কুরআনের আয়াতের অনুবাদ/তাফসীর 'টি ইমেইলে পাঠাতে নিচের ফর্মটি পূরণ করুন
security code
১৭ : ৯৬ قُلۡ کَفٰی بِاللّٰهِ شَهِیۡدًۢا بَیۡنِیۡ وَ بَیۡنَکُمۡ ؕ اِنَّهٗ کَانَ بِعِبَادِهٖ خَبِیۡرًۢا بَصِیۡرًا ﴿۹۶﴾

বল, ‘আল্লাহই যথেষ্ট আমার ও তোমাদের মধ্যে স্বাক্ষী হিসেবে; নিশ্চয় তিনি তাঁর বান্দাদের ব্যাপারে পূর্ণ জ্ঞাত, পূর্ণ দ্রষ্টা’। আল-বায়ান

বল, ‘আমার ও তোমাদের মাঝে আল্লাহর সাক্ষ্যই যথেষ্ট, তিনি তাঁর বান্দাদের সম্পর্কে পুরোপুরি ওয়াকিফহাল, আর তিনি সর্বদ্রষ্টা।’ তাইসিরুল

বলঃ আমার ও তোমাদের মধ্যে স্বাক্ষী হিসাবে আল্লাহই যথেষ্ট; তিনি তাঁর দাসদেরকে সবিশেষ জানেন ও দেখেন। মুজিবুর রহমান

Say, "Sufficient is Allah as Witness between me and you. Indeed he is ever, concerning His servants, Acquainted and Seeing." Sahih International

৯৬. বলুন, আমার ও তোমাদের মধ্যে সাক্ষী হিসেবে আল্লাহই যথেষ্ট(১); নিশ্চয় তিনি তার বান্দাদের সম্পর্কে পূর্ণ অবহিত, পূর্ণদ্রষ্টা।

(১) আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “বনী ইসরাঈলের এক লোক বনী ইসরাঈলের অপর এক লোকের নিকট এক হাজার দীনার কার্জ চাইল। কৰ্জদাতা বললঃ কয়েকজন সাক্ষী আনুন, আমি তাদেরকে সাক্ষী রাখব। কার্জগ্রহীতা বললঃ সাক্ষীর জন্য আল্লাহই যথেষ্ট। তখন কর্জাদাতা বলল, তবে একজন যামিন উপস্থিত করুন। কর্জাগ্ৰহীতা বললঃ যামিন হিসাবে আল্লাহই যথেষ্ট। তখন কৰ্জদাতা বললঃ আপনি ঠিকই বলেছেন। তারপর সে নির্ধারিত সময়ে পরিশোধের শর্তে তাকে এক হাজার দীনার কর্জ দিয়ে দিল। তারপর কর্জাগ্ৰহীতা সমূদ্র যাত্রা করল এবং তার ব্যবসায়িক প্রয়োজন সমাধা করল।

তারপর সে বাহন খুঁজতে লাগল, যাতে নির্ধারিত সময়ে সে কর্জাদাতার নিকট এসে পৌঁছতে পারে। কিন্তু কোন রূপ বাহন সে পেল না। অগত্যা সে এক টুকরা কাঠ নিয়ে তা ছিদ্র করে কর্জদাতার নামে একখানা চিঠি ও এক হাজার স্বর্ণমুদ্রা তার মধ্যে পুরে ছিদ্রটি বন্ধ করে দিল। তারপর ঐ কাঠখন্ডটা নিয়ে সমুদ্র তীরে গিয়ে বললঃ হে আল্লাহ্! তুমি তো জান, আমি অমুকের কাছে এক হাজার স্বর্ণমুদ্রা কৰ্জ চাইলে সে আমার কাছে যামিন চেয়েছিল। আমি বলেছিলাম, যামিন হিসেবে আল্লাহই যথেষ্ট, এতে সে রাযী হয়েছিল। সে আমার কাছে সাক্ষী চেয়েছিল। আমি বলেছিলাম, স্বাক্ষী হিসেবে আল্লাহই যথেষ্ট। এতে সে রাযী হয়ে যায়। আমি তার প্রাপ্য তার কাছে পৌছে দেয়ার উদ্দেশ্যে বাহনের জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করলাম কিন্তু পেলাম না।

আমি ঐ এক হাজার স্বর্ণমুদ্ৰা আপনার নিকট আমানত রাখছি। এই বলে সে কাঠখন্ডটি সমুদ্রে নিক্ষেপ করল। তৎক্ষণাৎ তা সমুদ্রের মধ্যে নিমজ্জিত হয়ে গেল। তারপর লোকটি ফিরে গেল এবং নিজের শহরে যাবার জন্য বাহন খুঁজতে লাগল। ওদিকে কৰ্জদাতা নির্ধারিত দিনে এ আশায় সমুদ্রতীরে গেল যে, হয়ত বা দেনাদার তার পাওনা নিয়ে এসে পড়েছে। ঘটনাক্রমে ঐ কাঠখন্ডটি তার নজরে পড়ল। যার ভিতরে স্বর্ণমুদ্রা ছিল। সে তা পরিবারের জ্বালানির জন্য বাড়ি নিয়ে গেল। যখন কাঠের টুকরাটি চিরল তখন ঐ স্বর্ণমুদ্রা ও চিঠি সে পেয়ে গেল। কিছুকাল পর দেনাদার লোকটি এক হাজার স্বর্ণমুদ্রা নিয়ে পাওনাদারের নিকট এসে হাজির হলো এবং বললঃ আল্লাহর কসম! আমি আপনার মাল যথা সময়ে পৌছে দেয়ার উদ্দেশ্যে বাহনের খোঁজে সর্বদা চেষ্টিত ছিলাম।

কিন্তু যে জাহাজটিতে করে আমি এখন এসেছি এটির আগে আর কোন জাহাজই পেলাম না। কৰ্জদাতা বললঃ আপনি কি আমার কাছে কিছু পাঠিয়েছিলেন? দেনাদার বললঃ আমি তো আপনাকে বললামই যে, এর আগে আর কোন জাহাজই আমি পাইনি। কর্জাদাতা বললঃ আপনি কাঠের টুকরোর ভিতরে করে যা পাঠিয়েছিলেন তা আল্লাহ আপনার হয়ে আমাকে আদায় করে দিয়েছেন। তখন সে এক হাজার স্বর্ণমুদ্রা নিয়ে প্রশান্ত চিত্তে ফিরে চলে আসল। [বুখারীঃ ২২৯১]

তাফসীরে জাকারিয়া

(৯৬) বল, ‘আমার ও তোমাদের মধ্যে সাক্ষী হিসাবে আল্লাহই যথেষ্ট,[1] নিশ্চয় তিনি তাঁর দাসদেরকে সবিশেষ জানেন ও দেখেন।’

[1] অর্থাৎ, দাওয়াত ও তবলীগের যে কাজ আমার দায়িত্বে ছিল, তা আমি পালন করেছি। এ ব্যাপারে আমার ও তোমাদের মধ্যে সাক্ষী হওয়ার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট। কারণ, প্রত্যেক জিনিসের ফায়সালা তিনিই করবেন।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান