১৯৪০

পরিচ্ছেদঃ ৭. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - উত্তম সদাক্বার বর্ণনা

১৯৪০-[১২] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, (একদিন) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর খিদমাতে এক ব্যক্তি এসে বললো, (হে আল্লাহর রসূল!) আমার কাছে একটি দীনার আছে। (এ কথা শুনে) তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ এ দীনারটি তুমি তোমার সন্তানের জন্য খরচ করো। সে বলল, আমার আরো একটি দীনার আছে। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ এটি তুমি তোমার পরিবারের জন্য খরচ করো। লোকটি বলল, আমার আরো একটি দীনার আছে। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ এটা তোমার খাদিমের জন্য খরচ করো। সে বলল, আমার আরো একটি দীনার আছে। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ (এবার) তুমি এ ব্যাপারে বেশী জান (কাকে দেবে)। (আবূ দাঊদ, নাসায়ী)[1]

وَعَن أَي هُرَيْرَةَ قَالَ: جَاءَ رَجُلٌ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: عِنْدِي دِينَار فَقَالَ: «أَنْفِقْهُ عَلَى نَفْسِكَ» قَالَ: عِنْدِي آخَرُ قَالَ: «أَنْفِقْهُ عَلَى وَلَدِكَ» قَالَ: عِنْدِي آخَرُ قَالَ: «أَنْفِقْهُ عَلَى أَهْلِكَ» قَالَ: عِنْدِي آخَرُ قَالَ: «أَنْفِقْهُ عَلَى خَادِمِكَ» . قَالَ: عِنْدِي آخَرُ قَالَ: «أَنْت أعلم» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد وَالنَّسَائِيّ

وعن اي هريرة قال جاء رجل الى النبي صلى الله عليه وسلم فقال عندي دينار فقال انفقه على نفسك قال عندي اخر قال انفقه على ولدك قال عندي اخر قال انفقه على اهلك قال عندي اخر قال انفقه على خادمك قال عندي اخر قال انت اعلم رواه ابو داود والنساىي

ব্যাখ্যা: নিজের ওপর খরচ করার অর্থ হলো ঐ অর্থ দ্বারা নিজের প্রয়োজন পূরণ করো। সন্তানের উপর খরচ করার আদেশ দ্বারা প্রমাণ হয় যে, অস্বচ্ছল সন্তানের প্রয়োজনে খরচ করা পিতার জন্য আবশ্যক। যদি সে সন্তান ছোট হয় তাহলে তো তার ওপর খরচ করা সর্বসম্মতভাবে পিতার জন্য আবশ্যক। আর যদি সন্তান বড় (প্রাপ্তবয়স্ক/উপার্জনক্ষম) হয় তাহলে তার ওপর খরচ করা পিতার জন্য আবশ্যক দায়িত্ব কি-না তা নিয়ে মতানৈক্য রয়েছে।

ত্বীবী বলেন, স্ত্রীর পূর্বে সন্তানের কথা বলা হয়েছে এজন্য যে, ভরণ-পোষণ প্রাপ্তির প্রয়োজনের দিক থেকে স্ত্রীর থেকে সন্তান বেশি অগ্রগণ্য। কারণ স্ত্রীকে যদি স্বামী ত্বলাক্বও দেয় তাহলেও স্ত্রী অন্য কারো সাথে বিবাহিত হতে পারবে। (সন্তানের এরূপ কোন বিকল্প নেই)

ভরণ-পোষণ প্রদানের ক্ষেত্রে কে অগ্রাধিকার পাবে? স্ত্রী না সন্তান? এ ব্যাপারে বর্ণনার ভিন্নতা রয়েছে। ইমাম শাফি‘ঈ, আবূ দাঊদ ও হাকিম (রহঃ)-এর বর্ণনা মতে সন্তানকে স্ত্রীর ওপর অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। অপরদিকে ইমাম আহমাদ, নাসায়ী, ইবনু হিব্বান (রহঃ)-এর বর্ণনার স্ত্রীকে সন্তানের ওপর অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে।

ইবনু হাযম বলেন, ইয়াহইয়া আল্ কাত্তান ও আস্ সাওরীর বর্ণনায় বৈপরীত্য রয়েছে। ইয়াহ্ইয়ার বর্ণনায় স্ত্রীকে সন্তানের ওপর অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। আর সাওরীর বর্ণনায় সন্তানকে স্ত্রীর ওপর অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে যেহেতু দু’ ধরনের বর্ণনাই রয়েছে সেহেতু কোন একটি অগ্রাধিকার না দিয়ে দু’টোকেই সমান্তরালে রাখা উচিত। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এ কথা বিশুদ্ধ সানাদে প্রমাণিত যে, ‘‘তিনি যখন (গুরুত্বপূর্ণ) কথা বলতেন তখন তা তিনবার বলতেন’’। হতে পারে এ ক্ষেত্রেও রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার সন্তানকে আরেকবার স্ত্রীকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন।

লেখক বলেন, সহীহ মুসলিমে জাবির (রাঃ) থেকে যে হাদীস বর্ণিত হয়েছে তাতে দেখা যায়, কোন রকম দ্বিধা ছাড়াই সন্তানের ওপর স্ত্রীকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। এ বর্ণনা পূর্বোক্ত বর্ণনা দু’টোর যে কোনটির উপর অগ্রাধিকার পাবে।

অত্র হাদীসের সর্বশেষে ‘‘তুমি অধিক জানো’’ দ্বারা বুঝাচ্ছে যে, তোমার আত্মীয়, প্রতিবেশী, সঙ্গী-সাথীদের মধ্য থেকে তোমার দান পাওয়ার কে বেশি হকদারে সে সম্পর্কে তুমিই অধিক জানো।


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৬: যাকাত (كتاب الزكاة)