২৯৭৯

পরিচ্ছেদঃ ১৩. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - বাগান ও জমিনের বর্গা (পরস্পর সেচকার্য করা ও ভাগে কৃষিকাজ, বর্গাচাষ করা)

২৯৭৯-[৮] রাফি’ ইবনু খাদীজ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি অনুমতি ছাড়া কোনো সম্প্রদায়ের জমিনে কৃষিকাজ করে, তার জন্য কৃষির কোনো অংশ নেই। সে তার খরচ পাবে মাত্র। (তিরমিযী ও আবূ দাঊদ; ইমাম তিরমিযী বলেন, হাদীসটি গরীব)[1]

عَنْ رَافِعِ بْنِ خَدِيجٍ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «مَنْ زَرَعَ فِي أَرْضِ قَوْمٍ بِغَيْرِ إِذْنِهِمْ فَلَيْسَ لَهُ مِنَ الزَّرْعِ شَيْءٌ وَلَهُ نَفَقَتُهُ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَأَبُو دَاوُدَ وَقَالَ التِّرْمِذِيُّ: هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ

عن رافع بن خديج عن النبي صلى الله عليه وسلم قال من زرع في ارض قوم بغير اذنهم فليس له من الزرع شيء وله نفقته رواه الترمذي وابو داود وقال الترمذي هذا حديث غريب

ব্যাখ্যা: (مَنْ زَرَعَ فِى ارْضِ قَوْمٍ) এতে ঐ ব্যাপারে প্রমাণ রয়েছে যে, যে ব্যক্তি কোনো জমি জবরদখল করবে এবং তাতে ফসল ফলাবে তখন ফসল জমির মালিকের জন্য সাব্যস্ত হবে এবং জবরদখলকারীর জন্য যা সে জমিনে খরচ করেছে, জমির মালিক তা তাকে অর্পণ করবে। তিরমিযী বলেন, কতিপয় বিদ্বানদের কাছে এ হাদীসের উপর ‘আমল আছে। আর তা হলো আহমাদ ও ইসহক-এর মত। ইবনু রিসলান শারহুস্ সুনানে বলেন, এর মাধ্যমে আহমাদ ঐ ব্যাপারে (যেমন তিরমিযী বলেন) দলীল গ্রহণ করেছেন যে, যে ব্যক্তি অন্যের ভূমিতে বীজ ফলাবে এবং ভূমির মালিক তার ভূমি ফেরত চাইবে তখন তা ঐ অবস্থা হতে মুক্ত না, হয়তো ভূমির মালিক তার ভূমি ফেরত চাওয়া এবং তা শস্য কাটার পর গ্রহণ করা অথবা জমির মালিক তার জমি ফেরত চাওয়া এবং শস্য কাটার পূর্বে শস্য জমিনে দণ্ডায়মান থাকা। অতঃপর মালিক যদি তার জমি গ্রহণ করে তাহলে শস্য কাটার পর সে জমির অধিকারী হবে। কেননা শস্য জমি জবরদখলকারীর। এক্ষেত্রে কোনো মতানৈক্য আছে বলে আমরা জানি না। আর ওটা এ কারণে যে, তা তার সম্পদের বৃদ্ধি জমি সোপর্দ করার সময় পর্যন্ত তার ওপর জমির ভাড়া, জমির ক্ষতি সাধনের জরিমানা বর্তাবে এবং খোদাই করা জমি সমান করে দিতে হবে। আর জমির মালিক যদি জবরদখলকারী হতে জমি গ্রহণ করে এবং জমিতে শস্য বিদ্যমান থাকে তখন জমির মালিক জবরদখলকারীকে জমির শস্য উপড়ানোর ব্যাপারে জবরদস্তি করার ক্ষমতা রাখবে না। মালিক জবরদখলকারীকে তার খরচ দিয়ে দেয়া, শস্য তার জন্য থেকে যাওয়া অথবা শস্য জবরদখলকারীর জন্য ছেড়ে দেয়া এ দু’য়ের মাঝে মালিককে ইচ্ছার স্বাধীনতা দেয়া হবে। আর ‘উবায়দ এ মত পোষণ করেছেন।

শাফি‘ঈ এবং অধিকাংশ ফাকীহগণ বলেন, নিশ্চয় মালিক ফসল উপড়ানোর ব্যাপারে জবরদখলকারীকে জবরদস্তি করার ক্ষমতা রাখবেন, তারা আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর (لَيْسَ لِعِرْقِ ظَالِم حَقّ) ‘‘অত্যাচারী মেহনতের কোনো অধিকার নেই’’ এ বাণীর মাধ্যমে দলীল উপস্থাপন করেছেন। সর্বাবস্থায় তাদের মতে শস্য শস্যবীজের মালিকের জন্য সাব্যস্ত হবে। এর উপরেই জমি ভাড়া দেয়া হবে। পূর্ববর্তীরা যার মাধ্যমে দলীল গ্রহণ করেছে তার সামষ্টিক হলো আহমাদ এবং আবূ দাঊদ যা সংকলন করেছে, নিশ্চয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিজিত অঞ্চলে শস্য দেখে মুগ্ধ হলেন...... আল হাদীস। অত্র হাদীস ঐ কথার উপর প্রমাণ বহন করছে যে শস্য জমির অনুসরণ করবে।
 

(وَلَه نَفَقَتُه) অর্থাৎ- জমি জবরদখলকারীর জন্য তাই থাকবে যা জমি চাষ, পানি সেচ এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে যোগান স্বরূপ জমির উপর যা ব্যয় করেছে। (আওনুল মা‘বূদ ৬ষ্ঠ খন্ড, হাঃ ৩৪০০)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১২: ক্রয়-বিক্রয় (ব্যবসা) (كتاب البيوع)