১০৩৯

পরিচ্ছেদঃ ২২. প্রথম অনুচ্ছেদ - সালাত নিষিদ্ধ সময়ের বিবরণ

যে সকল সময়ে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) নিষিদ্ধ তার বর্ণনা। নিষিদ্ধ সময় পাঁচটিঃ

. সূর্যোদয়ের সময়

. সূর্যাস্তের সময়

. ফজরের (ফজরের) সালাতের পর

. ’আসরের সালাতের পর

. সূর্য ঠিক মাথার উপরে থাকার সময়।


১০৩৯-[১] ’আবদুল্লাহ ইবনু ’উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যেন সূর্য উদয়ের ও অস্ত যাওয়ার সময় সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায়ের জন্য অন্বেষণ না করে।

একটি বর্ণনার ভাষা হলো, তিনি বলেছেন, ’’যখন সূর্য গোলক উদিত হয় তখন সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) ত্যাগ করবে, যে পর্যন্ত সূর্য বেশ স্পষ্ট হয়ে না উঠবে। ঠিক এভাবে আবার যখন সূর্য গোলক ডুবতে থাকে তখন সালাত আদায় করা থেকে বিরত থাকবে, যে পর্যন্ত সূর্য সম্পূর্ণভাবে ডুবে না যায়। আর সূর্য উঠার ও অস্ত যাওয়ার সময় সালাতের ইচ্ছা করবে না। কারণ সূর্য শায়ত্বনের (শয়তানের) দু’ শিং-এর মধ্যখান দিয়ে উদয় হয়। (বুখারী, মুসলিম) [1]

بَابُ أَوْقَاتِ النَّهْيِ

عَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا يَتَحَرَّى أَحَدُكُمْ فَيُصَلِّيَ عِنْدَ طُلُوعِ الشَّمْسِ وَلَا عِنْدَ غُرُوبِهَا»
وَفِي رِوَايَةٍ قَالَ: «إِذَا طَلَعَ حَاجِبُ الشَّمْسِ فدعوا الصَّلَاة حَتَّى تبرز. فَإِذا غَابَ حَاجِبُ الشَّمْسِ فَدَعُوا الصَّلَاةَ حَتَّى تَغِيبَ وَلَا تَحَيَّنُوا بِصَلَاتِكُمْ طُلُوعَ الشَّمْسِ وَلَا غُرُوبَهَا فَإِنَّهَا تطلع بَين قَرْني الشَّيْطَان»

عن ابن عمر قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم لا يتحرى احدكم فيصلي عند طلوع الشمس ولا عند غروبهاوفي رواية قال اذا طلع حاجب الشمس فدعوا الصلاة حتى تبرز فاذا غاب حاجب الشمس فدعوا الصلاة حتى تغيب ولا تحينوا بصلاتكم طلوع الشمس ولا غروبها فانها تطلع بين قرني الشيطان

ব্যাখ্যাঃ তোমদের কেউ যেন অন্বেষণ না করে। এ বাক্যের দু’টি অর্থ হতে পারে-

১. সালাত আদায়ের জন্য সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের সময়ের জন্য অপেক্ষা করবে না অর্থাৎ বেছে বেছে এ সময়ে সালাত আদায় করবে না।

২. এ সময়ে এটা মনে করে সালাত আদায় করবে না যে, এ সময় সালাতের জন্য উত্তম।

হাফিয ইবনু হাজার (রহঃ) বলেন, এ হাদীসের মর্মার্থ নিয়ে ‘আলিমদের মাঝে মতের অমিল রয়েছে। কেউ বলেনঃ এর মর্ম হলো ফাজর (ফজর) ও ‘আসরের পর ঐ ব্যক্তির জন্য সালাত আদায় করা মাকরূহ যে ব্যক্তি সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের সময় সালাত আদায় করার ইচ্ছা করে।

কিছু আহলে যাহির এ মত গ্রহণ করেছেন। ইবনুল মুনযির এ মতকে শক্তিশালী বলে ব্যক্ত করেছেন। আবার কেউ বলেনঃ এ হাদীসের মর্ম হলো ফাজরের (ফজরের) পরে সূর্যোদয় পর্যন্ত এবং ‘আসরের পরে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করা মাকরূহ, সূর্যোদয়ের সময় ও সূর্যাস্তের সময় সালাত আদায় করার ইচ্ছা করুক আর নাই করুক। আর এটাই অধিকাংশ ‘আলিমদের অভিমত।

সূর্য গোলকের উপরিভাগকে হাজিবুশ্ শামস্ বলা হয়। কেননা সূর্যোদয়ের সময় এটা প্রথমে প্রকাশ পায় তাই তাকে মানুষের ভ্রূর সাথে তুলনা করা হয়েছে। ‘তখন তোমরা সালাত আদায় পরিত্যাগ কর’ এর দ্বারা উদ্দেশ্য ফারযের (ফরযের/ফরজের) ক্বাযা এবং ঐ ওয়াক্তদ্বয়ের সালাত ব্যতীত অন্য সালাত। কেননা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি সালাতের কথা ভুলে যায় অথবা ঘুমিয়ে পরে তার যখন সালাতের কথা স্মরণ হবে বা ঘুম থেকে জাগবে তখনই তার সালাতের সময়। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আরো বলেছেনঃ যে ব্যক্তি সূর্যোদয়ের আগে ফাজরের (ফজরের) এক রাক্‘আত পেল এবং সূর্যাস্তের পূর্বে ‘আসরের এক রাক্‘আত পেল সে ঐ ওয়াক্তের সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) পেল।

অতএব আলোচিত হাদীসের মর্ম হলো সালাত আদায়ের জন্য সূর্যোদয়ের ও সূর্যাস্তের সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করবে না। ‘কেননা তা শায়ত্বনের (শয়তানের) দু’ শিং-এর মাঝ দিয়ে উদয় হয়’। সূর্যোদয়ের সময় শায়ত্বন (শয়তান) তার বরাবর দাঁড়িয়ে থাকে। সূর্য পূজারীরা সূর্যোদয়কালে যখন সূর্যকে সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) করে তখন ঐ সিজদা্ শায়ত্বনের (শয়তানের) জন্যই হয়ে থাকে। যাতে মু’মিনের ‘ইবাদাত সূর্য পূজারীদের সাথে সাদৃশ্য না হয় এজন্য উক্ত সময়ে সালাত আদায় করতে নিষেধ করা হয়েছে।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة)