৫৪৯১

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - কিয়ামতের পূর্বলক্ষণসমূহ এবং দাজ্জালের বর্ণনা

৫৪৯১-[২৮] আসমা বিনতু ইয়াযীদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) আমার গৃহে ছিলেন এবং দাজ্জাল সম্পর্কে আলোচনা প্রসঙ্গে বললেন, দাজ্জালের আগমনের পূর্বের তিন বছর এরূপ হবে যে, এটার প্রথম বছর আসমান তার এক-তৃতীয়াংশ বর্ষণ এবং জমিন তার এক-তৃতীয়াংশ ফলন বন্ধ রাখবে। দ্বিতীয় বছর আসমান তার দুই-তৃতীয়াংশ বর্ষণ তার জমিন তার দুই-তৃতীয়াংশ ফলন বন্ধ রাখবে। আর শেষ তৃতীয় বছর আসমান তার সমস্ত বর্ষণ এবং জমিন তার সমুদয় ফলন বন্ধ রাখবে, ফলে ক্ষুরবিশিষ্ট প্রাণী (যেমন- গরু, ছাগল প্রভৃতি) এবং শিকারী দাঁতবিশিষ্ট জন্তু (যেমন- হিংস্র জানোয়ার) নিঃশেষ হয়ে যাবে। দাজ্জালের সর্বাধিক মারাত্মক ফিতনাহ এটা হবে যে, সে কোন বেদুঈনের কাছে এসে বলবে, বল তো, যদি আমি তোমার মৃত উটগুলো জীবিত করে দেই, তাহলে তুমি কি বিশ্বাস করবে যে, আমি তোমাদের প্রভু? সে বলবে, হ্যাঁ, তখন শয়তান তার উটের আকৃতিতে উত্তম স্তন এবং মোটাতাজা কুঁজবিশিষ্ট অবস্থায় সামনে উপস্থিত হবে। তিনি (সা.) বলেন, অতঃপর দাজ্জাল এমন এক ব্যক্তির কাছে আসবে যার ভাই এবং পিতা মারা গেছে। তাকে বলবে, তুমি বল তো, যদি আমি তোমার পিতা ও ভাইদের জীবিত করে দেই তবে কি তুমি আমাকে তোমার প্রভু বলে বিশ্বাস করবে না? সে বলবে, হ্যা, নিশ্চয় বিশ্বাস করব। তখন শায়তান তার পিতা ও ভাইয়ের হুবহু আকৃতি ধারণ করে আসবে। আসমা (রাঃ) বলেন, এ পর্যন্ত আলোচনা করে তিনি (সা.) স্বীয় কোন প্রয়োজনে বাইরে গেলেন, এবং পরে ফিরে আসলেন।

এদিকে দাজ্জালের এ সমস্ত তাণ্ডবের কথা শুনে উপস্থিত লোকেরা ভীষণ দুশ্চিন্তায় পতিত হলো। আসমা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) তখন দরজায় উভয় বাজুতে হাত রেখে বললেন, হে আসমা’! কি হয়েছে? আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! দাজ্জাল সম্পর্কে আলোচনায় আপনি তো আমাদের কলিজা বের করে ফেলেছেন। তখন তিনি বললেন, (দুশ্চিন্তার কোন কারণ নেই) সে যদি বের হয় আর আমি জীবিত থাকি, আমিই তখন দলীল-প্রমাণের দ্বারা তাকে প্রতিহত করব। আর যদি আমি জীবিত না থাকি তখন প্রত্যেক মুমিনের সাহায্যকারী হিসেবে আল্লাহই হবে আমার স্থলাভিষিক্ত। আসমা (রাঃ) বলেন, আমি প্রশ্ন করলাম, হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহর শপথ, আমাদের অবস্থা হলো আমরা আটার খামির তৈরি করি এবং রুটি তৈরি করে অবসর হতে না হতেই পুনরায় ক্ষুধায় অস্থির হয়ে পড়ি। অতএব সেই দুর্ভিক্ষের সময় মুমিনের অবস্থা কেমন হবে? জবাবে তিনি (সা.) বললেন, সেই বস্তুই তাদের ক্ষুধা নিবারণের জন্য যথেষ্ট হবে যা আকাশবাসীদের জন্য যথেষ্ট হয়ে থাকে। আর তা হলো তাসবীহ ও তাক্বদীস (অর্থাৎ আল্লাহর যিকর ও পবিত্রতা বর্ণনা করা)। (আহমাদ)

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَابُ الْعَلَامَاتِ بَيْنَ يَدَيِ السَّاعَةِ وَذِكْرِ الدَّجَّالِ)

وَعَن أسماءَ بنتِ يزيدَ قَالَتْ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي بَيْتِي فَذَكَرَ الدَّجَّالَ فَقَالَ: إِنَّ بَيْنَ يَدَيْهِ ثَلَاث سِنِين سنة تمسلك السَّمَاءُ فِيهَا ثُلُثَ قَطْرِهَا وَالْأَرْضُ ثُلُثَ نَبَاتِهَا. وَالثَّانِيَةُ تُمْسِكُ السَّمَاءُ ثُلُثَيْ قَطْرِهَا وَالْأَرْضُ ثُلُثَيْ نَبَاتِهَا. وَالثَّالِثَةُ تُمْسِكُ السَّمَاءُ قَطْرَهَا كُلَّهُ وَالْأَرْضُ نَبَاتَهَا كُلَّهُ. فَلَا يَبْقَى ذَاتُ ظِلْفٍ وَلَا ذَاتُ ضِرْسٍ مِنَ الْبَهَائِمِ إِلَّا هَلَكَ وَإِنَّ مِنْ أَشَدِّ فِتْنَتِهِ أَنَّهُ يَأْتِي الْأَعْرَابِيَّ فَيَقُولُ: أَرَأَيْتَ إِنْ أَحْيَيْتُ لَكَ إِبِلَكَ أَلَسْتَ تَعْلَمُ أَنِّي رَبُّكَ؟ فَيَقُولُ بَلَى فَيُمَثِّلُ لَهُ الشَّيْطَانَ نَحْوَ إِبِلِهِ كَأَحْسَنِ مَا يَكُونُ ضُرُوعًا وَأَعْظَمِهِ أَسْنِمَةً . قَالَ: وَيَأْتِي الرَّجُلَ قَدْ مَاتَ أَخُوهُ وَمَاتَ أَبُوهُ فَيَقُولُ: أَرَأَيْتَ إِنْ أَحْيَيْتُ لَكَ أَبَاكَ وَأَخَاكَ أَلَسْتَ تَعْلَمُ أَنِّي رَبُّكَ؟ فَيَقُولُ: بَلَى فَيُمَثِّلُ لَهُ الشَّيَاطِينَ نَحْوَ أَبِيهِ وَنَحْوَ أَخِيهِ . قَالَتْ: ثُمَّ خَرَجَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِحَاجَتِهِ ثُمَّ رَجَعَ وَالْقَوْمُ فِي اهْتِمَامٍ وَغَمٍّ مِمَّا حَدَّثَهُمْ. قَالَتْ: فَأَخَذَ بِلَحْمَتَيِ الْبَابِ فَقَالَ: «مَهْيَمْ أَسْمَاءُ؟» قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ لَقَدْ خَلَعْتَ أَفْئِدَتَنَا بِذِكْرِ الدَّجَّالِ. قَالَ: «إِنْ يَخْرُجْ وَأَنَا حَيٌّ فَأَنَا حَجِيجُهُ وَإِلَّا فإِنَّ رَبِّي خليفتي علىكل مُؤْمِنٍ» فَقُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ وَاللَّهِ إِنَّا لَنَعْجِنُ عَجِينَنَا فَمَا نَخْبِزُهُ حَتَّى نَجُوعَ فَكَيْفَ بِالْمُؤْمِنِينَ يَوْمَئِذٍ؟ قَالَ: «يُجْزِئُهُمْ مَا يُجْزِئُ أَهْلَ السماءِ من التسبيحِ والتقديسِ» . رَوَاهُ أَحْمد

حسن ، رواہ احمد (6 / 453 ۔ 454 ح 28120) [و الطبرانی (24 / 158 ح 405 و سندہ حسن ۔ 161)] * انظر النھایۃ فی الفتن و الملاحم (ح 263 بتحقیقی) لمزید التحقیق ۔ * قلت : قتادۃ لم ینفرد بہ ، بل تابعہ ثابت و حجاج بن الاسود و عبد العزیز بن صھیب بہ ، فالحدیث حسن ۔
(ضَعِيف)

وعن اسماء بنت يزيد قالت كان رسول الله صلى الله عليه وسلم في بيتي فذكر الدجال فقال ان بين يديه ثلاث سنين سنة تمسلك السماء فيها ثلث قطرها والارض ثلث نباتها والثانية تمسك السماء ثلثي قطرها والارض ثلثي نباتها والثالثة تمسك السماء قطرها كله والارض نباتها كله فلا يبقى ذات ظلف ولا ذات ضرس من البهاىم الا هلك وان من اشد فتنته انه ياتي الاعرابي فيقول ارايت ان احييت لك ابلك الست تعلم اني ربك فيقول بلى فيمثل له الشيطان نحو ابله كاحسن ما يكون ضروعا واعظمه اسنمة قال وياتي الرجل قد مات اخوه ومات ابوه فيقول ارايت ان احييت لك اباك واخاك الست تعلم اني ربك فيقول بلى فيمثل له الشياطين نحو ابيه ونحو اخيه قالت ثم خرج رسول الله صلى الله عليه وسلم لحاجته ثم رجع والقوم في اهتمام وغم مما حدثهم قالت فاخذ بلحمتي الباب فقال مهيم اسماء قلت يا رسول الله لقد خلعت افىدتنا بذكر الدجال قال ان يخرج وانا حي فانا حجيجه والا فان ربي خليفتي علىكل مومن فقلت يا رسول الله والله انا لنعجن عجيننا فما نخبزه حتى نجوع فكيف بالمومنين يومىذ قال يجزىهم ما يجزى اهل السماء من التسبيح والتقديس رواه احمدحسن رواہ احمد 6 453 ۔ 454 ح 28120 و الطبرانی 24 158 ح 405 و سندہ حسن ۔ 161 انظر النھایۃ فی الفتن و الملاحم ح 263 بتحقیقی لمزید التحقیق ۔ قلت قتادۃ لم ینفرد بہ بل تابعہ ثابت و حجاج بن الاسود و عبد العزیز بن صھیب بہ فالحدیث حسن ۔ضعيف

ব্যাখ্যা: (إِنَّ بَيْنَ يَدَيْهِ ثَلَاث سِنِين) দাজ্জালের সামনে অথবা তার আগমনের সময়কে তিন ভাগে ভাগ করা হবে। আর বিভিন্নভাবে বরকত চলে যাবে। প্রথম বছরে আকাশ আল্লাহর হুকুমে এক-তৃতীয়াংশ বৃষ্টি বর্ষণ করবে এবং জমিন দুই-তৃতীয়াংশ ফসল ফলাবে। আর তৃতীয়বর্ষে আকাশ এক ফোটা পানিও বর্ষণ করবে না এবং জমি কোন ফসল জন্মাবে না, তখন দেশে দুর্ভিক্ষ দেখা দিবে। আর দেশের ধনভাণ্ডার ও সম্পদ দাজ্জালের অধীনে থাকবে এবং সর্বপ্রকার নি'আমাত ও ফল-ফসল তার আয়ত্বে থাকবে। সকল পশু পাখি অনাহারে মারা যাবে। তখন তার ফিতনাহ্ প্রকট আকার ধারণ করবে এবং মানুষের ঈমান নষ্ট করবে।
(إِنْ يَخْرُجْ وَأَنَا حَيٌّ فَأَنَا حَجِيجُهُ) (রাসূল সা. বলেন) যদি আমার জীবদ্দশায় দাজ্জাল আবির্ভূত হয় তাহলে আমি সাহসিকতার সাথে দলীল প্রমাণের মাধ্যমে তাকে পরাজিত করব। আর আমি যদি না থাকি তাহলে আমার প্রতিপালক আমার পক্ষ থেকে প্রতিটি মু'মিনকে সাহায্য করবেন। যেহেতু তিনি তার দীনের একমাত্র সংরক্ষক এবং তার নবী কে সাহায্যকারী এবং যারা তার প্রতি ঈমান আনবে তাদের অভিভাবক। অন্য বর্ণনায় বলা হয়েছে, প্রতিটি ব্যক্তি নিজে নিজেই প্রতিরোধ করবে। অর্থাৎ নিজের ওপর আপতিত ফিতনাকে ঈমানের দৃঢ়তা ও দলীল প্রমাণের সাহায্যে প্রতিরোধ করবে। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ; ইবনু মাজাহ ৩য় খণ্ড, হা, ৪০৭৭).


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৭: ফিতনাহ (كتاب الْفِتَن)