২৬৭১

পরিচ্ছেদঃ ১০. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - কুরবানীর দিনের ভাষণ, আইয়্যামে তাশরীক্বে পাথর মারা ও বিদায়ী তাওয়াফ করা

২৬৭১-[১৩] রাফি’ ইবনু ’আমর আল মুযানী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে একটি সাদা-কালো মিশ্রিত খচ্চরের উপর থেকে মিনায় ভাষণ দিতে দেখেছি, তখন সূর্য উপরে উঠেছিল। ’আলী(রাঃ) তাঁর বক্তব্যকে লোকদের কাছে পৌঁছাচ্ছিলেন (উচ্চস্বরে ব্যাখ্যা দিচ্ছিলেন)। আর তখন লোকজনের মধ্যে কেউ দাঁড়ানো, কেউ বসা ছিল। (আবূ দাঊদ)[1]

وَعَن رافعِ بنِ عمروٍ والمُزَني قَالَ: رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَخْطُبُ النَّاسَ بِمِنًى حِينَ ارْتَفَعَ الضُّحَى عَلَى بَغْلَةٍ شَهْبَاءَ وَعَلِيٌّ يُعَبِّرُ عَنْهُ وَالنَّاسُ بَين قَائِم وقاعد. رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

وعن رافع بن عمرو والمزني قال رايت رسول الله صلى الله عليه وسلم يخطب الناس بمنى حين ارتفع الضحى على بغلة شهباء وعلي يعبر عنه والناس بين قاىم وقاعد رواه ابو داود

ব্যাখ্যা: (وَعَنْ رَافِعِ بْنِ عَمْرِو الْمُزَنِىْ) তাকে মুযানী বলা হয় মুযায়নাহ্ গোত্রের প্রতি সম্পৃক্ত করে। তার নাম হচ্ছে রাফি' ইবনু ‘আমর ইবনু হিলাল আল মুযানী তার ভাইয়ের ‘আয়িদ বিন ‘আমর তারা দু’ভাই এবং তাদের পিতা সকলেই সাহাবী। ইবনু ‘আবদুল বার (রহঃ) বলেন, রাফি'-এর নিকট থেকে ‘আমর ইবনু সুলায়ম আল মুযানী ও হিলাল ইবনু ‘আমির আল মুযানী হাদীস বর্ণনা করেছেন। হাফিয ইবনু হাজার আসকালানী (রহঃ) তার ‘‘তাহযীবুত্ তাহযীব’’ নামক কিতাবে বলেন, রাফি‘ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে দু’টি হাদীস বর্ণনা করেছেন তার একটি হল (العجوة من الجنة) অর্থাৎ- আজ্ওয়াহ্ খেজুর জান্নাতী ফলমূলের অন্তর্গত। এ হাদীসটিকে ইমাম ইবনু মাজাহ বর্ণনা করেছেন। দু’টি বিদায় হজ্জে তার অংশগ্রহণের হাদীস যা ইমাম আবূ দাঊদ ও ইমাম নাসায়ী বর্ণনা করেছেন।

ইবনু ‘আসাকির (রহঃ) বলেন, বিদায় হজ্জের সময় রাফি' (রাঃ)-এর বয়স পাঁচ অথবা ছয় বছর ছিল।

(يَخْطُبُ النَّاسَ) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ খুতবাটি মিনায় দিয়েছিলেন দিনের শুরুতে, এর প্রমাণ হলো হাদীসের পরবর্তী অংশ, (حين ارتفع الضحى على بغلة الشهباء) অর্থাৎ- যখন সকাল শুরু হল তখন শাহবা খচ্চরের পিঠের উপর বসে খুৎবা দিলেন।

‘শাহবা’ অর্থ হল সামান্য কালো মিশ্রিত সাদা। ‘আল্লামা মুল্লা ‘আলী কারী হানাফী (রহঃ) বলেন, এ হাদীসের সাথে কুদামাহ্ বর্ণিত হাদীস,

( رأيت النبى ﷺ يرمى الجمرة يوم النحر على ناقة صهباء)

আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে দেখেছি তিনি শাহবা উটের পিঠে উঠে খুৎবা দিয়েছেন। কারণ উপরের হাদীসে খচ্চর আর কুদামাহ্’র হাদীসে উটের কথা আছে তাহলে কি খুৎবা দু’টি ছিল না একটি? এর সমাধানে আমি বলবো, ‘উবায়দুল্লাহ মুবারকপূরী (রহঃ) এ ব্যাপারে আরো একটি হাদীসে আছে যা ইমাম আহমাদ ও ইমাম আবূ দাঊদ হিরমাস ইবনু যিয়াদ আল বাহিলী থেকে বর্ণনা করেছেন, হাদীসটি হলো,

رأيت النبى صلى الله عليه وسلم يخطب الناس على ناقته العضباء يوم الاضحى.

আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে দেখেছি ইয়াওমুল আযহা তথা কুরবানীর ঈদের দিন ‘আয্বাহ্ উটের উপর বসে খুৎবা দিয়েছেন। এটা হচ্ছে তথা ৩য় নম্বরটি খুত্বাহটি হলো হজ্জের খুৎবা। আর উপরোক্ত গিয়েই হয়তো রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শুরু করেছিলেন। উটের উপর তারপর পরিবর্তন করে খচ্চরের উপর আরোহণ করেছেন এবং একই সময়ে দু’টি খুৎবা হওয়াও সম্ভব। তার একটি খুৎবা ছিল শুধু মানুষকে শিক্ষা দেয়ার উদ্দেশে তা হজ্জের খুতবার অন্তর্ভুক্ত ছিল না।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১১: হজ্জ (كتاب المناسك)