২২ সূরাঃ আল-হজ্জ | Al-Hajj | سورة الحج - আয়াত নং - ৬০ মাদানী

২২ : ৬০ ذٰلِکَ ۚ وَ مَنۡ عَاقَبَ بِمِثۡلِ مَا عُوۡقِبَ بِهٖ ثُمَّ بُغِیَ عَلَیۡهِ لَیَنۡصُرَنَّهُ اللّٰهُ ؕ اِنَّ اللّٰهَ لَعَفُوٌّ غَفُوۡرٌ ﴿۶۰﴾

এটাই প্রকৃত অবস্থা। আর যে ব্যক্তি নিপীড়িত হয়ে তার সমপরিমাণ প্রতিশোধ গ্রহণ করে; অতঃপর তার উপর আবার নিপীড়ন করা হয় তাহলে আল্লাহ অবশ্যই তাকে সাহায্য করবেন। নিশ্চয় আল্লাহ পাপ মোচনকারী, অতীব ক্ষমাশীল। আল-বায়ান

এতো হল তাদের অবস্থা, আর যে ব্যক্তি আঘাতপ্রাপ্ত হলে সমপরিমাণ প্রতিশোধ গ্রহণ করে, অতঃপর আবার সে নিপীড়িত হয়, আল্লাহ তাকে অবশ্য অবশ্যই সাহায্য করবেন, আল্লাহ অবশ্যই মাফকারী ক্ষমাশীল। তাইসিরুল

এটাই হয়ে থাকে, কোন ব্যক্তি নিপীড়িত হয়ে সমপরিমান প্রতিশোধ গ্রহণ করলে এবং পুনরায় সে অত্যাচারিত হলে আল্লাহ অবশ্যই তাকে সাহায্য করবেন; আল্লাহ নিশ্চয়ই পাপ মোচনকারী, ক্ষমাশীল। মুজিবুর রহমান

That [is so]. And whoever responds [to injustice] with the equivalent of that with which he was harmed and then is tyrannized - Allah will surely aid him. Indeed, Allah is Pardoning and Forgiving. Sahih International

৬০. এটাই হয়ে থাকে, আর কোন ব্যক্তি নিপীড়িত হয়ে নিপীড়ন পরিমান প্রতিশোধ গ্রহণ করলে(১) তারপর পুনরায় সে নিপীড়িত হলে আল্লাহ তাকে অবশ্যই সাহায্য করবেন(২); নিশ্চয় আল্লাহ পাপ মোচনকারী, ক্ষমাশীল।(৩)

(১) প্রথমে এমন মাযলুমদের কথা বলা হয়েছিল যারা যুলুমের জবাবে কোন পাল্টা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেনি। আর এখানে এমন মযলুমদের কথা বলা হচ্ছে যারা যুলুমের জবাবে শক্তি ব্যবহার করে। আয়াতে মযলুমকে যালিমের সাথে সে ধরনের ব্যবহার করতে বলেছে যে ধরনের ব্যবহার সে মাযলুমের সাথে করেছে। সুতরাং যদি কেউ যালেমের সাথে তার যুলুম অনুরূপ ব্যবহার করে, তবে তাতে কোন দোষ নেই। [সা’দী] এটাকে শাস্তি বলা হলেও আসলে এটি প্রতিশোধ। [দেখুন, কুরতুবী]

(২) অর্থাৎ যুলুমের জবাবে যে প্রতিশোধ নেয়া হবে, তাতে দোষের কিছু নেই। তারপর যদি তার উপর আবার যুলুম করা হয়, তবে আল্লাহ তাকে সাহায্য করবেন। কেননা সে মাযলুম। সুতরাং সে তার অধিকার আদায় করেছে বা প্ৰতিশোধ নিয়েছে বলে তার উপর যুলুম করা বৈধ হবে না। সুতরাং যদি অন্যায় ও যুলুমের প্রতিশোধ নেয়ার পর কেউ প্রতিশোধ নেয়ার কারণে তার উপর যুলুম করা হলে আল্লাহ তাকে সাহায্য করেন, তাহলে যে ব্যক্তি তার উপর অন্যায় ও যুলুমের প্রতিশোধ নেয়নি সে আল্লাহর সাহায্য পাবার অধিক নিকটবর্তী। [সা'দী]

(৩) আয়াতের এ অংশের সম্পর্ক শুধুমাত্র নিকটবর্তী শেষ বাক্যটির সাথে হলে এর অর্থ হবে, যদিও প্রথম অন্যায়কারীর অন্যায় বেশী, তারপরও তোমরা বেশী প্রতিশোধ না নিয়ে প্রতিশোধে সমতা বিধানের কারণ হচ্ছে, আল্লাহর ক্ষমা ও মার্জনা গুণ দুটি এটাই চাচ্ছে যে, যুলুমের বিপরীতে সম প্রতিশোধই নেয়া হোক, কারণ, তা হকের কাছাকাছি। আর যদি এ গুণ দুটির সম্পর্ক উপরের কতেক আয়াতের সাথে সমভাবে হয়, অর্থাৎ হিজরতকারীদের সাথে হয়, তখন অর্থ হবে, মুহাজিরদের এরকম প্রতিফল এজন্যেই দেব যে, আল্লাহ ক্ষমাশীল, মার্জনাকারী। তিনি তাদের গোনাহ ক্ষমা করে দিবেন। [আত-তাহরীর ওয়াত তানওয়ীর]

তাফসীরে জাকারিয়া

(৬০) এটাই হয়ে থাকে,[1] কোন ব্যক্তি নিপীড়িত হয়ে তুল্য প্রতিশোধ গ্রহণ করলে ও পুনরায় সে অত্যাচারিত হলে, আল্লাহ অবশ্যই তাকে সাহায্য করবেন;[2] আল্লাহ নিশ্চয় পাপমোচনকারী, পরম ক্ষমাশীল।[3]

[1] অর্থাৎ, আমি মুহাজিরদের সঙ্গে বিশেষ করে শহীদী অথবা স্বাভাবিক মরণের যে ওয়াদা করেছি, তা অবশ্যই পূর্ণ হবে।

[2] العقُوبَة (প্রতিশোধ) এমন শাস্তি ও সাজাকে বলা হয়, যা কোন কাজের বিনিময়ে দেওয়া হয়। অর্থ এই যে, যদি কেউ অন্য কারো প্রতি অত্যাচার করে, তাহলে অত্যাচারিত ব্যক্তির জন্য সেই পরিমাণ প্রতিশোধ গ্রহণ করার অধিকার আছে যে পরিমাণ অত্যাচার তার প্রতি করা হয়েছে। কিন্তু প্রতিশোধ নেবার পর যখন অত্যাচারী ও অত্যাচারিত উভয়ে সমান হয়ে যায়, তারপর অত্যাচারী যদি অত্যাচারিতের উপর আবার অত্যাচার করে, তাহলে আল্লাহ সেই অত্যাচারিতকে অবশ্যই সাহায্য করেন। সুতরাং এ সন্দেহ করা উচিত নয় যে, অত্যাচারিত ব্যক্তি ক্ষমা না করে প্রতিশোধ নিয়ে ভুল করেছে। না তা ভুল নয়। যেহেতু স্বয়ং আল্লাহ এর অনুমতি দিয়েছেন। সেই জন্য আগামীতেও সে আল্লাহর সাহায্যের অধিকারী হবে।

[3] এই আয়াতে ক্ষমা করার প্রতি উৎসাহ প্রদান করে বলা হয়েছে যে, আল্লাহ ক্ষমাশীল, তোমরাও ক্ষমা কর। এর অন্য একটি অর্থ এও হতে পারে যে, অত্যাচারী যে পরিমাণ অত্যাচার করেছে সেই পরিমাণ প্রতিশোধ নেওয়াতে আল্লাহর কোন পাকড়াও হবে না, যেহেতু আল্লাহ তার অনুমতি দিয়েছেন। বরং তা ক্ষমাযোগ্য। বরং প্রতিশোধ গ্রহণ অত্যাচারীর কাজের অনুরূপ হওয়ার জন্য দৃশ্যতঃ এক রকম অত্যাচার হলেও, আসলে প্রতিশোধ গ্রহণ কোন অত্যাচার নয়।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান