২ . আল-বাকারা
২:১০৪ یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لَا تَقُوۡلُوۡا رَاعِنَا وَ قُوۡلُوا انۡظُرۡنَا وَ اسۡمَعُوۡا ؕ وَ لِلۡكٰفِرِیۡنَ عَذَابٌ اَلِیۡمٌ ﴿۱۰۴﴾

হে মুমিনগণ, তোমরা ‘রা‘ইনা’* বলো না; বরং বল, ‘উনজুরনা’ আর শোন, কাফিরদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক আযাব। আল-বায়ান

হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা ‘রা‘ইনা’ বলে সম্বোধন করো না, (যার অর্থ আমাদের রাখাল) বরং তোমরা বলবে ‘‘উনযুরনা’’ (অর্থাৎ আমাদের প্রতি নেকদৃষ্টি দিবেন!) এবং শুনে নাও, বস্তুতঃ অবিশ্বাসীদের জন্যই রয়েছে কষ্টদায়ক শাস্তি। তাইসিরুল

হে মু’মিনগণ! তোমরা ‘রা‘য়েনা’ বলনা, বরং ‘উনযুরনা’ বল এবং শুনে নাও - অবিশ্বাসীদের জন্য রয়েছে যন্ত্রনাময় শাস্তি। মুজিবুর রহমান

O you who have believed, say not [to Allah 's Messenger], "Ra'ina" but say, "Unthurna" and listen. And for the disbelievers is a painful punishment. Sahih International

*- راعنا রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে কথোপকথন বা তাঁর কাছ থেকে শিক্ষা গ্রহণের সময় মুমিনগণের বুঝতে সমস্যা হলে তারা বলতেন ‘রা‘ইনা’ অর্থাৎ আমাদের প্রতি লক্ষ্য করুন এবং ধীরে বলুন। শব্দটির আর একটি অর্থ ‘বোকা’। ইয়াহূদিরা তা শোনে সে অর্থে ব্যবহার শুরু করল এবং নিজেরা হাসি-ঠাট্টা করতে লাগল। তখন আল্লাহ তাআলা উক্ত দ্ব্যর্থবোধক শব্দটির পরিবর্তে পরিষ্কার অর্থবোধক শব্দ ‘উনজুরনা’ অর্থাৎ আমাদের প্রতি নজর দিন- শব্দটি ব্যবহার করার নির্দেশ দিলেন।

১০৪. হে মুমিনগণ! তোমরা ‘রা’এনা’(১) বলো না, বরং উনযুরনা(২) বলো এবং শোন। আর কাফেরদের জন্য যন্ত্রনাদায়ক শাস্তি রয়েছে।

(১) رَاعِنَا বা ‘রা'এনা’ শব্দটি আরবী ভাষায় নির্দেশসূচক শব্দ। এর অর্থ হচ্ছে ‘আমাদের প্রতি লক্ষ্য করুন’। সাহাবাগণ এ শব্দটি রাসূল সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ক্ষেত্রে ব্যবহার করত। কিন্তু এ শব্দটি ইয়াহুদীদের ভাষায় এক প্রকার গালি ছিল, যা দ্বারা বুঝা হতো বিবেক বিকৃত লোক। তারা এ শব্দটি রাসূল সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর শানে উপহাসসূচক ব্যবহার করত। মুমিনরা এ ব্যাপারটি উপলব্ধি না করে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর শানে ব্যবহার করা শুরু করে, ফলে আল্লাহ তা'আলা এ ধরণের কথাবার্তা বলতে নিষেধ করে আয়াত নাযিল করেন।

অন্য আয়াতে এ ব্যাপারটিকে ইয়াহুদীদের কুকর্মের মধ্যে গণ্য করা হয়েছে। বলা হয়েছে, “ইয়াহুদীদের মধ্যে কিছু লোক কথাগুলো স্থানচ্যুত করে বিকৃত করে এবং বলে, শুনলাম ও অমান্য করলাম এবং শোনে না শোনার মত; আর নিজেদের জিহবা কুঞ্চিত করে এবং দ্বীনের প্রতি তাচ্ছিল্ল করে বলে, ‘রা'এনা’। কিন্তু তারা যদি বলত, শুনলাম ও মান্য করলাম এবং শুন ও আমাদের প্রতি লক্ষ্য কর, তবে তা তাদের জন্য ভাল ও সংগত হত। কিন্তু তাদের কুফরীর জন্য আল্লাহ তাদেরকে লা'নত করেছেন। তাদের অল্প সংখ্যকই বিশ্বাস করে। [সূরা আন-নিসা ৪৬]

(২) এ শব্দটির অর্থ ‘আমাদের প্রতি তাকান'। এ শব্দের মাঝে ইয়াহুদীদের হীন স্বার্থ চরিতার্থ করার কোন সুযোগ নেই। সুতরাং এ ধরণের শব্দ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সম্মানে ব্যবহার করা যেতে পারে। এ থেকে আমরা এ শিক্ষা নিতে পারি যে, অমুসলিম তথা বাতিল পন্থীরা যে সমস্ত দ্ব্যর্থমূলক শব্দ এবং সন্দেহমূলক বাক্য ব্যবহার করে থাকে, সেগুলো ব্যবহারের ক্ষেত্রে আমাদেরকে অবশ্যই সাবধান থাকতে হবে।

তাফসীরে জাকারিয়া

১০৪। হে বিশ্বাসীগণ! (তোমরা মুহাম্মাদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য তাকে) ‘রায়িনা’ বলো না, বরং ‘উনযুরনা’ (আমাদের খেয়াল করুন) বল[1] এবং (তার নির্দেশ) শুনে নাও। আর অবিশ্বাসীদের জন্য রয়েছে মর্মন্তুদ শাস্তি।

[1] رَاعِنَا এর অর্থ আমাদের প্রতি ভ্রূক্ষেপ ও আমাদের দিকে খেয়াল করুন! কোন কথা বুঝা না গেলে এই শব্দ ব্যবহার করে শ্রোতা নিজের প্রতি বক্তার দৃষ্টি আকর্ষণ করত। কিন্তু ইয়াহুদীরা বিদ্বেষ ও অবাধ্যতাবশতঃ এই শব্দের কিছুটা বিকৃতি ঘটিয়ে ব্যবহার করত যাতে তার অর্থের পরিবর্তন ঘটতো এবং তাদের অবাধ্যতার স্পৃহায় মিষ্ট স্বাদ পেত। যেমন তারা বলত, رَاعِيْنَا 'রায়ীনা' (আমাদের রাখাল) অথবা رَاعِنَا 'রায়েনা' (নির্বোধ)। অনুরূপভাবে তারা السَّلاَمُ عَلَيْكُمْ এর পরিবর্তে السَّامُ عَلَيْكُمْ (আপনার মৃত্যু হোক!) বলত। তাই মহান আল্লাহ বললেন, তোমরা اُنْظُرْنَا বলো। এ থেকে প্রথম একটি বিষয় এই জানা গেল যে, এমন শব্দসমূহ যার মধ্যে দোষ ও অপমানকর অর্থের আভাস পর্যন্ত থাকবে, আদব ও সম্মানার্থে এবং (বেআদবীর) ছিদ্রপথ বন্ধ করতে তার ব্যবহার ঠিক নয়। আর দ্বিতীয় যে বিষয় প্রমাণিত হয় তা হল, কথা ও কাজে কাফেরদের সাদৃশ্য গ্রহণ করা থেকে দূরে থাকা জরুরী। যাতে মুসলিম সেই তিরস্কারে শামিল না হয়, যাতে মহানবী (সাঃ) বলেছেন, যে কোন জাতির সাদৃশ্য গ্রহণ করবে, সে তাদেরই একজন গণ্য হবে। (আবূ দাউদ, কিতাবুল্লিবাস, আলবানী হাদীসটিকে হাসান বলেছেন।)

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
২ . আল-বাকারা
২:১০৫ مَا یَوَدُّ الَّذِیۡنَ كَفَرُوۡا مِنۡ اَهۡلِ الۡكِتٰبِ وَ لَا الۡمُشۡرِكِیۡنَ اَنۡ یُّنَزَّلَ عَلَیۡكُمۡ مِّنۡ خَیۡرٍ مِّنۡ رَّبِّكُمۡ ؕ وَ اللّٰهُ یَخۡتَصُّ بِرَحۡمَتِهٖ مَنۡ یَّشَآءُ ؕ وَ اللّٰهُ ذُو الۡفَضۡلِ الۡعَظِیۡمِ ﴿۱۰۵﴾

আহলে কিতাব ও মুশরিকদের মধ্য থেকে যারা কুফরী করেছে, তারা চায় না যে, তোমাদের রবের পক্ষ থেকে তোমাদের উপর কোন কল্যাণ নাযিল হোক। আর আল্লাহ যাকে ইচ্ছা তাকে তাঁর রহমত দ্বারা খাস করেন এবং আল্লাহ মহান অনুগ্রহের অধিকারী। আল-বায়ান

গ্রন্থধারীদের মধ্যে যারা অবিশ্বাসী তারা ও মুশরিকরা এটা চায় না যে, তোমাদের প্রতিপালকের পক্ষ হতে তোমাদের প্রতি কোন কল্যাণ অবতীর্ণ হোক অথচ আল্লাহ যাকে ইচ্ছে স্বীয় দয়ায় নির্দিষ্ট করে নেন এবং আল্লাহ মহা অনুগ্রহশীল। তাইসিরুল

আহলে কিতাবদের মধ্যে যারা কাফির (অর্থাৎ ইয়াহুদী ও নাসারা) এবং মুশরিকরা মোটেই পছন্দ করেনা যে, তোমাদের রবের পক্ষ হতে তোমাদের উপর কোন কল্যাণ বর্ষিত হোক, আর আল্লাহ যাকে ইচ্ছা করেন তাঁর করুণার জন্য নির্দিষ্ট করে নেন এবং আল্লাহ মহা করুণাময়। মুজিবুর রহমান

Neither those who disbelieve from the People of the Scripture nor the polytheists wish that any good should be sent down to you from your Lord. But Allah selects for His mercy whom He wills, and Allah is the possessor of great bounty. Sahih International

১০৫. কিতাবীদের(১) মধ্যে যারা কুফরী করেছে তারা এবং মুশরিকরা এটা চায় না যে, তোমাদের রব-এর কাছ থেকে তোমাদের উপর কোন কল্যাণ নাযিল হোক। অথচ আল্লাহ যাকে ইচ্ছে নিজ রহমত দ্বারা বিশেষিত করেন। আর আল্লাহ মহা অনুগ্রহশীল।

(১) আহলে-কিতাব শব্দদ্বয়ের অর্থ কিতাবওয়ালা বা গ্রন্থধারী। আল্লাহ তা'আলা আহলে কিতাব বলে তাদেরকেই বুঝিয়েছেন, যাদেরকে তিনি ইতঃপূর্বে তার পক্ষ থেকে কোন হিদায়াত সম্বলিত গ্রন্থ প্রদান করেছেন। ইয়াহুদী এবং নাসারারা সর্বসম্মতভাবে আহলে কিতাব। এর বাইরে আল্লাহ তা'আলা অন্য কোন জাতিকে কিতাব দিয়েছেন বলে সঠিকভাবে প্রমাণিত হয়নি।

তাফসীরে জাকারিয়া

১০৫। গ্রন্থধারী (ইয়াহুদী ও খ্রিষ্টান)দের মধ্যে যারা সত্য প্রত্যাখ্যান করেছে এবং অংশীবাদীগণ এটা চায় না যে, তোমাদের প্রতিপালকের নিকট থেকে তোমাদের প্রতি কোন কল্যাণ অবতীর্ণ করা হোক, অথচ আল্লাহ যাকে ইচ্ছা বিশেষভাবে আপন দয়ার পাত্ররূপে মনোনীত করেন এবং আল্লাহ মহা অনুগ্রহশীল।

-

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
২ . আল-বাকারা
২:১০৬ مَا نَنۡسَخۡ مِنۡ اٰیَۃٍ اَوۡ نُنۡسِهَا نَاۡتِ بِخَیۡرٍ مِّنۡهَاۤ اَوۡ مِثۡلِهَا ؕ اَلَمۡ تَعۡلَمۡ اَنَّ اللّٰهَ عَلٰی كُلِّ شَیۡءٍ قَدِیۡرٌ ﴿۱۰۶﴾

আমি যে আয়াত রহিত করি কিংবা ভুলিয়ে দেই, তার চেয়ে উত্তম কিংবা তার মত আনয়ন করি। তুমি কি জান না যে, আল্লাহ সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান। আল-বায়ান

আমি কোন আয়াত রহিত করলে কিংবা ভুলিয়ে দিলে, তাত্থেকে উত্তম কিংবা তারই মত আয়াত নিয়ে আসি, তুমি কি জান না যে, আল্লাহ প্রত্যেক বস্তুর উপর ক্ষমতাবান। তাইসিরুল

আমি কোন আয়াতের হুকুম রহিত করলে কিংবা আয়াতটিকে বিস্মৃত করিয়ে দিলে তদপেক্ষা উত্তম অথবা তদনুরূপ আয়াত আনয়ন করি। তুমি কি জাননা যে, আল্লাহ সর্ব বিষয়ের উপরই ক্ষমতাবান? মুজিবুর রহমান

We do not abrogate a verse or cause it to be forgotten except that We bring forth [one] better than it or similar to it. Do you not know that Allah is over all things competent? Sahih International

১০৬. আমরা কোন আয়াত রহিত করলে বা ভুলিয়ে দিলে তা থেকে উত্তম অথবা তার সমান কোন আয়াত এনে দেই(১)। আপনি কি জানেন না যে, আল্লাহ সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান।

(১) এই আয়াতে কুরআনী আয়াত রহিত হওয়ার সম্ভাব্য সকল প্রকারই সন্নিবেশিত হয়েছে। অভিধানে ‘নস্‌খ’ শব্দের অর্থ দূর করা, লেখা, স্থান পরিবর্তন করে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া। আয়াতে ‘নস্‌খ’ শব্দ দ্বারা বিধি-বিধান দূর করা - অর্থাৎ রহিত করাকে বুঝানো হয়েছে। এ কারণেই হাদীস ও কুরআনের পরিভাষায় এক বিধানের স্থলে অন্য বিধান প্রবর্তন করাকে ‘নস্‌খ’ বলা হয়। ‘অন্য বিধান’ টি কোন বিধানের বিলুপ্তি ঘোষণাও হতে পারে, আবার এক বিধানের পরিবর্তে অপর বিধান প্রবর্তনও হতে পারে। [ইবনে কাসীর]

তাফসীরে জাকারিয়া

১০৬। আমি কোন আয়াত (বাক্য) রহিত করলে[1] অথবা ভুলিয়ে দিলে তা থেকে উত্তম কিংবা তার সমতুল্য কোন আয়াত আনয়ন করি। তুমি কি জান না যে, আল্লাহ সকল বিষয়ে সর্বশক্তিমান?

[1] نَسخ (নসখ) এর আভিধানিক অর্থ হল, নকল করা। কিন্তু শরীয়তের পরিভাষায় তা হল, কোন বিধানকে রহিত করে তার পরিবর্তে অন্য বিধান অবতীর্ণ করা। আর এই রহিতকরণ বা পরিবর্তন হয়েছে আল্লাহরই পক্ষ থেকে। যেমন, আদম (আঃ)-এর যুগে সহোদর ভাই-বোনদের আপোসে বিবাহ বৈধ ছিল। পরবর্তীকালে তা হারাম করা হয়। এইভাবে কুরআনেও আল্লাহ কিছু বিধানকে রহিত করে তার পরিবর্তে নতুন বিধান অবতীর্ণ করেছেন। এর সংখ্যার ব্যাপারে মতভেদ রয়েছে। শাহ ওলীউল্লাহ 'আল-ফাউযুল কাবীর' নামক কিতাবে এর সংখ্যা পাঁচ বলেছেন। এই রহিতকরণ তিন প্রকারের হয়েছেঃ যথা

(ক) সাধারণভাবে বিধান রহিতকরণঃ অর্থাৎ, কোন বিধান (আয়াতসহ) রহিত করে তার স্থলে অন্য বিধান (ও আয়াত) অবতীর্ণ করা হয়েছে।

(খ) তেলাঅত ব্যতিরেকে বিধান রহিত করা। অর্থাৎ, প্রথম বিধানের আয়াতগুলো কুরআনে বিদ্যমান রাখা হয়, তার তেলাঅতও হয় আবার দ্বিতীয় বিধানও যা পরে অবতীর্ণ করা হয় তাও কুরআনে বিদ্যমান থাকে। অর্থাৎ, 'নাসেখ' (রহিতকারী) এবং 'মানসুখ' (রহিতকৃত) উভয় আয়াতই বিদ্যমান থাকে।

(গ) কেবল তেলাঅত রহিত করা। অর্থাৎ, নবী করীম (সাঃ) ঐ আয়াতকে কুরআনের মধ্যে শামিল করেননি, কিন্তু তার বিধানের উপর আমল বহাল রাখা হয়েছে। যেমন,

 {وَالشّيْخُ وَالشَّيخَةُ إِذَ زَنَيَا فَارْجُمُوْهُمَا الْبَتَّةَ} বৃদ্ধ (বিবাহিত) পুরুষ ও বৃদ্ধা (বিবাহিতা) নারী যদি ব্যভিচার করলে, তাদেরকে অবশ্য অবশ্যই পাথর মেরে হত্যা কর। (মুআত্তা ইমাম মালিক) আলোচ্য আয়াতে 'নাসখ' এর প্রথম দুই প্রকারের বর্ণনা রয়েছে। (مَا نَنْسَخْ مِنْ آيَةٍ) শব্দে দ্বিতীয় প্রকারের এবং (أَوْ نُنْسِهَا) শব্দে প্রথম প্রকারের নসখের কথা বলা হয়েছে। (نُنْسِهَا) (আমি ভুলিয়ে দিই)এর অর্থ হল, তার বিধান ও তেলাঅত দুটোই উঠিয়ে নিই। যেন আমি তা ভুলিয়ে দিলাম এবং নতুন বিধান নাযিল করলাম। অথবা নবী করীম (সাঃ)-এর হৃদয় থেকেই আমি তা মিটিয়ে দিয়ে একেবারে বিলুপ্ত করে দিলাম। ইয়াহুদীরা তাওরাতের বাক্য রহিত হওয়াকে অসম্ভব মনে করত। ফলে কুরআনের কিছু আয়াত রহিত হওয়ার কারণে তার উপরও আপত্তি উত্থাপন করল। মহান আল্লাহ তাদের খন্ডন করে বললেন, যমীন ও আসমানের রাজত্ব তাঁরই হাতে। তিনি যা উচিত মনে করেন তা-ই করেন। যে সময় যে বিধান লক্ষ্য ও কৌশলের দিক দিয়ে উপযুক্ত মনে করেন, সেটাকেই তিনি বহাল করেন এবং যেটাকে চান রহিত ঘোষণা করেন। এটা তাঁর মহাশক্তির এক নিদর্শন। পূর্বের কিছু ভ্রষ্টলোক (যেমন, আবূ মুসলিম আসফাহানী মুতাযেলী) এবং বর্তমানের কিছু লোক ইয়াহুদীদের মত 'নসখ' মানতে অস্বীকার করেছে। তবে সঠিক কথা তা-ই যা পূর্বের আলোচনায় সুস্পষ্ট হয়েছে। 'নসখ'সুসাব্যস্ত হওয়ারই আকীদা রাখতেন পূর্বের সলফগণ।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
২ . আল-বাকারা
২:১০৭ اَلَمۡ تَعۡلَمۡ اَنَّ اللّٰهَ لَهٗ مُلۡكُ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ ؕ وَ مَا لَكُمۡ مِّنۡ دُوۡنِ اللّٰهِ مِنۡ وَّلِیٍّ وَّ لَا نَصِیۡرٍ ﴿۱۰۷﴾

তুমি কি জান না যে, নিশ্চয় আসমানসমূহ ও যমীনের রাজত্ব আল্লাহর? আর আল্লাহ ছাড়া তোমাদের কোন অভিভাবক ও সাহায্যকারী নেই। আল-বায়ান

তুমি কি জান না যে, আকাশমন্ডলী ও ভূমন্ডলের রাজত্ব সেই আল্লাহরই এবং আল্লাহ ছাড়া তোমাদের কোনও অভিভাবক নেই এবং সাহায্যকারীও নেই। তাইসিরুল

তুমি কি জাননা যে, আকাশ ও পৃথিবীর আধিপত্য আল্লাহরই এবং আল্লাহ ব্যতীত তোমাদের কোন বন্ধুও নেই এবং কোন সাহায্যকারীও নেই? মুজিবুর রহমান

Do you not know that to Allah belongs the dominion of the heavens and the earth and [that] you have not besides Allah any protector or any helper? Sahih International

১০৭. আপনি কি জানেন না যে, আসমান ও যমীনের সার্বভৌমত্ব একমাত্র আল্লাহর? আর আল্লাহ ছাড়া তোমাদের কোন অভিভাবকও নেই, নেই সাহায্যকারীও।

-

তাফসীরে জাকারিয়া

১০৭। তুমি কি জান না যে, আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সার্বভৌমত্ব একমাত্র আল্লাহরই? আর আল্লাহ ছাড়া তোমাদের কোন অভিভাবক নেই এবং সাহায্যকারীও নেই।

-

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
২ . আল-বাকারা
২:১০৮ اَمۡ تُرِیۡدُوۡنَ اَنۡ تَسۡـَٔلُوۡا رَسُوۡلَكُمۡ كَمَا سُئِلَ مُوۡسٰی مِنۡ قَبۡلُ ؕ وَ مَنۡ یَّتَبَدَّلِ الۡكُفۡرَ بِالۡاِیۡمَانِ فَقَدۡ ضَلَّ سَوَآءَ السَّبِیۡلِ ﴿۱۰۸﴾

নাকি তোমরা চাও তোমাদের রাসূলকে প্রশ্ন করতে, যেমন পূর্বে মূসাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল? আর যে ঈমানকে কুফরে পরিবর্তন করবে, সে নিশ্চয় সোজা পথবিচ্যুত হল। আল-বায়ান

তোমরা কি তোমাদের রসূলকে তেমন প্রশ্ন করতে চাও যেমন মূসাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল? যে ব্যক্তি ঈমানের পরিবর্তে কুফরী করে, সে ব্যক্তি অবশ্যই সরল পথ হতে বিচ্যুত হয়। তাইসিরুল

তোমরা কি চাও যে, তোমাদের রাসূলের নিকট আবেদন করবে যেমন ইতোপূর্বে মূসার নিকট (হঠকারিতা বশতঃ এইরূপ বহু নিরর্থক) আবেদন করা হয়েছিল? আর যে ব্যক্তি ঈমানের পরিবর্তে কুফরী অবলম্বন করে, নিশ্চয়ই সে সঠিক পথ হতে দূরে সরে পড়ে। মুজিবুর রহমান

Or do you intend to ask your Messenger as Moses was asked before? And whoever exchanges faith for disbelief has certainly strayed from the soundness of the way. Sahih International

১০৮. তোমরা কি তোমাদের রাসূলকে সেরূপ প্রশ্ন করতে চাও যেরূপ প্রশ্ন পূর্বে মূসাকে করা হয়েছিল(১)? আর যে ঈমানকে কুফরে পরিবর্তন করবে, সে অবশ্যই সরল পথ হারাল।

(১) এ আয়াতে মূসা আলাইহিস সালামের কাছে তার সাথীরা কি চেয়েছিল, তা ব্যাখ্যা করে বলা হয়নি। সেটা অন্য আয়াতে বিস্তারিত এসেছে। বলা হয়েছে, “কিতাবীগণ আপনার কাছে তাদের জন্য আসমান হতে একটি কিতাব নাযিল করতে বলে; তারা মূসার কাছে এর চেয়েও বড় দাবী করেছিল। তারা বলেছিল, ‘আমাদেরকে প্রকাশ্যে আল্লাহকে দেখাও’ [সূরা আন-নিসা ১৫৩] অন্য বর্ণনায় ইবনে আব্বাস বলেন, রাফে ইবনে হারিমলাহ এবং ওয়াহাব ইবনে যায়েদ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলল যে, হে মুহাম্মদ! আমাদের জন্য একটি কিতাব আসমান থেকে নাযিল করে আন, যা আমরা পড়ে দেখব। আর আমাদের জন্য যমীন থেকে প্রস্রবণ প্রবাহিত করে দাও।

যদি তা কর তবে আমরা তোমার অনুসরণ করব ও তোমার সত্যয়ন করব। তখন এ আয়াত নাযিল হয়। [আত-তাফসীরুস সহীহ] সুতরাং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে অযথা প্রশ্ন করা উচিত নয়। হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “ঐ মুসলিম সবচেয়ে বড় অপরাধী, যে হারাম নয় এমন কোন বিষয় সম্পর্কে প্রশ্ন করার কারণে সেটি হারাম করে দেয়া হয়” [বুখারী: ৭২৮৯, মুসলিম: ২৩৫৮] রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও বলেছেন “যতক্ষণ আমি তোমাদেরকে কিছু না বলি ততক্ষণ তোমরা আমাকে কিছু জিজ্ঞেস করো না। কেননা, তোমাদের পূর্ববর্তীগণ অতিরিক্ত প্রশ্ন এবং নবীদের সাথে মতবিরোধের কারণে ধ্বংস হয়েছিল”। [বুখারী: ৭২৮৮, মুসলিম: ১৩৩৭]

তাফসীরে জাকারিয়া

১০৮। তোমরা কি তোমাদের রসূলকে সেরূপ প্রশ্ন করতে চাও, যেরূপ পূর্বে মূসাকে করা হয়েছিল?[1] এবং যে (ঈমান) বিশ্বাসের পরিবর্তে (কুফরী) অবিশ্বাসকে গ্রহণ করে, নিশ্চিতভাবে সে সঠিক পথ হারায়।

[1] মুসলিমদের (সাহাবা (রাঃ))-কে সতর্ক করা হচ্ছে যে, তোমরাও ইয়াহুদীদের মত নিজেদের নবী (সাঃ)-কে অবাধ্যতামূলক অপ্রয়োজনীয় প্রশ্ন করো না। কারণ, এতে কুফরীর আশঙ্কা আছে।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
২ . আল-বাকারা
২:১০৯ وَدَّ كَثِیۡرٌ مِّنۡ اَهۡلِ الۡكِتٰبِ لَوۡ یَرُدُّوۡنَكُمۡ مِّنۡۢ بَعۡدِ اِیۡمَانِكُمۡ كُفَّارًا ۚۖ حَسَدًا مِّنۡ عِنۡدِ اَنۡفُسِهِمۡ مِّنۡۢ بَعۡدِ مَا تَبَیَّنَ لَهُمُ الۡحَقُّ ۚ فَاعۡفُوۡا وَ اصۡفَحُوۡا حَتّٰی یَاۡتِیَ اللّٰهُ بِاَمۡرِهٖ ؕ اِنَّ اللّٰهَ عَلٰی كُلِّ شَیۡءٍ قَدِیۡرٌ ﴿۱۰۹﴾

আহলে কিতাবের অনেকেই চায়, যদি তারা তোমাদেরকে ঈমান আনার পর কাফির অবস্থায় ফিরিয়ে নিতে পারত! সত্য স্পষ্ট হওয়ার পর তাদের পক্ষ থেকে হিংসাবশত (তারা এরূপ করে থাকে)। সুতরাং তোমরা ক্ষমা কর এবং এড়িয়ে চল, যতক্ষণ না আল্লাহ তাঁর নির্দেশ দেন। নিশ্চয় আল্লাহ সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান। আল-বায়ান

গ্রন্থধারীগণের অনেকেই তাদের কাছে সত্য স্পষ্ট হয়ে যাওয়ার পরও তাদের অন্তরে পোষিত হিংসার দাহনে ইচ্ছে পোষণ করে যে, যদি তোমাদেরকে তোমাদের ঈমান আনার পর কুফরীতে ফিরিয়ে নিতে পারত; সুতরাং তোমরা ক্ষমা কর ও মার্জনা কর যে পর্যন্ত না আল্লাহ স্বীয় হুকুম প্রকাশ করেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ সকল বস্তুর উপর ক্ষমতাবান। তাইসিরুল

কিতাবীদের অনেকে তাদের প্রতি সত্য প্রকাশিত হওয়ার পর তারা তাদের অন্তর্হিত বিদ্বেষ বশতঃ তোমাদেরকে বিশ্বাস স্থাপনের পরে অবিশ্বাসী করতে ইচ্ছা করে; কিন্তু যে পর্যন্ত আল্লাহ স্বয়ং আদেশ আনয়ন না করেন সে পর্যন্ত তোমরা ক্ষমা কর ও উপেক্ষা করতে থাক; নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্ব বিষয়ের উপর ক্ষমতাবান। মুজিবুর রহমান

Many of the People of the Scripture wish they could turn you back to disbelief after you have believed, out of envy from themselves [even] after the truth has become clear to them. So pardon and overlook until Allah delivers His command. Indeed, Allah is over all things competent. Sahih International

১০৯. কিতাবীদের অনেকেই চায়, যদি তারা তোমাদেরকে তোমাদের ঈমান আনার পর কাফেররূপে ফিরিয়ে নিতে পারত! সত্য স্পষ্ট হওয়ার পরও তাদের নিজেদের পক্ষ থেকে বিদ্বেষবশতঃ (তারা এটা করে থাকে)। অতএব, তোমরা ক্ষমা কর এবং উপেক্ষা কর যতক্ষণ না আল্লাহ তার কোন নির্দেশ দেন(১)-- নিশ্চয়ই আল্লাহ সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান।

(১) তখনকার অবস্থানুযায়ী ক্ষমার নির্দেশই ছিল বিধেয়। পরবর্তীকালে আল্লাহ স্বীয় প্রতিশ্রুতি পূর্ণ করেন এবং জিহাদের আয়াতসমূহ নাযিল করেন। অতঃপর ইয়াহুদীদের প্রতিও আইন বলবৎ করা হয় এবং অপরাধের ক্রমানুপাতে দুষ্টদের হত্যা, নির্বাসন, জিযিয়া আরোপ ইত্যাদি শাস্তি দেয়া হয়। সূরা আত-তাওবাহ এর ৫ ও ২৯ নং আয়াতের মাধ্যমে এ আয়াতের এ ক্ষমার বিধান রহিত করা হয়। [তাবারী]

তাফসীরে জাকারিয়া

১০৯। হিংসামূলক মনোভাববশতঃ তাদের নিকট সত্য প্রকাশিত হবার পরও, গ্রন্থধারীদের মধ্যে অনেকেই আকাঙ্ক্ষা করে যে, বিশ্বাসের পর (মুসলিম হওয়ার পর) আবার তোমাদেরকে যদি অবিশ্বাসী (কাফের)রূপে ফিরিয়ে দিতে পারত। সুতরাং তোমরা ক্ষমা কর ও উপেক্ষা কর; যতক্ষণ না আল্লাহ কোন নির্দেশ দেন, আল্লাহ সকল বিষয়ে সর্বশক্তিমান।

-

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
২ . আল-বাকারা
২:১১০ وَ اَقِیۡمُوا الصَّلٰوۃَ وَ اٰتُوا الزَّكٰوۃَ ؕ وَ مَا تُقَدِّمُوۡا لِاَنۡفُسِكُمۡ مِّنۡ خَیۡرٍ تَجِدُوۡهُ عِنۡدَ اللّٰهِ ؕ اِنَّ اللّٰهَ بِمَا تَعۡمَلُوۡنَ بَصِیۡرٌ ﴿۱۱۰﴾

আর তোমরা সালাত কায়েম কর ও যাকাত দাও এবং যে নেক আমল তোমরা নিজদের জন্য আগে পাঠাবে, তা আল্লাহর নিকট পাবে। তোমরা যা করছ নিশ্চয় আল্লাহ তার সম্যক দ্রষ্টা। আল-বায়ান

এবং তোমরা নামায কায়িম কর এবং যাকাত দাও এবং যা কিছু সৎ কার্যাবলী তোমরা স্বীয় আত্মার জন্যে আগে পাঠাবে, তোমরা তা আল্লাহর নিকট পাবে, তোমরা যা কিছু করছো নিশ্চয়ই আল্লাহ তা’ দেখছেন। তাইসিরুল

আর তোমরা সালাত প্রতিষ্ঠিত কর ও যাকাত প্রদান কর; এবং তোমরা স্ব স্ব জীবনের জন্য যে সৎকাজ অগ্রে প্রেরণ করেছ তা আল্লাহর নিকট প্রাপ্ত হবে; তোমরা যা করছো নিশ্চয়ই আল্লাহ তার পরিদর্শক। মুজিবুর রহমান

And establish prayer and give zakah, and whatever good you put forward for yourselves - you will find it with Allah. Indeed, Allah of what you do, is Seeing. Sahih International

১১০. আর তোমরা সালাত প্রতিষ্ঠা কর ও যাকাত দাও এবং তোমরা উত্তম কাজের যা কিছু নিজেদের জন্য পেশ করবে আল্লাহর কাছে তা পাবে। নিশ্চয় তোমরা যা করছ আল্লাহ তার সম্যক দ্রষ্টা।

-

তাফসীরে জাকারিয়া

১১০। আর তোমরা নামায কায়েম (যথাযথভাবে সুপ্রতিষ্ঠিত) কর ও যাকাত প্রদান কর। আর উত্তম কাজের মধ্যে নিজেদের জন্য যা কিছু পূর্বে প্রেরণ করবে, আল্লাহর নিকট তা প্রাপ্ত হবে। তোমরা যা কর, নিশ্চয়ই আল্লাহ তার সম্যক দ্রষ্টা। [1]

[1] ইয়াহুদীদের যেহেতু ইসলাম ও নবী করীম (সাঃ)-এর প্রতি হিংসা ও বিদ্বেষ ছিল, তাই তারা মুসলিমদেরকে ইসলাম থেকে দূরে রাখার জঘন্য প্রচেষ্টা চালাতো। সুতরাং এখানে মুসলিমদেরকে বলা হচ্ছে যে, তোমরা ধৈর্য ও উপেক্ষার পথ অবলম্বন কর এবং ইসলামের বিধি-বিধান ও ফরয কাজগুলো পালন কর, যার নির্দেশ তোমাদেরকে দেওয়া হয়েছে।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
২ . আল-বাকারা
২:১১১ وَ قَالُوۡا لَنۡ یَّدۡخُلَ الۡجَنَّۃَ اِلَّا مَنۡ كَانَ هُوۡدًا اَوۡ نَصٰرٰی ؕ تِلۡكَ اَمَانِیُّهُمۡ ؕ قُلۡ هَاتُوۡا بُرۡهَانَكُمۡ اِنۡ كُنۡتُمۡ صٰدِقِیۡنَ ﴿۱۱۱﴾

আর তারা বলে, ইয়াহূদী কিংবা নাসারা ছাড়া অন্য কেউ জান্নাতে প্রবেশ করবে না। এটা তাদের মিথ্যা আশা। বল, ‘তোমরা তোমাদের প্রমাণ নিয়ে আস, যদি তোমরা সত্যবাদী হয়ে থাক’। আল-বায়ান

তারা বলে, ইয়াহূদী এবং নাসারাগণ ছাড়া কেউ জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না, ওটা তাদের আকাঙ্ক্ষা মাত্র। বল, ‘যদি তোমরা সত্যবাদী হও, তবে নিজেদের দলীল পেশ কর’। তাইসিরুল

এবং তারা বলেঃ ইয়াহুদী বা খৃষ্টান ছাড়া আর কেহই জান্নাতে প্রবেশ করবেনা; এটা তাদের মিথ্যা আশা। তুমি বলঃ যদি তোমরা সত্যবাদী হও তাহলে তোমাদের প্রমাণ উপস্থিত কর। মুজিবুর রহমান

And they say, "None will enter Paradise except one who is a Jew or a Christian." That is [merely] their wishful thinking, Say, "Produce your proof, if you should be truthful." Sahih International

১১১. আর তারা বলে, ইয়াহুদী অথবা নাসারা ছাড়া অন্য কেউ কখনো জান্নাতে প্রবেশ করবে না’(১)। এটা তাদের মিথ্যা আশা। বলুন, “যদি তোমরা সত্যবাদী হও তবে তোমাদের প্রমাণ পেশ কর”।

(১) আলোচ্য আয়াতসমূহে আল্লাহ্ তা'আলা ইয়াহুদী ও নাসারাদের পারস্পরিক মতবিরোধের উল্লেখ করে তাদের নির্বুদ্ধিতা ও মতবিরোধের কুফল বর্ণনা করেছেন। অতঃপর আসল সত্য উদঘাটন করেছেন। নাসারা ও ইয়াহুদী উভয় সম্প্রদায়ই দ্বীনের প্রকৃত সত্যকে উপেক্ষা করে ধর্মের নাম-ভিত্তিক জাতীয়তা গড়ে তুলেছিল এবং তারা প্রত্যেকেই স্বজাতিকে জান্নাতী ও আল্লাহর প্রিয়পাত্র বলে দাবী করত এবং তাদের ছাড়া অন্যান্য জাতিকে জাহান্নামী ও পথভ্রষ্ট বলে বিশ্বাস করত। আল্লাহ তা'আলা তাদের মূর্খতা সম্পর্কে মন্তব্য করছেন যে, এরা জান্নাতে যাওয়ার প্রকৃত কারণ সম্পর্কে উদাসীন। জানাতে যাওয়ার প্রকৃত উপায় পরবর্তী আয়াতে বলে দেয়া হয়েছে।

তাফসীরে জাকারিয়া

১১১। তারা বলে, ‘ইয়াহুদী বা খ্রিষ্টান ছাড়া অন্য কেউ কখনও বেহেশত প্রবেশ করবে না।’ এ তাদের মিথ্যা আশা। বল, ‘যদি তোমরা সত্যবাদী হও, তাহলে (এ কথার সত্যতার) প্রমাণ উপস্থিত কর।’ [1]

[1] এখানে আহলে-কিতাবদের অহংকার ও তাদের সেই আত্মপ্রবঞ্চনার কথাকে আবারও তুলে ধরা হচ্ছে, যাতে তারা লিপ্ত ছিল। আল্লাহ তাআলা বললেন, এটা কেবল ওদের মনের বাসনা, এ ব্যাপারে কোন দলীল তাদের কাছে নেই।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
২ . আল-বাকারা
২:১১২ بَلٰی ٭ مَنۡ اَسۡلَمَ وَجۡهَهٗ لِلّٰهِ وَ هُوَ مُحۡسِنٌ فَلَهٗۤ اَجۡرُهٗ عِنۡدَ رَبِّهٖ ۪ وَ لَا خَوۡفٌ عَلَیۡهِمۡ وَ لَا هُمۡ یَحۡزَنُوۡنَ ﴿۱۱۲﴾

হ্যাঁ, যে নিজকে আল্লাহর কাছে সোপর্দ করেছে এবং সে সৎকর্মশীলও, তবে তার জন্য রয়েছে তার রবের নিকট প্রতিদান। আর তাদের কোন ভয় নেই এবং তারা দুঃখিতও হবে না। আল-বায়ান

বরং যে ব্যক্তি আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ করে আর সৎকর্মশীল হয়, তার জন্য তার প্রতিপালকের নিকট পুণ্যফল রয়েছে, তাদের কোন ভয় নেই, তাদের কোন দুঃখ নেই। তাইসিরুল

অবশ্য যে ব্যক্তি নিজেকে আল্লাহর নিকট সর্মপন করেছে এবং সৎকাজ করেছে, ফলতঃ তার জন্য তার রবের নিকট প্রতিদান রয়েছে এবং তাদের জন্য কোন আশংকা নেই ও তারা চিন্তিত হবেনা। মুজিবুর রহমান

Yes [on the contrary], whoever submits his face in Islam to Allah while being a doer of good will have his reward with his Lord. And no fear will there be concerning them, nor will they grieve. Sahih International

১১২. হ্যাঁ, যে কেউ আল্লাহর কাছে সম্পূর্ণরূপে আত্মসমর্পণ করে এবং সৎকর্মশীল হয়(১) তার প্রতিদান তার রব-এর কাছে রয়েছে। আর তাদের কোন ভয় নেই এবং তারা চিন্তিতও হবে না।

(১) আল্লাহর কাছে কোন বান্দার আমল গ্রহণযোগ্য হওয়ার জন্য শর্ত হচ্ছে দু'টি বিষয়ঃ এক, ইখলাস তথা বান্দা মনে-প্রাণে নিজেকে আল্লাহর কাছে সমৰ্পন করবে। দুই রাসূলের পরিপূর্ণ অনুসরণ। অর্থাৎ যদি কেউ মনে-প্রাণে আল্লাহ্ তা'আলার আনুগত্যের সংকল্প গ্রহণ করে কিন্তু আনুগত্য ও ইবাদাত নিজের খেয়াল-খুশীমত মনগড়া পন্থায় সম্পাদন করে, তবে তাও জান্নাতে যাওয়ার জন্য যথেষ্ট নয়, বরং এ ক্ষেত্রেও আনুগত্য ও ইবাদাতের সে পন্থাই অবলম্বন করতে হবে, যা আল্লাহ্ তাআলা রাসূলের মাধ্যমে বর্ণনা ও নির্ধারণ করেছেন। প্রথম বিষয়টি (بَلَىٰ مَنْ أَسْلَمَ) বাক্যাংশের মাধ্যমে এবং দ্বিতীয় বিষয়টি (وَهُوَ مُحْسِنٌ) বাক্যাংশের মাধ্যমে ব্যক্ত হয়েছে। এতে জানা গেল যে, আখেরাতের মুক্তি ও জান্নাতে প্রবেশের জন্য শুধু ইখলাসই যথেষ্ট নয়, বরং সৎকর্মও প্রয়োজন। বস্তুতঃ কুরআন ও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সুন্নাহর সাথে সামঞ্জস্যশীল শিক্ষা ও পন্থাই সৎকর্ম। আল্লাহর ইখলাস ও রাসূলের আনুগত্যের ব্যাপারে মানুষের অবস্থান চার পর্যায়েঃ

ক) কারো কারো ইখলাস নেই, রাসূলের আনুগত্যও নেই, সে ব্যক্তি মুশরিক, কাফের।

খ) কারো কারো ইখলাস আছে, কিন্তু রাসূলের আনুগত্য নেই, সে ব্যক্তি বিদ'আতকারী।

গ) কারো কারো ইখলাস নেই, কিন্তু রাসূলের আনুগত্য আছে (প্রকাশ্যে), সে ব্যক্তি মুনাফেক।

ঘ) কারো কারো ইখলাসও আছে, রাসূলের আনুগত্য ও অনুসরণও আছে, সে ব্যক্তি হলো প্রকৃত মুমিন [তাজরীদুত তাওহীদিল মুফীদ]

তাফসীরে জাকারিয়া

১১২। অবশ্যই যে ব্যক্তি আল্লাহর নিকট বিশুদ্ধচিত্তে আত্মসমর্পণ করে, [1] তার প্রতিদান তার প্রতিপালকের কাছে রয়েছে এবং তাদের কোন ভয় নেই ও তারা দুঃখিত হবে না।

[1] {اَسْلَمَ وَجْهَهُ لِلّه} (আল্লাহর নিকট আত্মসমর্পণ করে)এর অর্থ হল, কেবল আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কাজ করে। আর {وَهُوَ مُحْسِنٌ} (বিশুদ্ধচিত্ত)র অর্থ হল, (শিরকমুক্ত হয়ে খাঁটি মনে) নিষ্ঠার সাথে শেষ নবীর তরীকা অনুযায়ী সে কাজ করা। আমল গৃহীত হওয়ার জন্য এই দু'টি হল মৌলিক শর্ত। আখেরাতের মুক্তি এই মৌলিক নীতি অনুযায়ী কৃত নেক আমলের উপরই নির্ভরশীল। কেবল আশা ও কামনা করলেই মুক্তি পাওয়া যাবে না।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
২ . আল-বাকারা
২:১১৩ وَ قَالَتِ الۡیَهُوۡدُ لَیۡسَتِ النَّصٰرٰی عَلٰی شَیۡءٍ ۪ وَّ قَالَتِ النَّصٰرٰی لَیۡسَتِ الۡیَهُوۡدُ عَلٰی شَیۡءٍ ۙ وَّ هُمۡ یَتۡلُوۡنَ الۡكِتٰبَ ؕ كَذٰلِكَ قَالَ الَّذِیۡنَ لَا یَعۡلَمُوۡنَ مِثۡلَ قَوۡلِهِمۡ ۚ فَاللّٰهُ یَحۡكُمُ بَیۡنَهُمۡ یَوۡمَ الۡقِیٰمَۃِ فِیۡمَا كَانُوۡا فِیۡهِ یَخۡتَلِفُوۡنَ ﴿۱۱۳﴾

আর ইয়াহূদীরা বলে, ‘নাসারাদের কোন ভিত্তি নেই’ এবং নাসারারা বলে ‘ইয়াহূদীদের কোন ভিত্তি নেই’। অথচ তারা কিতাব পাঠ করে। এভাবেই, যারা কিছু জানে না, তারা তাদের কথার মত কথা বলে। সুতরাং যে বিষয়ে তারা মতবিরোধ করত আল্লাহ কিয়ামতের দিন সে বিষয়ে তাদের মধ্যে ফয়সালা করবেন। আল-বায়ান

আর ইয়াহূদীরা বলে যে, নাসারাদের মাযহাবের কোন ভিত্তি নেই; নাসারারা বলে যে, ইয়াহূদীদের মাযহাবের কোন ভিত্তি নেই, অথচ তারা কিতাব পাঠ করে, এভাবে যারা কিছু জানে না তারাও ওদের মতই বলে, যার সম্বন্ধে তারা মতবিরোধ করছে, আল্লাহ ক্বিয়ামাতের দিন তাদের মধ্যে সেই বিষয়ের সমাধান করবেন। তাইসিরুল

আর ইয়াহুদীরা বলেঃ খৃষ্টানরা কোন বিষয়ের উপর নেই; এবং খৃষ্টানরা বলে, ইয়াহুদীরাও কোন বিষয়ের উপর নেই - অথচ তারা গ্রন্থ পাঠ করে। এরূপ যারা জানেনা, তারাও ওদের কথার অনুরূপ কথা বলে থাকে; অতএব যে বিষয়ে তারা মতবিরোধ করেছিল, উত্থান দিনে আল্লাহ তাদের মধ্যে তদ্বিষয়ে ফায়সালা করে দিবেন। মুজিবুর রহমান

The Jews say "The Christians have nothing [true] to stand on," and the Christians say, "The Jews have nothing to stand on," although they [both] recite the Scripture. Thus the polytheists speak the same as their words. But Allah will judge between them on the Day of Resurrection concerning that over which they used to differ. Sahih International

১১৩. আর ইয়াহুদীরা বলে, ‘নাসারাদের কোন ভিত্তি নেই’ এবং ‘নাসারারা বলে ইয়াহুদীদের কোন ভিত্তি নেই’ অথচ তারা কিতাব পড়ে। এভাবে যারা কিছুই জানেনা তারাও একই কথা বলে(১)। কাজেই যে বিষয়ে তারা মতভেদ করতো কেয়ামতের দিন আল্লাহ তাদের মধ্যে (সে বিষয়ে) মীমাংসা করবেন।

(১) ইয়াহুদী হোক অথবা নাসারা কিংবা মুসলিম- যে কেউ উপরোক্ত মৌলিক বিষয়াদির মধ্য থেকে কোন একটি ছেড়ে দেয়, অতঃপর শুধু নামভিত্তিক জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে নিজেদেরকে জান্নাতের একমাত্র উত্তরাধিকারী মনে করে নেয়, সে আত্মপ্রবঞ্চনা বৈ কিছুই করে না; আসল সত্যের সাথে এর কোনই সম্পর্ক নেই। এসব নামের উপর ভরসা করে কেউ আল্লাহর নিকটবর্তী ও মকবুল হতে পারবে না, যে পর্যন্ত না তার মধ্যে ঈমান ও সৎকর্ম থাকে। প্রত্যেক নবীর শরীআতেই ঈমানের মূলনীতি এক ও অভিন্ন।

তবে সৎকর্মের আকার-আকৃতিতে পরিবর্তন ও পরিবর্ধন হয়েছে। তাওরাতের যুগে যেসব কাজ-কর্ম মূসা আলাইহিস সালাম ও তাওরাতের শিক্ষার অনুরূপ ছিল, তাই ছিল সৎকর্ম। তদ্রুপ ইঞ্জীলের যুগে নিশ্চিতরূপে তা-ই ছিল সৎকর্ম, যা ঈসা আলাইহিস সালাম ও ইঞ্জীলের শিক্ষার সাথে সামঞ্জস্যশীল ছিল। এখন কুরআনের যুগে ঐসব কাজ-কর্মই সৎকর্মরূপে অভিহিত হওয়ার যোগ্য, যা সর্বশেষ রাসূল মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বাণী এবং তার মাধ্যমে আসা গ্রন্থ কুরআনুল কারীমের হেদায়াতের অনুরূপ।

মোটকথা, ইয়াহুদী ও নাসারাদের মতবিরোধ সম্পর্কে আল্লাহ্ তা'আলার ফয়সালা এই যে, উভয় সম্প্রদায় মূর্খতাসুলভ কথাবার্তা বলছে, তাদের কেউই জান্নাতের ইজারাদার নয়। ভুল বুঝাবুঝির প্রকৃত কারণ হচ্ছে এই যে, ওরা দ্বীনের আসল প্রাণ ও বিশ্বাস, সৎকর্মকে বাদ দিয়ে বংশ অথবা দেশের ভিত্তিতে কোন সম্প্রদায়কে ইয়াহুদী আর কোন সম্প্রদায়কে নাসারা নামে অভিহিত করেছে। কুরআনুল কারীমে আহলে-কিতাবদের মতবিরোধ ও আল্লাহর ফয়সালা উল্লেখ করার মূল উদ্দেশ্য হলো মুসলিমদেরকে সতর্ক করা, যাতে তারাও ভুল বুঝাবুঝিতে লিপ্ত হয়ে একথা না বলে যে, আমরা পুরুষানুক্রমে মুসলিম, প্রত্যেক অফিসে ও রেজিষ্টারে আমাদের নাম মুসলিমদের কোটায় লিপিবদ্ধ এবং আমরা মুখেও নিজেদেরকে মুসলিম বলি, সুতরাং জান্নাত এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মাধ্যমে মুসলিমদের সাথে ওয়াদাকৃত সকল পুরস্কারের যোগ্য হকদার আমরাই।

এ ফয়সালা দ্বারা স্পষ্ট হয়ে যায় যে, শুধু দাবী করলে, মুসলিমরূপে নাম লিপিবদ্ধ করালে অথবা মুসলিমের ঔরসে কিংবা মুসলিমদের আবাসভূমিতে জন্ম গ্রহণ করলেই প্রকৃত মুসলিম হয় না, বরং মুসলিম হওয়ার জন্য পরিপূর্ণভাবে ইসলাম গ্রহণ করা অপরিহার্য। ইসলামের অর্থ আত্মসমর্পণ। দ্বিতীয়তঃ সৎকর্ম অর্থাৎ সুন্নাহ অনুযায়ী আমল করাও জরুরী।

তাফসীরে জাকারিয়া

১১৩। ইয়াহুদীরা বলে, ‘খ্রিষ্টানদের কোন (ধর্মীয়) ভিত্তি নেই’ [1] এবং খ্রিষ্টানরা বলে, ‘ইয়াহুদীদের কোন (ধর্মীয়) ভিত্তি নেই’; অথচ তারা কিতাব (ঐশীগ্রন্থ) পাঠ করে। এভাবে যারা অজ্ঞ তারাও অনুরূপ কথা বলে থাকে। [2] সুতরাং যে বিষয়ে তাদের মতভেদ আছে, শেষ বিচারের দিন আল্লাহ তার মীমাংসা করবেন।

[1] ইয়াহুদীরা তাওরাত পড়ত। তাতে মুসা (আঃ)-এর জবানি ঈসা (আঃ)-এর সত্যায়ন বিদ্যমান, তা সত্ত্বেও ইয়াহুদীরা ঈসা (আঃ)-কে অস্বীকার করত। খ্রিষ্টানদের কাছে ইঞ্জীল বিদ্যমান, তাতে মূসা (আঃ) এবং তাওরাত যে আল্লাহর পক্ষ হতে আগত, সে কথার সত্যায়ন রয়েছে, তা সত্ত্বেও এরা ইয়াহুদীদেরকে কাফের মনে করে। অর্থাৎ, এখানে আহলে-কিতাবদের উভয় দলের কুফরী ও অবাধ্যতা এবং তাদের নিজের নিজের ব্যাপারে মিথ্যা আনন্দের মধ্যে মত্ত থাকার কথাই প্রকাশ করা হচ্ছে।

[2] আহলে-কিতাবদের মোকাবেলায় আরবের মুশরিকরা নিরক্ষর (অশিক্ষিত) ছিল। আর এই জন্যই তাদেরকে 'অজ্ঞ' বলা হয়েছে। কিন্তু তারাও মুশরিক হওয়া সত্ত্বেও ইয়াহুদী ও খ্রিষ্টানদের মত এই মিথ্যা ধারণায় মত্ত ছিল যে, তারাই নাকি হকের উপর প্রতিষ্ঠিত। আর এই জন্য তারা নবী করীম (সাঃ)-কে স্বাবীঃ অর্থাৎ, বেদ্বীন বলত।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
দেখানো হচ্ছেঃ ১১১ থেকে ১২০ পর্যন্ত, সর্বমোট ৬২৩৬ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে পাতা নাম্বারঃ « আগের পাতা 1 2 3 4 · · · 9 10 11 12 13 · · · 621 622 623 624 পরের পাতা »