২২৭০

পরিচ্ছেদঃ ৩৯. লি’আন করা সম্পর্কে

২২৬০. সাঈদ ইবনু জুবাইর (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, মুসআব ইবনু জুবাইর যখন (ইরাক অঞ্চলের) আমীর তখন লিআনকারী স্বামী-স্ত্রীকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হবে কিনা সে বিষয়ে আমাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল। কিন্তু এই বিষয়ে কি বলব তা আমার জানা ছিল না। তাই আমি আমার ঘর থেকে উঠে আবদুল্লাহ ইবনু উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু-এর বাড়িতে গেলাম এবং তার গোলামকে বললাম, ’তাঁর কাছে প্রবেশের অনুমতি চাও।’ সে বলল যে, তিনি দুপুরের বিশ্রাম নিচ্ছেন। ফলে আপনি তার কাছে প্রবেশ করতে পারবেন না। এই সময় ইবনু উমার রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু (নিজে ভিতর থেকে) আমার কণ্ঠ শুনে বললেন, ইবনু জুবাইর, ভিতরে এসো। কোন প্রয়োজন ছাড়াঅন্য কিছু তোমাকে এখানে নিয়ে আসেনি।

ইবনু জুবাইর বলেন, আমি ভিতরে প্রবেশ করলাম। দেখলাম তিনি কনুইকে বালিশ বানিয়ে কিংবা, আব্দুল্লাহ’র সন্দেহ, আঁশ বা তুলা ভরা একটি বালিশে মাথা রেখে উটের পিঠে ব্যবহৃত আসনের একটি গদিতে শুয়ে আছেন। আমি বললাম, হে আবূ আবদুর রহমান, লিআনকারী স্বামী-স্ত্রীর একজনকে আরেকজন থেকে কি বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হবে?

তিনি বললেন, সুবহানাল্লাহ্ , হ্যাঁ। এই বিষয়ে অমুক সর্বপ্রথম জিজ্ঞাসা করেছিলেন। তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে এসে বলেছিলেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ্, কি বলেন, আমাদের কেউ যদি তার স্ত্রীকে অপকর্মে লিপ্ত দেখতে পায় তবে সে কি করবে? আর সে যদি চুপ থাকে, তাহলে তো সে মারাত্মক এক বিষয়ে চুপ রইল। আবার যদি সে এই বিষয়ে কথা বলে তবুও অনুরূপ (ভীষণ এক বিষয়ে সে কথা বলল)।

ইবনু উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, (এই কথা শুনে) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চুপ করে রইলেন, তাকে কোন জবাব দিলেন না।

এই এই ঘটনার পর ঐ সাহাবী আবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এলেন। বললেন, যে বিষয়ে আপনাকে প্রশ্ন করেছিলাম সে বিষয়ে আমিই নিপতিত। তখন আল্লাহ্ তা’আলা সূরা নূরের এই আয়াত নাযিল করেন:

“আর যারা নিজেদের স্ত্রীদের প্রতি অপবাদ আরোপ করে অথচ নিজেরা ব্যতীত তাদের কোন সাক্ষী নাই।

পঞ্চমবার বলবে, সে মিথ্যাবাদী হলে তার উপর নেমে আসবে আল্লাহর লা’নত।

আর স্ত্রীর শাস্তি রহিত হবে যদি সে চারবার আল্লাহর নামে কসম করে সাক্ষ্য দেয় যে তার স্বামী অবশ্যই মিথ্যাবাদী। এবং পঞ্চমবারে বলে, তার স্বামী সত্যবাদী হলে তার নিজের উপর নেমে আসবে আল্লাহর গযব।”... আয়াতের শেষ পর্যন্ত। [সূরা নূর ২৪ : ৬-৯]

অনন্তর তিনি ঐ ব্যক্তিকে ডাকলেন এবং আয়াতগুলো তাকে তিলাওয়াত করে শোনালেন, তাকে নছীহত করে বুঝালেন এবং জানালেন যে, দুনিয়ার শাস্তি আখিরাতের আযাবের তুলনায় সহজতর।

সে বলল, আমি আমার স্ত্রী সম্পর্কে মিথ্যা বলিনি।

এরপর তিনি মহিলাটির ডাকলেন এবং তাকে নসীহত করলেন ও উপদেশ দিলেন। আর তাকে জানালেন, দুনিয়ার শাস্তি আখিরাতের আযাবের তুলনায় সহজতর।

মহিলাটি বলল, ঐ সত্তার কসম যিনি আপনাকে সত্য সহ প্রেরণ করেছেন। সে নিশ্চয়ই মিথ্যাবাদী।

রাবী বলেন অতঃপর তিনি পুরুষটিকেডাকলেন। অতঃপর সে চারবার আল্লাহর কসম করে সাক্ষ্য দিল যে, সে অবশ্যই সত্যবাদী। পঞ্চমবারে সে বলল, সে যদিমিথ্যাবাদী হয় তবে তার উপর আল্লাহর লা’নত। এরপর তিনি মহিলাটিকে নিয়ে আসা হলো। এরপর মহিলাটিও চারবার আল্লাহর কসম করে সাক্ষ্য দিল যে, পুরুষটি মিথ্যা বলেছে। পঞ্চমবারে সে বলল, পুরুষটি যদি সত্যবাদী হয়ে থাকে, তবে তার নিজের উপর আল্লাহর গযব নেমে আসবে। অতঃপর তিনি (নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাদের উভয়কে বিচ্ছিন্ন করে দিলেন।[1]

بَاب فِي اللِّعَانِ

أَخْبَرَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ أَخْبَرَنَا عَبْدُ الْمَلِكِ بْنُ أَبِي سُلَيْمَانَ قَالَ سَمِعْتُ سَعِيدَ بْنَ جُبَيْرٍ يَقُولُ سُئِلْتُ عَنْ الْمُتَلَاعِنَيْنِ فِي إِمَارَةِ مُصْعَبِ بْنِ الزُّبَيْرِ أَيُفَرَّقُ بَيْنَهُمَا فَمَا دَرَيْتُ مَا أَقُولُ قَالَ فَقُمْتُ حَتَّى أَتَيْتُ مَنْزِلَ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ فَقُلْتُ لِلْغُلَامِ اسْتَأْذِنْ لِي عَلَيْهِ فَقَالَ إِنَّهُ قَائِلٌ لَا تَسْتَطِيعُ أَنْ تَدْخُلَ عَلَيْهِ قَالَ فَسَمِعَ ابْنُ عُمَرَ صَوْتِي فَقَالَ ابْنُ جُبَيْرٍ فَقُلْتُ نَعَمْ فَقَالَ ادْخُلْ فَمَا جَاءَ بِكَ هَذِهِ السَّاعَةَ إِلَّا حَاجَةٌ قَالَ فَدَخَلْتُ عَلَيْهِ فَوَجَدْتُهُ وَهُوَ مُفْتَرِشٌ بَرْذَعَةَ رَحْلِهِ مُتَوَسِّدٌ مِرْفَقَةً أَوْ قَالَ نُمْرُقَةً شَكَّ عَبْدُ اللَّهِ حَشْوُهَا لِيفٌ فَقُلْتُ يَا أَبَا عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْمُتَلَاعِنَانِ أَيُفَرَّقُ بَيْنَهُمَا قَالَ سُبْحَانَ اللَّهِ نَعَمْ إِنَّ أَوَّلَ مَنْ سَأَلَ عَنْ ذَلِكَ فُلَانٌ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْكَ أَرَأَيْتَ لَوْ أَنَّ أَحَدَنَا رَأَى امْرَأَتَهُ عَلَى فَاحِشَةٍ كَيْفَ يَصْنَعُ إِنْ سَكَتَ سَكَتَ عَلَى أَمْرٍ عَظِيمٍ وَإِنْ تَكَلَّمَ فَمِثْلُ ذَلِكَ قَالَ فَسَكَتَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَلَمْ يُجِبْهُ فَقَامَ لِحَاجَتِهِ فَلَمَّا كَانَ بَعْدَ ذَلِكَ أَتَى النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّ الَّذِي سَأَلْتُكَ عَنْهُ قَدْ ابْتُلِيتُ بِهِ قَالَ فَأَنْزَلَ اللَّهُ تَعَالَى هَؤُلَاءِ الْآيَاتِ الَّتِي فِي سُورَةِ النُّورِ وَالَّذِينَ يَرْمُونَ أَزْوَاجَهُمْ حَتَّى خَتَمَ هَؤُلَاءِ الْآيَاتِ قَالَ فَدَعَا الرَّجُلَ فَتَلَاهُنَّ عَلَيْهِ وَذَكَّرَهُ بِاللَّهِ وَأَخْبَرَهُ أَنَّ عَذَابَ الدُّنْيَا أَهْوَنُ مِنْ عَذَابِ الْآخِرَةِ فَقَالَ مَا كَذَبْتُ عَلَيْهَا ثُمَّ دَعَا الْمَرَأَةَ فَوَعَظَهَا وَذَكَّرَهَا وَأَخْبَرَهَا أَنَّ عَذَابَ الدُّنْيَا أَهْوَنُ مِنْ عَذَابِ الْآخِرَةِ فَقَالَتْ وَالَّذِي بَعَثَكَ بِالْحَقِّ إِنَّهُ لَكَاذِبٌ فَدَعَا الرَّجُلَ فَشَهِدَ أَرْبَعَ شَهَادَاتٍ بِاللَّهِ إِنَّهُ لَمِنْ الصَّادِقِينَ وَالْخَامِسَةُ أَنَّ لَعْنَةَ اللَّهِ عَلَيْهِ إِنْ كَانَ مِنْ الْكَاذِبِينَ ثُمَّ أُتِيَ بِالْمَرْأَةِ فَشَهِدَتْ أَرْبَعَ شَهَادَاتٍ بِاللَّهِ إِنَّهُ لَمِنْ الْكَاذِبِينَ وَالْخَامِسَةَ أَنَّ غَضَبَ اللَّهِ عَلَيْهَا إِنْ كَانَ مِنْ الصَّادِقِينَ ثُمَّ فَرَّقَ بَيْنَهُمَا

اخبرنا يزيد بن هارون اخبرنا عبد الملك بن ابي سليمان قال سمعت سعيد بن جبير يقول سىلت عن المتلاعنين في امارة مصعب بن الزبير ايفرق بينهما فما دريت ما اقول قال فقمت حتى اتيت منزل عبد الله بن عمر فقلت للغلام استاذن لي عليه فقال انه قاىل لا تستطيع ان تدخل عليه قال فسمع ابن عمر صوتي فقال ابن جبير فقلت نعم فقال ادخل فما جاء بك هذه الساعة الا حاجة قال فدخلت عليه فوجدته وهو مفترش برذعة رحله متوسد مرفقة او قال نمرقة شك عبد الله حشوها ليف فقلت يا ابا عبد الرحمن المتلاعنان ايفرق بينهما قال سبحان الله نعم ان اول من سال عن ذلك فلان فقال يا رسول الله صلى الله عليك ارايت لو ان احدنا راى امراته على فاحشة كيف يصنع ان سكت سكت على امر عظيم وان تكلم فمثل ذلك قال فسكت رسول الله صلى الله عليه وسلم فلم يجبه فقام لحاجته فلما كان بعد ذلك اتى النبي صلى الله عليه وسلم فقال يا رسول الله ان الذي سالتك عنه قد ابتليت به قال فانزل الله تعالى هولاء الايات التي في سورة النور والذين يرمون ازواجهم حتى ختم هولاء الايات قال فدعا الرجل فتلاهن عليه وذكره بالله واخبره ان عذاب الدنيا اهون من عذاب الاخرة فقال ما كذبت عليها ثم دعا المراة فوعظها وذكرها واخبرها ان عذاب الدنيا اهون من عذاب الاخرة فقالت والذي بعثك بالحق انه لكاذب فدعا الرجل فشهد اربع شهادات بالله انه لمن الصادقين والخامسة ان لعنة الله عليه ان كان من الكاذبين ثم اتي بالمراة فشهدت اربع شهادات بالله انه لمن الكاذبين والخامسة ان غضب الله عليها ان كان من الصادقين ثم فرق بينهما

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
সুনান আদ-দারেমী (হাদিসবিডি)
১১. বিবাহ অধ্যায় (كتاب النكاح)