৩৩২৮

পরিচ্ছেদঃ ১৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - ‘ইদ্দত

৩৩২৮-[৫] মিস্ওয়ার ইবনু মাখরমাহ্ হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, সুবায়’আহ্ আল আসলামী (রাঃ)তার স্বামীর (সা’দ ইবনু খাওয়ালাহ্-এর) মৃত্যুর কয়েক দিন পরে সন্তান প্রসব করেন। এরপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে বিবাহের অনুমতি চাইলে তিনি তাকে অনুমতি দেন। অতঃপর তিনি অন্যত্র বিয়ে করেন। (বুখারী)[1]

بَابُ الْعِدَّةِ

وَعَنِ الْمِسْوَرِ بْنِ مَخْرَمَةَ: أَنَّ سُبَيْعَةَ الْأَسْلَمِيَّةَ نُفِسَتْ بَعْدَ وَفَاةِ زَوْجِهَا بِلَيَالٍ فَجَاءَتِ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَاسْتَأْذَنَتْهُ أَنْ تَنْكِحَ فأذِنَ لَهَا فنكحت. رَوَاهُ البُخَارِيّ

وعن المسور بن مخرمة ان سبيعة الاسلمية نفست بعد وفاة زوجها بليال فجاءت النبي صلى الله عليه وسلم فاستاذنته ان تنكح فاذن لها فنكحت رواه البخاري

ব্যাখ্যা: সুবায়‘আহ্ আল আসলামিয়্যাহ্-এর স্বামী মারা যাওয়ার কতদিন পর বাচ্চা প্রসব হয়েছিল- এ নিয়ে বিভিন্ন মতামত রয়েছে। এই বর্ণনায় কোনো সংখ্যা ছাড়া কয়েক রাতের কথা বলা হয়েছে। আবার বিশ, পনের, পঁচিশ, বিশ আরো কয়েক রাত, আধা মাস, পনের দিন অর্থাৎ আধা মাস এভাবে সর্বোচ্চ দুই মাসের বর্ণনা পাওয়া যায়। বিভিন্ন বর্ণনা থাকলেও সব বর্ণনা এ কথাটি নিশ্চিত করে যে, তার বাচ্চা প্রসব চার মাস দশ দিনের পূর্বে হয়েছে।

স্বামী মারা গেলে স্ত্রীর ‘ইদ্দাতের মেয়াদ চার মাস দশ দিন। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘‘আর তোমাদের মধ্যে যারা মৃত্যুবরণ করবে এবং নিজেদের স্ত্রীদেরকে ছেড়ে যাবে, তখন সে স্ত্রীদের কর্তব্য হলো নিজেকে চার মাস দশ দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করিয়ে রাখা।’’ (সূরা আল বাকারা ২ : ২৩৪)

‘উলামাদের যারা এ আয়াতটি ব্যাপক মনে করেন তাদের মতে স্বামী মারা যাওয়া যে কোনো ধরনের নারীকে চার মাস দশ দিন ‘ইদ্দত পালন করতে হবে। যেমন কোনো নারীকে গর্ভবতী রেখে যদি তার স্বামী মারা যায় এবং স্বামীর মৃত্যুর কিছুদিন পর অর্থাৎ চার মাস দশ দিনের পূর্বেই বাচ্চা প্রসব করে তবে তার ‘ইদ্দত শেষ হবে না। বরং তাকে চার মাস দশ দিন পূর্ণ করতে হবে।

অপরদিকে অধিকাংশ ‘আলিমদের মতে আয়াতটি ব্যাপক নয়। বরং যে নারী গর্ভবতী নয় তার ক্ষেত্রে এ আয়াতটি প্রযোজ্য। গর্ভবতী নারীর ‘ইদ্দত সর্বাবস্থায় তার বাচ্চা প্রসব। স্বামী মারা যাওয়ার পরপরই যদি স্ত্রী বাচ্চা প্রসব করে তবে তার ‘ইদ্দত শেষ হয়ে যাবে। বর্ণিত হাদীসটি তাদের পক্ষে প্রমাণ বহন করে। এ হাদীসের আলোকে তারা বলেন, গর্ভবতী নারীর ‘ইদ্দত বাচ্চা প্রসব। চাই ‘ইদ্দত স্বামীর মৃত্যুর কারণে হোক অথবা স্বামী তাকে তালাক দেয়ার কারণে হোক। তাদের মতে, কুরআনের আয়াত যেখানে চার মাস দশ দিনের কথা বলা হয়েছে তা ঐ নারীর জন্য যে গর্ভবতী নয়। তাদের আরো দলীল হচ্ছে, কুরআনে আল্লাহ তা‘আলা বলেনঃ ‘‘গর্ভবতী নারীদের ‘ইদ্দতকাল সন্তান প্রসব পর্যন্ত।’’ (সূরা আত্ব তালাক ৬৫ : ৪)

হাদীসের আলোকে তারা উপরের আয়াতটিকে ব্যাপক মনে না করে এই আয়াতটিকেই ব্যাপক মনে করেন এবং এই আয়াতের আলোকে গর্ভবতী নারী চাই ত্বলাকের কারণে ‘ইদ্দত পালন করুক বা স্বামী মারা যাওয়ার কারণে ‘ইদ্দত পালন করুক সন্তান প্রসবের মাধ্যমে তার ‘ইদ্দত শেষ হবে। তবে ‘আলী , ইবনু ‘আব্বাস -সহ অনেকের মতে, স্বামী মারা যাওয়া গর্ভবতী নারীর ‘ইদ্দত হবে দুই সময়ের দীর্ঘ সময়। অর্থাৎ যেটা পরে হবে সতর্কতা স্বরূপ সেটাকেই ‘ইদ্দত গণ্য করতে হবে। যেমন স্বামী মারা যাওয়ার পর চার মাস দশ দিন পূর্বেই যদি বাচ্চা প্রসব হয়ে যায় এক্ষেত্রে ‘ইদ্দত চার মাস দশ দিন পুরো করবে। আর যদি বাচ্চা প্রসব চার মাস দশ দিন পরে হয় তবে এই মেয়াদ পার হলে ‘ইদ্দত শেষ হবে না বরং বাচ্চা প্রসব হওয়ার পর ‘ইদ্দত শেষ হবে।

হাদীসে সন্তান প্রসব না বলে নিফাস হওয়া বলায় আরেকটি জিনিস বুঝা যায়, প্রসবের মাধ্যমে মহিলার ‘ইদ্দত শেষ হয়ে যাবে বাচ্চাটি যে কোনো প্রকৃতির হোক না কেন। পরিপূর্ণ বাচ্চা, অপরিপূর্ণ বাচ্চা এমনটি গোশতের টুকরো গর্ভপাত করলেও ‘ইদ্দত শেষ হয়ে যাবে। (ফাতহুল বারী ৯ম খন্ড, হাঃ ৫৩২০)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৩: বিবাহ (كتاب النكاح)