৩৩৭৫

পরিচ্ছেদঃ ১৭. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - স্ত্রীর খোরপোষ ও দাস-দাসীর অধিকার

৩৩৭৫-[৩৪] আবূ বকর আস্ সিদ্দীক (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ দাস-দাসীর সাথে অসদাচরণকারী জান্নাতে প্রবেশ করবে না। সাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহর রসূল! আপনি কি আমাদেরকে ইতঃপূর্বে বলেননি যে, সকল উম্মাতের তুলনায় আপনার উম্মাতের মধ্যে অধিকহারে দাস-দাসী ও ইয়াতীম হবে? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, হ্যাঁ। তবে তোমরা যদি জান্নাতে প্রবেশ করতে চাও, তাহলে তাদেরকে স্বীয় সন্তান-সন্ততির মতো সদ্ব্যবহার কর। যা নিজেরা খাও তাদেরকেও তাই খাওয়াও। তারা জিজ্ঞেস করল, তারা আমাদের পার্থিব কি উপকারে আসবে? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, এমন ঘোড়সওয়ার, যা তুমি শত্রুর বিরুদ্ধে আল্লাহর পথে জিহাদের উদ্দেশে বেঁধে রাখ। আর এমন দাস, যা তোমার কাজকর্মের জন্য যথেষ্ট। আর যখন সে সালাত আদায় করে, তখন সে তোমার ভাই। (ইবনু মাজাহ)[1]

وَعَنْ أَبِي بَكْرٍ الصِّدِّيقِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا يَدْخُلُ الْجَنَّةَ سَيِّئُ الْمَلَكَةِ» . قَالُوا: يَا رَسُولَ اللَّهِ أَلَيْسَ أَخْبَرْتَنَا أَنَّ هَذِهِ الْأُمَّةَ أَكْثَرُ الْأُمَمِ مَمْلُوكِينَ وَيَتَامَى؟ قَالَ: «نَعَمْ فَأَكْرِمُوهُمْ كَكَرَامَةِ أَوْلَادِكُمْ وَأَطْعِمُوهُمْ مِمَّا تَأْكُلُونَ» . قَالُوا: فَمَا تنفعنا الدُّنْيَا؟ قَالَ: «فَرَسٌ تَرْتَبِطُهُ تُقَاتِلُ عَلَيْهِ فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَمَمْلُوكٌ يَكْفِيكَ فَإِذَا صَلَّى فَهُوَ أَخُوكَ» . رَوَاهُ ابْنُ مَاجَهْ

وعن ابي بكر الصديق رضي الله عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم لا يدخل الجنة سيى الملكة قالوا يا رسول الله اليس اخبرتنا ان هذه الامة اكثر الامم مملوكين ويتامى قال نعم فاكرموهم ككرامة اولادكم واطعموهم مما تاكلون قالوا فما تنفعنا الدنيا قال فرس ترتبطه تقاتل عليه في سبيل الله ومملوك يكفيك فاذا صلى فهو اخوك رواه ابن ماجه

ব্যাখ্যা: (سَيِّئُ الْمَلَكَةِ) ‘‘মালিকানায় মন্দ আচরণকারী’’। অর্থাৎ যে মালিক তার মালিকানাভুক্ত দাসদের সাথে অন্যায় আচরণ করে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না। জান্নাতে প্রবেশ করবে না বলতে প্রথমেই জান্নাতে প্রবেশ করবে না উদ্দেশ্য। তবে তার এই অন্যায় আচরণের শাস্তি ভোগ করার পর আল্লাহ তা‘আলার ইচ্ছায় সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। কেননা যার মাঝে অণু পরিমাণ ঈমান রয়েছে সেও জান্নাতে প্রবেশ করবে বলে আমরা রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বাণী থেকেই জানতে পারি। অর্থাৎ অন্যায়ের শাস্তি ভোগ করার পর সব মু’মিনই একদিন জান্নাতে প্রবেশ করবে।

(أَلَيْسَ أَخْبَرْتَنَا أَنَّ هٰذِهِ الْأُمَّةَ) ‘‘আপনি কি আমাদেরকে খবর দেননি যে,...’’ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে সাহাবীদের এই প্রশ্নের সারমর্ম হলো, হে রসূল! আপনি যখন বললেন, মালিকানাভুক্ত দাসদের সাথে অন্যায় আচরণকারী জান্নাতে প্রবেশ করবে না। অতএব আপনার এই উম্মাত যখন সবচেয়ে বেশি দাস-দাসীর অধিকারী তখন তাদের জন্য সবার সাথে নরম আচরণ সম্ভব নয়। তাই তারা স্বাভাবিকতই তাদের সাথে মন্দ আচরণ করবে। অতএব তাদের অবস্থা এবং শেষ পরিণাম কি হবে?
রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের প্রশ্নের উত্তরে বললেন, হ্যাঁ। তবে ভয়ের তো কারণ নেই। তোমরা জান্নাতে না যাওয়ার মন্দ পরিণাম থেকে বাঁচতে দাস-দাসীদের যথাযথ মর্যাদা রক্ষা কর, যেমন তোমাদের সন্তানদের যথাযথ মূল্যায়ন করে থাক এবং তাদেরকে খাওয়ায় যা তোমরা নিজে যা খাও।

সাহাবীরা আবার প্রশ্ন করলেন যার সার হলো, দুনিয়ায় দাসদের এমন মূল্যায়ন করতে হলে দুনিয়ায় তাদের দিয়ে আমাদের লাভ কি? রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের এই প্রশ্নের উত্তর একটি উপমা সহ পেশ করলেন। অর্থাৎ ঘোড়া যেমন আল্লাহ তা‘আলার রাস্তায় জিহাদের জন্য বেঁধে রেখেছো কেবল আখিরাতের সাওয়াব পাওয়ার জন্য, তবে তার দ্বারা দুনিয়ার উদ্দেশ্য না থাকলেও জিহাদে গিয়ে গনীমাতের মাল পাওয়ার মাধ্যমে দুনিয়াবী উদ্দেশ্য অর্জিত হয়ে যায়। ঠিক তদ্রূপ দাস থাকায় তুমি নিজে আখিরাতের কাজে মনোযোগ দিতে পারছো। সে না থাকলে তোমাকে আখিরাতের কর্ম ছেড়ে দুনিয়াবী অনেক কাজ-কর্ম করতে হতো। গোলাম তোমার সেই কাজের জন্য যথেষ্ট হওয়ায় তুমি নির্বিঘ্নে আখিরাতের কর্ম করতে পারছো। এটাই তোমার দুনিয়ার স্বার্থকতা। তারপর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি যেমন তার মাধ্যমে আখিরাতের কর্মের সুযোগ পাচ্ছ তাকেও আখিরাতের কর্ম সালাত আদায়ের সুযোগ দাও। দাস যখন সালাত আদায় করছে তখন সে তোমার ভাই।


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৩: বিবাহ (كتاب النكاح)