৪২ . আশ-শূরা
৪২:৩৯ وَ الَّذِیۡنَ اِذَاۤ اَصَابَهُمُ الۡبَغۡیُ هُمۡ یَنۡتَصِرُوۡنَ ﴿۳۹﴾

আর তাদের উপর অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি করা হলে তারা তার প্রতিবিধান করে। আল-বায়ান

আর তাদের উপর অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি করা হলে নিজেদের প্রতিরক্ষার ব্যবস্থা করে। তাইসিরুল

এবং যারা অত্যাচারিত হলে প্রতিশোধ গ্রহণ করে – মুজিবুর রহমান

And those who, when tyranny strikes them, they defend themselves, Sahih International

৩৯. আর যারা, যখন তাদের উপর সীমালঙ্গন হয় তখন তারা তার প্ৰতিবিধান করে।

-

তাফসীরে জাকারিয়া

(৩৯) এবং যারা অত্যাচারিত হলে প্রতিশোধ গ্রহণ করে।[1]

[1] অর্থাৎ, তারা প্রতিশোধ গ্রহণ করতে অপারগ নয়। প্রতিশোধ নিতে চাইলে নিতে পারে। কিন্তু শক্তি থাকা সত্ত্বেও তারা ক্ষমা করে দেওয়াকে প্রাধান্য দেয়। যেমন, নবী করীম (সাঃ) মক্কা বিজয়ের দিন এমন লোকদের ব্যাপারে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেছিলেন, যারা ছিল তাঁর রক্তপিপাসু। হুদাইবিয়ার সন্ধির দিন তিনি সেই ৮০জন লোককে মাফ করে দিয়েছিলেন, যারা তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছিল। লাবীদ ইবনে আ’স্বাম ইয়াহুদীর কাছ থেকে প্রতিশোধ গ্রহণ করেননি, যে তাঁকে যাদু করেছিল। সেই ইয়াহুদী মহিলাকেও তিনি মাফ করে দিয়েছিলেন, যে তাঁর খাদ্যে বিষ মাখিয়ে দিয়েছিল। যার কষ্ট তিনি জীবনের শেষে মরণ-মুহূর্তেও অনুভব করেছিলেন। (ইবনে কাসীর) (অবশ্য পরবর্তীতে তারই বিষে এক সাহাবীর মৃত্যু হলে তার খুনের বদলে তাকে হত্যা করা হয়েছিল।)

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
৪২ . আশ-শূরা
৪২:৪০ وَ جَزٰٓؤُا سَیِّئَۃٍ سَیِّئَۃٌ مِّثۡلُهَا ۚ فَمَنۡ عَفَا وَ اَصۡلَحَ فَاَجۡرُهٗ عَلَی اللّٰهِ ؕ اِنَّهٗ لَا یُحِبُّ الظّٰلِمِیۡنَ ﴿۴۰﴾

আর মন্দের প্রতিফল অনুরূপ মন্দ। অতঃপর যে ক্ষমা করে দেয় এবং আপোস নিস্পত্তি করে, তার পুরস্কার আল্লাহর নিকট রয়েছে। নিশ্চয় আল্লাহ যালিমদের পছন্দ করেন না। আল-বায়ান

অন্যায়ের প্রতিবিধান হল অনুরূপ অন্যায়। অতঃপর যে ক্ষমা করে এবং সমঝোতা করে, তার প্রতিদান দেয়া আল্লাহর যিম্মায়। সীমাঙ্ঘনকারীদেরকে আল্লাহ পছন্দ করেন না। তাইসিরুল

মন্দের প্রতিফল অনুরূপ মন্দ দ্বারা এবং যে ক্ষমা করে ও আপোষ-নিস্পত্তি করে তার পুরস্কার আল্লাহর নিকট রয়েছে। আল্লাহ যালিমদের পছন্দ করেন না। মুজিবুর রহমান

And the retribution for an evil act is an evil one like it, but whoever pardons and makes reconciliation - his reward is [due] from Allah. Indeed, He does not like wrongdoers. Sahih International

৪০. আর মন্দের প্রতিফল অনুরূপ মন্দ অতঃপর যে ক্ষমা করে দেয় ও আপস-নিষ্পত্তি করে তার পুরস্কার আল্লাহর কাছে আছে। নিশ্চয় তিনি যালিমদেরকে পছন্দ করেন না।

-

তাফসীরে জাকারিয়া

(৪০) মন্দের প্রতিফল অনুরূপ মন্দ।[1] আর যে ক্ষমা করে দেয় ও আপোস-নিস্পত্তি করে, তার পুরস্কার আল্লাহর নিকট আছে, নিশ্চয়ই আল্লাহ সীমালংঘনকারীদেরকে পছন্দ করেন না।

[1] এটা হল ‘কেসাস’ (অনুরূপ প্রতিশোধ নেওয়া)এর অনুমতি। মন্দের বদলা যদিও মন্দ নয়, তবুও (শব্দে ও কর্মে) সাদৃশ্য বর্তমান থাকার কারণে এটাকেও মন্দ বলা হয়েছে।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
৪২ . আশ-শূরা
৪২:৪১ وَ لَمَنِ انۡتَصَرَ بَعۡدَ ظُلۡمِهٖ فَاُولٰٓئِكَ مَا عَلَیۡهِمۡ مِّنۡ سَبِیۡلٍ ﴿ؕ۴۱﴾

তবে অত্যাচারিত হবার পর যারা প্রতিবিধান করে, তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না। আল-বায়ান

কেউ অত্যাচারিত হয়ে নিজের প্রতিরক্ষার ব্যবস্থা নিলে, তার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ নেই। তাইসিরুল

তবে অত্যাচারিত হওয়ার পর যারা প্রতিবিধান করে তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবেনা। মুজিবুর রহমান

And whoever avenges himself after having been wronged - those have not upon them any cause [for blame]. Sahih International

৪১. তবে অত্যাচারিত হওয়ার পর যারা প্রতিবিধান করে, তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্ৰহণ করা হবে না;

-

তাফসীরে জাকারিয়া

(৪১) তবে অত্যাচারিত হওয়ার পর যারা প্রতিশোধ গ্রহণ করে, তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না।

-

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
৪২ . আশ-শূরা
৪২:৪২ اِنَّمَا السَّبِیۡلُ عَلَی الَّذِیۡنَ یَظۡلِمُوۡنَ النَّاسَ وَ یَبۡغُوۡنَ فِی الۡاَرۡضِ بِغَیۡرِ الۡحَقِّ ؕ اُولٰٓئِكَ لَهُمۡ عَذَابٌ اَلِیۡمٌ ﴿۴۲﴾

কেবল তাদের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে, যারা মানুষের উপর যুলম করে এবং যমীনে অন্যায়ভাবে সীমালঙ্ঘন করে বেড়ায়। তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক আযাব। আল-বায়ান

অভিযোগ তো তাদের বিরুদ্ধে যারা মানুষের প্রতি অত্যাচার করে, আর অন্যায়ভাবে যমীনে বিদ্রোহ সৃষ্টি করে; তাদের জন্য আছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। তাইসিরুল

শুধু তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে যারা মানুষের উপর অত্যাচার করে এবং পৃথিবীতে অন্যায়ভাবে বিদ্রোহাচরণ করে বেড়ায়, তাদের জন্য রয়েছে বেদনাদায়ক শাস্তি। মুজিবুর রহমান

The cause is only against the ones who wrong the people and tyrannize upon the earth without right. Those will have a painful punishment. Sahih International

৪২. শুধু তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা অবলম্বন করা হবে যারা মানুষের উপর যুলুম করে এবং যমীনে অন্যায়ভাবে বিদ্রোহাচরণ করে বেড়ায়, তাদেরই জন্য যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।

-

তাফসীরে জাকারিয়া

(৪২) কেবল তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে, যারা মানুষের ওপর অত্যাচার করে এবং পৃথিবীতে অহেতুক বিদ্রোহাচরণ করে বেড়ায়। তাদের জন্যই রয়েছে বেদনাদায়ক শাস্তি।

-

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
৪২ . আশ-শূরা
৪২:৪৩ وَ لَمَنۡ صَبَرَ وَ غَفَرَ اِنَّ ذٰلِكَ لَمِنۡ عَزۡمِ الۡاُمُوۡرِ ﴿۴۳﴾

আর যে ধৈর্যধারণ করে এবং ক্ষমা করে, তা নিশ্চয় দৃঢ়সংকল্পেরই কাজ। আল-বায়ান

আর যে ব্যক্তি (অত্যাচারিত হওয়ার পরও) ধৈর্য ধারণ করে, আর (অত্যাচারীকে) ক্ষমা করে দেয়, তাহলে তা অবশ্যই দৃঢ় চিত্ততার কাজ। তাইসিরুল

অবশ্য যে ধৈর্য ধারণ করে এবং ক্ষমা করে দেয় তাতো হবে দৃঢ় সম্পর্কেরই কাজ। মুজিবুর রহমান

And whoever is patient and forgives - indeed, that is of the matters [requiring] determination. Sahih International

৪৩. আর অবশ্যই যে ধৈর্য ধারণ করে। এবং ক্ষমা করে দেয়, নিশ্চয় তা দৃঢ় সংকল্পেরই কাজ।

-

তাফসীরে জাকারিয়া

(৪৩) অবশ্যই যে ধৈর্য ধারণ করে এবং ক্ষমা করে, নিশ্চয় তা দৃঢ়-সংকল্পের কাজ।

-

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
৪২ . আশ-শূরা
৪২:৪৪ وَ مَنۡ یُّضۡلِلِ اللّٰهُ فَمَا لَهٗ مِنۡ وَّلِیٍّ مِّنۡۢ بَعۡدِهٖ ؕ وَ تَرَی الظّٰلِمِیۡنَ لَمَّا رَاَوُا الۡعَذَابَ یَقُوۡلُوۡنَ هَلۡ اِلٰی مَرَدٍّ مِّنۡ سَبِیۡلٍ ﴿ۚ۴۴﴾

আর আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেন, তারপর তার জন্য কোন অভিভাবক নেই। আর তুমি যালিমদেরকে দেখবে, যখন তারা আযাব প্রত্যক্ষ করবে তখন বলবে, ‘ফিরে যাওয়ার কোন পথ আছে কি’? আল-বায়ান

আল্লাহই যাকে পথভ্রষ্ট করেন, তার জন্য তিনি ছাড়া কোন অভিভাবক নেই। তুমি দেখবে, যখন যালিমরা ‘আযাব প্রত্যক্ষ করবে তখন বলবে- ফিরে যাওয়ার কোন পথ আছে কি? তাইসিরুল

আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেন তার জন্য কোন অভিভাবক নেই। যালিমরা যখন শাস্তি প্রত্যক্ষ করবে তখন তুমি তাদেরকে বলতে শুনবেঃ প্রত্যাবর্তনের কোন উপায় আছে কি? মুজিবুর রহমান

And he whom Allah sends astray - for him there is no protector beyond Him. And you will see the wrongdoers, when they see the punishment, saying, "Is there for return [to the former world] any way?" Sahih International

৪৪. আর আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেন, এরপর তার জন্য কোন অভিভাবক নেই। আর যালিমরা যখন শাস্তি দেখতে পাবে তখন আপনি তাদেরকে বলতে শুনবেন, ফিরে যাওয়ার কোন উপায় আছে কি?

-

তাফসীরে জাকারিয়া

(৪৪) আল্লাহ কাউকেও পথভ্রষ্ট করলে তার জন্য তিনি ব্যতীত কোন অভিভাবক নেই। আর সীমালংঘনকারীরা যখন শাস্তি প্রত্যক্ষ করবে, তখন তুমি ওদেরকে বলতে শুনবে, আমাদের কি ফিরে যাওয়ার কোন উপায় নেই?

-

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
৪২ . আশ-শূরা
৪২:৪৫ وَ تَرٰىهُمۡ یُعۡرَضُوۡنَ عَلَیۡهَا خٰشِعِیۡنَ مِنَ الذُّلِّ یَنۡظُرُوۡنَ مِنۡ طَرۡفٍ خَفِیٍّ ؕ وَ قَالَ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اِنَّ الۡخٰسِرِیۡنَ الَّذِیۡنَ خَسِرُوۡۤا اَنۡفُسَهُمۡ وَ اَهۡلِیۡهِمۡ یَوۡمَ الۡقِیٰمَۃِ ؕ اَلَاۤ اِنَّ الظّٰلِمِیۡنَ فِیۡ عَذَابٍ مُّقِیۡمٍ ﴿۴۵﴾

তুমি তাদেরকে আরো দেখবে যে, তাদেরকে অপমানে অবনত অবস্থায় জাহান্নামে উপস্থিত করা হচ্ছে, তারা আড় চোখে তাকাচ্ছে। আর কিয়ামতের দিন মুমিনগণ বলবে, তারাই তো ক্ষতিগ্রস্ত যারা নিজদের ও পরিবার-পরিজনের ক্ষতি সাধন করেছে। সাবধান! যালিমরাই থাকবে স্থায়ী আযাবে। আল-বায়ান

তুমি (আরো) দেখবে, তাদেরকে জাহান্নামের সম্মুখে উপস্থিত করা হবে, তারা থাকবে অপমানে অবনত, তারা লুকিয়ে তাকাবে। আর যারা ঈমান এনেছে তারা বলবে, সত্যিকার ক্ষতিগ্রস্ত তো তারাই যারা ক্বিয়ামতের দিনে নিজেদেরকে এবং নিজেদের পরিবার-পরিজনকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। সাবধান! যালিমরা থাকবে স্থায়ী ‘আযাবে। তাইসিরুল

তুমি তাদেরকে দেখতে পাবে যে, তাদেরকে (জাহান্নামের সামনে) উপস্থিত করা হচ্ছে, লাঞ্ছিত ও অপমানিত অবস্থায়। মু’মিনরা কিয়ামাত দিবসে বলবেঃ ক্ষতিগ্রস্ত তারাই যারা নিজেদের ও নিজেদের পরিজনবর্গের ক্ষতি সাধন করেছে। জেনে রেখ, যালিমরা ভোগ করবে স্থায়ী শাস্তি। মুজিবুর রহমান

And you will see them being exposed to the Fire, humbled from humiliation, looking from [behind] a covert glance. And those who had believed will say, "Indeed, the [true] losers are the ones who lost themselves and their families on the Day of Resurrection. Unquestionably, the wrongdoers are in an enduring punishment." Sahih International

৪৫. আর আপনি তাদেরকে দেখতে পাবেন যে, তাদেরকে জাহান্নামের সামনে উপস্থিত করা হচ্ছে; তারা অপমানে অবনত অবস্থায় আড় চোখে তাকাচ্ছে; আর যারা ঈমান এনেছে তারা কিয়ামতের দিন বলবে, নিশ্চয় ক্ষতিগ্ৰস্ত তারাই যারা নিজেদের ও নিজেদের পরিজনবর্গের ক্ষতি সাধন করেছে। সাবধান, নিশ্চয় যালিমরা স্থায়ী শাস্তিতে নিপতিত থাকবে।

-

তাফসীরে জাকারিয়া

(৪৫) জাহান্নামের নিকট উপস্থিত করা হলে তুমি ওদেরকে দেখতে পাবে অপমানে অবনত হয়ে ওরা চোরা দৃষ্টিতে তাকাচ্ছে। আর যারা বিশ্বাস করেছে, তারা বলবে, ‘আসল ক্ষতিগ্রস্ত তো তারাই; যারা কিয়ামতের দিন নিজেদেরকে ও নিজেদের পরিজনবর্গকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। জেনে রেখো, সীমালংঘনকারীরা অবশ্যই স্থায়ী শাস্তি ভোগ করবে।’[1]

[1] অর্থাৎ, দুনিয়াতে কাফেররা আমাদেরকে বোকা, অনুন্নত ও ক্ষতিগ্রস্ত মনে করত। অথচ আমরা তো দুনিয়াতে আখেরাতকে প্রাধান্য দিতাম এবং পার্থিব ক্ষতির কোনই গুরুত্ব দিতাম না। আজ দেখে নাও, প্রকৃত ক্ষতির শিকার কারা হয়েছে; যারা দুনিয়ার ক্ষণস্থায়ী ক্ষতির কোনই পরোয়া করেনি এবং আজ যারা জান্নাতের সুখভোগ করছে তারা, নাকি তারা যারা দুনিয়াকেই সব কিছু ভেবে নিয়েছিল এবং আজ জাহান্নামের আযাবে পরিবেষ্টিত হয়েছে, যা থেকে নিষ্কৃতি লাভ সম্ভবই নয়?

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
৪২ . আশ-শূরা
৪২:৪৬ وَ مَا كَانَ لَهُمۡ مِّنۡ اَوۡلِیَآءَ یَنۡصُرُوۡنَهُمۡ مِّنۡ دُوۡنِ اللّٰهِ ؕ وَ مَنۡ یُّضۡلِلِ اللّٰهُ فَمَا لَهٗ مِنۡ سَبِیۡلٍ ﴿ؕ۴۶﴾

আর আল্লাহ ছাড়া তাদেরকে সাহায্য করার জন্য তাদের কোন অভিভাবক থাকবে না। আর আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেন তার কোন পথ নেই। আল-বায়ান

তাদের কোন অভিভাবক থাকবে না আল্লাহ্ ব্যতীত যারা তাদেরকে সাহায্য করতে পারে। আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেন তার (শাস্তি থেকে বাঁচার) কোন রাস্তা নেই। তাইসিরুল

আল্লাহ ব্যতীত তাদেরকে সাহায্য করার জন্য তাদের কোন অভিভাবক থাকবেনা এবং আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেন তার কোন গতি নেই। মুজিবুর রহমান

And there will not be for them any allies to aid them other than Allah. And whoever Allah sends astray - for him there is no way. Sahih International

৪৬. আর আল্লাহ্‌ ছাড়া তাদেরকে সাহায্য করার জন্য তাদের কোন অভিভাবক থাকবে না। আর আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেন তার কোন পথ নেই।

-

তাফসীরে জাকারিয়া

(৪৬) আল্লাহর শাস্তির বিরুদ্ধে ওদের সাহায্য করার জন্য ওদের কোন অভিভাবক থাকবে না এবং আল্লাহ কাকেও পথভ্রষ্ট করলে তার কোন গতি নেই।

-

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
৪২ . আশ-শূরা
৪২:৪৭ اِسۡتَجِیۡبُوۡا لِرَبِّكُمۡ مِّنۡ قَبۡلِ اَنۡ یَّاۡتِیَ یَوۡمٌ لَّا مَرَدَّ لَهٗ مِنَ اللّٰهِ ؕ مَا لَكُمۡ مِّنۡ مَّلۡجَاٍ یَّوۡمَئِذٍ وَّ مَا لَكُمۡ مِّنۡ نَّكِیۡرٍ ﴿۴۷﴾

তোমরা তোমাদের রবের ডাকে সাড়া দাও, আল্লাহর পক্ষ থেকে সেদিন আসার পূর্বের্ই, যাকে ফিরিয়ে দেয়ার কোনো উপায় নেই। সেদিন তোমাদের জন্য কোন আশ্রয়স্থল থাকবে না এবং তোমাদের জন্য প্রতিরোধকারীও থাকবে না। আল-বায়ান

তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের কথায় সাড়া দাও সেই দিন আসার পূর্বে আল্লাহ (’র হুকুমে যা সংঘটিত হওয়া) থেকে ফিরিয়ে রাখার কেউ নেই। সেদিন তোমাদের জন্য আশ্রয়স্থল থাকবে না, থাকবে না তোমাদের জন্য কোন প্রতিরোধকারী। তাইসিরুল

তোমরা তোমাদের রবের আহবানে সাড়া দাও সেই দিন আসার পূর্বে যা আল্লাহর বিধানে অপ্রতিরোদ্ধ, ‘যেদিন তোমাদের কোন আশ্রয়স্থল থাকবেনা, আর না (তোমাদের পাপ) অস্বীকার করার সুযোগ থাকবে।’ মুজিবুর রহমান

Respond to your Lord before a Day comes from Allah of which there is no repelling. No refuge will you have that day, nor for you will there be any denial. Sahih International

৪৭. তোমরা তোমাদের রবের ডাকে সাড়া দাও আল্লাহর পক্ষ থেকে সে দিন আসার আগে, যা অপ্রতিরোধ্য; যেদিন তোমাদের কোন আশ্রয়স্থল থাকবে না এবং তোমাদের কোন অস্বীকার থাকবে না।(১)

(১) আয়াতের শেষে (مِنْ نَكِيرٍ) বলে কি বোঝানো হয়েছে এ ব্যাপারে কয়েকটি অভিমত বর্ণিত হয়েছে। এক, সেদিন কেউ তার অপরাধ অস্বীকার করতে পারবে না। [জালালাইন] দুই, সে দিন কেউ কোনভাবেই আত্মগোপন করতে পারবে না। [ইবন কাসীর; মুয়াসসার] তিন. সেদিন তার জন্য কোন সাহায্যকারী থাকবে না। [তাবারী; সা’দী]

তাফসীরে জাকারিয়া

(৪৭) আল্লাহর নির্ধারিত সেই দিন আসার পূর্বে তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের আহবানে সাড়া দাও, যা রদ্দ হবার নয়।[1] সেদিন তোমাদের কোন আশ্রয়স্থল থাকবে না এবং লুকিয়ে নিখোঁজ হওয়ার স্থানও না। [2]

[1] অর্থাৎ, যাকে রোধ করার এবং রদ্দ করার শক্তি কারো নেই।

[2] অর্থাৎ, তোমাদের জন্য কোন এমন স্থান হবে না, যেখানে তোমরা লুকিয়ে নিখোঁজ ও পরিচয়হীন হয়ে যাবে অথবা দৃষ্টিগোচর হবে না। যেমন অন্যত্র বলেন, {يَقُوْلُ الْإِنْسَانُ يَوْمَئِذٍ اَيْنَ الْمَفَرُّ، كَلاَّ لاَ وَزَرَ، إِلَى رَبِّكَ يَوْمَئِذٍ الْمُسْتَقَرّ}ُ অর্থাৎ, সেদিন মানুষ বলবে, পলায়নের জায়গা কোথায়? না, কোন আশ্রয়স্থল নেই। তোমার পালনকর্তার কাছেই সেদিন ঠাঁই হবে। (সূরা ক্বিয়ামাহ ১০-১২) অথবা نَكِير অর্থ, ইনকার (অস্বীকার) করা। অর্থাৎ, তোমরা নিজেদের পাপসমূহকে অস্বীকার করতে পারবে না। কারণ, প্রথমতঃ সবকিছুই লিখিত থাকবে। দ্বিতীয়তঃ স্বয়ং মানুষের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গও সাক্ষ্য দেবে। কিংবা যে আযাব তোমাদেরকে তোমাদের পাপের কারণে দেওয়া হবে, তোমরা সেই আযাবকে অস্বীকার করতে পারবে না। কেননা, পাপ স্বীকার করা ছাড়া কোন উপায় থাকবে না।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
৪২ . আশ-শূরা
৪২:৪৮ فَاِنۡ اَعۡرَضُوۡا فَمَاۤ اَرۡسَلۡنٰكَ عَلَیۡهِمۡ حَفِیۡظًا ؕ اِنۡ عَلَیۡكَ اِلَّا الۡبَلٰغُ ؕ وَ اِنَّاۤ اِذَاۤ اَذَقۡنَا الۡاِنۡسَانَ مِنَّا رَحۡمَۃً فَرِحَ بِهَا ۚ وَ اِنۡ تُصِبۡهُمۡ سَیِّئَۃٌۢ بِمَا قَدَّمَتۡ اَیۡدِیۡهِمۡ فَاِنَّ الۡاِنۡسَانَ كَفُوۡرٌ ﴿۴۸﴾

আর যদি তারা বিমুখ হয়, তবে আমি তো তোমাকে তাদের রক্ষক হিসেবে পাঠাইনি। বাণী পৌঁছে দেয়াই তোমার দায়িত্ব। আর আমি যখন মানুষকে আমার রহমত আস্বাদন করাই তখন সে খুশি হয়। আর যখন তাদের কৃতকর্মের জন্য তাদের উপর কোন বিপদ আসে তখন মানুষ বড়ই অকৃতজ্ঞ হয়। আল-বায়ান

এতদসত্ত্বেও তারা যদি মুখ ফিরিয়েই নেয় (তাহলে ফিরিয়ে নিক, কারণ) আমি তোমাকে তাদের হিফাযাতকারী বানিয়ে পাঠাইনি। কথা পৌঁছে দেয়াই তোমার দায়িত্ব। আমি যখন মানুষকে আমার রহমত আস্বাদন করাই, তখন সে উৎফুল্ল হয়। আর যখন তাদের কৃতকর্মের কারণে তাদের কোন অনিষ্ট হয়, তখন মানুষ অকৃতজ্ঞ হয়ে যায়। তাইসিরুল

তারা যদি মুখ ফিরিয়ে নেয় তাহলে তোমাকেতো আমি তাদের রক্ষক করে পাঠাইনি। তোমার কাজতো শুধু প্রচার করে যাওয়া। আমি মানুষকে যখন অনুগ্রহ আস্বাদন করাই তখন সে উৎফুল্ল হয় এবং যখন তাদের কৃতকর্মের জন্য তাদের বিপদ আপদ ঘটে তখন মানুষ হয়ে যায় অকৃতজ্ঞ। মুজিবুর রহমান

But if they turn away - then We have not sent you, [O Muhammad], over them as a guardian; upon you is only [the duty of] notification. And indeed, when We let man taste mercy from us, he rejoices in it; but if evil afflicts him for what his hands have put forth, then indeed, man is ungrateful. Sahih International

৪৮. অতঃপর যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে আপনাকে তো আমরা এদের রক্ষক করে পাঠাইনি। আপনার কাজ তো শুধু বাণী পৌছে দেয়া। আর আমরা যখন মানুষকে আমাদের পক্ষ থেকে কোন রহমত আস্বাদন করাই তখন সে এতে উৎফুল্ল হয় এবং যখন তাদের কৃতকর্মের জন্য তাদের বিপদ-আপদ ঘটে, তখন তো মানুষ হয়ে পড়ে খুবই অকৃতজ্ঞ।

-

তাফসীরে জাকারিয়া

(৪৮) ওরা যদি মুখ ফিরিয়ে নেয়, (হে মুহাম্মাদ!) তাহলে তোমাকে তো আমি ওদের রক্ষক করে পাঠাইনি।[1] তোমার কাজ তো কেবল প্রচার করে যাওয়া। আর আমি মানুষকে যখন আমার তরফ থেকে অনুগ্রহ[2] আস্বাদন করাই, তখন সে এতে উৎফুল্ল হয়[3] এবং যখন ওদের কৃতকর্মের জন্য ওদের বিপদ-আপদ[4] ঘটে, তখন মানুষ হয়ে পড়ে অকৃতজ্ঞ। [5]

[1] যেমন, অন্যত্র বলেছেন,{لَيْسَ عَلَيْكَ هُدَاهُمْ وَلَكِنَّ اللهَ يَهْدِيْ مَنْ يَّشَاءُ}  (البقرة: ২৭২) তিনি আরো বলেন, {فَاِنَّمَا عَلَيْكَ الْبَلاَغُ وَعَلَيْنَا الْحِسَابُ} (الرعد: ৪০) {فَذَكِّرْ اِنَّمَا اَنْتَ مُذَكِّرٌ، لَسْتَ عَلَيْهِمْ بِمُصَيْطِر}ٍ (الغاشية: ২১-২২) এ সব আয়াতের অর্থ হল, তোমার দায়িত্ব কেবল আল্লাহর বার্তা মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া। মেনে নিক, আর না নিক এ ব্যাপারে তোমাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে না। কারণ, হিদায়াত দেওয়া তোমার এখতিয়ারে নেই। এটা কেবল আল্লাহরই এখতিয়ারাধীন।

[2] অর্থাৎ, রুযী লাভের উপায়-উপকরণের প্রাচুর্য, শারীরিক সুস্থতা ও রোগশূন্যতা, সন্তান-সন্ততির আধিক্য এবং মর্যাদা-সম্মান ইত্যাদি।

[3] অর্থাৎ, অহংকার ও গর্ব প্রদর্শন করে। নচেৎ আল্লাহর নিয়ামত ও অনুগ্রহ পেয়ে আনন্দিত হওয়া অথবা খুশী প্রকাশ করা অপছন্দনীয় ব্যাপার নয়। কিন্তু তা হতে হবে নিয়ামতের বর্ণনা এবং কৃতজ্ঞতা স্বরূপ; অহংকার, গর্ব এবং লোকপ্রদর্শনের জন্য যেন না হয়।

[4] অভাব-অনটন, অসুস্থতা, সন্তানহীনতা ইত্যাদি।

[5] অর্থাৎ, সত্বর নিয়ামতসমূহ ভুলে যায় এবং নিয়ামত-দাতাকেও। এটা অধিকাংশ মানুষের অবস্থা অনুপাতে বলা হয়েছে, যাতে দুর্বল ঈমানের লোকেরাও শামিল। তবে আল্লাহর নেক বান্দা এবং পূর্ণ ঈমানের অধিকারী লোকদের অবস্থা এ রকম নয়। যেহেতু তারা কষ্টের সময় ধৈর্য ধরে এবং নিয়ামতসমূহের কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে। যেমন, রসূল (সাঃ) বলেছেন, ‘‘মুমিনের ব্যাপারটাই বিস্ময়কর! যদি তার কোন মঙ্গল আসে, তাহলে তাতে সে আল্লাহর কৃতজ্ঞতা করে। আর তা তার জন্য মঙ্গলময়। আবার যদি তার কোন অমঙ্গল আসে, তাহলে তাতে সে ধৈর্য ধরে। আর তাও তার জন্য মঙ্গলময়। এ মঙ্গল মু’মিন ছাড়া আর কারো জন্য নয়। (মুসলিম)

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
দেখানো হচ্ছেঃ ৪৩১১ থেকে ৪৩২০ পর্যন্ত, সর্বমোট ৬২৩৬ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে পাতা নাম্বারঃ « আগের পাতা 1 2 3 4 · · · 429 430 431 432 433 · · · 621 622 623 624 পরের পাতা »