৫৪৬৮

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - কিয়ামতের পূর্বলক্ষণসমূহ এবং দাজ্জালের বর্ণনা

৫৪৬৮-[৫] আবু যার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, সূর্য অস্ত যাওয়ার সময় রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, তুমি কি জান, তা কোথায় যাচ্ছে? আমি বললাম, আল্লাহ ও তাঁর রসূলই সর্বাধিক অবগত। তিনি (সা.) বললেন, তা আল্লাহর আরশের নিচে গিয়ে সাজদায় রত হয় এবং (পূর্বাকাশে উদিত হওয়ার) অনুমতি প্রার্থনা করবে অথচ তাকে অনুমতি দেয়া হবে না এবং তাকে বলা হবে, তুমি যেদিক থেকে এসেছ সেদিকেই ফিরে যাও। অতঃপর তা পশ্চিমাকাশ হতে উদিত হবে। এদিকেই ইঙ্গিত করা হয়েছে আল্লাহ তা’আলার এ বাণী দ্বারা-(وَ الشَّمۡسُ تَجۡرِیۡ لِمُسۡتَقَرٍّ لَّهَا)“সূর্য তার গন্তব্যস্থলের দিকে চলে যায়”- (সূরাহ্ ইয়াসীন ৩৬: ৩৮)। ’ তিনি বলেন, গন্তব্যস্থল হলো ’আরশের নীচ। (বুখারী ও মুসলিম)

الفصل الاول (بَابُ الْعَلَامَاتِ بَيْنَ يَدَيِ السَّاعَةِ وَذِكْرِ الدَّجَّالِ)

وَعَنْ أَبِي ذَرٍّ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حِينَ غربت الشَّمْس: «أَيْن تذْهب؟» . قُلْتُ: اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ. قَالَ: فَإِنَّهَا تَذْهَبُ حَتَّى تَسْجُدَ تَحْتَ الْعَرْشِ فَتَسْتَأْذِنُ فَيُؤْذَنُ لَهَا وَيُوشِكُ أَنْ تَسْجُدَ وَلَا يُقْبَلُ مِنْهَا وَتَسْتَأْذِنُ فَلَا يُؤْذَنُ لَهَا وَيُقَالُ لَهَا: ارْجِعِي مِنْ حَيْثُ جِئْتِ فَتَطْلُعُ مِنْ مَغْرِبِهَا فَذَلِكَ قَوْلُهُ تَعَالَى (والشمسُ تجْرِي لمستقرّ لَهَا) قَالَ: «مستقرها تَحت الْعَرْش» . مُتَّفق عَلَيْهِ

متفق علیہ ، رواہ البخاری (3199) و مسلم (251 ، 250 / 159)، (401 و 402 و 399) ۔
(مُتَّفق عَلَيْهِ)

وعن ابي ذر قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم حين غربت الشمس اين تذهب قلت الله ورسوله اعلم قال فانها تذهب حتى تسجد تحت العرش فتستاذن فيوذن لها ويوشك ان تسجد ولا يقبل منها وتستاذن فلا يوذن لها ويقال لها ارجعي من حيث جىت فتطلع من مغربها فذلك قوله تعالى والشمس تجري لمستقر لها قال مستقرها تحت العرش متفق عليهمتفق علیہ رواہ البخاری 3199 و مسلم 251 250 159 401 و 402 و 399 ۔متفق عليه

ব্যাখ্যা: (فَإِنَّهَا تَذْهَبُ حَتَّى تَسْجُدَ تَحْتَ الْعَرْشِ) সূর্যাস্তের সময় ‘আরশের নীচে যায় এবং পুনরায় উদিত হওয়ার জন্য অনুমতি প্রার্থনা করে। ইবনু বাত্তল বলেন, সূর্যের অনুমতি প্রার্থনার অর্থ হলো, আল্লাহ তা'আলা তাতে জীবন দান করেন এবং সে কথা বলে। আর আল্লাহ তা'আলা জড় ও মৃত প্রাণীকে কথা বলাতে সক্ষম। আবার কেউ কেউ বলেন, সূর্যের দিকে অনুমতি প্রার্থনা করার বিষয়টি রূপক অর্থে ধরা হয়েছে। অর্থাৎ সূর্য নয় বরং তার জন্য ধার্যকৃত মালাক (ফেরেশতা) অনুমতি প্রার্থনা করে। আল্লামাহ্ কুসতুলানী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, সূর্য তার অভ্যাস অনুযায়ী পূর্বদিক থেকে উদিত হওয়ার জন্য অনুমতি প্রার্থনা করে। ফলে তাকে অনুমতি দেয়া হয় এবং সে অনুযায়ী পূর্বদিক থেকে প্রকাশ পায়। আল্লামা হাফিয বলেন, হাদীসে ‘আরশের নিচে কথার অর্থ হলো, যখন তা আরশের ঠিক নিচে চলে আসে। আর এটা আল্লাহ তা'আলার এই বাণীর বিরোধী নয়।
(وَجَدَهَا تَغۡرُبُ فِیۡ عَیۡنٍ حَمِئَۃٍ) “তখন তিনি সূর্যকে এক পঙ্কিল জলাশয়ে অস্ত যেতে দেখলেন।”(সূরা আল কাহফ ১৮: ৮৬) এর মর্ম হচ্ছে সূর্যাস্তের সময় দৃষ্টির শেষ সীমা অতিক্রম করা। আর ‘আর আরশের নীচে সাজদাহ্ তখনই হয় যখন তা অস্ত যায়।

[فَذَلِكَ قَوْلُهُ تَعَالَى (والشمسُ تجْرِي لمستقرّ لَهَا)] অচিরেই এমন একদিন আসবে যখন সূর্য সাজদা করবে কিন্তু তা গৃহীত হবে না এবং পুনরায় উদিত হওয়ার জন্য অনুমতি প্রার্থনা করবে কিন্তু তাকে অনুমতি দেয়া হবে না। আর তাকে বলা হবে, তুমি যেখান থেকে এসেছিলে সেখানে ফিরে যাও। অতঃপর পশ্চিমদিক থেকে উদিত হবে। আর এ অর্থেই আল্লাহ তা'আলা বলেন, (وَ الشَّمۡسُ تَجۡرِیۡ لِمُسۡتَقَرٍّ لَّهَا)“সূর্য তার নির্দিষ্ট অবস্থানে আবর্তন করে।” (সূরাহ্ ইয়াসীন ৩৬: ৩৮)
হাফিয বলেন, এ হাদীসটি তাদের মতামতকে খণ্ডন করে যারা ধারণা করে যে, (مُسْتَقَرُّهَا) এর মর্ম হলো সূর্যের উচ্চতা যেখানে গিয়ে শেষ হয়। আর যার কারণে বছরের দিনটি সবচেয়ে বড় হয়। অথবা দুনিয়া ধ্বংসের নির্দেশ আসার আগ পর্যন্ত। হাফিয বলেন, হাদীসের বাহ্যিক উদ্দেশ্য হলো, প্রতিদিনে ও রাতে সাজদার সময় স্থির থাকা। আর যাকে (جرعى) বা চলমান বলে।
‘আল্লামাহ্ খত্তাবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, সম্ভবত এর অর্থ হচ্ছে, তা ‘আরশের নীচে এমনভাবে স্থির থাকে যা আমাদের জ্ঞান পরিবেষ্টন করতে পারে না। তিনি কতিপয় মুফাসসির থেকে আরো বর্ণনা করে বলেন, এর অর্থ হচ্ছে সূর্য তার জন্য নির্ধারিত সময় পর্যন্ত আবর্তমান অর্থাৎ পৃথিবী ধ্বংস হওয়ার আগ পর্যন্ত।
আবার কেউ কেউ বলেন, আবর্তন অর্থ হচ্ছে সূর্য যত দূর পর্যন্ত উপরে উঠে গ্রীষ্মের সবচেয়ে বড় দিনে। এরপর নীচে নামতে থাকে শীতের সর্বনিম্ন ছোট দিন আসা পর্যন্ত। যা বছরের সবচেয়ে ছোট দিন হিসেবে গণ্য হয়। (মিরকাতুল মাফাতীহ, তুহফাতুল আহওয়াযী ৬/২১৮৬)।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৭: ফিতনাহ (كتاب الْفِتَن)