২৫৮০

পরিচ্ছেদঃ ৩. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - মক্কায় প্রবেশ করা ও তাওয়াফ প্রসঙ্গে

২৫৮০-[২০] ’উবায়দ ইবনু উমায়র (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ’আব্দুল্লাহ ইবনু ’উমার (রাঃ) দু’ রুকনের (হাজারে আসওয়াদ ও রুকনে ইয়ামানীর) কাছে যেভাবে ভীড় করতেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাহাবীদের আর কাউকে এমনভাবে (প্রতিযোগিতামূলকভাবে) ভীড় করতে দেখিনি। ইবনু ’উমার(রাঃ) বলেন, আমি যদি এরূপ করি (তাতে দোষের কোন বিষয় নয়), কেননা আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, নিশ্চয়ই এদের স্পর্শ করা গুনাহের কাফফারাহ্। আমি তাঁকে (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে) আরো বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি বায়তুল্লাহর চারদিকে সাতবার তাওয়াফ করবে ও তা যথাযথভাবে সম্পন্ন করবে, তবে তা তার জন্য গোলাম মুক্ত করে দেবার সমতুল্য হবে। এটা ছাড়াও তাঁকে (ইবনু ’উমার (রাঃ)-কে) বলতে শুনেছি, কোন লোক এতে এক পা ফেলে অপর পা উঠানোর আগেই বরং আল্লাহ তা’আলা তার একটি গুনাহ মাফ করে দেন ও তার জন্যে একটি সাওয়াব নির্ধারণ করেন। (তিরমিযী)[1]

وَعَن عُبيدِ بنِ عُمَيرٍ: أَنَّ ابْنَ عُمَرَ كَانَ يُزَاحِمُ عَلَى الرُّكْنَيْنِ زِحَامًا مَا رَأَيْتُ أَحَدًا مِنْ أَصْحَابِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُزَاحِمُ عَلَيْهِ قَالَ: إِنْ أَفْعَلْ فَإِنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «إِنَّ مَسْحَهُمَا كَفَّارَةٌ لِلْخَطَايَا» وَسَمِعْتُهُ يَقُولُ: «مَنْ طَافَ بِهَذَا الْبَيْتِ أُسْبُوعًا فَأَحْصَاهُ كَانَ كَعِتْقِ رَقَبَةٍ» . وَسَمِعْتُهُ يَقُولُ: «لَا يَضَعُ قَدَمًا وَلَا يَرْفَعُ أُخْرَى إِلا حطَّ اللَّهُ عنهُ بهَا خَطِيئَة وكتبَ لهُ بهَا حَسَنَة» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ

وعن عبيد بن عمير ان ابن عمر كان يزاحم على الركنين زحاما ما رايت احدا من اصحاب رسول الله صلى الله عليه وسلم يزاحم عليه قال ان افعل فاني سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول ان مسحهما كفارة للخطايا وسمعته يقول من طاف بهذا البيت اسبوعا فاحصاه كان كعتق رقبة وسمعته يقول لا يضع قدما ولا يرفع اخرى الا حط الله عنه بها خطيىة وكتب له بها حسنة رواه الترمذي

ব্যাখ্যা: অন্যান্য সহাবায়ে কিরাম অধিক ভীড়ের সময় হাজারে আসওয়াদ ও রুকনে ইয়ামানীকে স্পর্শ করা ছেড়ে দিতেন। কেননা তাতে নিজের এবং অপর লোকদের কষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা ছিল, কিন্তু ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) সহাবায়ে কিরামের মাঝে ভিন্ন বৈশিষ্ট্যের অধিকারী ছিলেন। তিনি রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ছোট থেকে ছোট সকল কাজকেও পরিপূর্ণরূপে মুহাব্বাতের সাথে আদায় করতেন। বর্তমান যুগে ভীড় বেশি হওয়ার কারণে অন্যান্য সহাবায়ে কিরামের আমলের অনুসরণ করাই আমাদের জন্য উত্তম।

শায়খ ‘আবদুল হাক্ব মুহাম্মাদ দেহলবী (রহঃ) লুম্‘আত নামক কিতাবে বলেন, ‘আব্দুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ)-এর কথা اِنْ اَفْعَلُ যদি আমি করি এর ব্যাখ্যা হলো যদি আমি হাজারে আসওয়াদ এবং রুকনে ইয়ামানীকে স্পর্শ করার জন্য ভীড় করি তোমরা আমাকে নিষেধ করো না। কেননা আমি এ দু’টি স্পর্শ করার ব্যাপারে যে ফাযীলাত শুনেছি তার উপর আমি নিজেকে স্থির রাখতে পারি না।

বায়তুল্লাহকে সাতবার তাওয়াফ করাকে গোলাম আজাদের সমতুল্য ধরা হয়েছে। এর ব্যাখ্যায় অধিকাংশ ‘উলামায়ে কিরাম সাতবার প্রদক্ষিণ করার অর্থ উদ্দেশ্য নিয়েছেন। আর কিছু ‘উলামায়ে কিরাম সাতদিন তাওয়াফ করার অর্থ নিয়েছেন। কিন্তু প্রথমটিই অধিক গ্রহণযোগ্য। কেননা অন্যান্য হাদীস দ্বারা এর প্রমাণ পাওয়া যায়। তবে বর্ণিত সাওয়াব সে পাবে যদি তাওয়াফের ওয়াজিব, সুন্নাত এবং শর্তসমূহ সবকিছু ঠিকভাবে আদায় করে।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১১: হজ্জ (كتاب المناسك)