৬২৩

পরিচ্ছেদঃ ২. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - প্রথম ওয়াক্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সালাত আদায়

৬২৩-[৩৭] ’উবায়দুল্লাহ ইবনু ’আদী ইবনুল খিয়ার (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি খলীফাহ্ ’উসমান (রাঃ)-এর নিকট উপস্থিত হলেন। তখন তিনি নিজ ঘরে অবরুদ্ধ ছিলেন। তাকে তিনি বললেন, আপনিই জনগণের ইমাম। কিন্তু আপনার ওপর এ বিপদ আপতিত যা আপনি দেখছেন। এ সময় বিদ্রোহী নেতা (ইবনু বিশর) আমাদের সালাতে ইমামাত করছে। এতে আমরা গুনাহ মনে করছি। তখন তিনি [’উসমান (রাঃ)] বললেন, মানুষ যেসব কাজ করে, এসবের মধ্যে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) হচ্ছে সর্বোত্তম। অতএব মানুষ যখন ভালো কাজ করবে, তাদের সাথে শরীক হবে। যখন মন্দ কাজ করবে, তাদের এ মন্দ কাজ হতে দূরে সরে থাকবে। (বুখারী)[1]

وَعَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عَدِيِّ بْنِ الْخِيَارِ: أَنَّهُ دَخَلَ عَلَى عُثْمَانَ وَهُوَ مَحْصُورٌ فَقَالَ: إِنَّكَ إِمَامُ عَامَّةٍ وَنَزَلَ بِكَ مَا تَرَى وَيُصلي لنا إِمَام فتْنَة وننحرج. فَقَالَ: الصَّلَاة أحسن مَا يعْمل النَّاس فَإِذا أحسن النَّاس فَأحْسن مَعَهم وَإِذا أساؤوا فاجتنب إساءتهم. رَوَاهُ البُخَارِيّ

وعن عبيد الله بن عدي بن الخيار انه دخل على عثمان وهو محصور فقال انك امام عامة ونزل بك ما ترى ويصلي لنا امام فتنة وننحرج فقال الصلاة احسن ما يعمل الناس فاذا احسن الناس فاحسن معهم واذا اساووا فاجتنب اساءتهم رواه البخاري

ব্যাখ্যা: (وَهُوَ مَحْصُورٌ) ‘‘তখন তিনি অবরুদ্ধ ছিলেন।’’ অর্থাৎ- ‘উসমান (রাঃ) তখন নিজ বাড়ীতেই অবরুদ্ধ ছিলেন। ফিতনাহ্ (ফিতনা) সৃষ্টিকারীগণ তাকে অবরুদ্ধ করে রেখেছিল। তাঁকে তাঁর সর্বপ্রকার কর্ম সম্পাদনে বাধা সৃষ্টি করেছিল। তাদের ধারণা ছিল যে, মুহাম্মাদ ইবনু আবূ বাকর (রাঃ)-কে তাঁর নির্দেশেই হত্যা করা হয়েছে। এজন্য মিসরের অধিবাসী এবং অন্যান্য কিছু লোক একত্র হয়ে তাকে পদচ্যুত অথবা হত্যা করার চেষ্টায় লিপ্ত ছিল। অথচ তিনি ছিলেন সম্পূর্ণ নির্দোষ।

(إِنَّكَ إمَامُ عَامَّةٍ) ‘‘আপনিই জনগণের ইমাম।’’ অর্থাৎ- আপনিই আমীরুল মু’মিনীন এবং মুসলিমদের খলীফাহ্ ও তাদের ইমাম। কেননা শূরা সদস্যগণের সম্মিলিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তিনি খলীফাহ্ নিযুক্ত হয়েছেন। অতএব তিনিই একমাত্র বৈধ নেতা ও ইমাম।

(وَيُصَلِّي لَنَا إِمَامُ فِتْنَةٍ) ‘‘আমাদের ইমামাত করেন ফিতনাহ্ (ফিতনা) সৃষ্টিকারীদের ইমাম।’’ অর্থাৎ- যিনি আমাদের সালাতে ইমামাত করেন তিনি ফিতনাহ সৃষ্টিকারীদের নেতা ‘আবদুর রহমান ইবনু উদায়স অথবা কিনানাহ্ ইবনু বিশর এরা উভয়েই মিসরের অধিবাসী এবং তাদের নেতা ছিলেন। আর ‘আবদুর রহমান ইবনু উদায়স তাদের অন্যতম ছিলেন যারা মিসরবাসীকে ‘উসমান (রাঃ)-এর বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তুলেছিলেন।

(وَنَتَحَرَّجُ) ‘‘আমরা তার পিছনে সালাত আদায় করতে গুনাহ মনে করি।’’ অর্থাৎ- আমরা তার অনুসরণ করাকে গুনাহের কাজ বলে মনে করি।

(الصَّلَاةُ أَحْسَنُ مَا يَعْمَلُ النَّاسُ) ‘‘মানুষ যেসব কাজ করে তার মধ্যে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) হচ্ছে সর্বোত্তম কাজ।’’ অর্থাৎ- সালাত হচ্ছে মুসলিমদের সর্বোত্তম কাজ। অতএব ইমামাত যেই করুক যদিও সে ফাসিক্ব হয় তথাপি তার পিছনেই সালাত আদায় করা উচিত।

(وَإِذَا أَسَاءُوا فَاجْتَنِبْ إِسَاءَتَهُمْ) ‘‘যখন তারা মন্দ কাজ করবে, তাদের এ মন্দ কাজ হতে দূরে সরে থাকবে।’’ অর্থাৎ- সালাত ব্যতীত খারাপ কথা, কাজ ও বিশ্বাসে তাদের অনুসরণ করা থেকে দূরে থাকবে।

‘উসমান (রাঃ)-এর এ বক্তব্য থেকে জানা যায় যে, যার পিছনে সালাত আদায় করা মাকরূহ এমন ব্যক্তির পিছনেও জামা‘আতে সালাত আদায় করা উত্তম সালাতের জামা‘আত বিনষ্ট করার চাইতে। জেনে রাখা ভালো যে, ফাসিক্বের ইমামাত বৈধ কি-না এ বিষয়ে ‘উলামাদের মাঝে মতানৈক্য রয়েছে। আমার (‘উবায়দুল্লাহ্ মুবারাকপূরীর) দৃষ্টিতে ফাসিক্বের ইমামাত বৈধ যতক্ষণ পর্যন্ত ফাসিক্বের কাজ তাকে ইসলাম থেকে খারিজ না করে দেয়।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة)