৭২৬

পরিচ্ছেদঃ ৭. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - মাসজিদ ও সালাতের স্থান

৭২৬-[৩৮] তিরমিযীতে এ হাদীসটি কিছু শব্দগত পার্থক্যসহ ’আবদুর রহমান ইবনু ’আয়িশ, ইবন ’আব্বাস ও মু’আয ইবনু জাবাল (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে। আর এতে আরো আছেঃ আল্লাহ তা’আলা বলেছেন (অর্থাৎ- নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে আসমান ও জমিনের জ্ঞান দেয়ার পর জিজ্ঞেস করলেন), হে মুহাম্মাদ! আপনি কি জানেন ’’মালা-উল আ’লা-’’ কী বিষয়ে তর্ক করছে? আমি বললাম, হ্যাঁ! জানি, ’কাফফারাহ্’ নিয়ে তর্কবিতর্ক করছে। আর এই কাফফারাহ্ হলো, সালাতের পর মসজিদে আর এক সালাতের ওয়াক্ত আসা পর্যন্ত অপেক্ষা বা যিকর-আযকার করার জন্য বসে থাকা। জামা’আতে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করার জন্য পায়ে হেঁটে চলে যাওয়া। কঠিন সময়ে (যেমন অসুস্থ বা শীতের মৌসুমে) উযূ (ওযু/ওজু/অজু)-র স্থানে ভালো করে পানি পৌঁছানো। যারা এভাবে উল্লিখিত ’আমলগুলো করলো কল্যাণের উপর বেঁচে থাকবে, কল্যাণের উপর মৃত্যুবরণ করবে। আর তার গুনাহসমূহ হতে এমনভাবে পাক-পবিত্র হয়ে যাবে যেমন আজই তার মা তাকে প্রসব করেছে।

আর আল্লাহ তা’আলা বলেছেন, হে মুহাম্মাদ! সালাত আদায় শেষ করার পর এ দু’আটি পড়ে নিবেঃ ’’আল্লা-হুম্মা ইন্নী আস্আলুকা ফি’লাল খয়র-তি ওয়াতারকাল মুনকার-তি ওয়া হুববাল মাসা-কীনি ফায়িযা- আরাত্তা বি’ইবা-দিকা ফিতনাতান্ ফাক্ববিযনী ইলায়কা গয়রা মাফতূন’’- (অর্থাৎ- হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে ’নেক কাজ’ করার, ’বদ কাজ’ ছাড়ার, গরীব-মিসকীনদের বন্ধুত্বের আবেদন করছি। যখন তুমি বান্দাদের মধ্যে পথভ্রষ্টতা ফিত্‌নাহ্-ফ্যাসাদ সৃষ্টি করার ইচ্ছা করবে তখন আমাকে ফিতনামুক্ত রেখে তোমার কাছে উঠিয়ে নিবে।)।

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বললেন, ’দারাজাত’ হলো সালামের প্রসার করা, গরীবকে খাবার দেয়া, রাতে মানুষ যখন ঘুমে থাকে তখন সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করা।[1]

মিশকাতের সংকলক বলেন, যে হাদীস ’আবদুর রহমান হতে মাসাবীহ-তে বর্ণিত হয়েছে তা আমি শারহুস্ সুন্নাহ্ ছাড়া আর কোন কিতাবে দেখিনি।

وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ وَمُعَاذِ بْنِ جبل وَزَادَ فِيهِ: قَالَ: يَا مُحَمَّدُ {هَلْ تَدْرِي فِيمَ يَخْتَصِمُ الْمَلَأُ الْأَعْلَى؟ قُلْتُ: نَعَمْ فِي الْكَفَّارَاتِ. وَالْكَفَّارَاتُ: الْمُكْثُ فِي الْمَسَاجِدِ بَعْدَ الصَّلَوَاتِ وَالْمَشْيِ عَلَى الْأَقْدَامِ إِلَى الْجَمَاعَاتِ وَإِبْلَاغِ الْوَضُوءِ فِي الْمَكَارِهِ فَمَنْ فَعَلَ ذَلِكَ عَاشَ بِخَيْرٍ وَمَاتَ بِخَيْرٍ وَكَانَ مِنْ خَطِيئَتِهِ كَيَوْمَ وَلَدَتْهُ أُمُّهُ وَقَالَ: يَا مُحَمَّدُ} إِذَا صَلَّيْتَ فَقُلِ: اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ فِعْلَ الْخَيْرَاتِ وَتَرْكَ الْمُنْكَرَاتِ وَحُبَّ الْمَسَاكِينِ وَإِذَا أَرَدْتَ بِعِبَادِكَ فِتْنَةً فَاقْبِضْنِي إِلَيْكَ غَيْرَ مَفْتُونٍ. قَالَ: وَالدَّرَجَاتُ: إِفْشَاءُ السَّلَامِ وَإِطْعَامُ الطَّعَامِ وَالصَّلَاةُ بِاللَّيْلِ وَالنَّاسُ نِيَامٌ. وَلَفْظُ هَذَا الْحَدِيثِ كَمَا فِي الْمَصَابِيحِ لَمْ أَجِدْهُ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَن إِلَّا فِي شرح السّنة.

وعن ابن عباس ومعاذ بن جبل وزاد فيه قال يا محمد هل تدري فيم يختصم الملا الاعلى قلت نعم في الكفارات والكفارات المكث في المساجد بعد الصلوات والمشي على الاقدام الى الجماعات وابلاغ الوضوء في المكاره فمن فعل ذلك عاش بخير ومات بخير وكان من خطيىته كيوم ولدته امه وقال يا محمد اذا صليت فقل اللهم اني اسالك فعل الخيرات وترك المنكرات وحب المساكين واذا اردت بعبادك فتنة فاقبضني اليك غير مفتون قال والدرجات افشاء السلام واطعام الطعام والصلاة بالليل والناس نيام ولفظ هذا الحديث كما في المصابيح لم اجده عن عبد الرحمن الا في شرح السنة

ব্যাখ্যা: এ হাদীসটি পূর্বোক্ত হাদীসের কিয়দংশের ব্যাখ্যা হিসেবে গ্রহণ করা যায় এবং তার প্রেক্ষিতে বান্দার কী করণীয় সে বিষয়ে অবগত হওয়া যায়। এ কাজগুলো হলোঃ

এক- প্রত্যেক সালাতের পরে অপর সালাতের জন্য মসজিদের অবস্থান করে অপেক্ষা করা।

দুই- পায়ে হেটে জামা‘আতে উপস্থিত হওয়া, মসজিদে আগমনকারী আল্লাহর সাক্ষ্যপ্রার্থী। আর পায়ে হেঁটে সাক্ষাৎ করতে আসা বিনয় ও নম্রতার অধিক নিকটবর্তী।

তিন- অপছন্দ বা কষ্টের সময় যেমন, শীতের দিনে ঠাণ্ডা পানি উযূর ফরয ও সুন্নাত স্থানগুলোতে বেশি করে পৌঁছানো।

আর যে ব্যক্তি উপর্যুক্ত কার্যাবলী সম্পাদন করলো সে কল্যাণের সাথে বাঁচবে এবং কল্যাণের সাথে মরবে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ বলেন, ‘‘মু’মিন পুরুষ ও নারীর মধ্যে যে কেউ সৎকর্ম করবে তাকে আমি নিশ্চয়ই পবিত্র জীবন দান করবো এবং তাদেরকে তাদের কাজের শ্রেষ্ঠ পুরস্কার দান করবো’’- (সূরাহ্ আন্ নাহল ১৬ : ৯৭)। আর সে সেরূপ পাপমুক্ত হবে যেরূপ পাপমুক্ত সেদিন ছিল যেদিন তাকে তার মা প্রসব করেছে বা জন্ম দিয়েছে।

নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ যা দ্বারা মর্যাদা বৃদ্ধি পায় তা হলো, পরিচিত-অপরিচিত প্রত্যেককে সালাম প্রদান এবং মানুষ ঘুমন্ত থাকা অবস্থায় রাতে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করা। এ সমস্ত কাজ মর্যাদা বৃদ্ধি করে।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة)