৯১১

পরিচ্ছেদঃ ১৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - তাশাহুদ

৯১১-[৬] ওয়ায়িল ইবনু হূজর (রাঃ)হতে বর্ণিত। তিনি (তাশাহুদের বৈঠক সম্পর্কে) রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণনা করেন। অতঃপর তিনি বাম পা বিছিয়ে দিলেন। বাম হাতকে বাম রানের উপর রাখলেন। এভাবে তিনি ডান কনুইকে ডান রানের উপর বিছিয়ে রাখলেন। এরপর (নব্বইয়ের বন্ধনের ন্যায়) ডান হাতের কনিষ্ঠা ও অনামিকা বন্ধ করলেন। (মধ্যমা ও বৃদ্ধার দ্বারা) একটি বৃত্ত বানালেন এবং শাহাদাত আঙ্গুল উঠালেন। এ সময় আমি তাঁকে দেখলাম, তিনি তাশাহুদ পাঠ করতে করতে ইশারা করার জন্য শাহাদাত আঙ্গুল নাড়ছেন। (আবূ দাঊদ ও দারিমী)[1]

وَعَن وَائِلِ بْنِ حَجَرٍ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ثُمَّ جَلَسَ فَافْتَرَشَ رِجْلَهُ الْيُسْرَى وَوَضَعَ يَدَهُ الْيُسْرَى عَلَى فَخِذِهِ الْيُسْرَى وَحَدَّ مِرْفَقَهُ الْيُمْنَى عَلَى فَخِذِهِ الْيُمْنَى وَقَبَضَ ثِنْتَيْنِ وَحَلَّقَ حَلْقَةً ثُمَّ رَفَعَ أُصْبُعَهُ فَرَأَيْتُهُ يُحَرِّكُهَا يَدْعُو بهَا. رَوَاهُ أَبُو دَاوُد والدارمي

وعن واىل بن حجر عن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال ثم جلس فافترش رجله اليسرى ووضع يده اليسرى على فخذه اليسرى وحد مرفقه اليمنى على فخذه اليمنى وقبض ثنتين وحلق حلقة ثم رفع اصبعه فرايته يحركها يدعو بها رواه ابو داود والدارمي

ব্যাখ্যা: (ثُمَّ جَلَسَ) অতঃপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বসলেন পূর্বে হাদীসের প্রথমাংশ এভাবে এসেছে, ওয়ায়িল ইবনু হূজর বলেন, আমি তোমাদেরকে অবশ্যই রসূলের সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) দেখাব কিভাবে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সালাত আদায় করতেন, তিনি দাঁড়াতেন ক্বিবলামুখী হতেন, অতঃপর তাকবীর দিতেন, তারপর হাতদ্বয় উঠাতেন দু’কানের লতি পর্যন্ত, অতঃপর বাম হাতকে ডান হাত দিয়ে ধরতেন আর যখন রুকূ‘ করার ইচ্ছা করতেন অনুরূপ হাত দু’টি উঠাতেন। রাবী বলেন, অতঃপর বসতেন এভাবে শেষ পর্যন্ত যা হাদীসে উদ্ধৃত হয়েছে।

(فَافْتَرَشَ رِجْلَهُ الْيُسْرى) তথা বাম পা বিছাতেন এবং বাম পায়ের পেটের উপর বসতেন আর ডান পাকে খাড়া করতেন

প্রথম বৈঠকে দু’হাত রাখার স্থান।

ওয়ায়িল ইবনু হূজর (রাঃ) হতে বর্ণিত। আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট আসলাম, অতঃপর আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে দেখলাম, তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যখন সালাত শুরু করলেন দু’হাত উঠালেন ..... এবং যখন দু’ রাক্‘আত শেষে (প্রথম) বৈঠকের জন্য বসতেন বাম পা বিছাতেন এবং ডান পা খাড়া করতেন।

(وَوَضَعَ يَدَهُ الْيُسْرى عَلى فَخِذِهِ الْيُسْرى) বাম হাতকে বাম রানের উপর রাখতেন হাতের আঙ্গুলসমূহ প্রসারিত করে মুষ্টিবদ্ধ করে না।

নাসায়ীর বর্ণনায় আছে, ‘‘বাম হাতের তালু বাম রান ও হাঁটুর উপর রাখতেন।’’

বায়হাক্বী বলেনঃ আঙ্গুল নাড়ানো দ্বারা ইশারা উদ্দেশ্য অব্যাহত নাড়ানো না। ইমাম শাওকানী বায়হাক্বীর মতকে সমর্থন করেছেন, দলীল হিসেবে বলেছেন আবূ দাঊদ-এর হাদীস ওয়ায়িল থেকে, সেখানে এসেছে ‘‘তর্জনী দিয়ে ইশারা করতেন।’’

আমিও (ভাষ্যকার) বলি, এ মতের স্বপক্ষে ইমাম নাসায়ীও রায় দিয়েছেন।

(وَحَدَّ مِرْفَقَهُ...) -এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর কনুইকে তার পার্শ্বদেশদ্বয় থেকে দূরে রাখতেন না। ‘আল্লামা ইবনুল ক্বইয়্যিম আল জাওযী (রহঃ) তার ‘‘যাদুল মা‘আদ’’ গ্রন্থে বিষয়টি স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করেছেন। আর হাদীসের শেষাংশের দ্বারা বৈঠকে সর্বদা আঙ্গুল নাড়ানোর বিষয়টি প্রমাণিত হয় যা মালিকী মাযহাবের মত। আর এটিই সঠিক মত। মুল্লা ‘আলী ক্বারী (রহঃ) বলেনঃ হাদীসের বাহ্যিক দিকটি মালিকী মাযহাবের অনুকূলে হলেও তা পরবর্তী হাদীসের সাথে সাংঘর্ষিক, যেখানে বলা হয়েছে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সর্বদা আঙ্গুল নাড়াতেন না।

আলবানী (রহঃ) বলেনঃ উভয় হাদীসের সংঘর্ষের দাবী দু’ দিক থেকে প্রত্যাখ্যাত। প্রথমত এ হাদীসের পরবর্তী হাদীসের তুলনায় অধিক সহীহ। আর অপরটি হলো এ হাদীসটি হ্যাঁ-বোধক আর পরবর্তীটি না-বোধক। আর মূলনীতি হলো হ্যাঁ-বোধক হাদীস না-বোধকের উপর প্রাধান্য পাবে। (আলবানী) ]


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة)