৫৩৪৩

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - ভয় ও কান্না

৫৩৪৩-[৫] আবূ ’আমির অথবা আবূ মালিক আল আশ’আরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা.) -কে বলতে শুনেছি, আমার উম্মতের মধ্যে কতিপয় সম্প্রদায় জন্মাবে যারা রেশমি কাতান এবং রেশমি কাপড় ব্যবহার করা, মদ্যপান করা এবং গান-বাদ্য করা বৈধ মনে করবে। আর অনেক সম্প্রদায় এমনও হবে যারা পর্বতের পাদদেশে বসবাস করবে। সন্ধ্যায় যখন তারা পশুপাল নিয়ে বাড়িঘরে প্রস্থান করবে (এমনি সময় তাদের নিকট কোন লোক তার প্রয়োজন নিয়ে আসলে তারা বলবে), আগামীকাল সকালে আমাদের কাছে এসো, কিন্তু রাত্রের আধারেই আল্লাহ তাদেরকে ধ্বংস করে দেবেন এবং পর্বতটিকে (তাদের ওপর) ধসিয়ে দেবেন। আর কারো কারো আকৃতিকে বানর ও শূকরে পরিবর্তিত করে দেবেন, কিয়ামত পর্যন্ত যা বহাল থাকবে। (বুখারী)

মাসাবীহের কোন কোন গ্রন্থে (الْخَزُّ) -এর স্থলে (ح<الْحَرَّ>) ر দ্বারা শব্দ গঠিত রয়েছে। কিন্তু তা অশুদ্ধ। বস্তুত এখানে (الْحَزُّ)  অর্থাৎ خ ز সংযুক্ত শব্দই হবে। হুমায়দী ও ইবনু আসীর (রহিমাহুল্লাহ) অত্র হাদীসের বর্ণনায় অনুরূপই বলেছেন। আর হুমায়দীর কিতাবে বুখারী থেকে এবং ঐভাবে বুখারীর শরাহ গ্রন্থে ইমাম খত্ত্বাবী হতে হাদীসে বর্ণিত বাক্যটি নীচে উল্লিখিত শব্দে বর্ণিত রয়েছে- (تَرُوحُ عَلَيْهِمْ سَارِحَةٌ لَهُمْ يَأَتِيهِمْ لِحَاجَةٍ) “এমনি সময় তাদের নিকট কোন লোক তার প্রয়োজন নিয়ে আসলে তারা বলবে”।

الفصل الاول (بَاب الْبكاء وَالْخَوْف)

وَعَنْ أَبِي عَامِرٍ أَوْ أَبِي مَالِكٍ الْأَشْعَرِيِّ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: لَيَكُونَنَّ مِنْ أُمَّتِي أَقْوَامٌ يَسْتَحِلُّونَ الْخَزَّ وَالْحَرِيرَ وَالْخَمْرَ وَالْمَعَازِفَ وَلَيَنْزِلَنَّ أَقْوَامٌ إِلَى جَنْبِ عَلَمٍ يَرُوحُ عَلَيْهِمْ بِسَارِحَةٍ لَهُمْ يَأْتِيهِمْ رَجُلٌ لِحَاجَةٍ فَيَقُولُونَ: ارْجِعْ إِلَيْنَا غَدًا فَيُبَيِّتُهُمُ اللَّهُ وَيَضَعُ الْعَلَمَ وَيَمْسَخُ آخَرِينَ قِرَدَةً وَخَنَازِيرَ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ «. رَوَاهُ الْبُخَارِيُّ. وَفَى بَعْضِ نُسَخِ» الْمَصَابِيحِ : «الْحَرَّ» بِالْحَاءِ وَالرَّاءِ الْمُهْمَلَتَيْنِ وَهُوَ تَصْحِيفٌ وَإِنَّمَا هُوَ بِالْخَاءِ وَالزَّايِ الْمُعْجَمَتَيْنِ نَصَّ عَلَيْهِ الْحُمَيْدِيُّ وَابْنُ الْأَثِيرِ فِي هَذَا الْحَدِيثِ. وَفَى كِتَابِ «الْحُمَيْدِيِّ» عَنِ الْبُخَارِيِّ وَكَذَا فِي «شَرحه» للخطابي: «تروح سارحة لَهُم يَأْتِيهم لحَاجَة»

رواہ البخاری (5590) و ذکرہ البغوی فی مصابیح السنۃ (3 / 453 ح 4113) و اخطا من ضعفہ ۔
(صَحِيح)

وعن ابي عامر او ابي مالك الاشعري قال سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول ليكونن من امتي اقوام يستحلون الخز والحرير والخمر والمعازف ولينزلن اقوام الى جنب علم يروح عليهم بسارحة لهم ياتيهم رجل لحاجة فيقولون ارجع الينا غدا فيبيتهم الله ويضع العلم ويمسخ اخرين قردة وخنازير الى يوم القيامة رواه البخاري وفى بعض نسخ المصابيح الحر بالحاء والراء المهملتين وهو تصحيف وانما هو بالخاء والزاي المعجمتين نص عليه الحميدي وابن الاثير في هذا الحديث وفى كتاب الحميدي عن البخاري وكذا في شرحه للخطابي تروح سارحة لهم ياتيهم لحاجةرواہ البخاری 5590 و ذکرہ البغوی فی مصابیح السنۃ 3 453 ح 4113 و اخطا من ضعفہ ۔صحيح

ব্যাখ্যা : (لَيَكُونَنَّ مِنْ أُمَّتِي أَقْوَامٌ يَسْتَحِلُّونَ الْخَزَّ) আমার উম্মতের মধ্যে এমন কিছু সম্প্রদায়ের আবির্ভাব হবে যার খাস বা এক ধরনের রেশমী কাপড় যা ঘোড়ার পিঠে পিছিয়ে বসা হয়, পাতলা রেশমী কাপড়, মদ এবং বাদ্যযন্ত্র হালাল মনে করবে। হাদীসের ভাবার্থ হচ্ছে কিছু সম্প্রদায় উল্লেখিত হারাম সামগ্রীকে কিছু বানোয়াট মনগড়া দলীলের ভিত্তিতে বৈধ মনে করবে। যেমন তাদের কোন কোন ‘আলিম বলবে : রেশমী কাপড় যদি শরীরের সাথে লেগে থাকে তাহলে হারাম হবে। কিন্তু যদি কাপড়ের উপর দিয়ে পরিধান করে তাহলে কোন অসুবিধা নেই। এটা রসূল (সা.) -এর হাদীসের স্পষ্ট বিরোধী। তিনি (সা.) বলেছেন, (مَنْ لَبِسَ الْحَرِيرَفِي الدُّنْيَا،لَمْا يَلْبَسْهُ فِي الْاٰخِرَةِ) “যারা দুনিয়াতে রেশমী কাপড় পরিধান করবে তারা পরকালে তা পরিধান করতে পরবে না।” (সহীহুল বুখারী)

তারা আরো বলে থাকে, পূর্ব যুগের অনেক বাদশাহ এবং বিচারকগণ রেশমী কাপড় পরতেন। যদি হারামই হত তাহলে পরতেন না ইত্যাদি।

(لَيَنْزِلَنَّ أَقْوَامٌ إِلَى جَنْبِ عَلَمٍ يَرُوحُ عَلَيْهِمْ بِسَارِحَةٍ لَهُمْ) আর কিছু সম্প্রদায় পাহাড়ের পাদদেশে তাদের চতুস্পদ জন্তু নিয়ে বিচরণ করতে থাকবে। আলিমদের কাছে হাদীস-কুরআনের শিক্ষা থেকে দূরে থাকবে। অথবা, তাদের রাখাল সকাল বিকাল চতুষ্পদ প্রাণী নিয়ে আসবে। ওগুলোর দুধ ও গোবর দ্বারা উপকৃত হবে।
(يَأْتِيهِمْ رَجُلٌ لِحَاجَةٍ فَيَقُولُونَ: ارْجِعْ إِلَيْنَا غَدً) তাদের কাছে কোন লোক কোন কিছুর প্রয়োজনে আসলে বলবে, আগামীকালে আমাদের কাছে এসো। অতঃপর রাত্রিতেই আল্লাহ তা'আলা তাদের ওপর শাস্তি বর্ষণ করবেন, ফলে তাদের কিছু অংশের উপর পাহাড় ভেঙ্গে পড়বে এবং কিছু লোককে বানর ও শুকরে পরিণত করবেন। তারা বিকৃত অবস্থায় মৃত্যু পর্যন্ত থাকবে অথবা তারা এই বিকৃত চেহারা নিয়ে হাশরের ময়দানে উপস্থিত হবে। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ, ফাতহুল বারী ১০/৫৫৯০, ‘আওনুল মা'বুদ ৭/৪০৩৫)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৬: মন-গলানো উপদেশমালা (كتاب الرقَاق)