২০৪৪

পরিচ্ছেদঃ ৬. প্রথম অনুচ্ছেদ - নফল সিয়াম প্রসঙ্গে

২০৪৪-[৯] আবূ কাতাদাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর খিদমাতে হাযির হয়ে জিজ্ঞেস করল, আপনি কিভাবে সওম রাখেন? তার কথা শুনে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাগান্বিত হলেন। ’উমার তাঁর রাগ দেখে বলে উঠলেন,

’’রযীনা- বিল্লা-হি রব্বান, ওয়াবিল ইসলা-মি দীনান, ওয়াবি মুহাম্মাদিন নাবিয়্যা। না’ঊযুবিল্লা-হি মিন গযাবিল্লা-হি ওয়া গযাবি রসূলিহী’’

(অর্থাৎ- আমরা রব হিসেবে আল্লাহর ওপর সন্তুষ্ট। দীন হিসেবে ইসলামের ওপর সন্তুষ্ট। আর নবী হিসেবে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ওপর সন্তুষ্ট। আমরা আল্লাহ ও আল্লাহর রসূলের গযব হতে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাই।)

’উমার এ বাক্যগুলো বার বার আওড়াতে থাকেন। এমনকি এ সময় রসূলের রাগ প্রশমিত হলো। এরপর ’উমার জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রসূল! যে ব্যক্তি একাধারে সওম রাখে তার কী হুকুম? তিনি বললেন, সে ব্যক্তি না সওম রেখেছে, আর না ছেড়েছে। অথবা তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, না সওম রেখেছে আর না সওম ছেড়ে দিয়েছে। (অর্থাৎ- এখানে বর্ণনাকারীর সন্দেহ রসূলুল্লাহ কিلَا صَامَ وَلَا أَفْطَرَ বলেছেন, না কিلَمْ يَصُمْ وَلَمْ يُفْطِرْ বলেছেন)।

তারপর ’উমার জিজ্ঞেস করলেন, ওই ব্যক্তির ব্যাপারে কি হুকুম, যে দু’ দিন সওম রাখে আর একদিন তা ছাড়া থাকে। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ কেউ কী এমন শক্তি রাখে? তারপর ’উমার বললেন, ওই ব্যক্তির ব্যাপারে কি হুকুম, যে একদিন রাখে আর একদিন রাখে না? এবার তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, এটা হলো দাঊদ (আঃ)-এর সওম।

’উমার জিজ্ঞেস করলেন, আচ্ছা ওই ব্যক্তির ব্যাপারে কি হুকুম যে, একদিন সওম রাখে আর দু’দিন রাখে না। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, আমি এটা পছন্দ করি যে, এতটুকু শক্তি আমার সংগ্রহ হোক। এরপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, এক রমাযান (রমজান) থেকে আর এক রমাযান (রমজান) পর্যন্ত প্রতি মাসের তিনটি সওম একাধারে রাখার সমান। ’আরাফার দিনের সওমের ব্যাপারে আমি আশা করি আল্লাহ এর আগের ও পরের বছরের সব গুনাহ মাফ করে দেবেন। আর ’আশূরার দিনের সওমের ব্যাপারে আল্লাহর কাছে আমার প্রত্যাশা, আল্লাহ এর দ্বারা আগের বছরের সব গুনাহ মাফ করে দেবেন। (মুসলিম)[1]

بَابُ صِيَامِ التَّطَوُّعِ

وَعَنْ أَبِي قَتَادَةَ: أَنَّ رَجُلًا أَتَى النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ كَيْفَ تَصُومُ فَغَضِبَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ قَوْله. فَلَمَّا رأى عمر رَضِي الله عَنْهُم غَضَبَهُ قَالَ رَضِينَا بِاللَّهِ رَبًّا وَبِالْإِسْلَامِ دِينًا وَبِمُحَمَّدٍ نَبِيًّا نَعُوذُ بِاللَّهِ مِنْ غَضَبِ اللَّهِ وَغَضب رَسُوله فَجعل عمر رَضِي الله عَنْهُم يُرَدِّدُ هَذَا الْكَلَامَ حَتَّى سَكَنَ غَضَبُهُ فَقَالَ عمر يَا رَسُول الله كَيفَ بِمن يَصُومُ الدَّهْرَ كُلَّهُ قَالَ: «لَا صَامَ وَلَا أَفْطَرَ» . أَوْ قَالَ: «لَمْ يَصُمْ وَلَمْ يُفْطِرْ» . قَالَ كَيْفَ مَنْ يَصُومُ يَوْمَيْنِ وَيُفْطِرُ يَوْمًا قَالَ: «وَيُطِيقُ ذَلِكَ أَحَدٌ» . قَالَ كَيْفَ مَنْ يَصُوم يَوْمًا وَيفْطر يَوْمًا قَالَ: «ذَاك صَوْم دَاوُد عَلَيْهِ السَّلَام» قَالَ كَيْفَ مَنْ يَصُومُ يَوْمًا وَيُفْطِرُ يَوْمَيْنِ قَالَ: «وَدِدْتُ أَنِّي طُوِّقْتُ ذَلِكَ» . ثُمَّ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «ثَلَاث مِنْ كُلِّ شَهْرٍ وَرَمَضَانُ إِلَى رَمَضَانَ فَهَذَا صِيَامُ الدَّهْرِ كُلِّهِ صِيَامُ يَوْمِ عَرَفَةَ أَحْتَسِبُ عَلَى اللَّهِ أَنْ يُكَفِّرَ السَّنَةَ الَّتِي قَبْلَهُ وَالسَّنَةَ الَّتِي بَعْدَهُ وَصِيَامُ يَوْمِ عَاشُورَاءَ أَحْتَسِبُ عَلَى اللَّهِ أَنْ يُكَفِّرَ السَّنَةَ الَّتِي قَبْلَهُ» . رَوَاهُ مُسلم

وعن ابي قتادة ان رجلا اتى النبي صلى الله عليه وسلم فقال كيف تصوم فغضب رسول الله صلى الله عليه وسلم من قوله فلما راى عمر رضي الله عنهم غضبه قال رضينا بالله ربا وبالاسلام دينا وبمحمد نبيا نعوذ بالله من غضب الله وغضب رسوله فجعل عمر رضي الله عنهم يردد هذا الكلام حتى سكن غضبه فقال عمر يا رسول الله كيف بمن يصوم الدهر كله قال لا صام ولا افطر او قال لم يصم ولم يفطر قال كيف من يصوم يومين ويفطر يوما قال ويطيق ذلك احد قال كيف من يصوم يوما ويفطر يوما قال ذاك صوم داود عليه السلام قال كيف من يصوم يوما ويفطر يومين قال وددت اني طوقت ذلك ثم قال رسول الله صلى الله عليه وسلم ثلاث من كل شهر ورمضان الى رمضان فهذا صيام الدهر كله صيام يوم عرفة احتسب على الله ان يكفر السنة التي قبله والسنة التي بعده وصيام يوم عاشوراء احتسب على الله ان يكفر السنة التي قبله رواه مسلم

ব্যাখ্যা: প্রতিমাসে তিনদিন সিয়াম পালন করা বাহ্যিকভাবে পূর্ণ বছরেরই সিয়াম হবে, কেননা তার প্রতিদান বা নেকী হলো দশগুণ। কাজেই যে ব্যক্তি মাসের তিনদিন সিয়াম পালন করবে তা পূর্ণ মাস সিয়াম পালনের মতই আর বছরের প্রতি মাসে তিনদিন সিয়াম পালন পূর্ণ বছরের সিয়ামের মতই। আর صيام رمضان الى رمضان দ্বারা উদ্দেশ্য হলো, রমাযান (রমজান) মাসের সিয়ামের সাথে শাওয়াল মাসের ছয়টি সিয়াম পালন পূর্ণ বছরেরই সিয়াম। যেমন আবূ আইয়ূব  বর্ণিত হাদীস সামনে আসবে এবং ‘আবদুল্লাহ বিন ‘আমর -এর বর্ণিত হাদীসে রয়েছে যে, প্রতি মাসে তিনদিন সিয়াম পালন কর। কেননা তার নেকী হবে দশগুণ এবং এটাই পূর্ণ বছরের সিয়াম।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৭: সওম (রোযা) (كتاب الصوم)