২৭৯১

পরিচ্ছেদঃ ২. প্রথম অনুচ্ছেদ - ক্রয়-বিক্রয় ও লেনদেনে সহনশীলতা

২৭৯১-[২] হুযায়ফাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের পূর্ববর্তী উম্মাতের এক লোকের কাছে মৃত্যুর মালাক (ফেরেশতা) তার রূহ কবজ করার জন্য উপস্থিত হলেন। ওই লোকটিকে জিজ্ঞেস করা হলো, তুমি কি কোনো বিশেষ নেক ’আমল করেছো? লোকটি বললো, আমার স্মরণ নেই। লোকটিকে বলা হলো, তুমি চিন্তা করো। অতঃপর লোকটি বললো, একটি কাজ ছাড়া এমন কোনো ভালো কাজের কথা আমার স্মরণে আসে না। আর তা হলো দুনিয়ার জীবনে আমি লোকেদের সাথে ব্যবসা করতাম, ব্যবসায়ী আদান প্রদানের ক্ষেত্রে আমি লোকেদের সাথে সহানুভূতিশীল থাকতাম। আমার দেনাদার ধনী লোক হলেও আমি তাকে সময় দান করতাম, আর দেনাদার গরীব-লোক হলে আমি তাকে আমার পাওনা মাফ করে দিতাম। এ (নেক) ’আমলের কারণে আল্লাহ তা’আলা তাকে জান্নাতে প্রবেশ করালেন। (বুখারী, মুসলিম)[1]

بَابُ الْمُسَاهَلَةِ فِى الْمُعَامَلَةِ

وَعَنْ حُذَيْفَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنَّ رَجُلًا كَانَ فِيمَنْ قَبْلَكُمْ أَتَاهُ الْمَلَكُ لِيَقْبِضَ رُوحَهُ فَقيل لَهُ: هَل علمت مَنْ خَيْرٍ؟ قَالَ: مَا أَعْلَمُ. قِيلَ لَهُ انْظُرْ قَالَ: مَا أَعْلَمُ شَيْئًا غَيْرَ أَنِّي كُنْتُ أُبَايِعُ النَّاسَ فِي الدُّنْيَا وَأُجَازِيهِمْ فَأُنْظِرُ الْمُوسِرَ وَأَتَجَاوَزُ عَنِ الْمُعْسِرِ فَأَدْخَلَهُ اللَّهُ الْجَنَّةَ

وعن حذيفة قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم ان رجلا كان فيمن قبلكم اتاه الملك ليقبض روحه فقيل له هل علمت من خير قال ما اعلم قيل له انظر قال ما اعلم شيىا غير اني كنت ابايع الناس في الدنيا واجازيهم فانظر الموسر واتجاوز عن المعسر فادخله الله الجنة

ব্যাখ্যা: (فَقِيْلَ لَه : هَلْ عَمِلْتَ مِنْ خَيْرٍ؟) ‘‘তাকে প্রশ্ন করা হলো, তুমি কি কোনো ভালো কাজ করেছ?’’ তাকে কখন এ প্রশ্ন করা হয়েছিল- এ প্রসঙ্গে ‘উলামাগণের মতানৈক্য রয়েছে। হাদীসের প্রকাশমান অর্থ দ্বারা বুঝা যায় মৃত্যুর সময় তাকে এ প্রশ্ন করা হয়েছিল। ‘আল্লামা মুযহির বলেনঃ এ প্রশ্ন ছিল কবরে। ত্বীবী (রহঃ) বলেনঃ কিয়ামত দিবসে তাকে এ প্রশ্ন করা হবে। (মিরকাতুল মাফাতীহ)

(قِيلَ لَهُ انْظُرْ) ‘‘তাকে বলা হবে তুমি দেখ’’ অর্থাৎ তুমি চিন্তা করে দেখ কখনো ভালো কাজ করেছ কিনা?

(أُجَازِيهِمْ فَأُنْظِرُ الْمُوسِرَ وَأَتَجَاوَزُ عَنِ الْمُعْسِرِ) ‘‘তাদের সাথে ভালো আচরণ করতাম।’’ ঋণী ব্যক্তির নিকট হতে পাওনা পরিশোধের সময় ভালো আচরণ করতাম। পাওনা পরিশোধ করতে সক্ষম এমন ব্যক্তিকেও আমি তার ঋণ পরিশোধের জন্য সময় দিতাম। পক্ষান্তরে দরিদ্র ব্যক্তি ঋণ পরিশোধ করতে অক্ষম হলে তাকে আমি পাওনার অংশবিশেষ অথবা পূর্ণ পাওনাটাই ছেড়ে দিতাম। ‘আল্লামা নববী বলেনঃ অত্র হাদীসে ঋণ পরিশোধে সক্ষম ব্যক্তিকে সময় দেয়া আর অক্ষম ব্যক্তিকে ঋণ মাফ করে দেয়ার ফযীলত বর্ণিত হয়েছে। (শারহ্ মুসলিম ৯/১০ খন্ড, হাঃ ১৫৬০)

হাদীসের শিক্ষাঃ কোনো প্রকার ভালো কাজকেই অবজ্ঞা করতে নেই, যদিও তা সামান্য হয়। কেননা অল্প ভালো কাজই তার জন্য সৌভাগ্য অথবা দয়া অর্জনের কারণ হতে পারে। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১২: ক্রয়-বিক্রয় (ব্যবসা) (كتاب البيوع)