১০৫৯

পরিচ্ছেদঃ ২৩. প্রথম অনুচ্ছেদ - জামা‘আত ও তার ফযীলত সম্পর্কে

১০৫৯-[৮] ইবনু ’উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কারো স্ত্রী যদি মসজিদে যাওয়ার অনুমতি প্রার্থনা করে সে যেন তাকে নিষেধ না করে। (বুখারী, মুসলিম)[1]

بَابُ الْجَمَاعَةِ وَفَضْلِهَا

وَعَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِذَا اسْتَأْذَنَتِ امْرَأَة أحدكُم إِلَى الْمَسْجِد فَلَا يمْنَعهَا»

وعن ابن عمر قال قال النبي صلى الله عليه وسلم اذا استاذنت امراة احدكم الى المسجد فلا يمنعها

ব্যাখ্যা: (إِذَا اسْتَأْذَنَتِ امْرَأَةُ أحَدِكُمْ إِلَى الْمَسْجِد) ‘‘তোমাদের কারো স্ত্রী যখন (তার স্বামীর কাছে) মসজিদে যাওয়ার অনুমতি চায় তাহলে সে যেন তাকে নিষেধ না করে’’।

(১) হাদীস থেকে বুঝা যায় স্ত্রীকে মসজিদে যেতে বারণ করা স্বামীর জন্য হারাম। ইমাম নাবাবী বলেনঃ এ নিষেধাজ্ঞা দ্বারা হারাম বুঝায় না বরং তা মাকরূহ।

(২) হাদীস থেকে এও বুঝা যায় যে, স্বামীর অনুমতি সাপেক্ষে কোন স্ত্রীর পক্ষে মসজিদে যাওয়া বৈধ। আর স্বামীর পক্ষে তখনই স্ত্রীকে অনুমতি দেয়া বৈধ যখন ঐ মহিলা মসজিদে যাওয়ার বৈধতার শর্তগুলো পূর্ণ করবে। নচেৎ নয়। শর্তগুলো নিম্নরূপঃ

(১) কোন প্রকার সুগন্ধি লাগাবে না, (২) অতিরিক্ত সাজসজ্জা করবে না, (৩) এমন গহনা পরিধান করবে না যার আওয়াজ হয়, (৪) অহংকারী বস্ত্র পরিধান করবে না, (৫) পর পুরুষের সাথে সংমিশ্রণ ঘটবে না, (৬) যুবতী নারী হবে না যাদের ফিতনার মধ্যে পরার আশংকা আছে, (৭) রাস্তা নিরাপদ হবে, তাতে কোন প্রকার ফিতনার আশংকা থাকবে না। এ শর্তগুলো পাওয়া গেলে স্বামীর পক্ষে স্ত্রীকে মসজিদে অনুমতি দেয়া বৈধ। এতদসত্ত্বেও মহিলাদের ঘন ঘন মসজিদে না যাওয়াই উচিত। কেননা হাদীসে এও বর্ণিত হয়েছে যে, মেয়েদের মসজিদে সালাত আদায় করার চাইতে ঘরে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করাই আফযাল তথা উত্তম।

হানাফীদের মতে সালাতের জামা‘আতে উপস্থিত হওয়ার জন্য মসজিদে যাওয়ার বৈধতা বৃদ্ধাদের বেলায় প্রযোজ্য এবং তা শুধুমাত্র মাগরিব, ‘ইশা ও ফাজরের (ফজরের) ক্ষেত্রে। আর তাদের পরবর্তী যুগের ‘আলিমদের মতে বৃদ্ধাদের হুকুম যুবতীদের মতই। অর্থাৎ কারো পক্ষেই মসজিদে যাওয়া বৈধ নয়। তারা এজন্য ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত আসারকে দলীল হিসেবে গ্রহণ করেছেন। ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) বলেছেনঃ রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যদি দেখতে পেতেন নারীরা যা করেছে, তাহলে তিনি অবশ্যই তাদেরকে মসজিদে যেতে বারণ করতেন যেমন বানী ইসরাঈলের মহিলাদের বারণ করা হয়েছিল’’। কিন্তু এ হাদীস প্রমাণ করে না যে, মহিলাদের মসজিদে যাওয়া অবৈধ। কেননা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মৃত্যুর মধ্য দিয়ে শারী‘আতের বিধান স্থির হয়ে গেছে। তারপরে কারো পক্ষেই শারী‘আতের মধ্যে কোন বিধান নতুন করে জারী করার অধিকার নেই যা রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত বিধানের পরিপন্থী। বরং ‘আয়িশাহ্ (রাঃ)-এর বক্তব্যের মাধ্যমে যা পাওয়া যায় তা রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বক্তব্যেরই প্রতিধ্বনি মাত্র। অর্থাৎ মসজিদে যাওয়ার জন্য সে সমস্ত শর্তসমূহ পূর্ণ করতে হবে যা পূর্বে উল্লেখিত হয়েছে।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة)