৫০৫৮

পরিচ্ছেদঃ ১৮. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - আত্মসংযম ও কাজে ধীরস্থিরতা

৫০৫৮-[৬] মুস্’আব ইবনু সা’দ তাঁর পিতা হতে বর্ণনা করেন। আ’মাশ (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, আমি এ বাণী নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বলেই জানি যে, তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ সব কাজেই দেরি করা ও ধীরে-সুস্থে করা উত্তম; কিন্তু আখিরাতের কাজ ব্যতীত। (আবূ দাঊদ)[1]

وَعَنْ مُصْعَبِ بْنِ سَعْدٍ عَنْ أَبِيهِ قَالَ الْأَعْمَشُ: لَا أَعْلَمُهُ إِلَّا عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «التُّؤَدَةُ فِي كُلِّ شَيْء إِلَّا فِي عَمَلِ الْآخِرَةِ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ

وعن مصعب بن سعد عن ابيه قال الاعمش لا اعلمه الا عن النبي صلى الله عليه وسلم قال التودة في كل شيء الا في عمل الاخرة رواه ابو داود

ব্যাখ্যাঃ (قَالَ الْأَعْمَشُ) অর্থাৎ একজন বর্ণনাকারী। তিনি একজন প্রসিদ্ধ সম্মানিত তাবি‘ঈ। তার প্রকৃত নাম ছিল সুলায়মান ইবনু মিহরান আল কাহলী আল আসাদী। তিনি বানূ কাহিল-এর আযাদকৃত গোলাম ছিলেন। তিনি ৬০ হিজরীতে الري ‘রায়’ নামক স্থানে জন্মগ্রহণ করেন। অতঃপর তাকে কূফায় আনা হলে বানূ কাহিল-এর এক ব্যক্তি তাকে ক্রয় করেন এবং তাঁকে আযাদ করে দেন। তিনি হাদীস ও ‘ইলমে ক্বিরাআত সম্পর্কে একজন প্রসিদ্ধ পন্ডিত ছিলেন। অধিকাংশ কূফাবাসী তার ওপর নির্ভর করত। তাঁর নিকট থেকে অনেকে হাদীস বর্ণনা করেছেন। তিনি ১৪৮ হিজরী সনে মৃত্যুবরণ করেন। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)

(إِلَّا فِي عَمَلِ الْآخِرَةِ) অর্থাৎ কারণ আখিরাতের কাজে দেরী করা হলো বিপদ। আর বর্ণিত আছে যে, জাহান্নামবাসীদের অধিকাংশের চিৎকার শোনা যাবে কাজের গতিক্রিয়া থেকেই।

‘আল্লামা ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ পার্থিব কাজ চিন্তা-গবেষণার প্রথমেই উপলব্ধি করা মানুষের পক্ষ সম্ভব নয়। পক্ষান্তরে পরকালের অবশ্যম্ভাবী মুক্তির উত্তম কাজ যথাশীঘ্র করাই বাঞ্ছনীয়। মহান আল্লাহ বলেনঃ فَاسْتَبِقُوا الْخَيْرَاتِ ‘‘...তোমরা কল্যাণকর কাজে প্রতিযোগিতা কর...’’- (সূরাহ্ আল বাকারাহ্ ২ : ১৪৮; সূরাহ্ আল মায়িদাহ্ ৫ : ৪৮)। وَسَارِعُوا إِلٰى مَغْفِرَةٍ مِّنْ رَبِّكُمْ ‘‘তোমরা তোমাদের পালনকর্তার ক্ষমার দিকে ছুটে যাও...’’- (সূরাহ্ আ-লি ‘ইমরা-ন ৩ : ১৩৩)।

الشَّيْطَانُ يَعِدُكُمُ الْفَقْرَ ‘‘শয়তান তোমাদেরকে দারিদ্র্যতার প্রতিশ্রুতি দেয়...’’- (সূরাহ্ আল বাকারাহ্ ২ : ২৬৮)। এ আয়াত সম্পর্কে ইমাম গাযালী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ মু’মিনের কর্তব্য হলো যখন তার সামর্থ্য থাকে দান করার সে যেন দান করে দেয়। দান করা থেকে বিরত না থাকে। কারণ শয়তান তাকে দারিদ্র্যতার প্রতিশ্রুতি দেয়, তাকে দারিদ্র্যতার ভয় দেখায় ও দান করা থেকে তাকে বিরত রাখে। আবুল হাসান ফারশাখী একবার টয়লেটে প্রবেশ করে তার এক ছাত্রকে ডেকে বললেন, তুমি আমার শরীর থেকে জামাটা খুলে অমুক লোককে দিয়ে দাও। জবাবে ছাত্রটি বলল, যদি আপনি বের হওয়া পর্যন্ত ধৈর্য ধারণ করতেন। তখন তিনি বললেন, তাকে দান করতে আমি ভুলে যেতে পারি। আর আমি আমার মনের ব্যাপারে নিরাপদ নই, সে হয়ত পরিবর্তনও হয়ে যেতে পারে। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৫: শিষ্টাচার (كتاب الآداب)