৩২৭৬

পরিচ্ছেদঃ ১১. প্রথম অনুচ্ছেদ - খুল্‘ই (খুলা‘ তালাক) ও তালাক প্রসঙ্গে

৩২৭৬-[৩] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে আল্লাহ ও তার রসূলকে গ্রহণের অধিকার দিয়েছেন, অতঃপর আমরা আল্লাহ ও তাঁর রসূলকে গ্রহণ করে নিয়েছি, তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এটা আমাদের ওপর (তালাক) হিসেবে গণ্য করেননি। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

بَابُ الْخُلْعِ وَالطَّلَاقِ

وَعَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ: خَيَّرَنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَاخْتَرْنَا اللَّهَ وَرَسُولَهُ فَلَمْ يَعُدَّ ذَلِكَ عَلَيْنَا شَيْئًا

وعن عاىشة قالت خيرنا رسول الله صلى الله عليه وسلم فاخترنا الله ورسوله فلم يعد ذلك علينا شيىا

ব্যাখ্যা: উম্মুল মু’মিনীন ‘আয়িশাহ্ (রাঃ)-এর বর্ণনা (خَيَّرَنَا رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের ইখতিয়ার দিয়েছেন, এর অর্থ হলো আমরা উম্মাহাতুল মু’মিনদের অধিকার বা স্বাধীনতা দিয়েছেন যে, ইচ্ছা করলে আমরা আল্লাহর রসূলকে গ্রহণ করে থাকতে পারি, ইচ্ছা করলে তাকে ত্যাগ করে চলে যেতে পারি।
সহীহ মুসলিমের এক বর্ণনায়: خَيَّرَ نِسَاءَه ‘তার স্ত্রীদের ইখতিয়ার দিয়েছিলেন’ বাক্য ব্যবহার হয়েছে, উভয়ের অর্থ ও উদ্দেশ্য একই।

‘আয়িশাহ্ (রাঃ) বলেনঃ (فَاخْتَرْنَا اللّٰهَ وَرَسُوْلَه فَلَمْ يَعُدَّ ذٰلِكَ عَلَيْنَا شَيْئًا) ‘আমরা (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর স্ত্রীগণ) আল্লাহ ও তাঁর রসূলকেই গ্রহণ করলাম, তিনি এটাকে আমাদের ওপর কোনো তালাক গণ্য করেননি। অর্থাৎ এ কথা দ্বারা স্ত্রী তালাক হয়ে যায় না। এক তালাক, দুই তালাক কিংবা তিন তালাক রজ্‘ই কিংবা বায়েন কোনো তালাকই হয় না। এটাই অধিকাংশ সাহাবীর মত। ইমাম আবূ হানীফাহ্, ইমাম শাফি‘ঈ- এই মতই ব্যক্ত করেছেন। পক্ষান্তরে সাহাবীগণের মধ্যে ‘আলী, যায়দ ইবনু সাবিত (রাঃ) ফুকাহাগণের মধ্যে ইমাম মালিক সহ কতিপয় ইমাম ও ফাকীহ বলেন, এতে এক তালাক রজ্‘ই পতিত হবে।

‘আল্লামা বাগাভী (রহঃ) নাবী পত্নীদের ইখতিয়ার প্রদান সংক্রান্ত আয়াতে তাফসীরে বলেন-

اخْتَلَفَ الْعُلَمَاءُ فِي هٰذَا الْخِيَارِ، هَلْ كَانَ ذٰلِكَ تَفْوِيضَ الطَّلَاقِ إِلَيْهِنَّ حَتّٰى يَقَعَ بِنَفْسِ الِاخْتِيَارِ أَمْ لَا؟

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর স্ত্রীদের যে ইখতিয়ার দিয়েছিলেন তা নিয়ে ‘উলামাদের মাঝে ইখতিলাফ রয়েছে। সেটা কি তাদের প্রতি ত্বলাকেব তাফবীয ছিল যে, তারা ওটা গ্রহণ করলে তা পতিত হতো আর গ্রহণ না করলে পতিত হতো না?

হাসান বাসরী, কাতাদাহ প্রমুখসহ অধিকাংশ আহলে ‘ইলমের মত হলো, কুরআনের এ আয়াতে ত্বলাকে তাফবীযের কথা বলা হয়নি। বরং এখানে নাবী পত্নীগণকে দুনিয়ার সুখ সামগ্রী অথবা আল্লাহ ও তাঁর রসূল (তথা আখিরাত) এ দুয়ের যে কোনো একটিকে গ্রহণের ইখতিয়ার প্রদান করা হয়েছে। যার কারণে এর তাৎক্ষণিক জওয়াব নয়, বরং চিন্তা ভাবনা করে প্রয়োজনে অভিভাবকের সাথে পরামর্শ করে সিদ্ধান্তের কথা বলা হয়েছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘আয়িশাহ্ (রাঃ)-কে বলেন, তুমি তাড়াহুড়া করো না, বরং ধীরস্থির মতো তোমার পিতা-মাতার সাথে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নিবে। এটা যদি ত্বলাকে তাফবীয হতো তাহলে উত্তরটি তাৎক্ষণিক প্রয়োজন ছিল। (মিরকাতুল মাফাতীহ; ফাতহুল বারী ৯ম খন্ড, হাঃ ৫২৬২)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৩: বিবাহ (كتاب النكاح)