৩০১৩

পরিচ্ছেদঃ ১৬. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - দানসমূহ

৩০১৩-[৬] জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা ’রুকবা-’রূপে ও ’উমরা-’রূপে (ফেরতের প্রত্যাশায়) দান করো না। যে ব্যক্তিকে ’রুকবা-’ বা ’উমরা-’রূপে কোনো জিনিস দান করা হলে, সেটা তার ওয়ারিসগণই পাবে। (আবূ দাঊদ)[1]

عَنْ جَابِرٌ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «لَا ترقبوا أَو لَا تُعْمِرُوا فَمَنْ أُرْقِبَ شَيْئًا أَوْ أُعْمِرَ فَهِيَ لوَرثَته» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

عن جابر عن النبي صلى الله عليه وسلم قال لا ترقبوا او لا تعمروا فمن ارقب شيىا او اعمر فهي لورثته رواه ابو داود

ব্যাখ্যা: (لَا تُرْقِبُوْا) ক্রিয়াটি الرقب শব্দ হতে, এভাবে اَلْمُرَاقَبَةِ ক্রিয়ামূল হতে এসেছে। রুকবার ধরণ হলো- ব্যক্তির বলা, আমি এ বাড়ীটিকে তোমাকে বাস করার জন্য দান করলাম। সুতরাং তোমার পূর্বে আমি যদি মারা যাই তাহলে বাড়ীটি তোমার জন্য সাব্যস্ত হবে, পক্ষান্তরে তুমি যদি আমার পূর্বে মারা যাও তাহলে বাড়ীটি আমার কাছে ফিরে আসবে। ক্রিয়াটি المراقبة ক্রিয়ামূল হতে এসেছে- কেননা চুক্তিতে আবদ্ধ ব্যক্তিদ্বয়ের প্রত্যেকে তার সাথীর মৃত্যুর প্রতি লক্ষ্য রাখে। এ হাদীসটি عمرى এবং رقبى সম্পর্কে নিষেধাজ্ঞা স্বরূপ। অর্থাৎ- তোমরা ‘উমরা এবং রুকবা তথা জীবনস্বত্ব দানের মাধ্যমে তোমাদের সম্পদকে নষ্ট করো না এবং তোমাদের কর্তৃত্ব হতে তা বের করে দিয়ো না। সুতরাং এমন এক কর্ম সম্পর্কে নিষেধাজ্ঞা এসেছে যা করলে কোনো উপকার বয়ে আনবে না, আর তোমরা যদি তা কর তাহলে তা বিশুদ্ধ হবে। একমতে বলা হয়েছে- এ নিষেধাজ্ঞা ছিল বৈধ সাব্যস্ত হওয়ার পূর্বে। অতঃপর তা বৈধতার দলীলাদি দ্বারা রহিত হয়েছে। আর আল্লাহ সর্বজ্ঞাত। এভাবে ফাতহুল ওয়াদূদে আছে। আর মুসলিমে জাবির হতে আবুয্ যুবায়র-এর সানাদে আছে- নিশ্চয় তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ‘‘তোমরা তোমাদের সম্পদ তোমাদের কাছে ধরে রাখো, তা নষ্ট করো না। কেননা যে ব্যক্তি জীবনস্বত্ব দান করবে তাহলে তা ঐ ব্যক্তির জন্য সাব্যস্ত হবে যাকে তা জীবনস্বত্ব স্বরূপ দান করা হয়েছে, তা দান গ্রহীতা ব্যক্তির জীবদ্দশায় এবং মৃত্যুবস্থায় তার পরবর্তীদের জন্য।’’ এ বর্ণনাটি প্রথম অর্থটিকে সমর্থন করছে।

(لِوَرَثَتِه) ত্বীবী বলেন, (لِوَرَثَتِه) এর সর্বনামটি যাকে জীবনস্বত্ব দান করা হয়েছে তার জন্য ব্যবহৃত। আর (فَمَنْ أُرْقِبَ) এর মাঝে فاء বর্ণটি নিষেধাজ্ঞার কারণ বর্ণনা করছে। অর্থাৎ তোমরা ধারণা বশবর্তী হয়ে এবং প্রতারিত হয়ে ‘উমরা এবং রুকবা পন্থায় জীবনস্বত্ব দান করো না। আর এ ধারণা করো না যে, দান করা হয়েছে তা গ্রহীতাকে তার মালিক বানাবে না, তাই তার মৃত্যুর পর তা তোমাদের কাছে ফিরে আসবে। কেননা যে ব্যক্তিকে ‘উমরা এবং রুকবা পন্থায় কোনো কিছু দান করা হবে, তা পররর্তীতে ঐ ব্যক্তির উত্তরাধিকারীদের জন্য সাব্যস্ত হবে। সুতরাং এর উপর ভিত্তি করে ঐ ব্যাপারে জুমহূরের মতের সঠিকতা নিশ্চিত হচ্ছে যে, জীবনস্বত্ব দান ঐ ব্যক্তির জন্য সাব্যস্ত যাকে দান করা হয়েছে। নিঃসন্দেহে সে এ সম্পদের পূর্ণাঙ্গ মালিকানা লাভ করবে এবং বিক্রয় ও অন্য সকল পন্থায় এতে পূর্ণাঙ্গ কর্তৃত্ব করবে, তারপরে সে বস্তু তার উত্তরাধিকারীদের জন্য সাব্যস্ত হবে। (‘আওনুল মা‘বূদ ৬ষ্ঠ খন্ড, হাঃ ৩৫৫৩)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১২: ক্রয়-বিক্রয় (ব্যবসা) (كتاب البيوع)