পরিচ্ছেদঃ
১৩৫৬। যে ব্যক্তি কুরআন পাঠ করে তার দ্বারা মানুষের নিকট থেকে খাদ্য গ্রহণ করে সে কিয়ামতের দিবসে এমতাবস্থায় আসবে যে, তার চেহারায় শুধুমাত্র হাড় থাকবে, মাংস থাকবে না। কুরআনের কারীগণ হচ্ছে তিন প্রকারেরঃ এক ব্যক্তি কুরআন পাঠ করে তাকে পুঁজি হিসেবে গ্রহণ করে তার দ্বারা বাদশাদেরকে নিজের দিকে আকৃষ্ট করার এবং তার দ্বারা লোকদের থেকে সম্পদ উপার্জন করার চেষ্টা করে। এক ব্যক্তি কুরআন পাঠ করে তার অক্ষরগুলো ঠিক রাখে আর তার শাস্তির বিধানগুলোকে নষ্ট করে। এ শ্রেণীর কুরআনের কারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে, আল্লাহ তাদের সংখ্যা যেন বৃদ্ধি না করেন। আর এক ব্যক্তি কুরআন পাঠ করে কুরআনের ঔষধকে তার হৃদয়ের রোগের উপর রেখে দেয়। অতঃপর এর দ্বারা রাতে না ঘুমিয়ে কাটিয়ে দেয় আর এর দ্বারা তার দিনকে পিপাসিত করে। তারা তাদের মসজিদসমূহে কুরআনের দ্বারা থাকেন। শত্রুদেরকে প্রতিহত করেন। আসমানের পানি নাযিল করেন। আল্লাহর কসম! কুরআনের এসব কারীগণ বেশী মর্যাদার অধিকারী লাল ম্যাচ থেকে।
হাদীসটি বানোয়াট।
হাদীসটি ইবনু হিব্বান "আয-যুয়াফা অলমাতরূকীন" গ্রন্থে (১/১৪৮) আহমাদ ইবনু মীসাম ইবনে আবী নু’য়াইম ফাযল ইবনু দুকায়েন হতে, তিনি আলী ইবনু কাদেম হতে, তিনি সুফইয়ান সাওরী হতে, তিনি আলকামাহ্ ইবনু মারসাদ হতে, তিনি সুলায়মান ইবনু বুরদাহ হতে, তিনি তার পিতা হতে মারফু হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
ইবনু হিব্বান বলেনঃ রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর হাদীস থেকে এর কোন ভিত্তি নেই। এ আহমাদ অপর বর্ণনাকারী আলী ইবনু কাদেম হতে বহু মুনকার হাদীস বর্ণনা করেছেন। আর তিনি ছাড়া অন্য নির্ভরযোগ্য বর্ণনাকারীদের উদ্ধৃতিতে উলটপালটকৃত বহু কিছু বর্ণনা করেছেন।
তার এ বক্তব্যকে হাফিয যাহাবী “আল-মীযান” গ্রন্থে আর হাফিয ইবনু হাজার আসকালানী “আললিসান” গ্রন্থে সমর্থন করেছেন। আর তাদের দু’জনের পূর্বে ইবনুল জাওযী "আলআহাদীসিলু ওয়াহিয়াহ" গ্রন্থে (১/১৪৮) হাদীসটি বর্ণনা করে বলেছেনঃ রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে এটি সহীহ্ হিসেবে বর্ণিত হয়নি। হাসান বাসরীর উদ্ধৃতিতে বর্ণনা করা হয়ে থাকে।
আমি (আলবানী) বলছিঃ এ হাদীসের মধ্যে বানোয়াটের আলামত সুস্পষ্ট। ইমাম সুয়ুতী হাদীসটিকে ইবনু হিব্বানের বর্ণনা থেকে "যাইলুল আহাদীসিল মওযু’য়াহ" গ্রন্থে (পৃঃ ২৯) উল্লেখ করে ভালো করেছেন। তিনি ইবনু হিব্বান এবং ইবনুল জাওযীর বক্তব্যও উল্লেখ করেছেন। আর ইবনু ইরাক "তানযীহুশ শারীয়াহ" গ্রন্থে (১/৩০০) তার অনুসরণ করেছেন।
এর পরেও সুয়ূতী হাদীসটির প্রথম বাক্যটিকে "জামেউস সাগীর” গ্রন্থে বাইহাকীর “শুয়াবুল ঈমান” গ্রন্থের বর্ণনা থেকে উল্লেখ করেছেন।
এ কারণে মানবী “ফায়যুল কাদীর” গ্রন্থে ইবনুল জাওযী এবং ইবনু হিব্বানের উক্তি উল্লেখ করে তার সমালোচনা করেছেন। এর পরেও মানবী ভুলে গিয়ে “আততায়সীর” গ্রন্থে শুধুমাত্র বলেছেনঃ হাদীসটির সনদ দুর্বল।
উল্লেখ্য “ফায়যুল কাদীর” গ্রন্থে দু’টি ভুল সংঘটিত হয়েছেঃ
১। ইবনু হিব্বান নামের স্থলে ইবনু আবী হাতিম লিখা হয়েছে। এটি মুদ্ৰণগত ভুল।
২। দ্বিতীয় ভুল হচ্ছে আহমাদ ইবনু মীসামের স্থলে লিখা হয়েছে আহমাদ ইবনু যাবীর।
من قرأ القرآن يتأكل به الناس جاء يوم القيامة ووجهه عظم لي عليه لحم. قراء القرآن ثلاثة: رجل قرأ القرآن فاتخذه بضاعته فاستجر به الملوك، واستمال به الناس. ورجل قرأ القرآن فأقام حروفه، وضيع حدوده، كثر هؤلاء من قراء القرآن لا كثرهم الله. ورجل قرأ القرآن فوضع دواء القرآن على داء قلبه، فأسهر به ليله، وأظمأ به نهاره، فأقاموا به في مساجدهم، بهؤلاء يدفع الله بهم البلاء، ويزيل الأعداء، وينزل غيث السماء، فوالله لهؤلاء من قرء القرآن أعز من الكبريت الأحمر
موضوع
-
أخرجه ابن حبان في " الضعفاء والمتروكين " (1/148) من طريق أحمد بن ميثم بن
أبي نعيم الفضل بن دكين: حدثنا علي بن قادم عن سفيان الثوري عن علقمة بن مرثد
عن سليمان بن بردة عن أبيه مرفوعا. وقال ابن حبان
" لا أصل له من حديث رسول الله صلى الله عليه وسلم، وأحمد هذا يروي عن علي بن
قادم المناكير الكثيرة، وعن غيره من الثقات الأشياء المقلوبة
وأقره الذهبي في " الميزان " والعسقلاني في " اللسان " ومن قبلهما ابن
الجوزي في " الأحاديث الواهية " وقد رواه (1/148) وقال
" لا يصح عن رسول الله صلى الله عليه وسلم، وإنما يروى عن الحسن البصري "
قلت: ولوائح الصنع والوضع ظاهرة عليه، ولقد أحسن السيوطي بإيراده إياه في
كتابه " ذيل الأحاديث الموضوعة " (ص 29) من رواية ابن حبان وساق كلامه عليه
، وكلام ابن الجوزي. وتبعه ابن عراق في " تنزيه الشريعة " (1/300)
ثم تناقض السيوطي فأورد الجملة الأولى من الحديث في " الجامع الصغير " من رواية
البيهقي في " شعب الإيمان " وزاد في " الجامع الكبير ": ابن حبان في
الضعفاء "، فتعقبه المناوي في فيض القدير " بما تقدم عن ابن حبان وابن الجوزي
، ثم نسي هذا أوتناساه فاقتصر في التيسير " على قوله: " إسناده ضعيف
(تنبيه) : وقع في " الفيض " خطآن
الأول: " ابن أبي حاتم " مكان " ابن حبان "، وهو خطأ مطبعي
والآخر: " ضبير " محل " ميثم "، وقام في نفسي أول الأمر أنه خطأ مطبعي أيضا
ولكني وجدته كذلك في مخطوطة الظاهرية من " فيض القدير ". والله أعلم