৩৫৪৪

পরিচ্ছেদঃ ৪. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - মুরতাদ এবং গোলযোগ সৃষ্টিকারীকে হত্যা করা প্রসঙ্গে

৩৫৪৪-[১২] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোনো মুসলিম ’লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়া আন্না মুহাম্মাদার্ রসূলুল্লা-হ’ (অর্থাৎ- আল্লাহ তা’আলা ছাড়া সত্যি কোনো মা’বূদ নেই এবং মুহাম্মাদ আল্লাহর রসূল)- এ কথার সাক্ষ্য দেয়, তাকে তিনটি কাজের যে কোনো একটি কাজ ব্যতীত খুন করা হালাল নয়। ১- বিবাহ করার পর যিনা করলে পাথর নিক্ষেপে তাকে হত্যা করা। ২- যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রসূলের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধারণ করে, তাকে হত্যা করা হবে অথবা শূলীতে চড়ানো হবে অথবা দেশ থেকে বিতাড়িত করা হবে। ৩- অনৈতিকভাবে কাউকে হত্যা করলে তার বিনিময়ে তাকে হত্যা করা হবে। (আবূ দাঊদ)[1]

وَعَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا يَحِلُّ دَمُ امْرِئٍ مُسْلِمٍ يَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ إِلَّا بِإِحْدَى ثَلَاثٍ زِنا بعدَ إِحْصانٍ فإِنَّهُ يُرجَمُ ورجلٌ خرَجَ مُحارِباً للَّهِ وَرَسُولِهِ فَإِنَّهُ يُقْتَلُ أَوْ يُصْلَبُ أَوْ يُنْفَى مِنَ الْأَرْضِ أَوْ يَقْتُلُ نَفْسًا فَيُقْتَلُ بِهَا» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

وعن عاىشة قالت قال رسول الله صلى الله عليه وسلم لا يحل دم امرى مسلم يشهد ان لا اله الا الله وان محمدا رسول الله الا باحدى ثلاث زنا بعد احصان فانه يرجم ورجل خرج محاربا لله ورسوله فانه يقتل او يصلب او ينفى من الارض او يقتل نفسا فيقتل بها رواه ابو داود

ব্যাখ্যা: (مُحارِبًا لِلّٰهِ) দ্বারা উদ্দেশ্য হলো ডাকাত ও রাষ্ট্রদ্রোহী। (يُقْتَلُ) শব্দটিকে কারী শর্তারোপ করেছেন অর্থাৎ «إِنْ قَتَلَ نَفْسًا بِلَا أَخْذ مَال» যদি সে মাল না নিয়ে কাউকে হত্যা করে তাহলে তাকে হত্যা করা হবে। এর উপর ভিত্তি করে «أو» হরফটি «تفصيل» তথা ব্যাখ্যা বিশ্লেষণের জন্য ব্যবহার হবে। আর যখন «أو» হরফটি تخير তথা বেছে নেয়ার স্বাধীনতার জন্য ব্যবহার হবে তখন শর্তযুক্ত করার প্রয়োজন নেই। যেমন এটা ইবনু ‘আব্বাস ও অন্যদের মাযহাব।

ইমাম মালিক বলেনঃ তাকে জীবিতাবস্থায় ক্রুশ বিদ্ধ করতে হবে এবং মৃত্যু নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত বিদ্ধ করতে থাকবে। ইমাম শাফি‘ঈ ও তার অনুসারীবৃন্দ বলেন যে, যদি হত্যা করে ও সম্পদ ছিনিয়ে নেয় তবে তাকে শূলে চড়াতে হবে ও হত্যা করতে হবে যাতে সেটা অন্যদের দৃষ্টান্তমূলক শিক্ষা হয়ে যায়।

আর নির্বাসন দেয়ার ব্যাপারে ইমাম শাফি‘ঈর মত হলো, সে একদেশ থেকে অন্যদেশ সদা পালিয়ে যেতে থাকবে। আবার কেউ বলেন- তার তাওবাহ্ যাহির না হওয়া পর্যন্ত সে নির্বাসনে আটক থাকবে।

কারী বলেনঃ আমাদের বিশুদ্ধ মত হলো যদি সে ভয় দেখানোয় না বেড়ে যায় তবে তাকে আটক রাখতে হবে। যা গৃহীত আল্লাহর বাণী থেকে- إِنَّمَا جَزَاءُ الَّذِينَ يُحَارِبُونَ اللهَ وَرَسُولَه

‘‘যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে।’’ (সূরা আল মায়িদাহ্ ৫ : ৩৩)

আর স্পষ্ট হলো «أَوْ يُنْفٰى مِنْ الْأَرْض» এর পূর্বে «أَوْ تُقْطَع يَده وَرِجْله مِنْ خِلَاف» বলা। যাতে হাদীসটি আয়াতের সামঞ্জস্যের অধিকারী হয়। সম্ভবত এই বিলুপ্তিটা রাবীর ভুলবশতঃ অথবা সংক্ষিপ্তকরণের জন্য ঘটে গেছে। আমরা আলোচনায় যা স্পষ্ট করলাম তা হলো আয়াত ও হাদীসে «أو» হরফটি «تفصيل» (বিশ্লেষণের) জন্য ব্যবহার হয়েছে। আবার কেউ বলেছেন এটা تخير তথা বেছে নেয়ার স্বাধীনতার জন্য ব্যবহার হয়েছে। আর ইমাম প্রত্যেক ছিনতাইকারীর জন্য চার শাস্তির মাঝে বাছাই করে নিবেন।

ইবনু জারীর বর্ণনা করেন যে, এ মতটি ইবনু ‘আব্বাস, সা‘ঈদ বিন মুসাইয়্যাব, মুজাহিদ, ‘আত্বা, হাসান বাসরী, নাসায়ী ও যহ্হাক (রহঃ)-এর। (‘আওনুল মা‘বূদ ৭ম খন্ড, হাঃ ৪৩৪৫)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৬: কিসাস (প্রতিশোধ) (كتاب القصاص)