১৫. আল-হিজর
১৫:২৬ وَ لَقَدۡ خَلَقۡنَا الۡاِنۡسَانَ مِنۡ صَلۡصَالٍ مِّنۡ حَمَاٍ مَّسۡنُوۡنٍ ﴿ۚ۲۶﴾

আর অবশ্যই আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি শুকনো ঠনঠনে, কালচে কাদামাটি থেকে। আল-বায়ান

আমি কাল শুষ্ক ঠনঠনে মাটির গাড়া থেকে মানুষকে সৃষ্টি করেছি। তাইসিরুল

আমিতো মানুষকে সৃষ্টি করেছি ছাঁচে ঢালা শুষ্ক ঠনঠনে মাটি হতে। মুজিবুর রহমান

And We did certainly create man out of clay from an altered black mud. Sahih International

২৬. আর অবশ্যই আমরা মানুষ সৃষ্টি করেছি গন্ধযুক্ত কাদার শুষ্ক ঠনঠনে কালচে মাটি হতে,(১)

(১) মানুষের আদি উৎস সম্পর্কে কুরআন বলছে, সরাসরি মৃত্তিকার উপাদান থেকে তার সৃষ্টিকর্ম শুরু হয়। (صَلْصَالٍ مِنْ حَمَإٍ مَسْنُونٍ) “শুকনো কালো ঠনঠনে পচা মাটি” শব্দাবলীর মাধ্যমে একথা ব্যক্ত করা হয়েছে। حمأ বলতে আরবী ভাষায় এমন ধরনের কালো কাদা মাটিকে বুঝায় যার মধ্যে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয়ে গেছে, যাকে আমরা নিজেদের ভাষায় পংক বা প্যাঁক বলে থাকি অথবা অন্য কথায় বলা যায়, যা মাটির গোলা বা মন্ড হয়ে গেছে। [সা'দী] مَسْنُون শব্দের দুই অর্থ হয়। একটি অর্থ, পরিবর্তিত, অর্থাৎ এমন পচা, যার মধ্যে পচন ধরার ফলে চকচকে ও তেলতেলে ভাব সৃষ্টি হয়ে গেছে। [সা'দী] আর দ্বিতীয় অর্থ, চিত্রিত। অর্থাৎ যা একটি নির্দিষ্ট আকৃতি ও কাঠামোতে রুপান্তরিত হয়েছে। [ফাতহুল কাদীর] صَلْصَال বলা হয় এমন পচা কাদাকে যা শুকিয়ে যাওয়ার পর ঠনঠন করে বাজে। [এর জন্য আরও দেখুন, বাগভী; কুরতুবী ইবন কাসীর] এ শব্দাবলী থেকে পরিষ্কার জানা যাচ্ছে যে, গাজানো কাদা মাটির গোলা বা মন্ড থেকে প্রথমে প্রথম মানুষকে বানানো হয় এবং তা তৈরী হবার পর যখন শুকিয়ে যায় তখন তার মধ্যে প্রাণ ফুঁকে দেয়া হয়।

তাফসীরে জাকারিয়া

(২৬) নিশ্চয় আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি কালো পচা শুষ্ক ঠনঠনে মাটি হতে।[1]

[1] মাটির বিভিন্ন অবস্থার কারণে বিভিন্ন নামে নামকরণ হয়ে থাকে। শুকনো মাটিকে تراب, ভিজে মাটিকে طين, দুর্গন্ধযুক্ত পচা কাদা মাটিকে حمأ مسنون বলা হয়। যেমন তা শুকিয়ে গিয়ে তা থেকে ঠনঠন্ শব্দ বের হলে তাকে صلصال এবং আগুনে পোড়ালে فخَّار বলা হয়। এখানে মহান আল্লাহ মানুষের সৃষ্টির কথা যেভাবে বর্ণনা করেছেন তাতে মনে হয় যে, আদমের দেহ প্রথমে দুর্গন্ধযুক্ত কাদামাটি দিয়ে তৈরী করেছিলেন এবং যখন তা শুকিয়ে তা থেকে ঠনঠন্ শব্দ বের হতে শুরু করল, তখন তার মধ্যে জীবন দান করেছিলেন। এই صلصال কে কুরআনের অন্যত্র كالفخّار বলা হয়েছে। (সূরা রাহমান ১৪ আয়াত দ্রঃ)

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ১ পর্যন্ত, সর্বমোট ১ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে