১০১৬

পরিচ্ছেদঃ ২০. প্রথম অনুচ্ছেদ - সাহু সিজদা্

১০১৬-[৩] ’আবদুল্লাহ ইবনু মাস্’ঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। (তিনি বলেন) রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যুহরের সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) পাঁচ রাক্’আত আদায় করে নিলেন। তাঁকে বলা হলো, সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) কি বৃদ্ধি করা হয়েছে? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) প্রশ্ন করলেন, কি হয়েছে? সাহাবীরা বললেন, আপনি সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) পাঁচ রাক্’আত আদায় করেছেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সালাম ফিরানোর পরে দু’ সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) করে নিলেন।

আর এক সূত্রে এ শব্দগুলোও আছে যে, তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ইরশাদ করেছেন, আমিও একজন মানুষ। তোমাদের যেমন ভুল হয়, আমারও তেমন ভুল হয়। আমি ভুল করলে তোমরা আমাকে স্মরণ করিয়ে দেবে। তোমাদের কেউ সালাতে সন্দেহ করলে সে যেন সঠিকটি চিন্তা-ভাবনা করে এবং সে সঠিক চিন্তার উপর সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) পূর্ণ করে। তারপর সে যেন সালাম ফিরিয়ে দু’টো সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) করে। (বুখারী, মুসলিম)[1]

بَابُ السَّهْوِ

وَعَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ صَلَّى الظُّهْرَ خَمْسًا فَقِيلَ لَهُ: أَزِيدَ فِي الصَّلَاةِ؟ فَقَالَ: «وَمَا ذَاكَ؟» قَالُوا: صَلَّيْتَ خَمْسًا. فَسَجَدَ سَجْدَتَيْنِ بَعْدَمَا سَلَّمَ. وَفِي رِوَايَةٍ: قَالَ: «إِنَّمَا أَنَا بَشَرٌ مِثْلُكُمْ أَنْسَى كَمَا تَنْسَوْنَ فَإِذَا نَسِيتُ فَذَكِّرُونِي وَإِذَا شَكَّ أَحَدُكُمْ فِي صَلَاتِهِ فَلْيَتَحَرَّ الصَّوَابَ فَلْيُتِمَّ عَلَيْهِ ثُمَّ لِيُسَلِّمْ ثمَّ يسْجد سَجْدَتَيْنِ»

وعن عبد الله بن مسعود: أن رسول الله صلى الله عليه وسلم صلى الظهر خمسا فقيل له: أزيد في الصلاة؟ فقال: «وما ذاك؟» قالوا: صليت خمسا. فسجد سجدتين بعدما سلم. وفي رواية: قال: «إنما أنا بشر مثلكم أنسى كما تنسون فإذا نسيت فذكروني وإذا شك أحدكم في صلاته فليتحر الصواب فليتم عليه ثم ليسلم ثم يسجد سجدتين»

ব্যাখ্যা: (وَمَا ذَاكَ؟) ‘কি হয়েছে?’ অর্থাৎ সালাতে বৃদ্ধি করা হয়েছে তোমাদের এ প্রশ্ন কেন?

মুসলিমের বর্ণনায় আছে ‘নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাত শেষ করার পর লোকজন আপোসে গোলমাল করতে থাকলে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞেস করলেন তোমাদের কি হয়েছে? তখন তারা বলল, হে আল্লাহর রসূল! সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) কি বৃদ্ধি করা হয়েছে? তিনি বললেনঃ ‘না’ এ বর্ণনা থেকে জানা যায় যে, সাহাবীগণের এ প্রশ্ন ছিল নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে প্রশ্ন করার পর।

‘‘অতঃপর তিনি সালাম ফেরানোর পর দু’টি সিজদা্ করলেন’’। যারা বলেনঃ সাহু সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) হবে সালাম ফেরানোর পর এ হাদীস তাদের দলীল। তবে তাদের এ দলীলের সমালোচনায় বলা হয় যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাম ফেরানোর পূর্বে তার এ অতিরিক্ত রাক্‘আতের কথা অবহিত হননি বরং সালাম ফেরানোর পর তা অবহিত হয়েছেন। আর এ অবস্থায় সকল বিদ্বানদের মতেই সালামের পরে সাহু সিজদা্ করতে হবে। কেননা সালামের পূর্বে তা করা সম্ভব নয় অবহিত না হওয়ার কারণে। আর এটাও বলা হয়ে থাকে যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দ্বারা এ কাজ সংঘটিত হয়েছে তা বৈধতার বর্ণনা স্বরূপ। ইমাম বায়হাক্বী বলেনঃ সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) সাহু সালামের পূর্বে ও সালামের পরে উভয় অবস্থায় পালন করার অবকাশ রয়েছে।

হাদীসের শিক্ষাঃ

  1. কোন ব্যক্তি যদি চার রাক্‘আত সালাত আদায়ের পর ভুলবশতঃ দাঁড়িয়ে যায় এবং পাঁচ রাক্‘আত সালাত আদায় করে তাহলে তার সালাত বিনষ্ট হবে না।
  2. ভুলবশতঃ সালাতে বৃদ্ধি করলেও সালাত বিনষ্ট হয় না।
  3. সালাত সংশোধনের নিমিত্তে ইচ্ছাকৃতভাবে কথা বললে সালাত বিনষ্ট হয় না।
  4. ভুলবশতঃ ক্বিবলাহ্ (কিবলাহ/কিবলা)  ভিন্ন অন্যদিকে সালাত আদায় করলে তার সে সালাত পুনরায় আদায় করতে হবে না।

(إِنَّمَا أَنَا بَشَرٌ مِثْلُكُمْ) ‘আমি তোমাদের মতই মানুষ’ অর্থাৎ মানাবীয় সকল গুণাবলীতে আমি তোমাদেরই মতো তবে পার্থক্য এই যে, আমার নিকট ওয়াহী আসে যা তোমাদের নিকট আসে না।

ইমাম শাওকানী বলেনঃ যারা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে মানবীয় গুণাবলীর ঊর্ধ্বে মনে করেন এ হাদীস তাদের বিপক্ষে দলীল। বরং তিনি মানবীয় সকল গুণের অধিকারী। ‘আমিও ভুলে যাই যেমন তোমরা ভুলে যাও’।

এ কথা প্রমাণ করে যে ভুলে যাওয়া বা ভুল হওয়া নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। তবে তিনি দীন প্রচারের ক্ষেত্রে ভুল করেন না। এক্ষেত্রে ইজমা রয়েছে যেমনটি ‘আয়ায বর্ণনা করেছেন।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة)