৫৭০০

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - সৃষ্টির সূচনা ও নবী-রাসূলদের আলোচনা

৫৭০০-[৩] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি, আল্লাহ তা’আলা সমস্ত সৃষ্টজীব সৃষ্টি করার পূর্বে এটা লিপিবদ্ধ করে রেখেছেন যে, আমার রহমত আমার গজবের উপর সর্বদাই অগ্রগামী। আর এ বাক্যটি তাঁর কাছে আরশের উপরে লিখিতভাবে রয়েছে। (বুখারী ও মুসলিম)

الفصل الاول (بَاب بدءالخلق وَذِكْرِ الْأَنْبِيَاءِ عَلَيْهِمُ الصَّلَاةُ وَالسَّلَامُ)

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: إِنَّ اللَّهَ تَعَالَى كَتَبَ كِتَابًا قَبْلَ أَنْ يَخْلُقَ الْخَلْقَ: إِنَّ رَحْمَتِي سَبَقَتْ غَضَبِي فَهُوَ مَكْتُوب عِنْده فَوق الْعَرْش . مُتَّفق عَلَيْهِ

متفق علیہ ، رواہ البخاری (7554) و مسلم (14 / 2751)، (6969) ۔
(مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ)

وعن ابي هريرة قال سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول ان الله تعالى كتب كتابا قبل ان يخلق الخلق ان رحمتي سبقت غضبي فهو مكتوب عنده فوق العرش متفق عليهمتفق علیہ رواہ البخاری 7554 و مسلم 14 2751 6969 ۔متفق عليه

ব্যাখ্যা: (إِنَّ اللَّهَ تَعَالَى كَتَبَ كِتَابًا) “আল্লাহ তা'আলা একটি কিতাব লিখেন মাখলুক সৃষ্টির পূর্বে।” এই কিতাব বা লিখনি দ্বারা লাওহে মাহফুয উদ্দেশ্য। অর্থাৎ মাখলুক সৃষ্টির পূর্বে তিনি লাওহে মাহফুযে যে কথাটি লিখে রাখেন সেটি হচ্ছে, আমার রহমত রাগের উপর প্রাধান্য পেয়েছে। অর্থাৎ রাগের তুলনায় রহমতের সংখ্যা ও রহমত সংশ্লিষ্ট বস্তু বেশি।
সারকথা; বান্দার প্রতি তাঁর কল্যাণের ইচ্ছা, নি'আমাত প্রদান, প্রতিদান দান, বান্দার জন্য অকল্যাণ কামনা ও শাস্তি প্রদানের তুলনায় বেশি। কেননা তাঁর রহমত ব্যাপক ও বিস্তৃত। অপরদিকে তাঁর বিশেষ রহমত বিশেষ ক্ষেত্রে প্রযোজিত। যেমন ‘আর রহমানুর রহীম’-এর বেলায় বলা হয়, তাঁর ‘রহমান’ গুণের রহমত বা দয়া মু'মিন কাফির সবার জন্য বিস্তৃত। এমনকি সমস্ত সৃষ্টির জন্য তার এই রহমত। এ কারণেই ‘রহমান' শব্দকে আল্লাহ তা'আলা ছাড়া কারো বেলায় প্রয়োগ করা বৈধ নয়।
(فَهُوَ مَكْتُوب عِنْده فَوق الْعَرْش) “তা আল্লাহর কাছে ‘আরশের উপর লিখিত।” ফাতহুল বারীতে রয়েছে, এর দ্বারা ইঙ্গিত হলো লাওহে মাহফুযের অবস্থান ‘আরশের উপরে। (১৩/৫২৬)
মিরকাত প্রণেতা বলেন, এর মর্ম হলো, লাওহে মাহফুযের লিখনি ও বর্ণনা সমস্ত সৃষ্টির আড়ালে এবং তা বুঝা মানুষের ক্ষমতার বাহিরে। কেউ কেউ বলেন, এর উদ্দেশ্য হলো, আল্লাহ তা'আলার জ্ঞানে এই বাক্য লিপিবদ্ধ। তবে লাওহে মাহফুযের কিছু কিছু বিষয় সম্পর্কে আল্লাহ তা'আলা তার বান্দার মাঝে যাকে ইচ্ছা তাকে অবগত করেন। যেমন মালায়িকাহ্ (ফেরেশতাগণ), নবীগণ, বিশেষ বিশেষ ওয়ালীদেরকে কিছু কিছু বিষয় অবগত করানো হয়ে থাকে। বিশেষ করে ইসরাফীল (আঃ)। কেননা তিনি এর দায়িত্বশীল। তিনি লাওহে মাহফুযের বিষয়কে নিয়ে জিবরীল, মীকাঈল এবং মালাকুল মাওতকে নির্দেশ দেন। (মিরকাতুল মাফাতীহ)।

(إِنَّ رَحْمَتِي سَبَقَتْ) নাবাবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন যে, আল্লাহর রাগ ও তার সন্তুষ্টি আনুগত্যশীলদেরকে প্রতিদান দেয়া আর গুনাহগারদেরকে শাস্তি দেয়ার মাধ্যমে তিনি প্রকাশ করেন। অতএব এখানে দয়া রাগের উপর প্রাধান্য পাওয়ার দ্বারা উদ্দেশ্য হলো যে, তার দয়াটা অধিক এবং ব্যাপক। আর তা ছাড়াও আল্লাহর দয়া দুনিয়াতে ব্যাপক, তিনি কাফির মুশরিক সকলকে রিযক দান করছেন, অনুরূপভাবে তিনি সকলকে বাতাস পানি ইত্যাদি সকলকে সমানভাবে দিচ্ছেন। অতএব স্পষ্ট হলো যে, তার দয়া তার রাগের উপর প্রাধান্য পেয়েছে। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৮: সৃষ্টির সূচনা ও কিয়ামতের বিভিন্ন অবস্থা (كتاب أَحْوَال الْقِيَامَة وبدء الْخلق)