৬০১

পরিচ্ছেদঃ ২. প্রথম অনুচ্ছেদ - প্রথম ওয়াক্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সালাত আদায়

৬০১-[১৫] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি সূর্যোদয়ের আগে ফজরের (ফজরের) সালাতের এক রাক্’আত পেল, সে ফজরের (ফজরের) সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) পেয়ে গেল। এভাবে যে সূর্যাস্তের পূর্বে ’আসর সালাতের এক রাক্’আত পেল, সে ’আসরের সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) পেলো। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

بَابُ تَعْجِيْلِ الصَّلَوَاتِ

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ أَدْرَكَ رَكْعَةً مِنَ الصُّبْحِ قَبْلَ أَنْ تَطْلُعَ الشَّمْسُ فَقَدْ أَدْرَكَ الصُّبْحَ. وَمَنْ أَدْرَكَ رَكْعَةً مِنَ الْعَصْرِ قَبْلَ أَنْ تغرب الشَّمْس فقد أدْرك الْعَصْر»

وعن ابي هريرة رضي الله عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم من ادرك ركعة من الصبح قبل ان تطلع الشمس فقد ادرك الصبح ومن ادرك ركعة من العصر قبل ان تغرب الشمس فقد ادرك العصر

ব্যাখ্যা : জমহূরের মতে যে ব্যক্তি সূরাহ্ আল ফাতিহাহ্ পড়া সহ রাক্‘আতের অন্যান্য ওয়াজিব যেমন, রুকূ' ও সাজদাসমূহ পূর্ণভাবে আদায় করে ফজরের (ফজরের) এক রাক্‘আত সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) সূর্য উদয়ের পূর্বে পেল সে যেন পূর্ণ সালাতই নির্ধারিত ওয়াক্তে পেল। এক রাক্‘আতের কম পেলে সেটা ওয়াক্তের মধ্যে গণ্য হবে না। তার ঐ সালাত ক্বাযা হবে। এটাই জমহূরের মত।

ইমাম নাবাবী বলেন, ‘আলিমগণ এ ব্যাপারে ঐকমত্য পোষণ করেছেন যে, সূর্য উদয়কাল কিংবা অস্তকাল পর্যন্ত সালাতকে ইচ্ছাকৃতভাবে বিলম্বিত করা বৈধ নয়। সূর্য উদয়ের পূর্বে এক রাক্‘আত পেলে এবং সূর্য উদয়ের পরে এক রাক্‘আত পড়লে তার সালাত পূর্ণ হয়ে যাবে। জমহূর ‘আলিমগণের এ মতের পক্ষে এ সম্পর্কে বায়হাক্বীতে দু’টি স্পষ্ট বর্ণনা রয়েছে। সেখানে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি সূর্য উদয়ের পূর্বে ফাজরের (ফজরের) সালাতের এক রাক্‘আত পেল এবং এক রাক্‘আত সূর্য উদয়ের পরে পড়ল, সে যেন পূর্ণ সালাতই নির্দিষ্ট ওয়াক্তে পেল। বায়হাক্বীতে আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত হয়েছে, যে ব্যক্তি সূর্য অস্ত যাওয়ার পূর্বে ‘আসরের এক রাক্‘আত আদায় করলো এবং বাকী অংশ সূর্যাস্তের পর আদায় করলো, তার ‘আসরের সালাত নষ্ট হলো না। তিনি ফাজরের (ফজরের) সালাতের ক্ষেত্রেও একই কথা বলেছেন। বুখারীর বর্ণনায় এ হাদীসের শেষে উল্লেখ রয়েছে, ‘‘সে যেন তার সালাতকে পূর্ণ করে’’। নাসায়ীর বর্ণনায় রয়েছে, যে ব্যক্তি সালাতের (নির্দিষ্ট সময়ে) এক রাক্‘আত পেল সে যেন পূর্ণ সালাতই পেল। তবে যে রাক্‘আত আদায় করতে পারেনি সে তা ক্বাযা করবে’’।

এ হাদীস প্রমাণ করে যে, যে ব্যক্তি সূর্য উদয়ের পূর্বে ফাজরের (ফজরের) সালাতের এক রাক্‘আত পেল সে যেন ফাজরের (ফজরের) পূর্ণ সালাতই পেল এবং সূর্য উদয়ের ফলে তার সালাত বাতিল হবে না। এমনিভাবে যে ব্যক্তি সূর্য অস্ত যাওয়ার পূর্বে ‘আসরের সালাত পেল এবং সূর্য অস্ত যাওয়ার ফলে তার সালাত বাতিল হবে না। ইমাম মালিক, শাফি‘ঈ, আহমাদ, ইসহাক (রহঃ)-এর মত এটিই, আর এটিই সঠিক মত।

ইমাম আবূ হানীফাহ্ এ হাদীসের বিরোধী মত দিয়েছেন। তিনি বলেন, যে ব্যক্তি ফাজরের (ফজরের) সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করছে এমতাবস্থায় সূর্য উদিত হলো তাহলে তার সালাত বাতিল হয়ে যাবে। তিনি তিন সময়ে সালাত আদায় নিষিদ্ধ হওয়ার হাদীস দ্বারা তার মতের পক্ষে দলীল প্রদান করেছেন। এর উত্তরে বলা যায় যে, সূর্য উদয়ের সময় সালাত আদায় নিষিদ্ধ হওয়া সম্পর্কিত বিধান ‘আম্ তথা ব্যাপক আর আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ)-এর এ হাদীস খাস তথা বিশেষ হুকুম জ্ঞাপক।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة)