যেমন, আপনি হয়ত ২ নং সূরার ২০ নং আয়াত এবং ১০ নং সূরার ৫ নং আয়াত এভাবে একসাথে আরো অন্য সূরার অন্য আয়াত সার্চ করতে চাইছেন, সেক্ষেত্রে আপনাকে উপরের সার্চ বক্সে
২:২০, ১০:৫ এভাবে অথবা ২/২০, ১০/৫ এভাবে লিখে সার্চ করতে হবে।
আপনি সূরা ও আয়াত নং বাংলা অথবা ইংরেজিতে লিখতে পারেন।
মুনাফিকদের সুসংবাদ দাও যে, নিশ্চয় তাদের জন্যই রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক আযাব। আল-বায়ান
মুনাফিকদেরকে সুসংবাদ শুনিয়ে দাও যে, তাদের জন্য যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি রয়েছে। তাইসিরুল
মুনাফিকদের সুসংবাদ দাও যে, তাদের জন্য যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি রয়েছে। মুজিবুর রহমান
Give tidings to the hypocrites that there is for them a painful punishment - Sahih International
১৩৮. মুনাফিকদেরকে শুভ সংবাদ দিন যে, তাদের জন্য কষ্টদায়ক শাস্তি রয়েছে।
-
তাফসীরে জাকারিয়া(১৩৮) কপট (মুনাফিক)দেরকে শুভ সংবাদ দাও যে, তাদের জন্য রয়েছে মর্মন্তুদ শাস্তি!
-
তাফসীরে আহসানুল বায়ানযারা মুমিনদের পরিবর্তে কাফিরদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করে, তারা কি তাদের কাছে সম্মান চায়? অথচ যাবতীয় সম্মান আল্লাহর। আল-বায়ান
যারা মু’মিনদেরকে ছেড়ে কাফিরদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করে তারা কি তাদের নিকট ইযযত চায়? ইযযতের সবকিছুই আল্লাহর অধিকারে। তাইসিরুল
যারা মু’মিনদেরকে পরিত্যাগ করে কাফিরদের বন্ধু রূপে গ্রহণ করে, তারা কি তাদের নিকট সম্মান অনুসন্ধান করে? কিন্তু যাবতীয় সম্মানই আল্লাহর। মুজিবুর রহমান
Those who take disbelievers as allies instead of the believers. Do they seek with them honor [through power]? But indeed, honor belongs to Allah entirely. Sahih International
১৩৯. মুমিনগণের পরিবর্তে যারা কাফেরদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করে তারা কি ওদের কাছে ইযযত চায়? সমস্ত ইযযত তো আল্লাহরই।(১)
(১) এ আয়াতে কাফের ও মুশরিকদের সাথে আন্তরিক বন্ধুত্ব ও সৌহার্দ্য স্থাপন করাকে নিষিদ্ধ করে এ ধরণের আচরণে লিপ্ত ব্যক্তিদের প্রতি সতর্কবাণী উচ্চারণ করা হয়েছে। সাথে সাথে এই ব্যাধিতে আক্রান্ত হওয়ার উৎস ও মূল কারণ বর্ণনা করে একেও অযথা অবান্তর প্রতিপন্ন করা হয়েছে এবং বলা হয়েছেঃ “তারা কি ওদের কাছে গিয়ে ইজ্জত-সম্মান লাভ করতে চায়? তবে ইজ্জত-সম্মানতো সম্পূর্ণভাবে আল্লাহরই মালিকানাধীন।” কাফের ও মুশরিকদের সাথে সৌহার্দ্য ও বন্ধুত্বের সম্পর্ক রাখা এবং অন্তরঙ্গ মেলা-মেশার প্রধান কারণ এই যে, তাদের বাহ্যিক মানমর্যাদা, শক্তি-সামর্থ্য, ধনবলে প্রভাবিত হয়ে হীনমন্যতার শিকার হয় এবং মনে করে যে, তাদের সাহায্য-সহযোগিতায় আমাদেরও মানমর্যাদা বৃদ্ধি পাবে।
আল্লাহ্ তাআলা তাদের ভ্রান্ত ধারণা খণ্ডন করে বলেন যে, তারা এমন লোকদের সাহায্যে মর্যাদাবান হওয়ার আকাংখা করছে, যাদের নিজেদেরই সত্যিকারের কোন মর্যাদা নেই। তাছাড়া যে শক্তি ও বিজয়ের মধ্যে সত্যিকারের ইজ্জত ও সম্মান নিহিত, তা তো একমাত্র আল্লাহ্ তা'আলারই মালিকানাধীন। অন্য কারো মধ্যে যখন কোন ক্ষমতা বা সাফল্য পরিদৃষ্ট হয়, তা সবই আল্লাহ প্রদত্ত। অতএব, মানমর্যাদা দানকারী মালিককে অসন্তুষ্ট করে তার শত্রুদের থেকে ইজ্জত হাসিল করার অপচেষ্টা কত বড় বোকামী।
অন্য আয়াতেও আল্লাহ তা'আলা এ ঘোষণা দিয়ে বলেছেন, “আর ইজ্জত-সম্মান একমাত্র আল্লাহ, রাসূল এবং ঈমানদারদের জন্য নির্ধারিত রয়েছে। কিন্তু মুনাফেকরা তা অবগত নয়।” [সূরা আল-মুনাফিকুন: ৮] এখানে আল্লাহ্ তা'আলার সাথে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও মুমিনদের উল্লেখ করে বোঝানো হয়েছে যে, ইজ্জতের মালিক একমাত্র আল্লাহ তা'আলা। তিনি যাকে ইচ্ছা আংশিক মর্যাদা দান করেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও মুমিনগণ যেহেতু আল্লাহ্ তা'আলার একান্ত অনুগত, পছন্দনীয় ও প্রিয়পাত্র, তাই তিনি তাদেরকে সম্মান দান করেন।
পক্ষান্তরে কাফের ও মুশরিকদের ভাগ্যে সত্যিকার কোন ইজ্জত নেই। অতএব, তাদের সাথে সৌহার্দ্যের সম্পর্ক স্থাপন করে সম্মান অর্জন করা সুদূর পরাহত। উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেছেনঃ যে ব্যক্তি বান্দাদের (মাখলুকের) মর্যাদাবান হওয়ার বাসনা করে আল্লাহ তা'আলা তাকে লাঞ্ছিত করেন। [বাইহাকী, শু'আবুল ঈমান: ৭৪২১] সুতরাং আয়াতের মর্ম এই যে, কাফের, মুশরিক, পাপিষ্ঠ ও পথভ্রষ্টদের সাথে বন্ধুত্ব স্থাপন করে মর্যাদা ও প্রতিপত্তি অর্জনের ব্যর্থ চেষ্টা করা অন্যায় ও অপরাধ।
তাফসীরে জাকারিয়া(১৩৯) যারা বিশ্বাসীদের পরিবর্তে অবিশ্বাসীদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করে।[1] তারা কি তাদের নিকট সম্মান অনুসন্ধান করে? অথচ সমস্ত সম্মান তো আল্লাহরই। [2]
[1] যেমন সূরা বাক্বারার প্রথমেই (১৪নং আয়াতে) আলোচিত হয়েছে যে, মুনাফিকরা কাফেরদের কাছে গিয়ে বলত, ‘আমরা তো প্রকৃতপক্ষে তোমাদের সাথেই আছি। মুসলিমদের সাথে আমরা তো হাসি-ঠাট্টা করি।’
[2] অর্থাৎ, কাফেরদের সাথে বন্ধুত্ব ও ভালোবাসা করলে সম্মান পাওয়া যাবে না। কারণ, এটা আল্লাহর এখতিয়ারধীন এবং তিনি সম্মান কেবল তাঁর অনুসারীদেরকেই দান করে থাকেন। তিনি অন্যত্র বলেছেন, [مَنْ كَانَ يُرِيدُ الْعِزَّةَ فَلِلَّهِ الْعِزَّةُ جَمِيعًا ] অর্থাৎ, কেউ সম্মান চাইলে জেনে রেখো, সমস্ত সম্মান আল্লাহরই জন্য। (সূরা ফাত্বিরঃ ১০) তিনি আরো বলেন, [وَلِله الْعِزَّةُ وَلِرَسُولِهِ وَلِلْمُؤْمِنِينَ وَلَكِنَّ المُنَافِقِينَ لا يَعْلَمُونَ] অর্থাৎ, সম্মান তো আল্লাহ, তাঁর রাসূল এবং মু’মিনদের জন্যই, কিন্তু মুনাফিকরা তা জানে না। (সূরা মুনাফিকুনঃ ৮) অর্থাৎ, তারা মুনাফিক ও কাফেরদের সাথে বন্ধুত্ব করে সম্মান কামনা করত। অথচ এটা হল লাঞ্ছনা ও অপমানের পথ, ইজ্জত ও সম্মানের পথ নয়।
তাফসীরে আহসানুল বায়ানআর তিনি তো কিতাবে তোমাদের প্রতি নাযিল করেছেন যে, যখন তোমরা শুনবে আল্লাহর আয়াতসমূহ অস্বীকার করা হচ্ছে এবং সেগুলো নিয়ে উপহাস করা হচ্ছে, তাহলে তোমরা তাদের সাথে বসবে না, যতক্ষণ না তারা অন্য কথায় নিবিষ্ট হয়, তা না হলে তোমরাও তাদের মত হয়ে যাবে। নিশ্চয় আল্লাহ মুনাফিক ও কাফিরদের সকলকে জাহান্নামে একত্রকারী। আল-বায়ান
কিতাবে তোমাদের নিকট তিনি নাযিল করেছেন যে, যখন তোমরা শুনবে আল্লাহর আয়াতের প্রতি কুফরী হচ্ছে এবং তার প্রতি ঠাট্টা করা হচ্ছে, তখন তাদের নিকট বসো না যে পর্যন্ত তারা অন্য আলোচনায় লিপ্ত না হয়, নচেৎ তোমরাও তাদের মত হয়ে যাবে, নিশ্চয় আল্লাহ মুনাফিক ও কাফিরদের সকলকেই জাহান্নামে একত্রিত করবেন। তাইসিরুল
এবং নিশ্চয়ই তিনি গ্রন্থের মাধ্যমে তোমাদের আদেশ করছেন যে, তোমরা যখন আল্লাহর নিদর্শনসমূহের প্রতি অবিশ্বাস করা এবং তাঁর প্রতি উপহাস করা হচ্ছে শ্রবণ কর তখন তাদের সাথে (বৈঠকে) উপবেশন করনা, যে পর্যন্ত না তারা অন্য কথার আলোচনা করে; অন্যথায় তোমরাও তাদের সদৃশ হয়ে যাবে, নিশ্চয়ই আল্লাহ সেই সমস্ত মুনাফিক ও কাফিরদেরকে জাহান্নামে একত্রিত করবেন। মুজিবুর রহমান
And it has already come down to you in the Book that when you hear the verses of Allah [recited], they are denied [by them] and ridiculed; so do not sit with them until they enter into another conversation. Indeed, you would then be like them. Indeed Allah will gather the hypocrites and disbelievers in Hell all together - Sahih International
১৪০. কিতাবে তোমাদের প্রতি তিনি তো নাযিল করেছেন যে, যখন তোমরা শুনবে, আল্লাহর আয়াত প্রত্যাখ্যাত হচ্ছে এবং তা নিয়ে বিদ্রুপ করা হচ্ছে, তখন যে পর্যন্ত তারা অন্য প্রসঙ্গে লিপ্ত না হবে তোমরা তাদের সাথে বসো না(১), নয়তো তোমরাও তাদের মত হবে(২)। মুনাফিক এবং কাফের সবাইকে আল্লাহ তো জাহান্নামে একত্র করবেন।
(১) এ আয়াতের মর্ম এই যে, যদি কোন প্রভাবে কতিপয় লোক একত্রিত হয়ে আল্লাহ তা'আলার কোন আয়াত বা হুকুমকে অস্বীকার বা ঠাট্টা-বিদ্রুপ করতে থাকে, তবে যতক্ষণ তারা এহেন গৰ্হিত ও অবাঞ্ছিত কাজে লিপ্ত থাকবে, ততক্ষণ তাদের মজলিশে বসা বা যোগদান করা মুসলিমদের জন্য হারাম। বাতিলপন্থীদের মজলিশে উপস্থিত ও তার হুকুম কয়েক প্রকার। প্রথমতঃ তাদের কুফরী চিন্তাধারার প্রতি সম্মতি ও সন্তুষ্টি সহকারে যোগদান করা। এটা মারাত্মক অপরাধ ও কুফরী। দ্বিতীয়তঃ গৰ্হিত আলোচনা চলাকালে বিনা প্রয়োজনে অপছন্দ সহকারে উপবেশন করা। এটা অত্যন্ত অন্যায় ও ফাসেকী। তৃতীয়তঃ পার্থিব প্রয়োজনবশতঃ বিরক্তি সহকারে বসা জায়েয। চতুর্থতঃ জোর-জবরদস্তির কারণে বাধ্য হয়ে বা অনিচ্ছাকৃতভাবে বসা ক্ষমার যোগ্য। পঞ্চমতঃ তাদের সৎপথে আনয়নের উদ্দেশ্যে উপস্থিত হওয়া সওয়াবের কাজ।
(২) আয়াতের শেষে বলা হয়েছে, এমন মজলিশ যেখানে আল্লাহ্ তা'আলার আয়াত ও আহকামকে অস্বীকার, বিদ্রুপ বা বিকৃত করা হয়, সেখানে হৃষ্টচিত্তে উপবেশন করলে তোমরাও তাদের সমতুল্য ও তাদের গোনাহর অংশীদার হবে। অর্থাৎ আল্লাহ না করুন, তোমরা যদি তাদের কুফর কথা-বার্তা মনে প্রাণে পছন্দ কর, তাহলে বস্তুতঃ তোমরাও কাফের হয়ে যাবে। কেননা, কুফরী পছন্দ করাও কুফরী। আর যদি তাদের কথা-বার্তা পছন্দ না করা সত্বেও বিনা প্রয়োজনে তাদের সাথে উঠাবসা কর এমতাবস্থায় তাদের সমতুল্য হবার অর্থ হবে তারা যেভাবে শরীআতকে হেয় প্রতিপন্ন করা এবং ইসলাম ও মুসলিমদের ক্ষতি সাধন করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে, ক্ষতি সাধন করছ।
তাফসীরে জাকারিয়া(১৪০) আর তিনি কিতাবে তোমাদের প্রতি অবতীর্ণ করেছেন যে, যখন তোমরা শুনবে আল্লাহর কোন আয়াতকে প্রত্যাখ্যান করা হচ্ছে এবং তা নিয়ে বিদ্রূপ করা হচ্ছে, তখন যে পর্যন্ত তারা অন্য প্রসঙ্গে লিপ্ত না হয়, তোমরা তাদের সাথে বসো না; নচেৎ তোমরাও তাদের মত হয়ে যাবে। [1] নিশ্চয় আল্লাহ কপট ও অবিশ্বাসী সকলকেই জাহান্নামে একত্র করবেন।
[1] অর্থাৎ, নিষেধ করা সত্ত্বেও যদি তোমরা এমন মজলিসে বস, যেখানে আল্লাহর আয়াতের সাথে ঠাট্টা ও বিদ্রূপ করা হয় এবং তার যদি কোন প্রতিবাদ না কর, তাহলে তোমরাও তাদের মত পাপে সমান সমান শরীক হবে। যেমন একটি হাদীসে এসেছে, ‘‘যে ব্যক্তি আল্লাহ ও শেষ দিবসের প্রতি বিশ্বাস রাখে, সে যেন এমন দাওয়াতে শরীক না হয়, যেখানে মদ পরিবেশন করা হয়।’’ (মুসনাদ আহমাদ ১/২০, ৩/৩৩৯) এ থেকে প্রতীয়মান হয় যে, এমন সব মজলিস ও অনুষ্ঠানে শরীক হওয়া মহাপাপ, যেখানে আল্লাহ ও তাঁর রসূলের বিধানের সাথে কথায় ও কাজের মাধ্যমে ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ করা হয়। যেমন, বর্তমানে বহু নেতা, আধুনিক ও পাশ্চাত্য সভ্যতায় প্রভাবিত লোকদের মজলিসে সাধারণতঃ হয়ে থাকে। অনুরূপ যা বিবাহ ও বার্ষিক বহু অনুষ্ঠানে ঘটে থাকে। [اِنَّكُمْ اِذًا مِّثْلَهُمْ] (তোমরাও তাদের মত হয়ে যাবে) কুরআনের এই ধমক ঈমানদারদের মধ্যে কম্পন সৃষ্টি করে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট, অবশ্য অন্তরে ঈমান থাকলে তবেই।
তাফসীরে আহসানুল বায়ানযারা তোমাদের ব্যাপারে (অকল্যাণের) অপেক্ষায় থাকে, অতঃপর আল্লাহর পক্ষ থেকে যদি তোমাদের বিজয় হয় তবে তারা বলে, ‘আমরা কি তোমাদের সাথে ছিলাম না’? আর যদি কাফিরদের আংশিক বিজয় হয়, তবে তারা বলে, ‘আমরা কি তোমাদের উপর কর্তৃত্ব করিনি এবং মুমিনদের কবল থেকে তোমাদেরকে রক্ষা করিনি’? সুতরাং আল্লাহ কিয়ামতের দিন তোমাদের মধ্যে বিচার করবেন। আর আল্লাহ কখনো মুমিনদের বিপক্ষে কাফিরদের জন্য পথ রাখবেন না। আল-বায়ান
তারা (অর্থাৎ মুনাফিকরা) তোমাদের ব্যাপারে ওঁৎ পেতে থাকে, তারা আল্লাহর তরফ হতে তোমাদের জয়লাভ হলে বলে আমরা কি তোমাদের সঙ্গে ছিলাম না? আর যদি কাফিরদের কিছু বিজয় ঘটে তখন তারা বলে, আমরা কি তোমাদের উপর বিজয়ী ছিলাম না এবং আমরা কি তোমাদেরকে মু’মিনদের হতে রক্ষা করিনি? এমতাবস্থায় আল্লাহ ক্বিয়ামাত দিবসে তোমাদের মধ্যে মীমাংসা করে দেবেন এবং আল্লাহ কক্ষনো মু’মিনদের বিরুদ্ধে কাফিরদেরকে (জয়লাভের) পথ করে দেবেন না। তাইসিরুল
ওরা এমন যারা তোমাদের সম্বন্ধে প্রতীক্ষা করছে; এবং যদি তোমরা আল্লাহর পক্ষ হতে জয়লাভ কর তাহলে তারা বলেঃ আমরা কি তোমাদের সঙ্গে ছিলামনা? এবং যদি ওটা অবিশ্বাসীদের ভাগ্যে ঘটে তাহলে বলে- আমরা কি তোমাদের নেতৃত্ব করিনি এবং বিশ্বাসীগণ হতে তোমাদেরকে রক্ষা করিনি? অতঃপর আল্লাহ উত্থান দিবসে তোমাদের মধ্যে বিচার করবেন; এবং আল্লাহ কখনও মু’মিনদের বিরুদ্ধে কাফিরদেরকে বিজয়ী করবেননা। মুজিবুর রহমান
Those who wait [and watch] you. Then if you gain a victory from Allah, they say, "Were we not with you?" But if the disbelievers have a success, they say [to them], "Did we not gain the advantage over you, but we protected you from the believers?" Allah will judge between [all of] you on the Day of Resurrection, and never will Allah give the disbelievers over the believers a way [to overcome them]. Sahih International
১৪১. যারা তোমাদের অমঙ্গলের প্রতীক্ষায় থাকে, তারা আল্লাহর পক্ষ থেকে তোমাদের জয় হলে বলে, আমরা কি তোমাদের সাথে ছিলাম না। আর যদি কাফেরদের কিছু বিজয় হয়, তবে তারা বলে, আমরা কি তোমাদের বিরুদ্ধে প্রবল ছিলাম না এবং আমরা কি তোমাদেরকে মুমিনদের হাত থেকে রক্ষা করিনি(১)? আল্লাহ কেয়ামতের দিন তোমাদের মধ্যে বিচার মীমাংসা করবেন এবং আল্লাহ কখনই মুমিনদের বিরুদ্ধে কাফেরদের জন্য কোন পথ রাখবেন না।(২)
(১) এটিই প্রত্যেক যুগের মুনাফিকদের বৈশিষ্ট্য। মৌখিক স্বীকারোক্তি ও ইসলামের গণ্ডীর মধ্যে নামমাত্র প্রবেশের মাধ্যমে মুসলিম হিসাবে যতটুকু স্বার্থ ভোগ করা যায় তা তারা ভোগ করে। আবার অন্যদিকে কাফের হিসাবে যে স্বার্থটুকু ভোগ করা সম্ভব তা ভোগ করার জন্য তারা কাফেরদের সাথে যোগ দেয়। তাদেরকে বলেঃ আমরা মোটেই গোড়া বা প্রতিক্রিয়াশীল অথবা মৌলবাদী-বিদ্বেষপরায়ণ মুসলিম নই। মুসলিমদের সাথে আমাদের নামের সম্পর্ক আছে কিন্তু আমাদের মানসিক ঝোঁক, আগ্রহ ও বিশ্বস্ততা রয়েছে তোমাদের প্রতি। চিন্তা-ভাবনা, আচার-ব্যবহার, রুচি-প্রকৃতি ইত্যাদি সবদিক দিয়ে তোমাদের সাথে আমাদের গভীর মিল। তাছাড়া ইসলাম ও কুফরীর সংঘর্ষে আমরা তোমাদের পক্ষই অবলম্বন করব।
(২) এ আয়াতের অর্থ এ নয় যে, দুনিয়াতে কোন কাফের ঈমানদারদের উপর বিজয়ী হবে না কারণ, এটার মূলকথা আখেরাতের সাথে সম্পৃক্ত। আয়াতের শুরুতেই কিয়ামতের দিন উল্লেখ করার মাধ্যমে তা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। আলী রাদিয়াল্লাহু আনহুর নিকট এক লোক এসে বলল যে, এ আয়াতে আল্লাহ বলেছেন, “আল্লাহ কখনই মুমিনদের বিরুদ্ধে কাফেরদের জন্য কোন পথ রাখবেন না” অথচ কাফেররা মুমিনদের উপর বিজয়ী হচ্ছে। তখন আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, আয়াতের প্রথমাংশের দিকে তাকাও। সেখানে বলা হয়েছে, কিয়ামতের দিন। সুতরাং কিয়ামতের দিন আল্লাহ কখনই মুমিনদের বিরুদ্ধে কাফেরদের জন্য কোন পথ রাখবেন না। [মুস্তাদরাকে হাকিম: ২/৩০৯; দ্বিয়া আল-মাকদেসী, আল-আহাদিসুল মুখতারাহ ২/৪০৬-৪০৭, হাদীস নং ৭৯৩] তবে ইমামগণ এ আয়াত থেকে দুনিয়াতে এ মাসআলা নিয়েছেন যে, কোন কাফের কোন মুমিনের ওয়ারিশ হয় না। [আত-তা’লিকুল মুমাজ্জাদ আলা মুওয়াত্তা ইমাম মুহাম্মাদ]
তাফসীরে জাকারিয়া(১৪১) যারা তোমাদের (শুভাশুভ পরিণতির) প্রতীক্ষায় থাকে; সুতরাং আল্লাহর অনুগ্রহে তোমাদের বিজয় লাভ হলে তারা (তোমাদেরকে) বলে, ‘আমরা কি তোমাদের সঙ্গে ছিলাম না?’ আর যদি অবিশ্বাসীদের আংশিক বিজয় লাভ হয়, তাহলে তারা (তাদেরকে) বলে, ‘আমরা কি তোমাদের বিরুদ্ধে জয়ী ছিলাম না এবং আমরা কি তোমাদেরকে বিশ্বাসীদের হাত থেকে রক্ষা করিনি?’[1] অতএব আল্লাহই কিয়ামতের দিন তোমাদের মধ্যে বিচার-মীমাংসা করবেন[2] এবং আল্লাহ কখনই বিশ্বাসীদের বিরুদ্ধে অবিশ্বাসীদের জন্য কোন পথ রাখবেন না। [3]
[1] অর্থাৎ, আমরা তোমাদের উপর বিজয় লাভ করতে যাচ্ছিলাম, কিন্তু আমরা তোমাদেরকে নিজেদের সাথী মনে করে ছেড়ে দিলাম এবং মুসলিমদের সঙ্গ ত্যাগ করে তোমাদেরকে তাদের কবল থেকে রক্ষা করলাম। অর্থাৎ, তোমাদের বিজয় অর্জিত হয়েছে কেবল আমাদের দ্বিমুখী সেই কৌশলের ফলে; যে কৌশল আমরা মুসলিমদের সাথে বাহ্যিকভাবে শরীক হয়ে অবলম্বন করেছিলাম। আর সেই সাথে গোপনে তাদের ক্ষতি করতে কোন প্রকার ত্রুটি ও অবহেলা আমরা করিনি। আর এইভাবেই তোমরা তাদের উপর জয়লাভ করলে। --এ ছিল মুনাফিকদের কথা, যা তারা কাফেরদেরকে বলেছিল।
[2] অর্থাৎ, দুনিয়াতে ধোঁকা ও প্রতারণার মাধ্যমে সাময়িকভাবে কিঞ্চিৎ বিজয় লাভ করেছ বটে, কিন্তু কিয়ামতের দিন মহান আল্লাহ তোমাদের বিচার করবেন সেই সব গুপ্ত অভিপ্রায় ও অবস্থাসমূহের আলোকে, যা তোমরা নিজেদের মনের মধ্যে লুকিয়ে রেখেছিলে। কেননা, তিনি তো মনের মধ্যে লুক্কায়িত বিষয়সমূহের ব্যাপারে খুব ভালোভাবেই অবহিত। যখন তিনি এর জন্য শাস্তি দেবেন, তখন তারা অবগত হয়ে যাবে যে, দুনিয়ায় মুনাফিক্বী স্বভাব অবলম্বন করে ক্ষতিকর সামগ্রী ক্রয় করেছিল। যার কারণে তাদেরকে জাহান্নামের চিরস্থায়ী শাস্তি ভোগ করতে হবে। আল্লাহ আমাদেরকে পানাহ দিন।
[3] অর্থাৎ, বিজয় দান করবেন না। এর বিভিন্ন অর্থ বর্ণনা করা হয়েছে। যেমন, (ক) মুসলিমদের এ জয় কিয়ামতের দিন লাভ হবে। (খ) হুজ্জত ও প্রমাণাদির দিক দিয়ে কাফেররা মুসলিমদের উপর জয়লাভ করতে পারবে না। (গ) কাফেরদের এমন বিজয় আসবে না, যাতে মুসলিমদের রাজ্য ও প্রতিপত্তি একেবারে নিঃশেষ হয়ে যাবে এবং তাদেরকে মুদ্রিত ভুল শব্দের মত বিশ্বের মানচিত্র থেকে মিটিয়ে দেওয়া হবে। একটি সহীহ হাদীস থেকেও এই অর্থের সমর্থন পাওয়া যায়। (ঘ) যতদিন পর্যন্ত মুসলিমরা নিজেদের দ্বীন অনুযায়ী আমল করবে, বাতিলের প্রতি অসন্তুষ্ট থাকবে এবং অন্যায় কাজে বাধা দেবে, ততদিন পর্যন্ত কাফেররা তাদের উপর জয়লাভ করতে পারবে না। ইমাম ইবনুল আরাবী বলেন, ‘এটি সবার থেকে উত্তম অর্থ।’ কারণ, মহান আল্লাহ বলেন,[وَمَا أَصَابَكُمْ مِنْ مُصِيبَةٍ فَبِمَا كَسَبَتْ أَيْدِيكُمْ] অর্থাৎ, যে বিপদই তোমাদের উপর আপতিত হয়, তা সবই তোমাদের কৃতকর্মের ফল। (সূরা শূরাঃ ৩০) (ফাতহুল ক্বাদীর) অর্থাৎ, মুসলিমদের পরাজয় তাদের ত্রুটি-বিচ্যুতিরই অনিবার্য কুফল।
তাফসীরে আহসানুল বায়াননিশ্চয় মুনাফিকরা আল্লাহকে ধোঁকা দেয়। আর তিনি তাদেরকে ধোঁকায় ফেলেন। আর যখন তারা সালাতে দাঁড়ায় তখন অলসভাবে দাঁড়ায়, তারা লোকদেরকে দেখায় এবং তারা আল্লাহকে কমই স্মরণ করে। আল-বায়ান
নিশ্চয় মুনাফিকগণ আল্লাহর সঙ্গে ধোঁকাবাজি করে, তিনি তাদেরকে ধোঁকায় ফেলে শাস্তি দেন এবং তারা যখন সলাতের জন্য দাঁড়ায়, তখন শৈথিল্যভরে দাঁড়ায়, লোক দেখানোর জন্য, তারা আল্লাহকে সামান্যই স্মরণ করে। তাইসিরুল
নিশ্চয়ই মুনাফিকরা আল্লাহর সাথে প্রতারণা করে এবং তিনিও তাদেরকে ঐ প্রতারণা প্রত্যার্পণ করছেন; এবং যখন তারা সালাতের জন্য দাঁড়ায় তখন লোকদেরকে দেখানোর জন্য আলস্যভরে দাঁড়ায় এবং আল্লাহকে খুব কমই স্মরণ করে। মুজিবুর রহমান
Indeed, the hypocrites [think to] deceive Allah, but He is deceiving them. And when they stand for prayer, they stand lazily, showing [themselves to] the people and not remembering Allah except a little, Sahih International
১৪২. নিশ্চয় মুনাফিকরা আল্লাহর সাথে ধোঁকাবাজি করে বস্তুতঃ তিনি তাদেরকে ধোঁকায় ফেলেন(১)। আর যখন তারা সালাতে দাঁড়ায় তখন শৈথিল্যের সাথে দাঁড়ায়, শুধুমাত্র লোক দেখানোর জন্য এবং আল্লাহকে তারা অল্পই স্মরণ করে।(২)
(১) কাফেরদের ধোঁকার কারণে আল্লাহর পক্ষ থেকে তাদেরকে ধোঁকায় ফেলা যুক্তিযুক্ত ও যথার্থ। এতে আল্লাহর জন্য খারাপ গুণ বিবেচিত হবে না। কারণ, এটি তাদের কর্মের বিপরীতে আল্লাহর কর্ম। অনুরূপ আলোচনা সূরা আল-বাকারার ৯ ও ১৫ নং আয়াতের ব্যাখ্যাতেও বর্ণিত হয়েছে। তবে তাদেরকে কিভাবে আল্লাহ তা'আলা ধোঁকায় ফেলবেন, তার বর্ণনায় সুদ্দী ও হাসান বসরী বলেন, কিয়ামতের দিন তাদেরকে কিছু নূর বা আলো দেয়া হবে, ফলে তারা মুমিনদের সাথে চলতে থাকবে। যেমনিভাবে তারা দুনিয়াতে মুমিনদের সাথে ছিল। তারপর আল্লাহ তা'আলা তাদের সে নূর বা আলো ছিনিয়ে নিবেন। ফলে তাদের আলো নিষ্প্রভ হয়ে যাবে। তখন তারা অন্ধকারে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকবে। আর ঠিক তখনি তাদের ও মুমিনদের মধ্যে প্রাচীর পড়ে যাবে। পরস্পর পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। [আত-তাফসীরুস সহীহ] মূলত: এটি সূরা আল-হাদীদের ১৩ নং আয়াতের তাফসীরও বটে।
(২) আয়াতে মুনাফিকদের তিনটি খারাপ গুণ উল্লেখ করা হয়েছে। এক. তারা তাদের সালাতে অলসতা করে। দুই. তারা সালাতে প্রদর্শনেচ্ছা সহকারে দাঁড়ায়। তিন. তারা খুব কমই আল্লাহর যিকর করে। পবিত্র কুরআনের অন্যান্য আয়াতেও তাদের এ বদ স্বভাবসমূহের কথা উল্লেখিত হয়েছে। যেমন, সূরা আত-তাওবাহঃ ৫৪; সূরা আল-মাউন: ৪-৬। তাছাড়া হাদীসেও মুনাফিকের এ সমস্ত চরিত্রের কথা স্পষ্টভাবে বর্ণিত হয়েছে। যেমন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ঐটি হচ্ছে মুনাফিকের সালাত। সে সূর্যের দিকে তাকিয়ে অপেক্ষা করতে থাকে। তারপর যখন সূর্য শয়তানের দু শিংয়ের মাঝখানে পৌছে (অর্থাৎ ডুবার কাছাকাছি পৌছে) তখন সে উঠে চারবার ঠোকর লাগায়। যাতে আল্লাহর স্মরণ খুব কমই করে থাকে। [মুসলিম: ৬২২]
তাফসীরে জাকারিয়া(১৪২) নিশ্চয় মুনাফিক (কপট) ব্যক্তিরা আল্লাহকে প্রতারিত করতে চায়। বস্তুতঃ তিনিও তাদেরকে প্রতারিত করে থাকেন[1] এবং যখন তারা নামাযে দাঁড়ায় তখন শৈথিল্যের সাথে[2] নিছক লোক-দেখানোর জন্য দাঁড়ায়[3] এবং আল্লাহকে তারা অল্পই স্মরণ করে থাকে। [4]
[1] এর সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা সূরা বাক্বারার শুরুতে (৮-১৫ আয়াতে) করা হয়েছে।
[2] নামায ইসলামের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ রুকন এবং অতি মহান ফরয কাজ। এতেও তারা অবহেলা ও অলসতা প্রদর্শন করত। কারণ তাদের অন্তর ঈমান, আল্লাহভীতি এবং ঐকান্তিকতা থেকে ছিল বঞ্চিত ও শূন্য। আর এ কারণেই বিশেষ করে এশা ও ফজরের নামায তাদের উপর ভারী ছিল। যেমন, নবী করীম (সাঃ) বলেন, (إِنَّ أَثْقَلَ صَلَاةٍ عَلَى الْمُنَافِقِينَ صَلَاةُ الْعِشَاءِ وَصَلَاةُ الْفَجْرِ ) অর্থাৎ, মুনাফিকদের উপর এশা এবং ফজরের নামায সব থেকে বেশী ভারী।’’ (বুখারী, মুসলিম ৬৫১নং)
[3] এই নামাযও তারা কেবল লোক প্রদর্শনের জন্য পড়ত। যাতে তারা মুসলিমদেরকে ধোঁকা দিতে পারে।
[4] আল্লাহর স্মরণ নামে মাত্র করে অথবা নামায সংক্ষিপ্তাকারে পড়ে। অর্থাৎ, لاَ يُصَلُّوْنَ إِلاَّ صَلاَةً قَلِيْلَةً (নামায খুবই সংক্ষিপ্তাকারে পড়ে।) আর নামায আল্লাহর ভয় ও বিনয়-নম্রতা থেকে খালি হলে তা ধীর-স্থিরতার সাথে আদায় করা বড়ই কঠিন হয়। যেমন, [وَإِنَّهَا لَكَبِيرَةٌ إِلَّا عَلَى الْخَاشِعِينَ] (বিনীতগণ ব্যতীত আর সকলের নিকট নিশ্চিতভাবে এ কঠিন।) (সূরা বাক্বারাহঃ ৪৫ আয়াত) থেকেও সে কথা জানা যায়। হাদীসে নবী করীম (সাঃ) বলেন, ‘‘এটা মুনাফিকের নামায, এটা মুনাফিকের নামায, এটা মুনাফিকের নামায। সে বসে বসে সূর্যের অপেক্ষা করতে থাকে। অবশেষে যখন সূর্য শয়তানের দু’টি শিঙের মধ্যবর্তী স্থানে (অস্ত যাওয়ার কাছাকাছি সময়ে) পৌঁছে, তখন (তড়িঘড়ি) উঠে চারটি ঠোকর মেরে নেয়।’’ (সহীহ মুসলিম, মাসাজিদ অধ্যায়, মুঅত্তা, কুরআন অধ্যায়)
তাফসীরে আহসানুল বায়ানতারা এর মধ্যে দোদুল্যমান, না এদের দিকে আর না ওদের দিকে। আর আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেন তুমি কখনো তার জন্য কোন পথ পাবে না। আল-বায়ান
তারা মাঝখানে দোদুল্যমান, না এদের দিকে, না ওদের দিকে; বস্তুতঃ আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেন তুমি তার জন্য কক্ষনো কোন পথ পাবে না। তাইসিরুল
এরা সন্দেহের দোলায় দোদুল্যমান রয়েছে। তারা এ দিকেও নয় ওদিকেও নয়; এবং আল্লাহ যাকে পথভ্রান্ত করেছেন, বস্তুতঃ তুমি তার জন্য কোনই পথ পাবেনা। মুজিবুর রহমান
Wavering between them, [belonging] neither to the believers nor to the disbelievers. And whoever Allah leaves astray - never will you find for him a way. Sahih International
১৪৩. দেটানায় দোদুল্যমান, না এদের দিকে, না ওদের দিকে!(১) আর আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেন আপনি তার জন্য কখনো কোন পথ পাবেন না।
(১) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, মুনাফিকের উদাহরণ হচ্ছে, ঐ ছাগীর ন্যায়, যে দুই পাঠা ছাগলের মধ্যে ঘুরে বেড়ায়। (প্রবৃত্তির তাড়নায়) কখনও এটার কাছে যায়, কখনও অপরটির কাছে যায়। [মুসলিম: ২৭৮৪] মুনাফিক নিজেকে মুশরিকও বলতে চায় না। আবার ঈমানদারও হতে চায় না। [তাবারী]
তাফসীরে জাকারিয়া(১৪৩) তারা দোটানায় দোদুল্যমান, না এদিকে না ওদিকে![1] আর আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেন তুমি তার জন্য কখনও কোন পথ পাবে না।
[1] কাফেরদের কাছে গিয়ে ওদের সাথে এবং মুসলিমদের কাছে এসে এদের সাথে বন্ধুত্ব ও সম্পর্ক থাকার কথা প্রকাশ করে। প্রকাশ্যে ও অপ্রকাশ্যে না তারা মুসলিমদের সাথে আছে, আর না কাফেরদের সাথে। বাহ্যিক তাদের মুসলিমদের সাথে থাকলে অভ্যন্তর থাকে কাফেরদের সাথে। আবার কোন কোন মুনাফিক তো ঈমান ও কুফরীর মধ্যে দোদুল্যমান অবস্থায় ঝুলতে থাকে। নবী করীম (সাঃ) বলেন, "মুনাফিক হল সেই ছাগীর মত, যে সঙ্গমের জন্য দু’টি পালের মধ্যে (পাঁঠার খোঁজে) ঘুরাঘুরি করে। কখনো এই পালের দিকে আসে, আবার কখনো অন্য পালের দিকে যায়।"
(সহীহ মুসলিম, মুনাফিক্বীন অধ্যায়)
তাফসীরে আহসানুল বায়ানহে মুমিনগণ, তোমরা মুমিনগণ ছাড়া কাফিরদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না। তোমরা কি আল্লাহর জন্য তোমাদের বিপক্ষে কোন স্পষ্ট দলীল সাব্যস্ত করতে চাও? আল-বায়ান
হে ঈমানদারগণ! তোমরা মু’মিনদের পরিবর্তে কাফিরদেরকে তোমাদের বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না, তোমরা কি তোমাদের নিজেদের বিরুদ্ধে আল্লাহর কাছে সুস্পষ্ট প্রমাণ পেশ করতে চাও? তাইসিরুল
হে মু’মিনগণ! তোমরা মু’মিনদেরকে ছেড়ে কাফিরদেরকে বন্ধু রূপে গ্রহণ করনা, তোমরা কি আল্লাহর জন্য তোমাদের বিরুদ্ধে স্পষ্ট প্রমাণ দিতে চাও? মুজিবুর রহমান
O you who have believed, do not take the disbelievers as allies instead of the believers. Do you wish to give Allah against yourselves a clear case? Sahih International
১৪৪. হে মুমিনগণ! মুমিনগণ ছাড়া কাফেরদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না। তোমরা কি নিজেদের উপর আল্লাহর প্রকাশ্য অভিযোগ কায়েম করতে চাও?(১)
(১) এ আয়াতের তাফসীরে পূর্ববর্তী ১৩৯ নং আয়াতের তাফসীর ও সূরা আলে ইমরানের ২৮ নং আয়াতের তাফসীর দেখা যেতে পারে।
তাফসীরে জাকারিয়া(১৪৪) হে বিশ্বাসিগণ! তোমরা বিশ্বাসিগণের পরিবর্তে অবিশ্বাসীদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না। তোমরা কি আল্লাহকে তোমাদের বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট প্রমাণ দিতে চাও? [1]
[1] অর্থাৎ, মহান আল্লাহ তোমাদেরকে কাফেরদের সাথে বন্ধুত্ব করতে নিষেধ করেছেন। এখন যদি তোমরা তাদের সাথে বন্ধুত্ব স্থাপন কর, তাহলে তার অর্থ হবে তোমরা নিজেদের বিরুদ্ধে আল্লাহর দলীল কায়েম করছ; যাতে তিনি তোমাদেরকে শাস্তি দিতে পারেন। (অর্থাৎ, আল্লাহর অবাধ্যতা এবং তাঁর নির্দেশ অমান্য করার কারণে।)
তাফসীরে আহসানুল বায়াননিশ্চয় মুনাফিকরা জাহান্নামের সর্বনিম্ন স্তরে থাকবে। আর তুমি কখনও তাদের জন্য কোন সাহায্যকারী পাবে না। আল-বায়ান
মুনাফিকরা থাকবে জাহান্নামের সর্বনিম্ন স্তরে, তুমি তাদের জন্য কক্ষনো কোন সাহায্যকারী পাবে না। তাইসিরুল
নিশ্চয়ই মুনাফিকরা জাহান্নামের নিম্নতম স্তরে অবস্থান করবে এবং তুমি কখনও তাদের জন্য সাহায্যকারী পাবেনা। মুজিবুর রহমান
Indeed, the hypocrites will be in the lowest depths of the Fire - and never will you find for them a helper - Sahih International
১৪৫. মুনাফিকরা তো জাহান্নামের নিম্নতমস্তরে থাকবে(১) এবং তাদের জন্য আপনি কখনো কোন সহায় পাবেন না।
(১) এ আয়াতে মুনাফিকদের স্থান নির্দেশ করে বলা হয়েছে যে, তারা জাহান্নামের সর্বনিম স্তরে থাকবে। অন্য স্থানে ফিরআউন ও তার অনুসারীদের জন্য কঠিন শাস্তির ঘোষণা দেয়া হয়েছে। “আগুন, তাদেরকে তাতে উপস্থিত করা হয় সকাল ও সন্ধ্যায় এবং যেদিন কিয়ামত ঘটবে সেদিন বলা হবে, ফিরআউন গোষ্ঠীকে নিক্ষেপ কর কঠোর শাস্তিতে।” [সূরা গাফির: ৪৬] আবার অন্যত্র বনী ইসরাইলের মধ্যে যাদেরকে আকাশ থেকে দস্তরখানসহ খাবার দেয়া হয়েছিল, তাদের মধ্যে যারা কুফরী করবে তাদের জন্য এমন শাস্তির ঘোষণা দেয়া হয়েছে যে শাস্তি আল্লাহ আর কাউকে দিবেন না।
“আল্লাহ বললেন, ‘আমিই তোমাদের কাছে ওটা পাঠাব; কিন্তু এর পর তোমাদের মধ্যে কেউ কুফরী করলে তাকে এমন শাস্তি দেব, যে শাস্তি বিশ্বজগতের আর কাউকেও দেব না।” [সূরা আল-মায়িদাহ ১১৫] সুতরাং এটাই বলা চলে যে, সবচেয়ে কঠিন শাস্তির সম্মুখীন হবে এ তিন শ্রেণীর লোক। [আদওয়াউল বায়ান] এ আয়াতে বর্ণিত ‘দারকুল আসফাল’ বা নিম্নতম স্তর কি এ সম্পর্কে আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, সেটা হবে বদ্ধ সিন্ধুক। [মুসান্নাফে ইবন আবী শাইবাহঃ ১৩/১৫৪, নং ১৫৯৭২] আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ‘দারকুল আসফাল’ হচ্ছে, এমন কিছু ঘর যেগুলোর দরজা বন্ধ করা আছে। আর সেগুলোকে উপর ও নিচ থেকে প্রজ্জলিত করা হবে। [আত-তাফসীরুস সহীহ] ইবন আব্বাস বলেন, এর অর্থ, জাহান্নামের নীচে থাকবে। [তাবারী]
তাফসীরে জাকারিয়া(১৪৫) মুনাফিক (কপট) ব্যক্তিরা অবশ্যই দোযখের সর্বনিমন স্তরে অবস্থান করবে([1]) এবং তাদের জন্য তুমি কখনও কোন সাহায্যকারী পাবে না।
[1] জাহান্নামের সর্ব নিম্নস্তরকে هَاوِيَة (হাবিয়াহ) বলা হয়। أَعَاذَنَا اللهُ مِنْهَا উল্লিখিত মুনাফিক্বী স্বভাব ও আচার-আচরণ থেকে যেন আল্লাহ আমাদের রক্ষা করেন!
তাফসীরে আহসানুল বায়ানতবে যারা তাওবা করে নিজদেরকে শুধরে নেয়, আল্লাহকে দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরে এবং আল্লাহর জন্য নিজদের দীনকে খালেস করে, তারা মুমিনদের সাথে থাকবে। আর অচিরেই আল্লাহ মুমিনদেরকে মহাপুরস্কার দান করবেন। আল-বায়ান
অবশ্য তারা এদের মধ্যে শামিল নয় যারা তাওবাহ করবে, নিজেদেরকে সংশোধন করবে, আল্লাহকে মজবুতভাবে ধারণ করবে, আর নিজেদের দ্বীনকে আল্লাহর জন্য একনিষ্ঠ করবে। তখন তারা মু’মিনদের সঙ্গী হিসেবে গণ্য হবে আর আল্লাহ অচিরেই মু’মিনদেরকে মহা প্রতিফল দান করবেন। তাইসিরুল
কিন্তু যারা ক্ষমা প্রার্থনা করে ও সংশোধিত হয় এবং আল্লাহর পথকে সুদৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরে ও আল্লাহর ধর্মে বিশুদ্ধ হয়, ফলতঃ তারাই মু’মিনদের সঙ্গী এবং অচিরেই আল্লাহ মু’মিনদেরকে উত্তম প্রতিদান দিবেন। মুজিবুর রহমান
Except for those who repent, correct themselves, hold fast to Allah, and are sincere in their religion for Allah, for those will be with the believers. And Allah is going to give the believers a great reward. Sahih International
১৪৬. কিন্তু যারা তাওবাহ করে, নিজেদেরকে সংশোধন করে(১), আল্লাহকে দৃঢ়ভাবে অবলম্বন করে এবং আল্লাহর উদ্দেশ্যে তাদের দ্বীনকে একনিষ্ট করে(২), তারা মুমিনদের সঙ্গে থাকবে এবং মুমিনদেরকে আল্লাহ অবশ্যই মহাপুরস্কার দেবেন।
(১) কাতাদাহ বলেন, এখানে সংশোধন করার অর্থ হচ্ছে, আল্লাহ ও তার রাসূল এবং তাদের মধ্যকার সম্পর্ক ঠিক করে নেয়া। [আত-তাফসীরুস সহীহ]
(২) এ আয়াত দ্বারা বোঝা যায় যে, আল্লাহ তা’আলার দরবারে একমাত্র ঐসব আমলই গৃহীত ও কবুল হয় যা শুধু তাঁর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে করা হয়েছে এবং কোনরূপ রিয়া তথা লোক দেখানো ও শোনানোর লেশমাত্র উদ্দেশ্য যার মধ্যে নেই।
তাফসীরে জাকারিয়া(১৪৬) কিন্তু যারা তওবা করে, নিজেদেরকে সংশোধন করে, আল্লাহকে দৃঢ়ভাবে অবলম্বন করে এবং আল্লাহর উদ্দেশ্যে তাদের ধর্মকে নির্মল করে, তারা বিশ্বাসীদের সঙ্গে থাকবে[1] এবং অচিরেই আল্লাহ বিশ্বাসিগণকে মহা পুরস্কার দান করবেন।
[1] অর্থাৎ, মুনাফিকদের মধ্য থেকে যে ব্যক্তি এই চারটি কর্মের প্রতি ঐকান্তিকতার সাথে যত্নবান হবে, সে জাহান্নামে যাওয়ার পরিবর্তে ঈমানদারদের সাথে জান্নাতে প্রবেশ করবে।
তাফসীরে আহসানুল বায়ানযদি তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর এবং ঈমান আন তাহলে তোমাদেরকে আযাব দিয়ে আল্লাহ কী করবেন? আল্লাহ পুরস্কার দানকারী, সর্বজ্ঞ। আল-বায়ান
তোমরা যদি শোকরগুজারি কর আর ঈমান আন তাহলে তোমাদেরকে শাস্তি দিয়ে আল্লাহ কী করবেন? আল্লাহ (সৎকাজের বড়ই) পুরস্কারদাতা, সর্ববিষয়ে জ্ঞাত। তাইসিরুল
আল্লাহ কেনইবা তোমাদেরকে শাস্তি প্রদান করবেন যদি তোমরা কৃতজ্ঞ হও ও বিশ্বাস স্থাপন কর? এবং আল্লাহতো অতিশয় গুণগ্রাহী, মহাজ্ঞানী। মুজিবুর রহমান
What would Allah do with your punishment if you are grateful and believe? And ever is Allah Appreciative and Knowing. Sahih International
১৪৭. তোমরা যদি শোকর-গুজার হও(১) এবং ঈমান আন, তবে তোমাদের শাস্তি দিয়ে আল্লাহ কি করবেন? আর আল্লাহ (শোকরের) পুরস্কার দাতা সর্বজ্ঞ।
(১) আয়াতে শোকর শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। এর আসল অর্থ হচ্ছে নেয়ামতের স্বীকৃতি দেয়া ও কৃতজ্ঞতা স্বীকার করা এবং অনুগৃহীত হওয়া। এ ক্ষেত্রে আয়াতের অর্থ হচ্ছে, যদি তোমরা আল্লাহর প্রতি অকৃতজ্ঞ না হও এবং তার সাথে নিমকহারামী না কর; বরং যথার্থই তার প্রতি কৃতজ্ঞ ও শোকর আদায়কারী হও তাহলে আল্লাহ অনর্থক তোমাদের শাস্তি দেবেন না। মোটকথা: আল্লাহ তা'আলা ঈমানদার এবং শোকরগুজারকে শাস্তি দিবেন না। [তাবারী] কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, অনুগ্রহকারীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের সঠিক পদ্ধতি কি? বস্তুতঃ হৃদয়ের সমগ্র অনুভূতি দিয়ে তার অনুগ্রহের স্বীকৃতি দেয়া, মুখে এ অনুভূতির স্বীকারোক্তি করা এবং কার্যকলাপের মাধ্যমে অনুগৃহীত হওয়ার প্রমাণ পেশ করাই হচ্ছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশের সঠিক উপায়।
এ তিনটি কাজের সমবেত রূপই হচ্ছে শোকর। এ শোকরের দাবী হচ্ছে প্রথমতঃ অনুগ্রহকে অনুগ্রহকারীর অবদান বলে স্বীকার করা। অনুগ্রহের স্বীকৃতি দেয়ার ক্ষেত্রে অনুগ্রহকারীর সাথে আর কাউকে অংশীদার না করা। দ্বিতীয়তঃ অনুগ্রহকারীর প্রতি ভালবাসা, বিশ্বস্ততা ও আনুগত্যের অনুভূতি নিজের হৃদয়ে ভরপুর থাকা এবং অনুগ্রহকারীর বিরোধীদের প্রতি এ প্রসঙ্গে বিন্দুমাত্র ভালবাসা, আন্তরিকতা, আনুগত্য ও বিশ্বস্ততার সম্পর্ক না থাকা। তৃতীয়তঃ অনুগ্রহকারীর আনুগত্য করা, তার হুকুম মেনে চলা, তার নেয়ামগুলোকে তার মর্জির বাইরে ব্যবহার না করা।
তাফসীরে জাকারিয়া(১৪৭) তোমরা যদি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর ও বিশ্বাস কর,[1] তাহলে আল্লাহ তোমাদেরকে শাস্তি দিয়ে কি করবেন? বস্তুতঃ আল্লাহ গুণগ্রাহী, সর্বজ্ঞ। [2]
[1] আল্লাহর কৃতজ্ঞতা করার অর্থ হল, তাঁর নির্দেশ অনুযায়ী অন্যায়-অনাচার থেকে বিরত থাকা এবং নেক আমলের প্রতি যত্ন নেওয়া। এটাই হল আল্লাহর নিয়ামতের কার্যতঃ কৃতজ্ঞতা। আর ঈমান (বিশ্বাস) বলতে আল্লাহর তাওহীদ (একত্ব), তাঁর রুবূবিয়্যাত (প্রতিপালকত্ব) এবং শেষ নবী মুহাম্মাদ (সাঃ)-এর রিসালাত এবং অন্যান্য দ্বীনী বিষয়ের উপর বিশ্বাস স্থাপন করা।
[2] অর্থাৎ, যে তাঁর (আল্লাহর) কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবে, তিনি তার মূল্যায়ন করবেন। যে অন্তর থেকে ঈমান আনবে, তিনি তাকে জেনে নেবেন এবং সেই অনুযায়ী তাকে উত্তম প্রতিদানও দেবেন।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান