৫৫ . আর-রাহমান
৫৫: ১০ وَ الۡاَرۡضَ وَضَعَهَا لِلۡاَنَامِ ﴿ۙ۱۰﴾

আর যমীনকে বিছিয়ে দিয়েছেন সৃষ্টজীবের জন্য। আল-বায়ান

আর যমীন- তিনি (তাঁর) প্রাণীকুলের জন্য তাকে করেছেন বিস্তৃত, তাইসিরুল

তিনি পৃথিবীকে স্থাপন করেছেন সৃষ্ট জীবের জন্য। মুজিবুর রহমান

And the earth He laid [out] for the creatures. Sahih International

১০. আর যমীন, তিনি তা স্থাপন করেছেন সৃষ্ট জীবের জন্য;

-

তাফসীরে জাকারিয়া

(১০) তিনি পৃথিবীকে স্থাপন করেছেন সৃষ্টজীবের জন্য।

-

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
৫৫ . আর-রাহমান
৫৫: ১১ فِیۡهَا فَاكِهَۃٌ ۪ۙ وَّ النَّخۡلُ ذَاتُ الۡاَكۡمَامِ ﴿ۖ۱۱﴾

তাতে রয়েছে ফলমূল ও খেজুরগাছ, যার খেজুর আবরণযুক্ত। আল-বায়ান

এতে আছে নানান ফলমূল, আর খেজুর গাছ যার ফল আবরণে ঢাকা, তাইসিরুল

এতে রয়েছে ফল-মূল এবং খেজুর বৃক্ষ, যার ফল আবরণযুক্ত – মুজিবুর রহমান

Therein is fruit and palm trees having sheaths [of dates] Sahih International

১১. এতে রয়েছে ফলমূল ও খেজুর গাছ যার ফল আবরণযুক্ত,

-

তাফসীরে জাকারিয়া

(১১) এতে রয়েছে ফলমূল এবং মোচাযুক্ত খেজুর বৃক্ষ।[1]

[1] أَكْمَامٌ হল كِمٌّ এর বহুবচন। وِعَاءُ التَّمْرِ কচি খেজুরের উপরের আবরণ (মোচা)।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
৫৫ . আর-রাহমান
৫৫: ১২ وَ الۡحَبُّ ذُو الۡعَصۡفِ وَ الرَّیۡحَانُ ﴿ۚ۱۲﴾

আর আছে খোসাযুক্ত দানা ও সুগন্ধিযুক্ত ফুল। আল-বায়ান

আর খোসা ও ডাটা বিশিষ্ট দানা আর সুগন্ধী গাছ। তাইসিরুল

এবং খোসাবিশিষ্ট দানা ও সুগন্ধ গুল্ম। মুজিবুর রহমান

And grain having husks and scented plants. Sahih International

১২. আর আছে খোসা বিশিষ্ট দানা(১) ও সুগন্ধ ফুল।(২)

(১) حب এর অর্থ শস্য; যেমন গম, বুট, ধান, মাষ, মসুর ইত্যাদি। عصف সেই খোসাকে বলে, যার ভিতরে আল্লাহ্‌র কুদরতে মোড়কবিশিষ্ট অবস্থায় শস্যের দানা সৃষ্টি করা যায়। এর সাথে সম্ভবত আরও একটি অবদানের দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে যে, এই খোসা তোমাদের চতুষ্পদ জন্তুর খোরাক হয়, যাদের দুধ তোমরা পান কর এবং যাদের বোঝা বহনের কাজে নিয়োজিত কর। [কুরতুবী; ফাতহুল কাদীর; সা’দী]

(২) ريحان এর প্রসিদ্ধ অর্থ সুগন্ধি। অর্থাৎ আল্লাহ তা'আলা মৃত্তিকা থেকে উৎপন্ন বৃক্ষ থেকে নানা রকমের সুগন্ধি এবং সুগন্ধযুক্ত ফুল সৃষ্টি করেছেন। তাছাড়া ريحان শব্দটি কোন কোন সময় নির্যাস ও রিযিকের অর্থেও ব্যবহৃত হয়। তখন অর্থ হবে, আল্লাহ্ তা'আলা মাটি থেকে তোমাদের জন্য রিযিকের ব্যবস্থাও করেছেন। [কুরতুবী; ফাতহুল কাদীর]

তাফসীরে জাকারিয়া

(১২) এবং খোসাবিশিষ্ট শস্যদানা[1] ও সুগন্ধ ফুল।[2]

[1] حَبٌّ বলতে এমন সব শস্য যা খাদ্যরূপে পরিগণিত। শস্য শুকিয়ে ভুসি হয়ে যায়, যা পশুতে ভক্ষণ করে।

[2] আরবে তুলসী গাছকে ‘রাইহান’ বলা হয়।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
৫৫ . আর-রাহমান
৫৫: ১৩ فَبِاَیِّ اٰلَآءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبٰنِ ﴿۱۳﴾

সুতরাং তোমাদের রবের কোন্ নিআমতকে তোমরা উভয়ে* অস্বীকার করবে ? আল-বায়ান

অতএব (হে জ্বিন ও মানুষ!) তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের কোন্ কোন্ নিয়ামতকে অস্বীকার করবে? তাইসিরুল

সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের প্রতিপালকের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করবে? মুজিবুর রহমান

So which of the favors of your Lord would you deny? Sahih International

*‘উভয়ে’ দ্বারা জিন ও মানুষকে বুঝানো হয়েছে।

১৩. অতএব তোমরা উভয়ে তোমাদের রবের কোন অনুগ্রহে(১) মিথ্যারোপ করবে?(২)

(১) মূল আয়াতে آلَاءِ শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে এবং পরবর্তী আয়াতসমূহে এ শব্দটি বার বার উল্লেখ করা হয়েছে। ভাষাভিজ্ঞ পণ্ডিত ও তাফসীর বিশারদগণ শব্দের অর্থ করেছেন। ‘নিয়ামতসমূহ’ বা ‘অনুগ্রহসমগ্র’। [কুরতুবী] তবে মুফাসসির ইবন যায়েদ বলেন, শব্দটির অন্য অর্থ হচ্ছে, শক্তি ও ক্ষমতা। [ফাতহুল কাদীর] আল্লামা আবদুল হামীদ ফারাহী এ অর্থটিকে অধিক প্রাধান্য দিতেন।

(২) আয়াতে জিন্ন ও মানবকে সম্বোধন করা হয়েছে। [ফাতহুল কাদীর]

তাফসীরে জাকারিয়া

(১৩) অতএব (হে মানুষ ও জ্বিন সম্প্রদায়!) তোমরা উভয়ে তোমাদের প্রতিপালকের কোন্ কোন্ অনুগ্রহকে মিথ্যাজ্ঞান করবে?[1]

[1] এ সম্বোধন মানুষ ও জ্বিন উভয়কেই করা হয়েছে। মহান আল্লাহ তাঁর নিয়ামতসমূহ গনিয়ে তাদেরকে জিজ্ঞাসা করছেন। আর এর বারবার পুনরাবৃত্তির ব্যাপারটা এমন ব্যক্তির মত, যে কারো প্রতি অব্যাহতভাবে অনুগ্রহ করে; কিন্তু সে তা অস্বীকার করে। যেমন বলে, আমি তোমার অমুক কাজটা করে দিয়েছি, তুমি কি তা অস্বীকার করছ? অমুক জিনিসটা তোমাকে দিয়েছি, তোমার কি স্মরণে নেই? অমুক অনুগ্রহটা তোমার প্রতি আমি করেছি, তোমার কি আমার ব্যাপারে একটুও খেয়াল নেই? (ফাতহুল ক্বাদীর)

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
৫৫ . আর-রাহমান
৫৫: ১৪ خَلَقَ الۡاِنۡسَانَ مِنۡ صَلۡصَالٍ كَالۡفَخَّارِ ﴿ۙ۱۴﴾

তিনি মানুষকে সৃষ্টি করেছেন শুষ্ক ঠনঠনে মাটি থেকে যা পোড়া মাটির ন্যায়। আল-বায়ান

তিনি মানুষকে সৃষ্টি করেছেন পোড়া মাটির মত শুকনা পচা কাদা হতে, তাইসিরুল

মানুষকে তিনি সৃষ্টি করেছেন পোড়া মাটির মত শুস্ক মৃত্তিকা হতে – মুজিবুর রহমান

He created man from clay like [that of] pottery. Sahih International

১৪. মানুষকে তিনি সৃষ্টি করেছেন শুষ্ক ঠনঠনে মাটি থেকে যা পোড়া মাটির মত(১),

(১) এখানে إنسان বলে সরাসরি মৃত্তিকা থেকে সৃষ্ট আদম আলাইহিস সালাম-কে বুঝানো হয়েছে। صلصال এর অর্থ পানি মিশ্ৰিত শুষ্ক মাটি। فخار এর অর্থ পোড়ামাটি। অর্থাৎ মানুষকে আল্লাহ্ তা'আলা পোড়ামাটির ন্যায় শুষ্ক মৃত্তিকা থেকে সৃষ্টি করেছেন। [কুরতুবী] কুরআন মজীদে মানুষ সৃষ্টির যে প্রাথমিক পর্যায়সমূহ বৰ্ণনা করা হয়েছে, কুরআন মাজীদের বিভিন্ন স্থানের বক্তব্য একত্রিত করে তাঁর নিম্নোক্ত ক্ৰমিক বিন্যাস অবগত হওয়া যায়

(১) تراب ‘তুরাব’ অর্থাৎ মাটি। আল্লাহ বলেন, (كَمَثَلِ آدَمَ خَلَقَهُ مِنْ تُرَابٍ) [সূরা আলে-ইমরান: ৫৯]

(২) طين ‘ত্বীন’ অৰ্থাৎ পচা কৰ্দম যা মাটিতে পানি মিশিয়ে বানানো হয়। আল্লাহ বলেন, (الَّذِي أَحْسَنَ كُلَّ شَيْءٍ خَلَقَهُ وَبَدَأَ خَلْقَ الْإِنْسَانِ مِنْ طِينٍ) [সূরা আস-সাজদাহ: ৭]

(৩) (طِينٍ لَّازِبٍ) ‘ত্বীন লাযেব’ বা আঠালো কাদামাটি। অৰ্থাৎ এমন কাদা, দীর্ঘদিন পড়ে থাকার কারণে যার মধ্যে আঠা সৃষ্ট হয়ে যায়। মহান আল্লাহ বলেন, (إِنَّا خَلَقْنَاهُمْ مِنْ طِينٍ لَازِبٍ) [সূরা আস-সাফফাত: ১১]

(৪) (صَلْصَالٍ مِّنْ حَمَإٍ مَّسْنُونٍ) ‘সালসালিন মিন হামায়িন মাসনুন’ যে কাদার মধ্যে গন্ধ সৃষ্টি হয়ে যায়। আল্লাহ্‌ বলেন, (وَلَقَدْ خَلَقْنَا الْإِنْسَانَ مِنْ صَلْصَالٍ مِنْ حَمَإٍ مَسْنُونٍ) [সূরা আল-হিজর: ২৬]

(৫) (صَلْصَالٍ كَالْفَخَّارِ) ‘সালসালিন কাল-ফাখখার’ অর্থাৎ পচা কাদা যা শুকিয়ে যাওয়ার পরে মাটির শুকনো ঢিলার মত হয়ে যায়। আলোচ্য সূরা আর-রাহমানের এ আয়াতেই আল্লাহ্ তা'আলা এ পর্যায়টি উল্লেখ করে বলেন,

(৬) (بشر) ‘বাশার’ মাটির এ শেষপর্যায় থেকে যাকে বানানো হয়েছে, আল্লাহ তা'আলা যার মধ্যে তার বিশেষ রূহ ফুৎকার করেছেন, ফেরেশতাদের দিয়ে যাকে সিজদা করানো হয়েছিল এবং তার সমজাতীয় থেকে তার জোড়া সৃষ্টি করা হয়েছিল। আল্লাহ্‌ বলেন, (إِذْ قَالَ رَبُّكَ لِلْمَلَائِكَةِ إِنِّي خَالِقٌ بَشَرًا مِنْ طِينٍ ٭ فَإِذَا سَوَّيْتُهُ وَنَفَخْتُ فِيهِ مِنْ رُوحِي فَقَعُوا لَهُ سَاجِدِينَ) [সূরা সোয়াদ: ৭১–৭২]

(৭) (مِنْ سُلَالَةٍ مِنْ مَاءٍ مَهِينٍ) “মিন সুলালাতিন মিন মায়িন মাহীন” তারপর পরবর্তী সময়ে নিকৃষ্ট পানির মত সংমিশ্রিত দেহ নির্যাস থেকে তার বংশ ধারা চালু করা হয়েছে। আল্লাহ বলেন, (ثُمَّ جَعَلَ نَسْلَهُ مِنْ سُلَالَةٍ مِنْ مَاءٍ مَهِينٍ) [সূরা আস-সাজদাহ: ৮] এ কথাটি বুঝাতে অন্য স্থানসমূহে نطفة বা শুক্র শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে।

তাফসীরে জাকারিয়া

(১৪) মানুষকে (আদমকে) তিনি সৃষ্টি করেছেন পোড়া মাটির মত শুষ্ক মাটি থেকে। [1]

[1] صَلْصَالٍ শুকনো মাটি যাতে শব্দ হয়। فَخَّارٌ আগুনে পোড়ানো মাটি যাকে খোলামকুচি বলে। এখানে মানুষ বলতে আদম (আঃ)-কে বুঝানো হয়েছে। যাঁর প্রথমে মাটি থেকে (মানুষের) আকার তৈরী করা হয়। অতঃপর আল্লাহ তাতে ‘রূহ’ ফুঁকেন (আত্মাদান করেন)। তারপর আদম (আঃ)-এর বাম পাঁজরের হাড় থেকে হাওয়াকে সৃষ্টি করেন এবং এর পর থেকে তাঁদের উভয়ের মাধ্যমে মানুষ সৃষ্টির ধারাবাহিকতা চলতে থাকে।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
৫৫ . আর-রাহমান
৫৫: ১৫ وَ خَلَقَ الۡجَآنَّ مِنۡ مَّارِجٍ مِّنۡ نَّارٍ ﴿ۚ۱۵﴾

আর তিনি জিনকে সৃষ্টি করেছেন ধোঁয়াবিহীন অগ্নিশিখা থেকে। আল-বায়ান

আর জ্বিনকে সৃষ্টি করেছেন ধোঁয়াবিহীন আগুন হতে। তাইসিরুল

আর জিনকে সৃষ্টি করেছেন নির্ধূম অগ্নিশিখা হতে। মুজিবুর রহমান

And He created the jinn from a smokeless flame of fire. Sahih International

১৫. এবং জিনকে সৃষ্টি করেছেন নির্ধূৰ্ম আগুনের শিখা থেকে।(১)

(১) جان এর অর্থ জিন জাতি। مارج এর অর্থ অগ্নিশিখা। জিন সৃষ্টির প্রধান উপাদান অগ্নিশিখা, যেমন মানব সৃষ্টির প্রধান উপাদান মৃত্তিকা। نار অর্থ এক বিশেষ ধরনের আগুন। কাঠ বা কয়লা জ্বালালে যে আগুন সৃষ্টি হয় এটা সে আগুন নয়। আর অর্থ ধোঁয়াবিহীন শিখা। [কুরতুবী; ফাতহুল কাদীর] এ কথার অর্থ হচ্ছে প্রথম মানুষকে যেভাবে মাটি থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে, তারপর সৃষ্টির বিভিন্ন স্তর অতিক্রম করার সময় তার মাটির সত্তা অস্থি-মাংসে তৈরী জীবন্ত মানুষের আকৃতি লাভ করেছে এবং পরবর্তী সময়ে শুক্রের সাহায্যে তার বংশধারা চালু আছে। অনুরূপ প্রথম জিনকে নিছক আগুনের শিখা থেকে সৃষ্টি করা হয়েছিল এবং তার বংশধরদের থেকে পরবর্তী সময়ে জিনদের অধস্তন বংশধররা সৃষ্টি হয়ে চলেছে। মানব জাতির জন্য আদমের মর্যাদা যা, জিন জাতির জন্য সেই প্রথম জিনের মর্যাদাও তাই। জীবন্ত মানুষ হয়ে যাওয়ার পর আদম এবং তার বংশ থেকে জন্ম লাভকারী মানুষের দেহের সেই মাটির সাথে যেমন কোন মিল থাকলো না জিনদের ব্যাপারটাও তাই। তাদের সত্তাও মুলত আগুনের সত্তা। কিন্তু আমরা যেমন মাটির স্তুপ নই, অনুরূপ তারাও শুধু অগ্নি শিখা নয়। [দেখুন: আদওয়াউল বায়ান]

তাফসীরে জাকারিয়া

(১৫) এবং জ্বিনকে সৃষ্টি করেছেন অগ্নিশিখা থেকে। [1]

[1] এ থেকে উদ্দেশ্য সর্বপ্রথম জ্বিন। সে হল আবুল জ্বিন তথা জ্বিনদের (আদি) পিতা। অথবা জ্বিন এখানে ‘জিন্‌স’ (জাতি) হিসাবে ব্যবহূত হয়েছে। যেমন অনুবাদও ‘জাতি’ অর্থে করা হয়েছে। مَارِجٍ বলা হয়, আগুন থেকে উঁচু হয়ে ওঠা শিখাকে।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
৫৫ . আর-রাহমান
৫৫: ১৬ فَبِاَیِّ اٰلَآءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبٰنِ ﴿۱۶﴾

সুতরাং তোমাদের রবের কোন্ নিআমতকে তোমরা উভয়ে অস্বীকার করবে ? আল-বায়ান

অতএব (হে জ্বিন ও মানুষ!) তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের কোন্ কোন্ নি‘মাতকে অস্বীকার করবে? তাইসিরুল

সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের প্রতিপালকের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করবে? মুজিবুর রহমান

So which of the favors of your Lord would you deny? Sahih International

১৬. কাজেই তোমরা উভয়ে তোমাদের রবের কোন অনুগ্রহে মিথ্যারোপ করবে?

-

তাফসীরে জাকারিয়া

(১৬) অতএব তোমরা উভয়ে তোমাদের প্রতিপালকের কোন্ কোন্ অনুগ্রহকে মিথ্যাজ্ঞান করবে? [1]

[1] অর্থাৎ, তোমাদের এই সৃষ্টিও এবং তোমাদের ঔরসে অতিরিক্ত আরো বংশধরদের সৃষ্টিও আল্লাহর নিয়ামতেরই অন্তর্ভুক্ত। তোমরা কি এই নিয়ামতকে অস্বীকার করবে?

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
৫৫ . আর-রাহমান
৫৫: ১৭ رَبُّ الۡمَشۡرِقَیۡنِ وَ رَبُّ الۡمَغۡرِبَیۡنِ ﴿ۚ۱۷﴾

তিনি দুই পূর্ব ও দুই পশ্চিমের* রব। আল-বায়ান

তিনিই দু’টি উদয় স্থান ও দু’টি অস্তাচলের নিয়ন্ত্রক, তাইসিরুল

তিনিই দুই উদয়াচল ও দুই অস্তাচলের নিয়ন্তা। মুজিবুর রহমান

[He is] Lord of the two sunrises and Lord of the two sunsets. Sahih International

* দুই পূর্ব বলতে গ্রীষ্ম ও শীতকালের উদয়স্থল এবং দুই পশ্চিম বলতে গ্রীষ্ম ও শীতকালের অস্তস্থলকে বুঝানো হয়েছে।

১৭. তিনিই দুই উদয়াচল ও দুই অস্তাচলের রব।(১)

(১) দুই উদয়াচল ও দুই অস্তাচলের অর্থ শীতকালের সবচেয়ে ছোট দিন এবং গ্ৰীষ্মকালের সবচেয়ে বড় দিনের উদয়াচল ও অস্তাচলও হতে পারে। আবার পৃথিবীর দুই গোলার্ধের উদয়াচল ও অস্তাচলও হতে পারে। শীত মৌসুমের সর্বাপেক্ষা ছোট দিনে সূর্য অত্যন্ত সংকীর্ণ একটি কোণ সৃষ্টি করে উদয় হয় এবং অস্ত যায়। অপর দিকে গ্ৰীষ্মের সর্বাপেক্ষা বড় দিনে অতি বিস্তৃত কোণ সৃষ্টি করে উদয় হয় এবং অস্ত যায়। প্রতি দিন এ উভয় কোণের মাঝে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের স্থান পরিবর্তিত হতে থাকে। এ কারণে কুরআনের অন্য এক স্থানে বলা হয়েছে, (فَلَا أُقْسِمُ بِرَبِّ الْمَشَارِقِ وَالْمَغَارِبِ إِنَّا لَقَادِرُونَ) [সূরা আল-মা'আরিজ: ৪০]। অনুরূপ পৃথিবীর এক গােলার্ধে যখন সূর্য উদয় হয় ঠিক সে সময় অন্য গোলার্ধে তা অস্ত যায়। এভাবেও পৃথিবীর দু'টি উদয়াচল ও অস্তাচল হয়ে যায়। [ইবন কাসীর; আত-তাহরীর ওয়াত তানিওয়ীর]

তাফসীরে জাকারিয়া

(১৭) তিনিই দুই উদায়াচল ও দুই অস্তাচলের প্রতিপালক। [1]

[1] একটি হল গ্রীষ্মকালের উদয়াচল এবং দ্বিতীয়টি হল শীতকালের উদয়াচল। অস্তাচলের ব্যাপারটাও অনুরূপ। এই কারণে উভয়কে দ্বিবচন শব্দে উল্লেখ করেছেন। ঋতু অনুযায়ী উদয়াচল ও অস্তাচলের ভিন্নতায় মানুষ ও জ্বিনদের জন্য রয়েছে বহু উপকারিতা। তাই এটাকেও নিয়ামত হিসাবে গণ্য করা হয়েছে।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
৫৫ . আর-রাহমান
৫৫: ১৮ فَبِاَیِّ اٰلَآءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبٰنِ ﴿۱۸﴾

সুতরাং তোমাদের রবের কোন্ নিআমতকে তোমরা উভয়ে অস্বীকার করবে ? আল-বায়ান

অতএব (হে জ্বিন ও মানুষ!) তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের কোন্ কোন্ নি‘মাতকে অস্বীকার করবে? তাইসিরুল

সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের রবের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করবে? মুজিবুর রহমান

So which of the favors of your Lord would you deny? Sahih International

১৮. কাজেই তোমরা উভয়ে তোমাদের রবের কোন অনুগ্রহে মিথ্যারোপ করবে?

-

তাফসীরে জাকারিয়া

(১৮) অতএব তোমরা উভয়ে তোমাদের প্রতিপালকের কোন্ কোন্ অনুগ্রহকে মিথ্যাজ্ঞান করবে?

-

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
৫৫ . আর-রাহমান
৫৫: ১৯ مَرَجَ الۡبَحۡرَیۡنِ یَلۡتَقِیٰنِ ﴿ۙ۱۹﴾

তিনি দুই সমুদ্রকে প্রবাহিত করেন, যারা পরস্পর মিলিত হয়। আল-বায়ান

দু’টি সমুদ্রকে তিনিই প্রবাহিত করেন যারা পরস্পর মিলিত হয়, তাইসিরুল

তিনি প্রবাহিত করেন দুই দরিয়া, যারা পরস্পর মিলিত হয়, মুজিবুর রহমান

He released the two seas, meeting [side by side]; Sahih International

১৯. তিনি প্রবাহিত করেন দুই সমুদ্র যারা পরস্পর মিলিত হয়,

-

তাফসীরে জাকারিয়া

(১৯) তিনি প্রবাহিত করেন দুই দরিয়া যারা পরস্পর মিলিত হয়,

-

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
দেখানো হচ্ছেঃ ৪৯১১ থেকে ৪৯২০ পর্যন্ত, সর্বমোট ৬২৩৬ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে পাতা নাম্বারঃ « আগের পাতা 1 2 3 4 · · · 489 490 491 492 493 · · · 621 622 623 624 পরের পাতা »