পরিচ্ছেদঃ
১৩৬৮। সেই সত্ত্বার কসম যিনি আমাকে সত্য সহকারে প্রেরণ করেছেন। আমি তোমাকে পিছিয়েছি একমাত্র আমার নিজের জন্য। কারণ তুমি আমার নিকট সে স্তরে যে স্তরে মূসার নিকট হারূণ ছিল এবং তুমি আমার উত্তরাধিকারী। সে বললঃ হে আল্লাহর রসূল! আমি তো আপনার নিকট থেকে ওয়ারিস হবো না? তিনি বললেনঃ নবীগণ যা কিছুর দ্বারা ওয়ারিস বানিয়েছেন তা দ্বারা (তোমাকে ওয়ারিস বানাবো)। সে বললঃ নবীগণ কিসের ওয়ারিস বানিয়েছেন? তিনি বললেনঃ আল্লাহর কিতাব এবং তাদের সুন্নাতের। আর তুমি আমার সাথে জান্নাতে আমার অট্টালিকাতে আমার মেয়ে ফাতেমার সাথে থাকবে। তুমি আমার ভাই আর তুমি আমার বন্ধু। অতঃপর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ আয়াত পাঠ করলেনঃ “তারা একে অপরের ভাই হয়ে পরস্পরের মুখোমুখি সেখানে অবস্থান করবে" (সূরা হিজ্বর : ৪৭) অর্থাৎ আল্লাহর ওয়াস্তে পরস্পরের বন্ধু তারা প্রত্যেকে প্রত্যেকের দিকে তাকাবে।
হাদিসটি বানোয়াট।
হাদীসটিকে ত্ববারানী "আলমুজামুল কাবীর" গ্রন্থে আব্দুল মু’মিন ইবন আব্বাদ ইবনে আমর আবাদী সূত্রে ইয়াযীদ ইবনু মা’য়ান হতে, তিনি আব্দুল্লাহ ইবনু শুরাহবীল হতে, তিনি কুরাইশী এক ব্যক্তি হতে, তিনি যায়েদ ইবনু আবী আউফা হতে, তিনি বলেনঃ আমি মসজিদে নবাবীতে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট প্রবেশ করলাম তখন তিনি বলতে শুরু করলেনঃ অমুকের ছেলে অমুক কোথায়? তিনি অব্যাহতভাবে তাদের খোঁজ খবর নিতে থাকলেন এবং তিনি তাদের কাছে লোক প্রেরণ করলেন, তারা তার নিকট একত্রিতও হলো। তিনি বললেনঃ আমি তোমাদেরকে একটি হাদীস বর্ণনা করে শুনাচ্ছি তোমরা সেটিকে হেফাযত কর, তাকে তোমরা হেফয করে নাও এবং তা তোমাদের পরবর্তীদেরকে বর্ণনা করে শুনাও। আল্লাহ্ তা’আলা তার সৃষ্টির মধ্য থেকে একদল সৃষ্টিকে নির্বাচিত করে নিয়েছেন। অতঃপর এ আয়াত পাঠ করলেনঃاللَّهُ يَصْطَفِي مِنَ الْمَلَائِكَةِ رُسُلًا وَمِنَ النَّاسِ "আল্লাহ্ তা’য়ালা ফেরেশতাদের মধ্য থেকে বাণীবাহক মনোনীত করেন, মানুষের ভেতর থেকেও।" (সূরা হাজ্জ্ব : ৭৫) এরা এমন একদল সৃষ্টি যাদেরকে তিনি জান্নাত প্রদান করবেন। আর আমি তোমাদের মধ্য থেকে তাকে চয়ন করছি যাকে চয়ন করাকে আমি বেশী পছন্দ করি আর আমি তাদের মাঝে ভ্রাতৃত্ববন্ধন সৃষ্টি করে দিচ্ছি যেরূপ আল্লাহ্ তাআলা ফেরেশতাদের মাঝে ভ্রাতৃত্ববন্ধন সৃষ্টি করে দিয়েছেন।
হে আবু বাকর! তুমি দাঁড়াও। তিনি দাঁড়ালেন। অতঃপর হাঁটু পেতে তার সামনে বসলেন। তিনি বললেনঃ তোমার জন্য আমার নিকট একটি হাত রয়েছে, তার দ্বারা আল্লাহ তা’আলা প্রতিদান প্রদান করবেন। আমি যদি কোন ব্যক্তিকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করতাম তাহলে অবশ্যই তোমাকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করতাম। তুমি আমার কাছে আমার শরীরের জামার মর্যাদায়। তিনি তার হাত দিয়ে তার জামা ঝুকালেন।
অতঃপর বললেনঃ হে উমার! তুমি আমার নিকটবর্তী হও। তিনি তার নিকটবর্তী হলেন। তখন [রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বললেনঃ হে আবু হাফস! তুমি আমাদের বিপক্ষে কঠোর উচ্ছৃঙ্খল ব্যক্তি ছিলে। অতঃপর আমি আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করি তিনি যেন তোমার অথবা আবূ জাহলের দ্বারা (ইসলাম) ধর্মকে ইযযাত দান করেন। আল্লাহ্ তা’আলা তোমার দ্বারা তা করেছেন। তুমি দু’জনের মধ্যে আমার নিকট বেশী পছন্দের ছিলে। তুমি জান্নাতে আমার সাথে এ উম্মাতের তৃতীয় ব্যক্তি হিসেবে থাকবে।
অতঃপর তিনি একটু পেছনে সরে গিয়ে তার এবং আবু বাকর এর মাঝে ভাই ভাইয়ের সম্পর্ক স্থাপন করে দিলেন।
অতঃপর উসমানকে ডেকে বললেনঃ হে উসমান! তুমি আমার নিকটে আস। হে উসমান! তুমি আমার নিকটে আস। তিনি রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকটে আসা অব্যাহত রাখলেন এমনকি তার হাঁটু রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর হাঁটুর সাথে মিলিয়ে ফেললেন। অতঃপর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার দিকে তাকালেন। এরপর আসমানের দিকে তাকিয়ে তিনবার বললেনঃ সুবহানাল্লাহিল আযীম। তারপর উসমানের দিকে তাকিয়ে দেখলেন তার বুতামগুলো খুলে গেছে। রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেগুলো তার হাত দিয়ে লাগিয়ে দিয়ে বললেনঃ তুমি তোমার চাদরের দু’কিনারা তোমার গলায় একত্রিত কর। কারণ আসমানবাসীদের মধ্যে তোমার বিশেষ মর্যাদা রয়েছে। তুমি সেই ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত যে হাওযে কাওসারের নিকট আগমন করবে এমতাবস্থায় যে তার রগগুলো রক্ত প্রবাহিত করতে থাকবে। আমি বলবঃ তোমার সাথে এরূপ কে করেছে? তুমি বলবেঃ অমুক এবং অমুক। তা জিবরীল (আঃ) এর কথা। তা সে সময়ে যখন আসমান হতে আওয়াজ আসবেঃ সাবধান! উসমান প্রত্যেক অসহায় ব্যক্তির আমানাতদার।
অতঃপর তিনি আব্দুর রহমান ইবনু আউফকে ডেকে বললেনঃ তুমি আমীনুল্লাহ এবং আসমানের মধ্যে আমীন, আল্লাহ তা’আলা তোমাকে সত্য সত্যই তোমার সম্পদের দায়িত্বে নিয়োজিত করবেন। আমার নিকট তোমার জন্য দু’আ রয়েছে যাকে পিছিয়ে রেখেছি। আপনি আমার জন্য এখন করুন হে আল্লাহর রসূল! তিনি বললেনঃ হে আব্দুর রহমান আমানাত আমাকে উৎসাহিত করেছে আল্লাহ তোমার সম্পদ বৃদ্ধি করুন। তিনি বলেনঃ তিনি তার হাত নাড়াতে লাগলেন অতঃপর পিছু হটলেন এবং তার এবং উসমানের মাঝে ভাই-ভাইয়ের সম্পর্ক স্থাপন করলেন।
এরপর ত্বলহাহ এবং যুবায়ের আগমন করল। তিনি বললেনঃ তোমরা (দুজন) আমার নিকটে আস। তারা (দু’জন) তার নিকটে আসল। অতঃপর তিনি বললেনঃ তোমরা দু’জন আমার সঙ্গী ঈসা ইবনু মারইয়ামের সঙ্গীদের ন্যায়। অতঃপর তিনি তাদের দু’জনের মাঝে ভাই-ভাইয়ের সম্পর্ক স্থাপন করে দিলেন।
এরপর সা’দ ইবনু আবী অক্কাস এবং আম্মার ইবনু ইয়াসিরকে ডেকে বললেনঃ হে আম্মার! তোমাকে সীমালঙ্ঘনকারী দল হত্যা করবে। এরপর তিনি তাদের দু’জনের মাঝে ভাই-ভাইয়ের সম্পর্ক গড়ে দিলেন।
এরপর ওমায়ের আবুদ দারদা এবং সালমান ফারেসীকে ডেকে বললেনঃ হে সালমান! হে সালমান! তুমি আমার আহলুল বাইতের অন্তর্ভুক্ত। তোমাকে আল্লাহ প্রথম জ্ঞান, শেষ জ্ঞান, প্রথম কিতাব, শেষ কিতাব দান করেছেন। অতঃপর বললেনঃ তোমাকে কি দিকনির্দেশনা প্রদান করব না হে আবুদ দারদা? তিনি বললেনঃ জি হ্যাঁ, হে আল্লাহর রসূল! আমার পিতা-মাতা আপনার জন্য উৎসর্গিত হোক। তুমি যদি সমালোচনা কর তাহলে তারা তোমার সমালোচনা করবে আর তুমি যদি তাদেরকে ছেড়ে দাও তাহলে তারা তোমাকে ছাড়বে না। তুমি যদি তাদের থেকে পালিয়ে যাও তাহলে তারা তোমাকে পেয়ে যাবে (ধরে ফেলবে)। অতএব তুমি তোমার সম্মানকে তাদের ধার দাও তোমার দরিদ্রতার দিনের জন্য। এরপর তিনি তাদের দু’জনের ভাইয়ের সম্পর্ক স্থাপন করে দিলেন।
অতঃপর তিনি তার সাহাবীগণের চেহারার দিকে দৃষ্টি দিয়ে বললেনঃ তোমরা সুসংবাদ গ্রহণ কর, চোখে প্রশান্তি আনয়ন কর। তোমরাই সর্বপ্রথম হাওযের নিকট আগমন করবে আর তোমরাই সুউচ্চ ঘরসমূহে থাকবে।
এরপর তিনি আব্দুল্লাহ ইবনু উমারের দিকে দৃষ্টি দিয়ে বললেনঃ সমস্ত প্রশংসা সেই আল্লাহর জন্য যিনি গুমরাহি থেকে হেদায়েত দান করেন। এ সময় আলী (রাঃ) বললেনঃ হে আল্লাহর রসূল! আমার আত্মা বিদায় নিয়েছে আর আমার পিঠ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে আমাকে বাদে আপনার সাথীদের নিয়ে যা যা করলেন তা দেখে। যদি আলীর প্রতি রাগাম্বিত হয়ে তা হয় তাহলে আপনার ...। এ সময় রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ ... (আলোচ্য হাদীসটি)।
আমি (আলবানী) বলছিঃ এর সনদটি দুর্বল অন্ধকারচ্ছন্ন। কুরাইশী এক ব্যক্তির নাম নেয়া হয়নি। আর তার নিচের দু’জনের জীবনী কেউ আলোচনা করেননি। আর বর্ণনাকারী আব্দুল মু’মিন ইবনু আব্বাদ ইবনে আমর আবাদী সম্পর্কে ইবনু আবী হাতিম তার পিতার উদ্ধৃতিতে (৩/৬৬) বলেনঃ তিনি হাদীসের ক্ষেত্রে দুর্বল।
ইমাম বুখারী "আত্তার খুল কাবীর” গ্রন্থে (৩/২/১১৭) তার আরেকটি হাদীস উল্লেখ করে বলেনঃ তার মুতাবা’য়াত করা হয়নি।
আমি (আলবানী) বলছিঃ এ হাদীসটি বানোয়াট হওয়ার আলামত সুস্পষ্ট।
والذي بعثني بالحق ما أخرتك إلا لنفسي، فأنت عندي بمنزلة هارون من موسى، ووارثي ". فقال: يا رسول الله! وما أرث منك؟ قال: " ما أورثت الأنبياء ". قال: وما أورثت الأنبياء قبلك؟ قال: " كتاب الله وسنة نبيهم، وأنت معي في قصري في الجنة مع فاطمة ابنتي، وأنت أخي ورفيقي " ثم تلا رسول الله صلى الله عليه وسلم هذه الآية: " إخوانا على سرر متقابلين "، الأخلاء في الله ينظر بعضهم إلى بعض
موضوع
-
أخرجه الطبراني في " الكبير " (5146) من طريق عبد المؤمن بن عباد بن عمرو العبدي: حدثنا يزيد بن معن: حدثني عبد الله بن شرحبيل عن رجل من قريش عن زيد بن أبي أوفى قال: " دخلت على رسول الله صلى الله عليه وسلم في مسجد المدينة فجعل يقول: " أين فلان بن فلان؟ " فلم يزل يتفقدهم ويبعث إليهم حتى اجتمعوا عنده فقال: " إني محدثكم بحديث فاحفظوه، وعوه وحدثوا به من بعدكم: إن الله اصطفى من خلقه خلقا " ثم تلا هذه الآية: اللَّهُ يَصْطَفِي مِنَ الْمَلَائِكَةِ رُسُلًا وَمِنَ النَّاسِ " خلقا يدخلهم الجنة، وإني مصطف منكم من أحب أن أصطفيه ومواخ بينكم كما آخى الله بين الملائكة، قم يا أبا بكر! فقام فجثا بين يديه فقال: " إن لك عندي يدا، إن الله يجزيك بها، فلوكنت متخذا خليلا لاتخذتك خليلا، فأنت مني بمنزلة قميصي من جسدي ". وحرك قميصه بيده ". ثم قال: " ادن يا عمر! " فدنا فقال: " قد كنت شديد الشغب علينا أبا حفص! فدعوت الله أن يعز الدين بك أوبأبي جهل، ففعل الله ذلك بك، وكنت أحبهما إلي، فأنت معي في الجنة ثالث ثلاثة من هذه الأمة
ثم تنحى وآخى بينه وبين أبي بكر
ثم دعا عثمان فقال: " ادن يا عثمان ادن يا عثمان! " فلم يزل يدنومنه حتى ألصق ركبته بركبة رسول الله صلى الله عليه وسلم ثم نظر إليه ثم نظر إلى السماء فقال: " سبحان الله العظيم " ثلاث مرات ثم نظر إلى عثمان فإذا إزاره محلولة فزررها رسول الله صلى الله عليه وسلم بيده ثم قال: " اجمع عطفي ردائك على نحرك، فإن لك شأنا في أهل السماء، أنت ممن يرد علي الحوض وأوداجه تشخب دما فأقول: من فعل هذا بك؟ فتقول: فلان وفلان، وذلك كلام جبريل عليه السلام، وذلك إذ هتف من السماء: ألا إن عثمان أمين على كل خاذل
ثم دعا عبد الرحمن بن عوف فقال: " إن يا (كذا الأصل، ولعل الصواب: أنت) أمين الله والأمين في السماء يسلطك الله على مالك بالحق، أما إن لك عندي دعوة وقد أخرتها ". قال: خر لي يا رسول الله قال: " حملتني يا عبد الرحمن أمانة أكثر الله مالك
قال: وجعل يحرك يده ثم تنحى وآخى بينه وبين عثمان. ثم دخل طلحة والزبير فقال: " ادنوا مني " فدنوا منه فقال: " أنتما حواريي كحواريي عيسى ابن مريم عليه السلام " ثم آخى بينهما. ثم دعا سعيد بن أبي وقاص وعمار بن ياسر فقال: " يا عمار! تقتلك الفئة الباغية " ثم آخى بينهما. ثم دعا عويمرا أبا الدرداء وسلمان الفارسي فقال: " يا سلمان! أنت منا أهل
البيت، وقد آتاك الله العلم الأول والعلم الآخر والكتاب الأول والكتاب الآخر "، ثم قال: " ألا أرشدك يا أبا الدرداء؟ " قال: بلى بأبي أنت وأمي يا رسول الله. قال: " إن تنقد ينقدوك، وإن تتركهم لا يتركوك، وإن تهرب منهم يدركوك، فأقرضهم عرضك ليوم فقرك "، فآخى بينهما
ثم نظر في وجوه أصحابه فقال: " أبشروا وقروا عينا فأنتم أول من يرد علي الحوض وأنتم في أعلى الغرف ". ثم نظر إلى عبد الله بن عمر فقال: " الحمد لله الذي يهدي من الضلالة ". فقال علي: يا رسول الله! ذهب روحي، وانقطع ظهري حين رأيتك فعلت ما فعلت بأصحابك غيري، فإن كان من سخطة علي، فلك العتبى والكرامة، فقال: (فذكره)
قلت: وهذا إسناد ضعيف مظلم؛ الرجل من قريش لم يسم. واللذان دونه لم يترجم لهما أحد
وعبد المؤمن بن عباد بن عمرو العبدي، قال ابن أبي حاتم (3/66) عن أبيه: " ضعيف الحديث
وقال البخاري في " التاريخ الكبير " (3/2/117) وقد ساق له حديثا آخر: " لا يتابع عليه
قلت: ولوائح الصنع والوضع لائحة على هذا الحديث. والله أعلم