৫৭১০

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - সৃষ্টির সূচনা ও নবী-রাসূলদের আলোচনা

৫৭১০-[১৩] আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: কারো পক্ষেই এ কথা বলা উচিত নয় যে, আমি (মুহাম্মাদ) ইউনুস ইবনু মাত্তার তুলনায় উত্তম। (বুখারী ও মুসলিম)
বুখারী-এর অন্য এক বর্ণনায় আছে- রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: যে লোক বলবে, আমি (মুহাম্মাদ) ইউনুস ইবনু মাত্তা আলায়হিস সালাম হতে উত্তম, সে মিথ্যা বলেছে।

الفصل الاول (بَاب بدءالخلق وَذِكْرِ الْأَنْبِيَاءِ عَلَيْهِمُ الصَّلَاةُ وَالسَّلَامُ)

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: مَا يَنْبَغِي لِعَبْدٍ أَنْ يَقُولَ: إِنِّي خَيْرٌ مِنْ يُونُسَ بْنِ مَتَّى . مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ وَفِي رِوَايَةِ البُخَارِيّ قَالَ: من قَالَ: أَنَا خَيْرٌ مِنْ يُونُسَ بْنِ مَتَّى فقد كذب متفق علیہ ، رواہ البخاری (3416) و مسلم (116 / 2376)، (6159) و الروایۃ الثانیۃ ، رواھا البخاری (4604) ۔ (مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ)

ব্যাখ্যা: নুবুওয়্যাতের মর্যাদার ক্ষেত্রে আমাকে ইউনুস ইবনু মাত্তা থেকে শ্রেষ্ঠ বলা কারো জন্য উচিত নয়; কেননা নুবুওয়্যাতের মর্যাদার বেলায় সকল নবী সমান। অন্যান্য বিষয়ে কারো ওপর কারো শ্রেষ্ঠত্ব থাকতে পারে। তবে ইউনুস আলায়হিস সালাম-এর কথা বিশেষভাবে বলার কারণ পূর্বের হাদীসের ব্যাখ্যায় উল্লেখ করা হয়েছে। অর্থাৎ আল্লাহ তা'আলা কুরআনে ইউনুস আলায়হিস সালাম-এর এমন কিছু কথা উল্লেখ করেছেন যা তার মর্যাদা কম হওয়ার সন্দেহ সৃষ্টি করতে পারে। অথচ নুবুওয়্যাতের মর্যাদায় এসব ঘটনায় কোন প্রভাবে ফেলেনি। তাই নবী (সা.) উম্মাতকে সতর্ক করলেন, যেন তারা নবীদের মানহানী করার ভ্রান্তিতে লিপ্ত না হয়।
وَفِي رِوَايَةِ البُخَارِيّ قَالَ: من قَالَ: أَنَا خَيْرٌ مِنْ يُونُسَ بْنِ مَتَّى فقد كذب
“আমি ইউনুস থেকে উত্তম”; এই বাক্যের দুই উদ্দেশ্য হতে পারে।
[এক] (أَنَا) দ্বারা রাসূল (সা.) উদ্দেশ্য। অর্থাৎ রাসূল (সা.) বলছেন, যে ব্যক্তি আমি মুহাম্মাদ-কে ইউনুস থেকে উত্তম মনে করবে সে মিথ্যা বলেছে। বিষয়টি এমন হলে রাসূল (সা.) তার বিনয় প্রকাশ ও অন্যান্য নবীর মানহানী না ঘটার কারণে এমন বলেছেন।
[দুই] (أَنَا) দ্বারা উদ্দেশ্য উক্তিকারী নিজে। অর্থাৎ- কোন ব্যক্তি বলে যে, আমি ইউনুস ইবনু মাত্তা থেকে উত্তম তবে সে মিথ্যা বলল। রাসূল (সা.) -এর এ কথার উদ্দেশ্য হলো, কুরআনে বর্ণিত ইউনুস আলায়হিস সালাম ঘটনা দেখে কেউ যদি নিজেকে ইউনুস ইবনু মাত্তা থেকে উত্তম মনে করে আর ভাবে সে ইউনুস ইবনু মাত্তা থেকে উত্তম, তবে সে মিথ্যা বলল। জ্ঞান, ‘ইবাদাত ও মর্যাদা সম্পর্কে মূর্খ ছাড়া কেউ এমন কথা বলতে পারে না। কেননা কেউ মর্যাদার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ স্থানে পৌছে গেলেও নুবুওয়্যাতের মর্যাদার স্তরে পৌঁছতে পারে না। পূর্বের বর্ণনা যেখানে বলা হয়েছে, “কোন বান্দার উচিত নয় যে, সে বলবে, আমি ইউনুস ইবনু মাত্তা থেকে উত্তম।” এ বর্ণনা এই ব্যাখ্যাকে সমর্থন করে। (নাবাবী ব্যাখ্যাগ্রন্থ ১৫/১৩২-১৩৩, অনুচ্ছেদ- মূসা আলায়হিস সালাম -এর মর্যাদা)