২৪৯৩

পরিচ্ছেদঃ ৭. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - মৌলিক দু‘আসমূহ

২৪৯৩-[১২] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (দু’আ) বলতেন,

’’আল্ল-হুম্মান্ ফা’নী বিমা- ’আল্লামতানী ওয়া ’আল্লিমনী মা- ইয়ানফা’উনী ওয়া যিদ্‌নী ’ইলমা-, আলহামদু লিল্লা-হি ’আলা- কুল্লি হা-লিন্ ওয়া আ’ঊযুবিল্লা-হি মিন হা-লি আহলিন্‌না-র’’

(অর্থাৎ- হে আল্লাহ! আমাদেরকে যা শিক্ষা দিয়েছো তা আমাদের উপকারে লাগাও এবং আমাদের উপকারে আসে এমন শিক্ষা দান করো, আর আমাদের জ্ঞান বৃদ্ধি করো। প্রত্যেক অবস্থায়ই আল্লাহর কৃতজ্ঞতা স্বীকার করছি জাহান্নামীদের অবস্থা হতে এবং আমি আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাই।)। (তিরমিযী ও ইবনু মাজাহ; ইমাম তিরমিযী বলেন, হাদীসটির সানাদ গরীব)[1]

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «اللَّهُمَّ انْفَعْنِي بِمَا عَلَّمْتَنِي وَعَلِّمْنِي مَا يَنْفَعُنِي وَزِدْنِي عِلْمًا الْحَمْدُ لِلَّهِ عَلَى كُلِّ حَالٍ وَأَعُوذُ بِاللَّهِ مِنْ حَالِ أَهْلِ النَّارِ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَابْنُ مَاجَهْ وَقَالَ التِّرْمِذِيُّ: هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ إِسْنَادًا

وعن ابي هريرة قال كان رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول اللهم انفعني بما علمتني وعلمني ما ينفعني وزدني علما الحمد لله على كل حال واعوذ بالله من حال اهل النار رواه الترمذي وابن ماجه وقال الترمذي هذا حديث غريب اسنادا

ব্যাখ্যা: ‘হে আল্লাহ! তুমি আমাকে এমন জ্ঞান দান করো যা আমার উপকার করবে’। এর দ্বারা বুঝা যায় যে, উপকারী জ্ঞান ছাড়া অন্য কোন জ্ঞান চাওয়া যাবে না। আর উপকারী জ্ঞান হলো দীনের জ্ঞান এবং দুনিয়ার ততটুকু জ্ঞান যতটুকু দীনের উপকারে আসবে। এ দু’টি ছাড়া বাকী সব জ্ঞান ঐ জ্ঞানের অন্তর্ভুক্ত হবে যে জ্ঞান অর্জনকারীদের সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

وَيَتَعَلَّمُوْنَ مَا يَضُرُّهُمْ وَلَا يَنْفَعُهُمْ

‘‘তারা যা শিক্ষা করত তা তাদের ক্ষতি সাধন করত এবং কোন উপকারে আসত না।’’ (সূরা আল বাকারাহ্ ২ : ১০২)

এ আয়াতে যাদুবিদ্যা শিক্ষা করাকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কারণ এ বিদ্যা তো আখিরাতে তাদের উপকারে আসবেই না বরং তাদের ক্ষতি করবে। যদিও এ জ্ঞান দুনিয়ায় তাদেরকে উপকার করবে কিন্তু এ উপকার শারী‘আতের দৃষ্টিতে কোন উপকারই নয়।

হাদীসে জ্ঞান বৃদ্ধির দু‘আ দ্বারা ইঙ্গিত করা হয়েছে যে, যে ব্যক্তি তার অর্জিত জ্ঞান অনুযায়ী ‘আমল করবে তাকে আল্লাহ এমন জ্ঞান দিবেন যা সে জানে না। এর দ্বারা আরো বুঝা যায় যে, জ্ঞান হলো ‘আমলের মাধ্যম। একটি অপরটির পরিপূরক।

এ দু‘আ দ্বারা আরো একটি বিষয় প্রমাণিত হয় যে, আল্লাহ এবং তাঁর রসূল জ্ঞান বৃদ্ধি করার দু‘আ ছাড়া অন্য কোন কিছু বৃদ্ধির বা অতিরিক্ত চাইতে দু‘আ করতে শিক্ষা দেননি। শুধু জ্ঞানই অতিরিক্ত বা বেশি চাওয়া মুস্তাহাব। (তাই সকল জিনিসের উপর জ্ঞানের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণিত)।

দুঃখ-কষ্টসহ সকল অবস্থায় আল্লাহর প্রশংসা এ জন্য করতে হবে যে, আল্লাহ এর চেয়ে কঠিন বিপদ বা কষ্ট দেননি। কখনো কখনো কষ্ট-দুর্দশার শেষ পরিণতি হয় সুখকর ও আনন্দময়। তখন ঐ ব্যাপারে প্রশংসা করা বাঞ্ছনীয় হয়। যেমন- মহান আল্লাহ বলেন,

وَعَسٰى أَنْ تَكْرَهُوْا شَيْئًا وَّهُوَ خَيْرٌ لَّكُمْ

‘‘সম্ভবত তোমরা এমন কিছুকে অপছন্দ করো যা তোমাদের জন্য কল্যাণকর।’’

(সূরা আল বাকারাহ্ ২ : ২১৬)

ইমাম গাযালী (রহঃ) বলেছেন, এমন কোন দুঃখণ্ডকষ্ট নেই যার অপর পাশে আল্লাহর অনুগ্রহ নেই। তাই ঐসব অনুগ্রহের কথা ভেবেই আল্লাহর প্রশংসা করা উচিত এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা উচিত। আর জাহান্নামীদের অবস্থা থেকে আশ্রয় চাওয়ার অর্থ হলো, দুনিয়ায় কুফরী ও ফাসিক্বী থেকে বেঁচে থাকা এবং আখিরাতে ‘আযাব বা শাস্তি থেকে বেঁচে থাকা।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১০: আল্লাহ তা‘আলার নামসমূহ (كتاب اسماء الله تعالٰى)