১৯২২

পরিচ্ছেদঃ ৬. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - সদাক্বার মর্যাদা

১৯২২-[৩৫] আবূ যার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তিন প্রকার লোককে আল্লাহ ভালবাসেন। তিন প্রকার লোককে অপছন্দ করেন। আল্লাহ ভালবাসেন, ওই ব্যক্তিকে যে এক দল লোকের কাছে এসে আল্লাহর দোহাই দিয়ে চাইল, কোন আত্মীয়তা বা নৈকট্যের দোহাই দিলো না। এ দলটি তাকে কিছু না দিয়ে বিমুখ করল। এরপর এদের মধ্যে এক ব্যক্তি সংগোপনে লোকটিকে কিছু দিলো। আল্লাহ যাকে দান করেছে সে ছাড়া এ দানের কথা আর কেউ জান না। দ্বিতীয় ওই ব্যক্তি যে তার দলের সাথে গোটা রাত অতিবাহিত করল। যখন তাদের সবার কাছে ঘুম প্রিয়তম হলো এবং দলের সকলে ঘুমিয়ে পড়ল। এ সময় ওই ব্যক্তি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে আমার কাছে কান্নাকাটি করল ও কুরআন তিলাওয়াত শুরু করল। মোকাবেলা হলে তার বাহিনী যখন পরাজিত হল তখন সে ব্যক্তি শত্রুর মোকাবেলায় সর্বশক্তি নিয়োগ করল, যতক্ষণ না শাহীদ অথবা বিজয়ী হলো। যে তিন ব্যক্তিকে আল্লাহ অপছন্দ করেন, (তারা হলো) বৃদ্ধ যিনাকারী, অহংকারী ফকীর এবং অত্যাচারী ধনী। (তিরমিযী, নাসায়ী)[1]

وَعَنْ أَبِي ذَرٍّ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «ثَلَاثَةٌ يُحِبُّهُمُ اللَّهُ وَثَلَاثَةٌ يُبْغِضُهُمُ اللَّهُ فَأَمَّا الَّذِينَ يُحِبُّهُمُ اللَّهُ فَرَجُلٌ أَتَى قَوْمًا فَسَأَلَهُمْ بِاللَّه وَلم يسألهم بِقرَابَة بَيْنَهُ وَبَيْنَهُمْ فَمَنَعُوهُ فَتَخَلَّفَ رَجُلٌ بِأَعْيَانِهِمْ فَأَعْطَاهُ سِرًّا لَا يَعْلَمُ بِعَطِيَّتِهِ إِلَّا اللَّهُ وَالَّذِي أَعْطَاهُ وَقَوْمٌ سَارُوا لَيْلَتَهُمْ حَتَّى إِذَا كَانَ النَّوْمُ أَحَبَّ إِلَيْهِمْ مِمَّا يُعْدَلُ بِهِ فَوَضَعُوا رُءُوسَهُمْ فَقَامَ يَتَمَلَّقُنِي وَيَتْلُو آيَاتِي وَرَجُلٌ كَانَ فِي سَرِيَّة فلقي الْعَدو فهزموا وَأَقْبل بِصَدْرِهِ حَتَّى يُقْتَلَ أَوْ يُفْتَحَ لَهُ وَالثَّلَاثَةُ الَّذِينَ يُبْغِضُهُمُ اللَّهُ الشَّيْخُ الزَّانِي وَالْفَقِيرُ الْمُخْتَالُ والغني الظلوم» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ وَالنَّسَائِيّ

وعن ابي ذر عن النبي صلى الله عليه وسلم قال ثلاثة يحبهم الله وثلاثة يبغضهم الله فاما الذين يحبهم الله فرجل اتى قوما فسالهم بالله ولم يسالهم بقرابة بينه وبينهم فمنعوه فتخلف رجل باعيانهم فاعطاه سرا لا يعلم بعطيته الا الله والذي اعطاه وقوم ساروا ليلتهم حتى اذا كان النوم احب اليهم مما يعدل به فوضعوا رءوسهم فقام يتملقني ويتلو اياتي ورجل كان في سرية فلقي العدو فهزموا واقبل بصدره حتى يقتل او يفتح له والثلاثة الذين يبغضهم الله الشيخ الزاني والفقير المختال والغني الظلوم رواه الترمذي والنساىي

ব্যাখ্যা: যে তিন ব্যক্তিকে আল্লাহ ভালবাসেন তাদের প্রথমজনের বর্ণনা হাদীসে যেভাবে এসেছে তাতে মনে হতে পারে যে, যে ব্যক্তি চেয়েছে অর্থাৎ ভিক্ষুক-ই ভালবাসা প্রাপ্ত ব্যক্তি। আসলে তা নয়। উদ্দেশ্য হচ্ছে- ঐ ভিক্ষুককে দানকারী ব্যক্তি। তবে ঐ ভিক্ষুক যদি কোন আত্মীয়তার সম্পর্ককে ওয়াসীলা না করে আল্লাহর নামকে ওয়াসীলা করে ভিক্ষা চায় (যেমন- আমাদের সমাজে ভিক্ষুকরা আল্লাহর ওয়াস্তে চায়) তাহলেই দানকারী এ বিশেষ মর্যাদা পাবে। মাফাতীহ গ্রন্থকার বলেন, কেউ যখন আল্লাহর নামে কারো নিকট কিছু চায় তাহলে অন্তত আল্লাহর নামের সম্মানে তাকে দান করা আবশ্যক। যদি কেউ তাকে না দেয় তাহলে সবাই বড় গুনাহের ভাগিদার হবে। তাদের মধ্য থেকে কেউ একজন যদি ঐ ভিক্ষুককে গোপনে দান করে তাহলে দানকারী ব্যক্তি দু’টি মর্যাদার অধিকারী হবেন। (এক) সে আল্লাহ তা‘আলার নামকে সম্মান করল। (দুই) সে গোপনে দান করল। আর গোপনে দান করার পৃথক মর্যাদা রয়েছে।

‘‘আমার আয়াত তিলাওয়াত করে’’-এর অর্থ হলো আল্লাহর আয়াতসমূহ পাঠ করে এবং এর অর্থ সম্পর্কে চিন্তা-গবেষণা করে।

‘‘বৃদ্ধ যিনাকারী’’ বলতে যুবক ব্যক্তির সাথে বৃদ্ধা মহিলার যিনা উদ্দেশ্য হতে পারে। আবার অবিবাহিত মেয়ের সাথে বিবাহিত ব্যক্তির ব্যভিচারও উদ্দেশ্য হতে পারে। যেমনটা তিলাওয়াত রহিত করা হয়েছে কিন্তু হুকুম (বিধান) জারি আছে এমন আয়াত ‘‘যখন বৃদ্ধ ও বৃদ্ধা বা বিবাহিত পুরুষ-নারী যিনা করবে তাদের উভয়কে পাথর মেরে হত্যা করবে’’-এ বর্ণিত হয়েছে।


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৬: যাকাত (كتاب الزكاة)