২৭৫৬

পরিচ্ছেদঃ ১৫. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - মদীনার হারামকে আল্লাহ তা‘আলা কর্তৃক সংরক্ষণ প্রসঙ্গে

২৭৫৬-[২৯] ’আব্দুল্লাহ ইবনু ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি মারফূ’ হিসেবে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণনা করেন, তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আমার মৃত্যুর পর হজ্জ/হজ সম্পন্ন করে আমার (কবর) যিয়ারত করবে, সে ঐ ব্যক্তির ন্যায় যে আমার জীবিতাবস্থায় আমার সাথেই যিয়ারত করেছে। (অত্র হাদীস দু’টি ইমাম বায়হাক্বী ’’শু’আবুল ঈমান’’-এ বর্ণনা করেছেন)[1]

وَعَنِ ابْنِ عُمَرَ مَرْفُوعًا: «مَنْ حَجَّ فَزَارَ قَبْرِي بَعْدَ مَوْتِي كَانَ كَمَنْ زَارَنِي فِي حَياتِي» . رَوَاهُمَا الْبَيْهَقِيّ فِي شعب الْإِيمَان

وعن ابن عمر مرفوعا من حج فزار قبري بعد موتي كان كمن زارني في حياتي رواهما البيهقي في شعب الايمان

ব্যাখ্যা: নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বাণীঃ ‘‘যে ব্যক্তি হজ্জ/হজ করল। অতঃপর আমার মৃত্যুর পর আমার কবর যিয়ারত করল, সে আমার জীবদ্দশাকালে আমার সাথে সাক্ষাতকারীর ন্যায়।’’ মুল্লা ‘আলী কারী (রহঃ) বলেন, فَزَارَ শব্দের মধ্যে ف অক্ষরটি তা‘ক্বীবিয়াহ্ বা অনুবর্তী অর্থে ব্যবহার হয়েছে। যার ফলে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কবর যিয়ারতটি হজ্জের পরেই হবে আগে নয়। স্বাভাবিক কায়দার চাহিদাও ফারযের পরই সুন্নাতের স্থান। এ ব্যাপারে ইমাম আবূ হানীফা (রহঃ) থেকে একটি সুন্দর ব্যাখ্যা উল্লেখ করেছে ইমাম হাসান (রহঃ)। তিনি বলেছেনঃ যদি হজ্জটি ফরয হজ্জ/হজ হয়ে থাকে তাহলে হাজীর জন্য সর্বোত্তম হলো আগে হজ্জ সম্পন্ন করে নিবে, এরপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কবর যিয়ারতে উদ্যোগ গ্রহণ করতে। আর যদি হজ্জ নফল হয়ে থাকে তবে তার ইচ্ছা যে কোনটি আগে করতে পারে।

প্রকাশ যে, হাদীসের প্রকাশ্য দৃষ্টিভঙ্গিতে প্রথমে হজ্জ করাই উত্তম, কেননা আল্লাহর হাক্ব সর্বদাই অগ্রণীয়। যেমন- মসজিদে নাবাবীতে ঢুকে কবর যিয়ারতের আগে তাহিয়্যাতুল মাসজিদ পড়ে নিতে হয়। আল্লামা ‘উবায়দুল্লাহ মুবারকপূরী (রহঃ) বলেনঃ সালফে সলিহীন সাহাবী এবং তাবি‘ঈ যারা মদীনায় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কবর যিয়ারতের মাধ্যমে শুরু করেছেন বলে উল্লেখ রয়েছে, সেটা ইহরাম বাঁধা উত্তম। আর তিনি মদীনার যুল্ হুলায়ফাহ্ থেকে ইহরাম বেঁধেছেন। এ অবস্থায় মদীনায় ইহরামের পূর্বে কবর যিয়ারত করে নিবে। এ উত্তম কেবল ঐ ব্যক্তিদের জন্য যাদের মীকাত যুল্ হুলায়ফাহ্, আর মদীনাহ্ হয়েই তো সেখানে যেতে হয়।

এ হাদীস দ্বারা সর্বসম্মতভাবে কবর যিয়ারতের ফাযীলাত স্বীকৃত হয়। কিন্তু নিসক কবর যিয়ারতের উদ্দেশে সফর করা বৈধ কি-না তা নিয়ে ‘উলামাগণের মাঝে মতবিরোধ রয়েছে। ইমাম সুবকী নিসক কবর যিয়ারতের উদ্দেশে সফর করাকে বৈধ বলে মনে করেন।

পক্ষান্তরে আরেক শ্রেণী তথা জমহূর সাহাবী, তাবি‘ঈ এবং আয়িম্মায়ে কিরামের মতে নিসক (রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর) কবর যিয়ারতের উদ্দেশে সফর করা বৈধ নয়। কেননা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সর্বজনবিদিত হাদীসঃ لا تشدوا الرحال إلا إلى ثلاثة مساجد، إلخ তিনটি মাসজিদ ছাড়া কোথাও সফরের জন্য বাহন বাঁধবে না.....। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কর্ম দ্বারাও কোন কবর যিয়ারতের উদ্দেশে সফর প্রমাণিত হয়নি, সুতরাং নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ক্ববরের জন্যও সফর বৈধ নয়।


হাদিসের মানঃ জাল (Fake)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১১: হজ্জ (كتاب المناسك)