতদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করব। আল-বায়ান
অতঃপর যাদের নিকট রসূল পাঠানো হয়েছিল আমি অবশ্যই তাদেরকে জিজ্ঞেস করব আর রসূলগণকেও (আল্লাহর বাণী পৌঁছে দেয়া সম্পর্কে) অবশ্যই জিজ্ঞেস করব। তাইসিরুল
অতঃপর আমি (কিয়ামাত দিবসে) যাদের কাছে রাসূল প্রেরণ করা হয়েছিল তাদেরকে এবং রাসূলদেরকেও অবশ্যই জিজ্ঞাসাবাদ করব। মুজিবুর রহমান
Then We will surely question those to whom [a message] was sent, and We will surely question the messengers. Sahih International
৬. অতঃপর যাদের কাছে রাসূল পাঠানো হয়েছিল অবশ্যই তাদেরকে আমরা জিজ্ঞেস করব এবং রাসূলগণকেও অবশ্যই আমরা জিজ্ঞেস করব।(১)
(১) অর্থাৎ কেয়ামতের দিন সর্বসাধারণকে জিজ্ঞেস করা হবে, আমি তোমাদের কাছে রাসূল ও গ্রন্থসমূহ প্রেরণ করেছিলাম, তোমরা তাদের সাথে কিরূপ ব্যবহার করেছিলে? নবীগণকে জিজ্ঞেস করা হবেঃ যেসব বার্তা ও বিধান দিয়ে আমি আপনাদেরকে প্রেরণ করেছিলাম, সেগুলো আপনারা নিজ নিজ উম্মতের কাছে পৌছিয়েছেন কি না? এ আয়াতে রাসূলদেরকে কোন বিষয়ে প্রশ্ন করা হবে এবং প্রেরিত লোকদেরকে কোন বিষয়ে প্রশ্ন করা হবে তা বর্ণনা করা হয়নি। তবে কুরআনের অন্যত্র সেটা বর্ণিত হয়েছে। যেমন প্রথমটি সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, “স্মরণ করুন, যেদিন আল্লাহ রাসূলগণকে একত্র করবেন এবং জিজ্ঞেস করবেন, আপনারা কি উত্তর পেয়েছিলেন? [সূরা আল-মায়িদাহ: ১০৯] আর দ্বিতীয়টি সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, আর সেদিন আল্লাহ এদেরকে ডেকে বলবেন, তোমরা রাসূলগণকে কী জবাব দিয়েছিলে? [সূরা আল-কাসাস: ৬৫] অন্যত্র আল্লাহ বলেন যে, তিনি মানুষদেরকে তাদের আমল সম্পর্কে জিজ্ঞেস করবেন, “কাজেই শপথ আপনার রবের! অবশ্যই আমরা তাদের সবাইকে প্রশ্ন করবই, সে বিষয়ে, যা তারা আমল করত। [সূরা আল-হিজর: ৯২–৯৩]
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিদায় হজের ভাষণে উপস্থিত জনতাকে প্রশ্ন করেছিলেনঃ কেয়ামতের দিন আমার সম্পর্কে তোমাদেরকে জিজ্ঞেস করা হবে যে, আমি আল্লাহর বাণী পৌছিয়েছি কি না? তখন তোমরা উত্তরে কি বলবে? সাহাবায়ে কেরাম বললেনঃ আমরা বলব, আপনি আল্লাহর বাণী আমাদের কাছে পৌছিয়ে দিয়েছেন এবং আল্লাহ-প্রদত্ত দায়িত্ব যথাযথ পালন করেছেন। একথা শুনে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে আল্লাহ, আপনি সাক্ষী থাকুন। [মুসলিমঃ ১২১৮]
অপর বর্ণনায় এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কেয়ামতের দিন আল্লাহ্ তা'আলা আমাকে জিজ্ঞেস করবেনঃ আমি তার বাণী তার বান্দাদের কাছে পৌছিয়েছি কি না। আমি উত্তরে বলবঃ পৌছিয়েছি। কাজেই এখানে তোমরা এ বিষয়ে সচেষ্ট হও যে, যারা এখন উপস্থিত রয়েছ, তারা যেন অনুপস্থিতদের কাছে আমার বাণী পৌছে দেয়। [মুসনাদে আহমাদঃ ৫/৪]
তাফসীরে জাকারিয়া(৬) অতঃপর যাদের নিকট রসূল প্রেরণ করা হয়েছিল, তাদেরকে আমি অবশ্যই জিজ্ঞাসা করব এবং অবশ্যই জিজ্ঞাসা করব রসূলগণকেও। [1]
[1] প্রত্যেক উম্মতকেই জিজ্ঞাসা করা হবে যে, ‘তোমাদের কাছে কি আমার পয়গম্বর এসেছিল? তারা কি তোমাদের কাছে আমার বার্তা পৌঁছে দিয়েছিল?’ সেখানে তারা উত্তর দেবে, ‘হ্যাঁ, হে আল্লাহ! পয়গম্বর অবশ্যই আমাদের কাছে এসেছিলেন, কিন্তু আমরাই ছিলাম হতভাগ্য যে, তাঁদের কোন পরোয়া করিনি।’ আর নবীদেরকে জিজ্ঞাসা করা হবে যে, ‘তোমরা আমার বার্তা উম্মতের কাছে পৌঁছে দিয়েছিলে কি না? তারা এর মোকাবেলায় কি আচরণ প্রদর্শন করেছিল?’ নবীরা এ প্রশ্নের উত্তর দেবেন। এর বিশ্লেষণ কুরআন মাজীদের বিভিন্ন স্থানে বিদ্যমান রয়েছে।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান