৫৮৬৬

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - মিরাজের বর্ণনা

৫৮৬৬-[৫] আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: আমি নিজেকে কা’বাহ্ গৃহের হাত্বীমে দণ্ডায়মান দেখলাম। আর কুরায়শের লোকেরা আমাকে আমার মি’রাজের ঘটনাবলী সম্পর্কে প্রশ্ন করছিল। তারা আমাকে বায়তুল মাক্বদিস সম্পর্কে এমন কিছু প্রশ্ন করল, আমার স্মরণে ছিল না। ফলে আমি এমন চঞ্চল হয়ে পড়লাম যে, এর পূর্বে অনুরূপ চঞ্চল আর কখনো হয়নি। তখন আল্লাহ তা’আলা বায়তুল মাকদিসকে আমার সামনে উপস্থিত করে দিলেন, ফলে আমি তার দিকে চেয়ে রইলাম এবং তারা যে কোন বিষয়ে আমাকে প্রশ্ন করত, আমি তা দেখে উত্তর দিতে থাকলাম। আর আমি (মি’রাজের রাতে) নিজেকে নবীদের এক দলের মাঝে দেখতে পেলাম। তখন দেখি মূসা আলায়হিস সালাম দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করছেন। তিনি একজন মধ্যম গঠনের সামান্য লম্বা, মনে হলো যেন (ইয়ামান দেশের) শানুয়াহ্ সম্প্রদায়ের লোক। আর ’ঈসা আলায়হিস সালাম দাড়িয়ে সালাত আদায় করছেন। লোকেদের মধ্যে উরওয়াহ ইবনু মাসউদ আস্ সাক্বাফী হলেন তার অধিক সদৃশ। আবার ইবরাহীম আলায়হিস সালাম-কেও দাঁড়ানো অবস্থায় সালাত আদায় করতে দেখলাম। লোকেদের মধ্যে তার সদৃশ তোমাদের সঙ্গীসদৃশ অর্থাৎ- (রাসূল (সা.) সা.) নিজেরই সদৃশ। অতঃপর সালাতের সময় হলে আমিই সালাতে তাদের ইমামতি করলাম, যখন আমি সালাত শেষ করলাম তখন কেউ আমাকে বললেন, হে মুহাম্মাদ! ইনি হলেন জাহান্নামের দ্বাররক্ষী মালিক, তাঁকে সালাম করুন। নবী (সা.) বলেন, আমি তার দিকে ফিরে তাকাতেই তিনিই আমাকে আগে সালাম দিলেন। (মুসলিম)

الفصل الاول (بَابٌ فِي الْمِعْرَاجِ)

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: لَقَدْ رَأَيْتُنِي فِي الْحِجْرِ وَقُرَيْشٌ تَسْأَلُنِي عَنْ مَسْرَايَ فَسَأَلَتْنِي عَنْ أَشْيَاءَ مِنْ بَيْتِ الْمَقْدِسِ لَمْ أُثْبِتْهَا فَكُرِبْتُ كَرْبًا مَا كُرِبْتُ مِثْلَهُ فَرَفَعَهُ اللَّهُ لِي أَنْظُرُ إِلَيْهِ مَا يَسْأَلُونِي عَنْ شَيْءٍ إِلَّا أَنْبَأْتُهُمْ وَقَدْ رَأَيْتُنِي فِي جَمَاعَةٍ مِنَ الْأَنْبِيَاءِ فَإِذَا مُوسَى قَائِمٌ يُصَلِّي. فَإِذَا رَجُلٌ ضَرْبٌ جعد كَأَنَّهُ أَزْد شَنُوءَةَ وَإِذَا عِيسَى قَائِمٌ يُصَلِّي أَقْرَبُ النَّاسِ بِهِ شبها عروةُ بن مسعودٍ الثَّقفيُّ فإِذا إِبْرَاهِيمُ قَائِمٌ يُصَلِّي أَشْبَهُ النَّاسِ بِهِ صَاحِبُكُمْ - يَعْنِي نَفْسَهُ - فَحَانَتِ الصَّلَاةُ فَأَمَمْتُهُمْ فَلَمَّا فَرَغْتُ مِنَ الصَّلَاةِ قَالَ لِي قَائِلٌ: يَا مُحَمَّدُ هَذَا مَالِكٌ خَازِنُ النَّارِ فَسَلِّمْ عَلَيْهِ فَالْتَفَتُّ إِلَيْهِ فَبَدَأَنِي بِالسَّلَامِ . رَوَاهُ مُسْلِمٌ وَهَذَا الْبَابُ خَالٍ عَنِ: الْفَصْلِ الثَّانِي

رواہ مسلم (278 / 172)، (430) ۔
(صَحِيح)

وعن ابي هريرة قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم لقد رايتني في الحجر وقريش تسالني عن مسراي فسالتني عن اشياء من بيت المقدس لم اثبتها فكربت كربا ما كربت مثله فرفعه الله لي انظر اليه ما يسالوني عن شيء الا انباتهم وقد رايتني في جماعة من الانبياء فاذا موسى قاىم يصلي فاذا رجل ضرب جعد كانه ازد شنوءة واذا عيسى قاىم يصلي اقرب الناس به شبها عروة بن مسعود الثقفي فاذا ابراهيم قاىم يصلي اشبه الناس به صاحبكم يعني نفسه فحانت الصلاة فاممتهم فلما فرغت من الصلاة قال لي قاىل يا محمد هذا مالك خازن النار فسلم عليه فالتفت اليه فبداني بالسلام رواه مسلم وهذا الباب خال عن الفصل الثانيرواہ مسلم 278 172 430 ۔صحيح

ব্যাখ্যা: উল্লেখিত হাদীসের শেষের দিকে বলা হয়েছে, (فَحَانَتِ الصَّلَاةُ) অর্থাৎ তখন সালাতের সময় হলো। এখানে কোন সালাত উদ্দেশ্য- এ প্রসঙ্গে মিরকাত প্রণেতা বলেন, এ সালাত দ্বারা দুটি সালাতের যে কোনটি হতে পারে। ১) তাহিয়্যাতুল মাসজিদ, ২) মি'রাজের জন্য বিশেষ সালাত।
(فَأَمَمْتُهُمْ) অর্থাৎ তারপর আমার ইমামাতে তাদেরকে সালাত আদায় করালাম। এখানে প্রশ্ন হতে পারে যে, রাসূলুল্লাহ (সা.) সকল নবীদের নিয়ে বায়তুল মাক্বদিসে সালাত আদায় করিয়েছেন আবার তাদের অনেককেই তিনি বিভিন্ন আসমানে পেয়েছেন। তাহলে এটা কিভাবে সম্ভব যে, তিনি তাদের অনেককেই দুই জায়গায় পেলেন? মিরক্বাত প্রণেতা বলেন, এর উত্তর দুই ধরনের হতে পারে- ১) রাসূল (সা.) নবীগণকে বায়তুল মাক্বদিসে দেখেছেন এবং তাদের ইমামতি করেছেন। তারপর তারা আবার আকাশে চলে গেছেন। আর তখন তিনি তাদেরকে বিভিন্ন আকাশে পেয়েছেন। ২) হতে পরে তিনি সিদরাতুল মুনতাহা থেকে ফিরে এসে বায়তুল মাক্বদিসে নবীগণকে দেখেছেন এবং তাদের ইমামতি করেছেন।
(فَالْتَفَتُّ إِلَيْهِ فَبَدَأَنِي بِالسَّلَامِ) অর্থাৎ তারপর আমি তার দিকে তাকালাম তখন সেই আমাকে সালাম দিল। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জাহান্নামের প্রধান দায়িত্বশীল মালিক রাসূল (সা.) -কে আগেই সালাম দিলেন যেন রাসূল (সা.) থেকে মালিকের ব্যাপারে ভয় দূর হয়ে যায়।
এছাড়া রাসূলুল্লাহ (সা.) নিজেই আগে অন্যান্য নবীগণকে সালাম দিয়েছেন। নিজের বিনয়তার প্রতি খেয়াল রেখে এবং আদবের প্রতি লক্ষ্য রেখে। যেহেতু তারা ছিলেন বসে আর নবী (সা.) ছিলেন দাঁড়ানো বা চলমান অবস্থায়। কারণ সালাম দেয়ার আদব হলো দাঁড়ানো ব্যক্তি উপবেশনকারীকে সালাম দিবে। আর চলমান ব্যক্তি দাঁড়ানো ব্যক্তিকে সালাম দিবে। (মিকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৯: চারিত্রিক গুণাবলি ও মর্যাদাসমূহ (كتاب الْفَضَائِل وَالشَّمَائِل)