৫৫৮৭

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - হাওযে কাওসার ও শাফাআতের বর্ণনা

৫৫৮৭-[২২] আবূ যার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: আমি এমন এক লোক সম্পর্কে অবহিত আছি, যে জান্নাতীদের মধ্যে সর্বশেষ জান্নাতে প্রবেশকারী ব্যক্তি এবং সর্বশেষ জাহান্নামী, যে তা থেকে বের হয়ে আসবে। কিয়ামতের দিন তাকে আল্লাহ তা’আলার সামনে উপস্থিত করা হবে। তখন মালায়িকাহ্ (ফেরেশতাদের)-কে বলা হবে, তার ছোট ছোট গুনাহসমূহ তার সামনে উপস্থিত কর এবং বড় বড় গুনাহগুলো সরিয়ে রাখ। তখন তার ছোট ছোট গুনাহগুলোই তার সামনে উপস্থিত করা হবে। তখন তাকে প্রশ্ন করা হবে, আচ্ছা বল তো অমুক অমুক দিন অমুক অমুক কাজটি তুমি করেছিলে? সে বলবে, হ্যা করেছি। মূলত তা সে অস্বীকার করতে পারবে না। তবে বড় বড় গুনাহসমূহ উপস্থিত করা সম্পর্কে সে অত্যন্ত ভীত-সন্ত্রস্ত থাকবে। তখন তাকে বলা হবে, যাও! তোমার প্রতিটি গুনাহের স্থলে তোমাকে এক একটি পুণ্য দেয়া হলো। তখন সে বলবে, হে আমার প্রভু! আমি তো এমন কিছু (বড় বড়) গুনাহও করেছিলাম, যেগুলাকে আমি এখানে দেখতে পাচ্ছি না। বর্ণনাকারী আবূ যার (রাঃ) বলেন, এ সময় আমি রাসূলুল্লাহ (সা.) - কে এমনভাবে হাসতে দেখেছি যে, তাঁর মাড়ির দাঁত পর্যন্ত প্রকাশ হয়ে পড়েছে। (মুসলিম)

الفصل الاول (بَاب الْحَوْض والشفاعة )

وَعَنْ أَبِي ذَرٍّ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنِّي لَأَعْلَمُ آخِرَ أَهْلِ الْجَنَّةِ دُخُولًا الْجَنَّةَ وَآخِرَ أَهْلِ النَّارِ خُرُوجًا مِنْهَا رَجُلٌ يُؤْتَى بِهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فَيُقَالُ: اعْرِضُوا عَلَيْهِ صِغَارَ ذُنُوبِهِ وَارْفَعُوا عَنْهُ كِبَارهَا فتعرض عَلَيْهِ صغَار ذنُوبه وفيقال: عملت يَوْم كَذَا وَكَذَا وَكَذَا وَكَذَا وَعَمِلْتَ يَوْمَ كَذَا وَكَذَا كَذَا وَكَذَا؟ فَيَقُولُ: نَعَمْ. لَا يَسْتَطِيعُ أَنْ يُنْكِرَ وَهُوَ مُشْفِقٌ مِنْ كِبَارِ ذُنُوبِهِ أَنْ تُعْرَضَ عَلَيْهِ. فَيُقَالُ لَهُ فَإِنَّ لَكَ مَكَانَ كُلِّ سَيِّئَةٍ حَسَنَةً. فَيَقُولُ: رَبِّ قَدْ عَمِلْتُ أَشْيَاءَ لَا أَرَاهَا هَهُنَا وَقَدْ رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ضَحِكَ حَتَّى بَدَتْ نَوَاجِذُهُ. رَوَاهُ مُسْلِمٌ

رواہ مسلم (314 / 190)، (467) ۔
(صَحِيح)

وعن ابي ذر قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم اني لاعلم اخر اهل الجنة دخولا الجنة واخر اهل النار خروجا منها رجل يوتى به يوم القيامة فيقال اعرضوا عليه صغار ذنوبه وارفعوا عنه كبارها فتعرض عليه صغار ذنوبه وفيقال عملت يوم كذا وكذا وكذا وكذا وعملت يوم كذا وكذا كذا وكذا فيقول نعم لا يستطيع ان ينكر وهو مشفق من كبار ذنوبه ان تعرض عليه فيقال له فان لك مكان كل سيىة حسنة فيقول رب قد عملت اشياء لا اراها ههنا وقد رايت رسول الله صلى الله عليه وسلم ضحك حتى بدت نواجذه رواه مسلمرواہ مسلم 314 190 467 ۔صحيح

ব্যাখ্যা: ইতোপূর্বের হাদীসগুলোতে জাহান্নাম থেকে সর্বশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত এবং সর্বশেষে জান্নাতে প্রবেশকারী ব্যক্তির কিছু কর্মকাণ্ডের কথা পেয়েছি।
অত্র হাদীসে তার আরো কিছু কর্মকাণ্ডের কথা বিবৃত হয়েছে। তাকে জাহান্নাম থেকে উঠানোর পর আল্লাহ তা'আলা মালায়িকাহ্ (ফেরেশতাদের) বলবেন- এ লোকের ছোট ছোট গুনাহগুলো এর সামনে পেশ কর এবং বড় বড় গুনাহগুলো সরিয়ে রাখ। সরিয়ে রাখার অর্থ ক্ষমার মাধ্যমে নিশ্চিহ্ন করে ফেলা অথবা আড়াল করে রাখা। মালায়িকাহ্ যখন ছোট ছোট গুনাহগুলো তার সামনে উপস্থিত করবেন তখন আল্লাহ তা'আলা সবগুলো দৃশ্যমান পাপের দিকে ইশারা করে বলবেন, তুমি অমুক দিন এই এই কাজ করেছিলে? এ পাপগুলো ছিল ‘ইবাদত তরক করা এবং নিষিদ্ধ কার্যসমূহ সম্পাদন করা। পাপের প্রত্যক্ষ নমুনা দেখে সে ঐগুলোর কোনটিই অস্বীকার করতে পারবে না। তার যে কবীরাহ গুনাহগুলো রয়েছে সেগুলো প্রকাশ করলে তার কি হবে এই ভয়ে সে আরো শঙ্কিত ও ভীত হয়ে যাবে। কেননা অধিকাংশ ‘আযাব এবং অধিক ‘আযাব হবে কবীরা গুনাহের কারণে।
অতঃপর তার সামনে উপস্থাপিত সগীরা গুনাহগুলোর দিকে ইশারা করে তাকে বলা হবে তোমার প্রতিটি গুনাহের পরিবর্তে একটি করে হাসানাহ বা নেকী দেয়া হলো। গুনাহের পরিবর্তে এ হাসানাহ হয়তো তার তওবার কারণে, যেমন আল্লাহ তা'আলা বলেন, “তবে যে তওবাহ্ করবে এবং ঈমান আনবে আর নেক আমল করবে তারা হলো এমন যে আল্লাহ তা'আলা তাদের পাপগুলোকে নেকীতে পরিণত করে দিবেন।” (সূরা আর ফুরকান ২৫: ৭০)

প্রশ্ন আসে যে তওবার কারণেই যদি তার গুনাহ মাফ হয়ে থাকে তবে জাহান্নামের শাস্তি কেন? উত্তর তওবার পর পুনরায় যে গুনাহ করেছিল সেটাই শাস্তির কারণ হয়েছিল। যা হোক সুযোগ দেখে সে তার কবীরা গুনাহগুলোর প্রতি ইশারা করে বলবে, আমি তো জানি আমার আরো অনেক পাপ রয়েছে কিন্তু সেগুলোকে এখানে দেখতে পাচ্ছি না? তার এ সুযোগ গ্রহণের এ কথা বলতে গিয়ে রাসূলুল্লাহ (সা.) হাসলেন। সর্বোপারি সে আল্লাহর বিশেষ রহমতে জাহান্নাম থেকে মুক্তিলাভ করে জান্নাতে প্রবেশ করবে। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৮: সৃষ্টির সূচনা ও কিয়ামতের বিভিন্ন অবস্থা (كتاب أَحْوَال الْقِيَامَة وبدء الْخلق)