৪২৫৩

পরিচ্ছেদঃ ১. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - অতিথি আপ্যায়ন প্রসঙ্গে

৪২৫৩-[১১] আবূ ’আসীব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ এক রাতে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার নিকট এসে আমাকে ডাকলেন। আমি বের হয়ে তৎক্ষণাৎ তাঁর নিকট আসলাম। অতঃপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আবূ বকর সিদ্দীক (রাঃ)-এর নিকট গমন করলেন, তাঁকেও ডাকলেন এবং তিনি বের হয়ে আসলেন। পরে ’উমার (রাঃ)-এর নিকট গমন করলেন এবং তাঁকেও ডাকলেন। তিনিও বের হয়ে আসলেন। এবার তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) (সবাইকে সঙ্গে নিয়ে) চললেন। অবশেষে জনৈক আনসারীর বাগানের মধ্যে প্রবেশ করলেন এবং বাগানের মালিককে বললেন, আমাদেরকে তাজা পাকা খেজুর খাওয়াও। অমনি সে খেজুরের একটি ছড়া এনে রাখল। আর রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর সঙ্গীরা তা খেলেন। অতঃপর তিনি ঠাণ্ডা পানি চেয়ে আনালেন এবং পান করলেন। এরপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ নিশ্চয় কিয়ামতের দিন এ সমস্ত নি’আমাত সম্পর্কে তোমাদেরকে প্রশ্ন করা হবে।

বর্ণনাকারী বলেনঃ (এ কথা শুনে) ’উমার(রাঃ) খেজুরের ছড়াটি নিয়ে জমিনের উপর আঘাত করলেন, এতে খেজুরগুলো রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সম্মুখে বিক্ষিপ্তভাবে ছিটিয়ে পড়ল, অতঃপর বললেনঃ হে আল্লাহর রসূল! আমরা কি কিয়ামতের দিন এ সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হব? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ হ্যাঁ, তিনটি বিষয়ে জবাবদিহি করতে হবে। যথা- ১. কাপড়ের সে টুকরাটি যার দ্বারা মানুষ তার লজ্জাস্থান আবৃত করে, ২. অথবা রুটির সে খণ্ডটি যার দ্বারা সে তার ক্ষুধা নিবারণ করে, ৩. এবং ঐ ছোট্ট ঘরখানা যাতে অবস্থান করে গ্রীষ্ম ও শীত হতে আত্মরক্ষা করে। (আহমাদ ও বায়হাক্বী- শু’আবুল ঈমান, মুরসাল সূত্রে)[1]

عَنْ أَبِي عَسِيبٍ
قَالَ: خَرَجَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَيْلًا فَمَرَّ بِي فَدَعَانِي فَخَرَجْتُ إِلَيْهِ ثُمَّ مَرَّ بِأَبِي بَكْرٍ فَدَعَاهُ فَخَرَجَ إِلَيْهِ ثُمَّ مَرَّ بِعُمَرَ فَدَعَاهُ فَخَرَجَ إِلَيْهِ فَانْطَلَقَ حَتَّى دَخَلَ حَائِطًا لِبَعْضِ الْأَنْصَارِ فَقَالَ لِصَاحِبِ الْحَائِطِ: «أَطْعِمْنَا بُسْرًا» فَجَاءَ بِعِذْقٍ فَوَضَعَهُ فَأَكَلَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَصْحَابُهُ ثُمَّ دَعَا بِمَاءٍ بَارِدٍ فَشَرِبَ فَقَالَ: «لَتُسْأَلُنَّ عَنْ هَذَا النَّعِيمِ يَوْمَ القيامةِ» قَالَ: فَأخذ عمر العذق فَضرب فِيهِ الْأَرْضَ حَتَّى تَنَاثَرَ الْبُسْرُ قَبْلَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ثُمَّ قَالَ: يَا رَسُول الله إِنَّا لمسؤولونَ عَنْ هَذَا يَوْمَ الْقِيَامَةِ؟ قَالَ: «نَعَمْ إِلَّا مِنْ ثَلَاثٍ خِرْقَةٍ لَفَّ بِهَا الرَّجُلُ عَوْرَتَهُ أَوْ كِسْرَةٍ سَدَّ بِهَا جَوْعَتَهُ أَوْ حُجْرٍ يتدخَّلُ فِيهِ مَنِ الْحَرِّ وَالْقُرِّ» . رَوَاهُ أَحْمَدُ وَالْبَيْهَقِيُّ فِي «شعب الْإِيمَان» . مُرْسلا

عن أبي عسيب قال: خرج رسول الله صلى الله عليه وسلم ليلا فمر بي فدعاني فخرجت إليه ثم مر بأبي بكر فدعاه فخرج إليه ثم مر بعمر فدعاه فخرج إليه فانطلق حتى دخل حائطا لبعض الأنصار فقال لصاحب الحائط: «أطعمنا بسرا» فجاء بعذق فوضعه فأكل رسول الله صلى الله عليه وسلم وأصحابه ثم دعا بماء بارد فشرب فقال: «لتسألن عن هذا النعيم يوم القيامة» قال: فأخذ عمر العذق فضرب فيه الأرض حتى تناثر البسر قبل رسول الله صلى الله عليه وسلم ثم قال: يا رسول الله إنا لمسؤولون عن هذا يوم القيامة؟ قال: «نعم إلا من ثلاث خرقة لف بها الرجل عورته أو كسرة سد بها جوعته أو حجر يتدخل فيه من الحر والقر» . رواه أحمد والبيهقي في «شعب الإيمان» . مرسلا

ব্যাখ্যাঃ لَتُسْأَلُنَّ عَنْ هٰذَا النَّعِيمِ يَوْمَ القيامةِ ‘‘নিশ্চয় কিয়ামতের দিন এ সমস্ত নি‘আমাত সম্পর্কে তোমাদেরকে প্রশ্ন করা হবে’’-এর মধ্যে সাধারণের প্রতি সম্বোধনের দ্বারা এদিকে ইঙ্গিত রয়েছে যে, আল্লাহর নবী রসূলগণ এ সম্পর্কে জবাবদিহির সম্মুখীন হবেন না। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)

মানুষের মৌলিক অধিকারের মধ্যে অন্যতম হলো অন্ন, বস্ত্র ও বাসস্থান। এগুলো ছাড়া একজন মানুষ স্বাভাবিকভাবে জীবন যাপন করতে পারে না। তাই ইসলামী শারী‘আত এগুলোকে মূল্যায়ন করেছে এবং এগুলোর কারণে কাউকে জবাবদিহির সম্মুখীন করা হবে না বলে উল্লেখিত হাদীসটি প্রমাণ বহন করে। তবে প্রতিটি ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ও অপচয় থেকে বিরত থাকা জরুরী। [সম্পাদক]


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
বর্ণনাকারীঃ আবূ ‘আসীব (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব ২১: খাদ্য (كتاب الأطعمة)