৭৩ : ৫ اِنَّا سَنُلۡقِیۡ عَلَیۡکَ قَوۡلًا ثَقِیۡلًا ﴿۵﴾

নিশ্চয় আমি তোমার প্রতি এক অতিভারী বাণী নাযিল করছি। আল-বায়ান

আমি তোমার উপর গুরুভার কালাম নাযিল করব (বিশ্বের বুকে যার প্রচার ও প্রতিষ্ঠা করার দায়িত্বভার অতি বড় কঠিন কাজ)। তাইসিরুল

আমি তোমার প্রতি অবতীর্ণ করেছি গুরুত্বপূর্ণ বাণী। মুজিবুর রহমান

Indeed, We will cast upon you a heavy word. Sahih International

৫. নিশ্চয় আমরা আপনার প্রতি নাযিল করছি গুরুভার বাণী।(১)

(১) এখানে ভারী বা গুরুতর বাণী বলে পবিত্র কুরআন বোঝানো হয়েছে। গুরুভার বাণী বলার কারণ হলো, তার নির্দেশ অনুসারে কাজ করা অনেক বেশী কঠিন ও গুরুতর কাজ। তাছাড়া এ জন্যও একে গুরুভার ও কঠিন বাণী বলা হয়েছে যে, তার অবতরণের ভার বহন করা অত্যান্ত কঠিন কাজ ছিল। যায়েদ ইবনে সাবেত রাদিয়াল্লাহু আনহু বৰ্ণনা করেছেন যে, একবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওপর অহী নাযিল হওয়ার সময় তিনি আমার উরুর ওপর তাঁর উরু, ঠেকিয়ে বসেছিলেন। আমার উরুর ওপর তখন এমন চাপ পড়ছিলো যে, মনে হচ্ছিলো তা এখনই ভেঙে যাবে। [বুখারী: ৭৭৫, ৫০৪৩]

আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা বৰ্ণনা করেন, আমি প্ৰচণ্ড শীতের দিনে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অহী নাযিল হতে দেখেছি। সে সময়ও তাঁর কপাল থেকে ঘাম ঝরতে থাকতো। [বুখারী: ২] অন্য বর্ণনায় আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেছেন, উটনীর ওপর সওয়ার থাকা অবস্থায় যখনই তার ওপর অহী নাযিল হতো উটনী তখন তার বুক মাটিতে ঠেকিয়ে দিতো। অহী নাযিল শেষ না হওয়া পর্যন্ত সে নড়াচড়া পর্যন্ত করতে পারতো না। [মুসনাদে আহমাদ: ৬/১১৮, মুস্তাদরাকে হাকিম: ২/৫০৫] [ইবন কাসীর]

তাফসীরে জাকারিয়া

(৫) আমি তোমার প্রতি অবতীর্ণ করব গুরুভার বাণী। [1]

[1] রাতের কিয়াম (নামায) যেহেতু মানুষের জন্য সাধারণতঃ ভারী হয়ে থাকে, তাই ‘জুমলা মু’তারিযা’ (পূর্বের বিষয়ের সাথে সম্পর্কহীন বাক্য) স্বরূপ বললেন যে, আমি এর থেকেও বেশী ভারী কথা তোমার উপর অবতীর্ণ করব। অর্থাৎ, কুরআন। যার বিধি-বিধানের উপর আমল করা, তার নির্ধারিত সীমা রক্ষা করা এবং তার দাওয়াত ও প্রচার অতি কঠিন ও ভারী কাজ। কেউ কেউ ভারী বলতে সেই ভার বুঝিয়েছেন, যা অহী অবতরণের সময় তাঁর উপর আপতিত হত। যার ভারে প্রচন্ড শীতের দিনেও তিনি ঘর্মসিক্ত হতেন। (ইবনে কাসীর)

তাফসীরে আহসানুল বায়ান