৪৪৬০

পরিচ্ছেদঃ ৩. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - চুল আঁচড়ানো

৪৪৬০-[৪২] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি এবং রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একই পাত্র হতে গোসল করতাম। তখন রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মাথার চুল জুম্মার উপরে এবং ওয়াফরার নিচে ছিল। (তিরমিযী)[1]

وَعَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ: كُنْتُ أَغْتَسِلُ أَنَا وَرَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ إِنَاءٍ وَاحِدٍ وَكَانَ لَهُ شَعْرٌ فَوْقَ الْجُمَّةِ وَدُونَ الوفرة. رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ وَالنَّسَائِيّ

وعن عاىشة قالت كنت اغتسل انا ورسول الله صلى الله عليه وسلم من اناء واحد وكان له شعر فوق الجمة ودون الوفرة رواه الترمذي والنساىي

ব্যাখ্যাঃ হাদীসটিতে দুটি জিনিসের বিবরণ দিয়েছেন ‘আয়িশাহ্ (রাঃ)। এক : একই পাত্র থেকে তার ও রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর গোসলের ব্যাপারটি। দুই : রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর চুলের বিবরণ।

একই পাত্র থেকে গোসল বলতে একই সময়ে উভয়ে একই পাত্র থেকে গোসল করেছেন বলে বুঝানো হয়েছে। হাদীস থেকে বুঝা যায় যে, মহিলার গোসলের পর অবশিষ্ট পানি দিয়ে পুরুষের গোসল, অনুরূপ পুরুষের গোসলের অবশিষ্ট পানি দিয়ে মহিলার গোসল করতে কোন সমস্যা নেই। এটাই জামহূর ‘আলিমের মত। পক্ষান্তরে কেউ কেউ পুরুষের গোসলের অতিরিক্ত পানি দিয়ে মহিলার জন্য পবিত্রতা অর্জনে অসুবিধা মনে না করলেও মহিলার পবিত্রতা অর্জনের পর অবশিষ্ট পানি দিয়ে পুরুষের জন্য পবিত্রতা অর্জন মাকরূহ মনে করেন।

হাদীসের দ্বিতীয় অংশতে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর চুলের বিবরণ দেয়া হয়েছে। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর চুল জুম্মাহ্ ও ওয়াফরাহ্ এর মাঝামাঝি থাকত বলে বিবরণ দিচ্ছেন ‘আয়িশাহ্ (রাঃ)। জুম্মাহ্ হলো চুলের এমন পরিমাণ যা মাথা থেকে কাঁধ পর্যন্ত নেমে যায়। আর ওয়াফরাহ হলো যা কানের লতি পর্যন্ত হয়। জুম্মাহ্ ও ওয়াফরাহ্ এর মাঝামাঝি চুলকে ‘আরবীতে লিম্মাহ্ বলা হয়। তাই কোন কোন বর্ণনায় রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লিম্মাহ্ওয়ালা চুলের অধিকারী ছিলেন বলে বলা হয়েছে। উভয় বর্ণনার উদ্দেশ্য একই। তবে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বড় জুম্মাহ্ চুলের অধিকারী ছিলেন বলেও বর্ণনায় পাওয়া যায়।

বিভিন্ন প্রকার চুলের বিবরণের মাঝে সামঞ্জস্য করতে মুহাদ্দিসীনে কিরাম বলেন, এসব হাদীস পরস্পর বিরোধী নয়। কেননা চুলের বিভিন্ন অবস্থা হতে পারে। এক সময় কাটতে দেরী হয়েছে। তাই চুল জুম্মায় পরিণত হয়েছে। এ অবস্থা যিনি দেখেছেন তিনি তা বর্ণনা করেছেন। আরেক সময় চুল কেটেছেন তখন তা ছোট হয়েছে। কাটার নিকটবর্তী সময়ে যিনি দেখেছেন তিনি এ অবস্থার বর্ণনা দিয়েছেন। এভাবেই রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর চুলের বিভিন্ন বর্ণনা এসেছে। মোটকথা, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর চুল লম্বা ছিল। আমরা যাকে বাবরি বলে থাকি। তবে কোন সময় তা অধিক লম্বা হয়ে কাঁধ পর্যন্ত চলে যেত, আবার কোন সময় কানের লতি পর্যন্ত থাকত এবং কোন কোন সময় এর মাঝামাঝি থাকত। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২২: পোশাক-পরিচ্ছদ (كتاب اللباس )