৪৩৪২

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ

৪৩৪২-[৩৯] আবূ সা’ঈদ আল খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখনই কোন নতুন কাপড় পরিধান করতেন, তখন তাঁর নাম পাগড়ী, জামা, চাদর (ইত্যাদি) উল্লেখ করে এ দু’আ পড়তেন- ’’আল্ল-হুম্মা লাকাল হামদু কামা- কাসাওতানীহি আস্আলুকা খায়রাহূ ওয়া খয়রা মা- সুনি’আ লাহূ ওয়া আ’ঊযুবিকা মিন শাররিহী ওয়া শাররি মা- সুনি’আ লাহূ’’ অর্থাৎ- হে আল্লাহ! সমস্ত প্রশংসা তোমারই, তুমিই এ কাপড়টি আমাকে পরিধান করিয়েছ। আমি তোমার কাছে তার কল্যাণ কামনা করছি এবং যে উদ্দেশে তা প্রস্তুত করা হয়েছে তারও কল্যাণ কামনা করছি এবং তার অনিষ্ট হতে আশ্রয় চাই এবং যে উদ্দেশে তা প্রস্তুত করা হয়েছে তার অনিষ্ট হতে আশ্রয় চাই। (তিরমিযী ও আবূ দাঊদ)[1]

الْفَصْلُ الثَّانِي

وَعَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا اسْتَجَدَّ ثَوْبًا سَمَّاهُ بِاسْمِهِ عِمَامَةً أَوْ قَمِيصًا أَوْ رِدَاءً ثُمَّ يَقُولُ «اللَّهُمَّ لَكَ الْحَمْدُ كَمَا كسوتَنيه أَسأَلك خَيره وخيرَ مَا صُنِعَ لَهُ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّهِ وَشَرِّ مَا صُنِعَ لَهُ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَأَبُو دَاوُدَ

وعن ابي سعيد الخدري قال كان رسول الله صلى الله عليه وسلم اذا استجد ثوبا سماه باسمه عمامة او قميصا او رداء ثم يقول اللهم لك الحمد كما كسوتنيه اسالك خيره وخير ما صنع له واعوذ بك من شره وشر ما صنع له رواه الترمذي وابو داود

ব্যাখ্যাঃ ইবনু হিব্বান আনাস (রাঃ) থেকে একটি হাদীস বর্ণনা করেছেন, আনাস (রাঃ) বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন নতুন পোশাক পরিধান করতেন তখন জুমু‘আহ বার তা পরিধান করতেন। এ হাদীস দ্বারা যদিও বুঝা যায় যে, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন নতুন কাপড় পরিধান করার ক্ষেত্রে জুমু‘আহ বারকে নির্ধারণ করেছেন। কিন্তু হাদীসটি গ্রহণযোগ্য না হওয়ায় নতুন কাপড় পরিধানের কোন নির্দিষ্ট দিন বা ক্ষণ নির্ধারণ করা প্রমাণিত নয়। অত্র হাদীসে পাগড়ী, কামীস ও চাদর- এ তিনটি কাপড়ের নাম বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে উদাহরণ স্বরূপ। মূলত এগুলো ছাড়াও অন্যান্য কাপড় যেমন লুঙ্গি, সেলওয়ার, মোজা ইত্যাদি কাপড়ও সাধারণভাবে এ হাদীস দ্বারা উদ্দেশ্য।

পোশাকের কল্যাণ হচ্ছে এর স্থায়িত্ব, পরিচ্ছন্নতা এবং জরুরী প্রয়োজনে তা পরিধান করার উপযোযী থাকা। যে সকল জরুরী উদ্দেশে এই কাপড় তৈরি করা হয়েছে তা হলো দীর্ঘ সময় গরম ও ঠাণ্ডা থেকে রক্ষা পাওয়া এবং গোপন অঙ্গ ঢেকে রাখা। এ সকল কাপড় পরিধানের ক্ষেত্রে কল্যাণ কামনা করার দ্বারা উদ্দেশ্য হলো, এসব কাপড় যেন সেসব কাঙিক্ষত উদ্দেশে পৌঁছার মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হয় যেসব উদ্দেশ্যের জন্য কাপড় তৈরি করা হয়েছে। যেমন- আল্লাহর ‘ইবাদাত ও আনুগত্য করতে সাহায্য নেয়া। অত্র হাদীসে যে পোশাকের অকল্যাণ থেকে আশ্রয় চেয়ে বলা হয়েছে তার অর্থ হলো পোশাক হারাম হওয়া, অপবিত্র হওয়া, দীর্ঘস্থায়ী না হওয়া অথবা সেসব কাপড় গুনাহ, অকল্যাণ, গর্ব-অহংকার, আশ্চর্যান্বিত হওয়া ও ধোঁকাবাজির কারণ থেকে সেসব কাপড় মুক্ত থাকা।

অত্র হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হলো যে, নতুন পোশাক পরিধান করার সময় আল্লাহর প্রশংসা করা মুস্তাহাব।

ইমাম হাকিম তাঁর ‘‘আল মুসতাদরাকে’’ ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে হাদীস বর্ণনা করেছেন, ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) বলেনঃ রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

مَا اشْتَرٰى عَبْدٌ ثَوْبًا بِدِينَارٍ أَوْ بِنِصْفِ دِينَارٍ فَحَمِدَ اللهَ إِلَّا لَمْ يَبْلُغْ رُكْبَتَيْهِ حَتّٰى يَغْفِرَ اللهُ لَهٗ.

‘‘কোন বান্দা যখন এক দীনার বা অর্ধ দীনারের বিনিময়ে কোন কাপড় ক্রয় করে, অতঃপর আল্লাহর প্রশংসা জ্ঞাপন করে, তাহলে তার দুই হাঁটু পর্যন্ত কাপড় পৌঁছার পূর্বেই তাকে মাফ করে দেন।’’ (তুহফাতুল আহ্ওয়াযী ৫ম খন্ড, হাঃ ১৭৬৭)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২২: পোশাক-পরিচ্ছদ (كتاب اللباس )