৪৮১২

পরিচ্ছেদঃ ১০. প্রথম অনুচ্ছেদ - জিহ্বার হিফাযাত, গীবত এবং গালমন্দ প্রসঙ্গে

জিহ্বার হিফাযাত বলতে অশ্লীল-অবাঞ্ছিত কথা-বার্তা ইত্যাদি থেকে জিহ্বাকে রক্ষা করা। গীবত বলা হয় তোমার মুসলিম ভাইয়ের মধ্যে বিদ্যমান কোন দোষ তার অসাক্ষাতে আলোচনা করা যা সে শুনলে তা অপছন্দ করবে। তার মধ্যে যদি দোষটি না থাকে তবে সেটা হবে বুহতান বা অপবাদ।

আরবীতে اَلشَّتَمُ বলা হয় গালি প্রদান করা, অভিসম্পাত করা। এতে জীবিত-মৃত, উপস্থিত-অনুপস্থিত সকলেই এর অন্তর্ভুক্ত।


৪৮১২-[১] সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আমার কাছে তার দু’ চোয়ালের মধ্যস্থিত বস্তুর এবং তার দু’ পায়ের মধ্যস্থিত বস্তুর জামিন হবে, আমি তার জন্য জান্নাতের জামিন হব। (বুখারী)[1]

بَابُ حِفْظِ اللِّسَانِ وَالْغِيبَةِ وَالشَّتَمِ

عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ يَضْمَنْ لِي مَا بَيْنَ لَحْيَيْهِ وَمَا بَيْنَ رِجْلَيْهِ أضمنْ لَهُ الجنَّةَ» . رَوَاهُ البُخَارِيّ

عن سهل بن سعد قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم من يضمن لي ما بين لحييه وما بين رجليه اضمن له الجنة رواه البخاري

ব্যাখ্যাঃ مَنْ অব্যয়টি শরতিয়া হিসেবে ব্যবহার হয়েছে। لَحْيَةٌ হলো দাঁতের উদগত স্থল, অর্থাৎ চোয়াল। দুই চোয়ালের মাঝের বস্তু দ্বারা উদ্দেশ্য হলো জিহ্বা বা মুখের ভাষা। অর্থাৎ জিহ্বা এবং মুখকে যে অশ্লীল কথা-বার্তা এবং হারাম খাদ্য থেকে হিফাযাতের যিম্মাদারী নিবে, আর নিজের যৌনাঙ্গকে যিনা বা অনুরূপ কার্যক্রম থেকে হিফাযাতের গ্যারান্টি দিবে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার জন্য প্রথম পর্বেই জান্নাতের উচ্চস্তরে প্রবেশের যিম্মাদারী গ্রহণ করবেন।

‘আল্লামা ইবনু হাজার ‘আসকালানী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ এর অর্থ হলো যে, যে কথা বলা আবশ্যক সে কথা বলার মাধ্যমে এবং যে কথা বলা উচিত নয়, সে কথা থেকে বিরত বা চুপ থাকার মাধ্যমে মুখের হক আদায় করবে। অনুরূপ যৌনাঙ্গকে হালাল পন্থায় ব্যবহারের মাধ্যমে তার হক আদায় করা এবং হারাম পন্থা থেকে বিরত রাখা বা দূরে থাকা।

‘আল্লামা দাঊদী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ হাদীসের ভাষা ‘দুই চোয়ালের মাঝের বস্তু’ দ্বারা উদ্দেশ্য হলো মুখ। আর মুখের দ্বারা উদ্দেশ্য হলো- মুখের কথা, খানা-পিনা এবং মুখ দ্বারা সম্পাদিত যাবতীয় বিষয়।

দুই রানের মাঝের বস্তু দ্বারা উদ্দেশ্য হলো যৌনাঙ্গ। যারা এ দু’টিকে হিফাযাত করতে পারবে তারা সকল খারাপ কাজ থেকে নিজকে হিফাযাত করতে পারবে।

‘কথা’ হলো যিনা বা ব্যভিচারের উপক্রমিকা, কেউ যদি কথা থেকে নিজকে রক্ষা করতে পারে তাহলে সে শুরুতেই রক্ষা পেয়ে গেল।

ইবনুল বাত্ত্বল (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ সুতরাং মানুষের জন্য সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো তার মুখের ভাষা, অতঃপর যৌনাঙ্গ।

যে ব্যক্তি এ দুয়ের অনিষ্টতা থেকে রক্ষা পেল সে সবচেয়ে বড় অনিষ্টতা ও বিপদ থেকে রক্ষা পেল। আবূ হুরায়রা প্রমুখাৎ বর্ণিত, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ যাকে দুই চোয়ালের মাঝের বস্তু অর্থাৎ জিহ্বার অনিষ্টতা এবং দুই পায়ের মাঝের বস্তু অর্থাৎ যৌনাঙ্গের অনিষ্টতা থেকে রক্ষা করবেন তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ; মুসনাদে আহমাদ ৪র্থ খন্ড, ৩৯৮ পৃঃ; ফাতহুল বারী ১২শ খন্ড, হাঃ ৬৪৭৪; ইবনু হিব্বান হাঃ ৫০৮১, তিরমিযী হাঃ ২৪০৮)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ সাহল বিন সা'দ (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৫: শিষ্টাচার (كتاب الآداب)