২৪৮৮

পরিচ্ছেদঃ ৭. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - মৌলিক দু‘আসমূহ

২৪৮৮-[৭] ’আবদুল্লাহ ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দু’আ করতেন,

’’রব্বি আ’ইন্নী ওয়ালা- তু’ইন্ ’আলাইয়্যা ওয়ানসুরনী ওয়ালা- তানসুর ’আলাইয়্যা ওয়াম্‌কুরলী ওয়ালা- তাম্‌কুর ’আলাইয়্যা ওয়াহদিনী ওয়া ইয়াস্‌সিরিল হুদা- লী ওয়ানসুরনী ’আলা- মান্ বাগা- ’আলাইয়্যা রব্বিজ্’আলনী লাকা শা-কিরান লাকা যা-কিরান লাকা র-হিবান লাকা মিত্বওয়া-’আন লাকা মুখবিতান ইলায়কা আও্ওয়া-হান মুনীবান রব্বি তাকব্বাল তাওবাতী ওয়াগসিল হাওবাতী ওয়াআজিব্ দা’ওয়াতী ওয়া সাব্বিত্ হুজ্জাতী ওয়া সাদ্দিদ্ লিসা-নী ওয়াহদি কলবী ওয়াসলুল সাখীমাতা সদরী’’

(অর্থাৎ- হে রব! আমাকে সাহায্য করো, আমার বিপক্ষে সাহায্য করো না। আমাকে সহযোগিতা করো আমার বিরুদ্ধে সহযোগিতা করো না। আমার পক্ষে উপায়-উপকরণ উদ্ভাবন করো, আমার বিরুদ্ধে উপায়-উপকরণ উদ্ভাবন করো না। আমাকে পথ দেখাও, আমার জন্য পথ সহজ করে দাও। যে আমার ওপর জবরদস্তি করে, তার ওপর আমাকে বিজয়ী করো। হে রব! আমাকে তোমার প্রতি কৃতজ্ঞ বানাও। আমাকে তোমার জিকিরকারী করো, তোমার ভয়ে আমাকে ভীত-সন্ত্রস্ত করো। তোমার প্রতি অনুগত করো, তোমারই প্রতি বিনম্র করো। [অনুতপ্তের জন্য] তোমার কাছে মনের দুঃখ জানাতে শিখাও, তোমার প্রতি আমাকে ঝুকাও। হে রব! তুমি আমার তওবা্ কবূল করো, আমার গুনাহ ধুয়ে দাও। আমার ডাকে সাড়া দাও, আমার ঈমান দৃঢ় করো, আমার মুখ ঠিক রাখো, আমার অন্তরকে হিদায়াত দান করো এবং আমার অন্তরের কলুষতা দূরীভূত করো।)। (তিরমিযী, আবূ দাঊদ ও ইবনু মাজাহ)[1]

عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَدْعُو يَقُولُ: «رَبِّ أَعِنِّي وَلَا تُعِنْ عَلَيَّ وَانْصُرْنِي وَلَا تَنْصُرْ عَلَيَّ وَامْكُرْ لِي وَلَا تَمْكُرْ عَلَيَّ وَاهْدِنِي وَيَسِّرِ الْهُدَى لِي وَانْصُرْنِي عَلَى مَنْ بَغَى عَلَيَّ ربِّ اجعَلني لكَ شَاكِرًا لَكَ ذَاكِرًا لَكَ رَاهِبًا لَكَ مِطْوَاعًا لَكَ مُخْبِتًا إِلَيْكَ أَوَّاهًا مُنِيبًا رَبِّ تَقَبَّلْ تَوْبَتِي وَاغْسِلْ حَوْبَتِي وَأَجِبْ دَعْوَتِي وَثَبِّتْ حُجَّتِي وَسَدِّدْ لِسَانِي وَاهْدِ قَلْبِي وَاسْلُلْ سَخِيمَةَ صَدْرِي» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ وَأَبُو دَاوُد وَابْن مَاجَه

عن ابن عباس قال كان النبي صلى الله عليه وسلم يدعو يقول رب اعني ولا تعن علي وانصرني ولا تنصر علي وامكر لي ولا تمكر علي واهدني ويسر الهدى لي وانصرني على من بغى علي رب اجعلني لك شاكرا لك ذاكرا لك راهبا لك مطواعا لك مخبتا اليك اواها منيبا رب تقبل توبتي واغسل حوبتي واجب دعوتي وثبت حجتي وسدد لساني واهد قلبي واسلل سخيمة صدري رواه الترمذي وابو داود وابن ماجه

ব্যাখ্যা: দীন ও দুনিয়া উভয় ক্ষেত্রে অন্তর, শয়তান, জিন্, মানুষ যে কারো পক্ষ থেকে আসা শত্রুতার মুকাবেলায় আমাকে সাহায্য করো। নিজের বিরুদ্ধে আল্লাহ কর্তৃক কৌশল উদ্ভাবন অর্থ হলো কোন ব্যক্তি হয়তো বাহ্যিকভাবে দেখবে যে, সে আল্লাহর নিয়ামত পাচ্ছে, দীর্ঘ জীবন, সুস্থতা ইত্যাদি পাচ্ছে। সে মনে করবে এগুলো তার ভাল কর্মের বিনিময়ে পাচ্ছে। মূলত সর্বদা তা নয়। সে যদিও ধারণা করছে যে, তার ‘ইবাদাত কবূল হয়েছে। বাস্তবে তার ‘ইবাদাতে রিয়া (লোক দেখানো), সুম্‘আহ (লোক শুনানো) ইত্যাদি থাকার কারণে তা আল্লাহর নিকট কবূল হয়নি। এর মাধ্যমে সে আল্লাহর কৌশলের শিকার হচ্ছে।

অন্যের প্রতি কৃতজ্ঞতা সর্বদা প্রকাশ করতে হয়। আল্লাহর নিয়ামতসমূহের কৃতজ্ঞতা জানানো জরুরী। সাথে সাথে গুনাহের কাজ, আল্লাহর রাগ ও অসন্তোষ থেকে সর্বদা ভীত-সন্ত্রস্ত থাকা উচিত। কৃতজ্ঞতা তিনভাবে প্রকাশ করা যায়-

[এক] অন্তরের মাধ্যমে, আর তা হলো মনে মনে এ কথা জানা যে, আমার ওপর আসা সকল নিয়ামত আল্লাহর পক্ষ থেকে এসেছে।

[দুই] কর্মের মাধ্যমে কৃতজ্ঞতা; আর তা হলো আল্লাহর আদেশ অনুযায়ী প্রতিটি নিয়ামত তার যথাযথ স্থানে রাখা।

[তিন] মুখের মাধ্যমে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার পর আল্লাহর প্রশংসাসূচক কথা মুখে উচ্চারণের মাধ্যমে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা।

(مِطْوَاعًا) ‘‘মিত্বওয়া-‘আন’’ অর্থ হলো আল্লাহর আদেশের বেশি বেশি আনুগত্য করা, তার আদেশসমূহ যথাযথভাবে পালন করা আর নিষেধ থেকে দূরে থাকা।

(مُخْبِتًا) ‘‘মুখবিতান’’ অর্থ হলো চরম বিনয়ী, বিনম্র ও ভীত হওয়া। এ শব্দটি কুরআনে এসেছে সূরা আল হজ ২২ : ৩৫ আয়াতে। মুনীব অর্থ হলো তাওবাহকারী, অবাধ্যতা থেকে আনুগত্যে ফিরে আসা, গাফলতি ছেড়ে আল্লাহর স্মরণে ফিরে আসা। কুরআনে ইব্রাহীম (আঃ)-কে মুনীব বলে আখ্যায়িত করা হয়- (দ্রঃ সূরা হূদ ১১ : ৭৫)। আমার ঈমান দৃঢ় রাখো দুনিয়া ও আখিরাতে আমার শত্রুর বিরুদ্ধে এবং কবরে সওয়াল-জবাবে। সত্য বলার ক্ষেত্রে আমার মুখকে ঠিক রাখো এবং আমার অন্তরকে সিরাতে মুস্তাক্বীমের প্রতি পরিচালিত করো।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১০: আল্লাহ তা‘আলার নামসমূহ (كتاب اسماء الله تعالٰى)