আর আমি তো ইতঃপূর্বে ইবরাহীমকে সঠিক পথের জ্ঞান দিয়েছিলাম এবং আমি তার সম্পর্কে ছিলাম সম্যক অবগত। আল-বায়ান
আমি ইতোপূর্বে ইবরাহীমকে সঠিক পথে চলার জ্ঞান দান করেছিলাম আর তার সম্পর্কে আমি খুব ভালভাবে জানতাম। তাইসিরুল
আমি এর পূর্বে ইবরাহীমকে সৎ পথের জ্ঞান দিয়েছিলাম এবং আমি তার সম্বন্ধে ছিলাম সম্যক অবগত। মুজিবুর রহমান
And We had certainly given Abraham his sound judgement before, and We were of him well-Knowing Sahih International
৫১. আর আমরা তো এর আগে ইবরাহীমকে তার শুভবুদ্ধি ও সত্যজ্ঞান দিয়েছিলাম(১) এবং আমরা তার সম্বন্ধে ছিলাম সম্যক পরিজ্ঞাত।
(১) রুশ্দ এর অর্থ হচ্ছে সঠিক ও বেঠিকের মধ্যে পার্থক্য করে সঠিক কথা বা পথ অবলম্বন করা এবং বেঠিক কথা ও পথ থেকে দূরে সরে যাওয়া। যাকে আরবীতে صلاح বলা যায়। [বাগভী] এ অর্থের প্রেক্ষিতে “রুশদ” এর অনুবাদ “সত্যনিষ্ঠা”ও হতে পারে। কিন্তু যেহেতু রুশদ শব্দটি কেবলমাত্র সত্যনিষ্ঠা নয় বরং এমন সত্যজ্ঞানের ভাব প্রকাশ করে যা সঠিক চিন্তা ও ভারসাম্যপূর্ণ সুষ্ঠ বুদ্ধি ব্যবহারের ফলশ্রুতি, তাই “শুভবুদ্ধি ও সত্যজ্ঞান” এই দুটি শব্দ একত্রে এর অর্থের কাছাকাছি। তাই অনুবাদ করা হয়েছে, “ইবরাহীমকে তার শুভবুদ্ধি ও সত্যজ্ঞান দান করেছিলাম।” [দেখুন, কুরতুবী] এখানে 'তার' বলার অর্থ, যতটুকু তার জন্য এবং তার মত অন্যান্য রাসূলদের জন্য উপযুক্ত ততটুকু আমরা তাকে দান করেছিলাম। [ফাতহুল কাদীর] সুতরাং সে যে সত্যের জ্ঞান ও শুভবুদ্ধি লাভ করেছিল তা আমরাই তাকে দান করেছিলাম। এটা তার জন্য আমাদের পক্ষ থেকে নির্ধারিত ছিল। যা ছিল আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহ।
তাফসীরে জাকারিয়া(৫১) নিশ্চয় আমি এর পূর্বে[1] ইব্রাহীমকে সৎপথের জ্ঞান দিয়েছিলাম এবং আমি তার সম্বন্ধে ছিলাম অবগত। [2]
[1] ‘এর পূর্বে’র একটি অর্থ ইবরাহীম (আঃ)-কে সুমতি পথ নির্দেশনা, জ্ঞান-বুদ্ধি দান করার ঘটনা মূসা (আঃ)-কে তাওরাত দেওয়ার আগের। অথবা এর অর্থ ইবরাহীম (আঃ)-কে নবুঅত দান করার পূর্বে সৎপথের জ্ঞান দান করা হয়েছিল।
[2] অর্থাৎ, আমি জানতাম যে, সে এই জ্ঞানের যোগ্য এবং সে তা সঠিক প্রয়োগ করবে।
তাফসীরে আহসানুল বায়ানযখন সে তার পিতা ও তার কওমকে বলল, ‘এ মূর্তিগুলো কী, যেগুলোর পূজায় তোমরা রত রয়েছ’? আল-বায়ান
যখন সে তার পিতাকে ও তার জাতিকে বলল, ‘এ মূর্তিগুলো কী যাদের সঙ্গে তোমরা নিজেদেরকে (ভক্তির বাঁধনে) বেঁধে রেখেছ?’ তাইসিরুল
যখন সে তার পিতা ও তার সম্প্রদায়কে বললঃ এই মূর্তিগুলি কি, যাদের পূজায় তোমরা রত রয়েছ? মুজিবুর রহমান
When he said to his father and his people, "What are these statues to which you are devoted?" Sahih International
৫২. যখন তিনি তার পিতা ও তার সম্প্রদায়কে বললেন, এ মূর্তিগুলো কী, যাদের পূজায় তোমরা রত রয়েছ!
-
তাফসীরে জাকারিয়া(৫২) যখন সে তার পিতা ও তার সম্প্রদায়কে বলল, ‘এই মূর্তিগুলি কি, যাদের পূজায় তোমরা রত রয়েছ?’ [1]
[1] تَمَاثِيل শব্দটি تِمثَال শব্দের বহুবচন। এর মূল অর্থ হল, কোন জিনিসের হুবহু প্রতিকৃতি। যেমন পাথর নির্মিত, কাগজে বা দেওয়ালে চিত্রিত প্রতিমূর্তি বা ছবি। এখানে উদ্দেশ্য সেই প্রতিমাসমূহ যাদেরকে ইবরাহীম (আঃ)-এর জাতির লোকেরা নিজেদের মাবূদ ও উপাস্য বানিয়ে পূজা করত। عَاكِف শব্দটি عكوف এর কর্তৃকারক রূপ, যার অর্থ কোন জিনিসকে অাঁকড়ে ধরা, তার প্রতি ঝুঁকে জমে বসা। আর এখান থেকেই এসেছে اعتكاف (ই’তিকাফ) যার অর্থ আল্লাহর ইবাদতের উদ্দেশে ইবাদতকারী মসজিদের মধ্যে নিজেকে আবদ্ধ রেখে সেখানে একাগ্রতার সাথে অবস্থান করে। এখানে আয়াতের অর্থ মূর্তিদের তা’যীম ও ইবাদত করা এবং তাদের থানে খাদেম বা পূজারী রূপে অবস্থান করা। এই মূর্তিপূজা বা ছবি পূজার প্রচলন বর্তমানে কবরপূজারী ও পীরপূজারীদের মধ্যে ব্যাপকহারে বিদ্যমান। তারা তাদের পীর-বুযুর্গদের ছবি বড় সম্মানের সাথে ঘরে ও দোকানে বরকত হাসিলের উদ্দেশ্যে টাঙ্গিয়ে রাখে (এবং ফুল-বাতি ও আগরবাতি ইত্যাদি দিয়ে সেলাম, নমস্কার বা প্রণিপাতও করে থাকে)। আল্লাহ তাদের সুমতি দান করুন।
তাফসীরে আহসানুল বায়ানতারা বলল, ‘আমরা আমাদের পূর্বপুরুষদেরকে এদের পূজা করতে দেখেছি’। আল-বায়ান
তারা বলল, ‘আমরা আমাদের পিতৃপুরুষদেরকে এদের পূজো করতে দেখেছি। তাইসিরুল
তারা বললঃ আমরা আমাদের পিতৃপুরুষদেরকে এদের পূজা করতে দেখেছি। মুজিবুর রহমান
They said, "We found our fathers worshippers of them." Sahih International
৫৩. তারা বলল, আমরা আমাদের পিতৃ পুরুষদেরকে এদের ইবাদত করতে দেখেছি।
-
তাফসীরে জাকারিয়া(৫৩) তারা বলল, ‘আমরা আমাদের পিতৃ-পুরুষদেরকে এদের পূজা করতে দেখেছি।’ [1]
[1] যেমন আজকাল অজ্ঞতা ও কুসংস্কারের জালে ফেঁসে যাওয়া মুসলিমদেরকে বিদআত ও জাহেলী প্রথা বা কর্মকান্ড থেকে বাধা দিলে তারা উত্তরে বলে, ‘আমরা এসব কেমন করে ছাড়ব? আমাদের পিতৃপুরুষেরা এসব করে আসছে।’ আর এই ধরনের উত্তর ঐ সকল লোকেরাও দিয়ে থাকে, যারা কিতাব ও সহীহ সুন্নাহর স্পষ্ট উক্তি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে নিজেদের নেতা, উলামা ও বুযুর্গদের অভিমত ও চিন্তাধারাকে মানা আবশ্যক মনে করে।
তাফসীরে আহসানুল বায়ানসে বলল, ‘তোমরা নিজেরা এবং তোমাদের পূর্বপুরুষরা সবাই রয়েছ স্পষ্ট বিভ্রান্তিতে’। আল-বায়ান
সে বলল, ‘তোমরা রয়েছ স্পষ্ট গুমরাহীতে, তোমরা আর তোমাদের পিতৃপুরুষরাও।’ তাইসিরুল
সে বললঃ তোমরা নিজেরা এবং তোমাদের পূর্ব-পুরুষরাও রয়েছ স্পষ্ট বিভ্রান্তিতে। মুজিবুর রহমান
He said, "You were certainly, you and your fathers, in manifest error." Sahih International
৫৪. তিনি বললেন, অবশ্যই তোমরা নিজেরা এবং তোমাদের পিতৃপুরুষরাও স্পষ্ট বিভ্ৰান্তিতে আছ।
-
তাফসীরে জাকারিয়া(৫৪) সে বলল, ‘তোমরা নিজেরা এবং তোমাদের পিতৃ-পুরুষরাও রয়েছ স্পষ্ট বিভ্রান্তিতে।’
-
তাফসীরে আহসানুল বায়ানতারা বলল, ‘তুমি কি আমাদের নিকট সত্য নিয়ে এসেছ, নাকি তুমি খেল-তামাশা করছ’? আল-বায়ান
তারা বলল, ‘তুমি কি আমাদের কাছে প্রকৃত সত্য এনেছ, না তুমি আমাদের সঙ্গে তামাশা করছ?’ তাইসিরুল
তারা বললঃ তুমি কি আমাদের নিকট সত্য এনেছ, নাকি তুমি কৌতুক করছ? মুজিবুর রহমান
They said, "Have you come to us with truth, or are you of those who jest?" Sahih International
৫৫. তারা বলল, তুমি কি আমাদের কাছে সত্য নিয়ে এসেছ, না তুমি খেলা করছ?(১)
(১) এ বাক্যটির শাব্দিক অনুবাদ হবে, “তুমি কি আমাদের সামনে সত্য পেশ করছে, না খেলা করছো?” আমরা তো এর আগে আর কারও কাছে এমন কথা শুনিনি। [ইবন কাসীর] অপর কারো কারো মতে এর অর্থ তুমি কি আমাদের সামনে প্রকৃত মনের কথা বলছো, নাকি কৌতুক করছো? [কুরতুবী] নিজেদের ধর্মের সত্যতার প্রতি তাদের বিশ্বাস এত বেশী ছিল যে, তারা গুরুত্ব সহকারে কেউ এ কথা বলতে পারে বলে কল্পনাও করতে প্ৰস্তুত ছিল না। তাই তারা বললো, তুমি নিছক ঠাট্টা-বিদ্রূপ ও খেলাতামাশা করছো, না কি প্রকৃতপক্ষে এটাই তোমার চিন্তাধারা? তাদের কাছে এটা ছিল ইবরাহীমের বোকামীসূলভ কথাবার্তা। [দেখুন, সা'দী]
তাফসীরে জাকারিয়া(৫৫) তারা বলল, ‘তুমি কি আমাদের নিকট সত্য এনেছ, না তুমি কৌতুক করছ?’ [1]
[1] এ কথা তারা এই জন্য বলেছিল যে, তারা এর আগে তাওহীদের বাণী শুনেইনি। তারা ভাবল, ইবরাহীম আমাদের সাথে মস্করা করছে না তো?
তাফসীরে আহসানুল বায়ানসে বলল, ‘না, বরং তোমাদের রব তো আসমানসমূহ ও যমীনের রব; যিনি এ সবকিছু সৃষ্টি করেছেন। আর এ বিষয়ে আমি অন্যতম সাক্ষী’। আল-বায়ান
সে বলল, ‘বরং, তোমাদের প্রতিপালক হলেন আকাশ ও পৃথিবীর প্রতিপালক যিনি ওগুলোকে সৃষ্টি করেছেন, আর এ বিষয়ে আমি একজন সাক্ষ্যদাতা। তাইসিরুল
সে বললঃ না, তোমাদের রাব্বতো আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর রাব্ব, যিনি ওগুলি সৃষ্টি করেছেন এবং এই বিষয়ে আমি অন্যতম সাক্ষী। মুজিবুর রহমান
He said, "[No], rather, your Lord is the Lord of the heavens and the earth who created them, and I, to that, am of those who testify. Sahih International
৫৬. তিনি বললেন, বরং তোমাদের রব তো আসমানসমূহ ও যমীনের রব, যিনি সেগুলো সৃষ্টি করেছেন এবং এ বিষয়ে আমি অন্যতম সাক্ষী।
-
তাফসীরে জাকারিয়া(৫৬) সে বলল, ‘বরং তোমাদের প্রতিপালক তো আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর প্রতিপালক, যিনি ওগুলি সৃষ্টি করেছেন। আর আমি এ বিষয়ে অন্যতম সাক্ষী। [1]
[1] অর্থাৎ, আমি কৌতুক করছি না; বরং এমন এক জিনিস পেশ করছি যার জ্ঞান ও নিশ্চয়তা আমি লাভ করেছি। আর তা হল এই যে, তোমাদের উপাস্য এসব মূর্তি নয়; বরং একমাত্র উপাস্য সেই প্রতিপালক, যিনি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর মালিক ও সৃষ্টিকর্তা।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান‘আর আল্লাহর কসম, তোমরা চলে যাওয়ার পর আমি তোমাদের মূর্তিগুলোর ব্যাপারে অবশ্যই কৌশল অবলম্বন করব’। আল-বায়ান
কসম আল্লাহর! তোমরা পেছন ফিরে চলে গেলেই আমি তোমাদের মূর্তিগুলোর বিরুদ্ধে অবশ্য অবশ্যই একটা কৌশল গ্রহণ করব। তাইসিরুল
শপথ আল্লাহর! তোমরা চলে গেলে আমি তোমাদের মূর্তিগুলি সম্বন্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা অবলম্বন করব। মুজিবুর রহমান
And [I swear] by Allah, I will surely plan against your idols after you have turned and gone away." Sahih International
৫৭. আর আল্লাহর শপথ, তোমরা পিছন ফিরে চলে গেলে আমি তোমাদের মূর্তিগুলো সম্বন্ধে অবশ্যই কৌশল অবলম্বন করব।(১)
(১) আয়াতের ভাষা বাহ্যতঃ একথাই বোঝায় যে, এ কথাটি ইবরাহীম আলাইহিস সালাম তার সম্প্রদায়ের সামনে বলেছিলেন। কিন্তু এতে প্রশ্ন হয় যে, ইবরাহীম আলাইহিস সালাম তাদের কাছে (আমি অসুস্থ) এর ওযর পেশ করে তাদের সাথে ঈদের সমাবেশে যাওয়া থেকে নিবৃত্ত ছিলেন। যখন মুর্তি ভাঙ্গার ঘটনা ঘটল, তখন সম্প্রদায়ের লোকেরা অনুসন্ধানে রত হল যে, কাজটি কে করল? যদি ইবরাহীম আলাইহিস সালাম এর উপরোক্ত কথা পূর্বেই তাদের জানা থাকত, তবে এতসব খোঁজাখুজির কি প্রয়োজন ছিল? প্রথমেই তারা বুঝে নিত যে, ইবরাহীম একাজ করেছে। এর জওয়াব কয়েকটি হতে পারেঃ তফসীরবিদদের মধ্যে মুজাহিদ ও কাতাদাহ বলেনঃ ইবরাহীম আলাইহিস সালাম উপরোক্ত কথাটি সম্প্রদায়ের লোকদের সামনে বলেননি; বরং মনে মনে বলেছিলেন। শুধু একজন লোক তা শুনেছিল আর সেই তা অন্যদের কাছে প্রকাশ করে দেয়। [কুরতুবী] অথবা সম্প্রদায়ের লোকেরা চলে যাওয়ার পর যে দু'একজন দুর্বল লোক সেখানে ছিল, তাদেরকে বলেছিলেন। এরপর মুর্তি ভাঙ্গার ঘটনা ঘটলে যখন খোঁজাখুঁজি শুরু হয়, তখন তারা এই তথ্য সরবরাহ করে। [ইবন কাসীর]
তাফসীরে জাকারিয়া(৫৭) শপথ আল্লাহর! তোমরা চলে গেলে আমি তোমাদের মূর্তিগুলি সম্বন্ধে অবশ্যই কৌশল অবলম্বন করব।’ [1]
[1] এ কথা ইবরাহীম (আঃ) মনে মনে সংকল্প করেছিলেন। কেউ কেউ বলেন যে, তিনি চুপিসারে এ কথা বলেছিলেন; যার উদ্দেশ্য ছিল কিছু লোককে শোনানো। আর আল্লাহই অধিক জানেন। كَيد (কৌশল) অবলম্বন করার অর্থঃ সেই কর্মগত প্রচেষ্টা, যা তিনি মৌখিক উপদেশ দানের পর গর্হিত কাজ বন্ধ করার লক্ষ্যে কার্যতঃ করতে চেয়েছিলেন। আর তা হল, মূর্তিগুলোকে ভেঙ্গে ফেলা।
তাফসীরে আহসানুল বায়ানঅতঃপর সে মূর্তিগুলোকে চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দিল তাদের বড়টি ছাড়া, যাতে তারা তাঁর দিকে ফিরে আসে। আল-বায়ান
তারপর সে মূর্তিগুলোকে টুকরো টুকরো করে দিল, ওগুলোর বড়টি ছাড়া, যাতে পূজারীরা ওটার প্রতিই মনোযোগী হয়। তাইসিরুল
অতঃপর সে চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দিল মূর্তিগুলিকে, তাদের বড় (প্রধান) মূর্তিটি ব্যতীত, যাতে তারা তার দিকে ফিরে আসে। মুজিবুর রহমান
So he made them into fragments, except a large one among them, that they might return to it [and question]. Sahih International
৫৮. অতঃপর তিনি চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দিলেন মূর্তিগুলোকে, তাদের প্রধানটি ছাড়া(১); যাতে তারা তার দিকে(২) ফিরে আসে।
(১) অর্থাৎ ইবরাহীম আলাইহিস সালাম মুর্তিগুলোকে ভেঙ্গে খণ্ডবিখণ্ড করে দিলেন। শুধু বড় মুর্তিটিকে ভাঙ্গার কবল থেকে রেহাই দিলেন। এটা হয় দৈহিক আকার আকৃতিতে অন্য মুর্তিদের চাইতে বড় ছিল [কুরতুবী] না হয় আকার আকৃতিতে সমান হওয়া সত্বেও পূজারীরা তাকে বড় বলে মান্য করত। [ইবন কাসীর]
(২) এখানে إليه বা ‘তার দিকে’ বলে কাকে বুঝানো হয়েছে। এ ব্যাপারে দুটি মত রয়েছেঃ (এক) এখানে তার দিকে বলে ইবরাহীম আলাইহিস সালামকে বোঝানো হয়েছে। [ফাতহুল কাদীর] অর্থাৎ ইবরাহীম আলাইহিস সালাম এ আশায় কাজটি করলেন যে তাদের উপাস্য মুর্তিদেরকে খণ্ড-বিখণ্ড দেখলে এরা যে পুজার যোগ্য নয় এ জ্ঞান তাদের মধ্যে ফিরে আসবে। এরপর তারা ইবরাহীম আলাইহিস সালাম এর দ্বীনের দিকে প্রত্যাবর্তন করবে। [কুরতুবী] (দুই) কোন কোন মুফাসসিরের মতে, এখানে ‘তার দিকে’ বলে- كبيرهم বা তাদের প্রধান মুর্তিকে বোঝানো হয়েছে। অর্থ এই যে, তারা ফিরে এসে যখন সবগুলো মুর্তিকে খণ্ড বিখণ্ড এবং বড় মুর্তিকে আস্ত অক্ষত ও কাঁধে কুড়াল রাখা অবস্থায় দেখবে, তখন সম্ভবত: এই মুর্তিটির দিকেই প্রত্যাবর্তন করবে এবং তাকে জিজ্ঞেস করবে যে, এরূপ কেন হল? আর তারা মনে করবে যে, বড় মূর্তিই বোধ হয় নিজের আত্মসম্মানবোধের কারণে ছোট ছোট মূর্তিগুলোকে ভেঙ্গে ফেলেছে। [কুরতুবী; ইবন কাসীর]
তাফসীরে জাকারিয়া(৫৮) অতঃপর সে তাদের বড় মূর্তিটি ছাড়া অন্যগুলিকে চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দিল; যাতে তারা তার দিকে ফিরে আসে।[1]
[1] যখন তারা সকলেই তাদের ঈদ বা কোন অনুষ্ঠানের দিন বাইরে চলে গেল, তখন ইবরাহীম (আঃ) এই সুযোগে সকল মূর্তিগুলোকে ভেঙ্গে ফেললেন। শুধু বড় মূর্তিটিকে রেখে দিলেন। কেউ বলেন, কুড়ুল তার হাতে ধরিয়ে দিলেন, যাতে তারা তাকে জিজ্ঞেস করে।
তাফসীরে আহসানুল বায়ানতারা বলল, ‘আমাদের দেবদেবীগুলোর সাথে কে এমনটি করল? নিশ্চয় সে যালিম’। আল-বায়ান
তারা বলল, ‘আমাদের মূর্তিগুলোর সাথে এমনটা কে করল? সে অবশ্যই যালিম।’ তাইসিরুল
তারা বললঃ আমাদের উপাস্যগুলির প্রতি এরূপ করল কে? সে নিশ্চয়ই সীমালংঘনকারী। মুজিবুর রহমান
They said, "Who has done this to our gods? Indeed, he is of the wrongdoers." Sahih International
৫৯. তারা বলল, আমাদের মা’বুদগুলোর প্ৰতি এরূপ করল কে? সে নিশ্চয়ই অন্যতম যালেম।
-
তাফসীরে জাকারিয়া(৫৯) তারা বলল, ‘আমাদের উপাস্যগুলির প্রতি এরূপ আচরণ কে করল? সে নিশ্চয়ই সীমালংঘনকারী।’ [1]
[1] যখন তারা অনুষ্ঠান সেরে ফিরে এল, তখন তারা দেখল মূর্তিগুলো সব ভেঙ্গে পড়ে রয়েছে। তারা বলতে লাগল যে, এ কোন বড় অত্যাচারী লোকেরই কাজ।
তাফসীরে আহসানুল বায়ানতাদের কেউ কেউ বলল, ‘আমরা শুনেছি এক যুবক এই মূর্তিগুলোর সমালোচনা করে। তাকে বলা হয় ইবরাহীম’। আল-বায়ান
কেউ কেউ বলল, ‘এক যুবককে এদের সম্পর্কে বলতে শুনেছি, তাকে ইবরাহীম বলা হয়।’ তাইসিরুল
কেহ কেহ বললঃ আমরা এক যুবককে ওদের সমালোচনা করতে শুনেছি, তাকে বলা হয় ইবরাহীম। মুজিবুর রহমান
They said, "We heard a young man mention them who is called Abraham." Sahih International
৬০. লোকেরা বলল, আমরা এক যুবককে ওদের সমালোচনা করতে শুনেছি; তাকে বলা হয় ইবরাহীম।
-
তাফসীরে জাকারিয়া(৬০) কেউ কেউ বলল, ‘আমরা এক যুবককে ওদের সমালোচনা করতে শুনেছি, তার নাম ইব্রাহীম।’ [1]
[1] ওদের মধ্যে কেউ কেউ বলল, ইবরাহীম নামে এক যুবক আছে না, সে কিন্তু আমাদের দেব-দেবীর বিরুদ্ধে কথা বলে, বোধ হয় এটি তারই কাজ।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান